এইচ বি রিতা
নাজমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরভর্তি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থমথমে একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কেউ কথা বলছেন না, শুধু একজন ছাড়া।
‘বল! গয়নাটা তুই চুরি করেছিস কি না? স্বীকার কর। তাহলে মাফ পাবি। কাউকে বলব না। বল গয়নাটা কোথায়?’
খান পরিবারের বড় বউ এ নিয়ে অন্তত ১১ বার প্রশ্নটা করেছেন নাজমাকে। কিন্তু নাজমা কোনো কথা বলছে না। মাথা নিচু করে আছে। তার শীতল চোখে কোনো ভয় নেই। তবে নিবু-নিবু আলোয় বিড়ালের চোখের মতোই তার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে।
ঘরের বাকিরা ধৈর্য নিয়ে এই দৃশ্য দেখে যাচ্ছে ঘণ্টাখানেক ধরে। কিন্তু তাদের কথা বলা নিষেধ আছে। বড় বউয়ের হুকুম মানতেই হয় সবাইকে।
কেউ একজন বলে উঠল, হাত-পা ভেঙে দিলে তবে স্বীকার করবে। এই ঘরের আলমারির চাবি সে ছাড়া আর কার কাছে থাকে? ফকিন্নিদের তাই মাথায় ওঠাতে নেই।
বড় বউ এবার রেগে গেলেন। বললেন, ‘মানা করেছিলাম কি কেউ কোনো কথা বলবে না?’
নাজমা সবার কথা শুনছে চুপচাপ। কারও কথাই তার কানে যাচ্ছে না। সে শুধু ভাবছে, বোনটার বিয়ে হয়ে গেলেই হয়।
সেদিন ছুটিতে বাড়ি গিয়ে নিজের ঘরে ঢুকেই দরজায় খিল দিয়েছিল নাজমা। তারপর পোঁটলাটা হাতে নিয়ে খুব করে পরখ করে নিয়েছিল স্বর্ণের দুল জোড়া ঠিকঠাক আছে কি না। নাহ! আছে! মনটা বেশ খুশি হয়ে উঠেছিল নাজমার।
ছোট বোনটার বিয়ে আটকে আছে, এক জোড়া দুল চাই। জামাইকে একটা সাইকেল দিতে হবে। মাটির টুপা ভাঙলে হাজার পাঁচেক বের হবে। একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।
দুলজোড়া গত রাতেই চুরি করেছিল নাজমা। মেম সাহেবের এত্ত এত্ত গয়না, এক জোড়া গেলে কী আর তেমন ক্ষতি হবে! তা ছাড়া, পনেরো বছর বয়স থেকে এ বাড়িতে কাজ করছে নাজমা, আজ প্রায় ৯ বছর হতে চলল। চার আনার এক জোড়া কানের জিনিস তো তার হক আদায়েও পড়ে। কৃপণ লোকগুলো শুধু নিজের বাক্স ঠাসা করে রাখে।
নাজমারা তিন বোন। মা আছেন। তিনিও ছুটা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। সংসারে নাজমাই বড়, মেজোটাকে কোনোরকমে এসএসসি পাস করিয়েছে। ছোটটা মূক-বধির, ঘরেই থাকে।
বাবা বেঁচে থাকতে কলাগাছের গেট সাজিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাজমার বিয়ে দিয়েছিল। স্বামী একটা মুদির দোকানের মালিক ছিল, মানুষ হিসেবে মন্দ ছিল না। কিন্তু বিয়ের দুই বছর পরই স্বামী মারা যায় দুরারোগ্য এক ব্যাধিতে। সন্তান না থাকায় শ্বশুরালয় থেকে বিতাড়িত হতে হয় তাকে। এদিকে বাবাও গত হন বিয়ের ছয় মাস পরই। দুই বোন নিয়ে নাজমার মায়ের তখন বাতাস চিবিয়ে পেট ভরার অবস্থা। রাত হলে কখনো কখনো কটা ভাত মুখে গুঁজে দিতেন লবণ দিয়ে। নাজমার ফিরে আসা ছিল তখন গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো।
একবার মায়ের ভীষণ অসুখ হলো। ডাক্তার বললেন, আলসার, শিগগিরই অপারেশন লাগবে। হাঁড়িতে ভাত ছিল না, নাজমার কানে ছিল শেষ সম্বল—দুটি বালি। সেটা বিক্রি করেই অপারেশন হলো মায়ের। তারপর আরও কতবার মায়ের পেটে ব্যথা হলো! ডাক্তার দেখাতে পারেনি! মেজো বোনটা তখনো স্কুলে যায়।
একদিন সন্ধ্যায় পুকুরঘাটে নাজমাকে বুকে চেপে ধরেছিল মাতব্বরের ছেলে মতিন। কোমরের ভাঁজে আঙুল চালাতে চালাতে বলেছিল, ‘তোকে আমার বড় ভালো লাগে! তোকে বিয়ে করতে চাই রে নাজমা।’
সেই থেকে প্রতি রাতে নাজমার ফুটন্ত গোলাপের সৌরভ নিতে লাগল মতিন। নাজমা ভাবল, পয়সাওয়ালা লোক! বিয়ের পর তার মা-বোনকে আর না খেয়ে থাকতে হবে না! মায়ের চিকিৎসাও করাতে পারবে।
কিন্তু একদিন মধু খেতে খেতে ভ্রমরটি ঠিকই উড়ে গেল চিরাচরিত নিয়মে। কেউ জানল না কতটা খেয়ে গেল!
কাকে খেয়ে গেল। শুধু নাজমা জানল তার কতটা শেষ হয়েছিল। আর তার মা, আঁচলে গিঁট বেঁধে আড়াল করে রাখলেন মেয়ের শুকিয়ে যাওয়া গোলাপের পাপড়িগুলো!
তারপরই নাজমা পথে নামে জীবিকার তাগিদে। কিন্তু যেখানেই যায়, কাজের বদলে যৌবন কেড়ে নিতে চায় সবাই। চারদিকে কেবল হাতছানি। মানুষের ভেতর এত ভোজনেচ্ছা, এত দাহ, নাজমা কখনো ভাবতেও পারেনি। এই শরীরটা এত স্বাদের যে পৃথিবীর সব পশুত্বকে জাগিয়ে তোলে! মাঝেমাঝে গোসল করতে গিয়ে নাজমা নিজের নগ্ন শরীরটার দিকে তাকিয়ে ভাবত, এটাকে ব্যবসায় নামালে কেমন হয়!
শখে নয়, পীড়ন থেকেই এমন ভাবনা আসত মনে। পেটে ভাত না জুটলে নীতিবাক্য উষ্টা খেয়ে পড়ে যায় নর্দমার স্তূপে—এ কথা কে না জানে।
বহু ঘুরপাক সেরে অবশেষে নাজমা কাজ নেয় শহরের বিত্তশালী এক পরিবারে। দিনভর নিরলস কাজের বদলে থাকতে দেওয়া হয় একটি খুপরি ঘরে। তিন বেলা খাওয়া আর মাস গেলে নগদ দুই হাজার টাকা! কখনো হাত থেকে বাটি-বাসন পড়ে গেলে বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়।
নাজমার মন আজ ভীষণ খুশি। বোনের জন্য এক জোড়া কানের দুল সরাতে পেরেছে। জমানো কিছু টাকা আছে, সব মিলিয়ে একটা সাইকেল হয়ে যাবে।
বোনটার বিয়ে হবে। ঘর হবে। তারপর শুধু মা আর ছোট বোনটার দায়িত্ব। মায়ের পেটের চিকিৎসাও হবে। ছোট বোনটার জন্য একটা সেলাই মেশিন কিনে দেবে। কত কী পরিকল্পনা করছে নাজমা।
সেদিন মুখ ভার করে নাজমার মা বলছিলেন, ‘নাজমা, মেজোর হবু শাশুড়ি বলছিলেন, তুই যেন...!’
নাজমা বুঝে নিয়েছিল মা কী বলতে চাচ্ছেন। মাকে আশ্বস্ত করতে নাজমা শুধু বলেছিল, ‘হ্যাঁ
মা। কেউ জানবে না আমি কী কাজ করি! চিন্তা কোরো না।’
‘কষ্ট পাস নে মা। কী করব বল!’—নাজমার মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বলেছিলেন।
নাজমার এসবে আর মন খারাপ হয় না। তাদের কী দোষ, কাজের মেয়ে সত্যিই তো সমাজে কারও উন্নত পরিচয় বহন করে না। পৃথিবী নিতে জানে, দিতে যত আপত্তি। তাই নাজমা আজ জোর করে সব নিতে চায়। কানের দুল, সেদিন নিয়েছে ফ্রিজের বাটিতে জমা রাখা খাসির রেজালা।
পেটে ক্ষুধা নিয়ে সখ্য হয় না। নীতিবোধ প্রয়োজনের কাছে বেমানান। অভাব এক কঠিন অসুখ। যে চোখ একদিন সবুজ ঘাসের বুকে ঘাসফড়িংয়ের খোঁজে দৌড়ে হয়রান হতো, সেই চোখ আজ ধূর্ত শেয়ালের মতো লুটপাটের সুযোগ খোঁজে। নাজমা কিছুতেই আজ বিচলিত হয় না।
কারও প্রশ্নের জবাব দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করে না নাজমা। যত খুশি বলুক, নাজমা কিছুই বলবে না। তার এখন কেবল বোনটাকে বিয়ে দেওয়ার তাড়া।
কেউ একজন এসে কষে এক থাপ্পড় মারল নাজমার গালে। মেঝেতে গড়িয়ে পড়ল নাজমা তাৎক্ষণিক। এবার ধৈর্য হারিয়ে পরিবারের বড় বউ-ই থাপ্পড়টা মেরেছেন, আর ফোঁস ফোঁস করে কাঁপছেন।
নাজমার ঠোঁটের কোণে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। জিব দিয়ে ঠোঁটের রক্তটুকু চেটে নিল নাজমা। এ রক্ত ছিঁটকে পড়তে দেওয়া যাবে না।
বাড়ির বড় বউ তখনো চিৎকার করেই যাচ্ছেন, ‘তাহলে তুই স্বীকার করবি না হারামজাদি...!’
নাজমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরভর্তি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থমথমে একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কেউ কথা বলছেন না, শুধু একজন ছাড়া।
‘বল! গয়নাটা তুই চুরি করেছিস কি না? স্বীকার কর। তাহলে মাফ পাবি। কাউকে বলব না। বল গয়নাটা কোথায়?’
খান পরিবারের বড় বউ এ নিয়ে অন্তত ১১ বার প্রশ্নটা করেছেন নাজমাকে। কিন্তু নাজমা কোনো কথা বলছে না। মাথা নিচু করে আছে। তার শীতল চোখে কোনো ভয় নেই। তবে নিবু-নিবু আলোয় বিড়ালের চোখের মতোই তার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে।
ঘরের বাকিরা ধৈর্য নিয়ে এই দৃশ্য দেখে যাচ্ছে ঘণ্টাখানেক ধরে। কিন্তু তাদের কথা বলা নিষেধ আছে। বড় বউয়ের হুকুম মানতেই হয় সবাইকে।
কেউ একজন বলে উঠল, হাত-পা ভেঙে দিলে তবে স্বীকার করবে। এই ঘরের আলমারির চাবি সে ছাড়া আর কার কাছে থাকে? ফকিন্নিদের তাই মাথায় ওঠাতে নেই।
বড় বউ এবার রেগে গেলেন। বললেন, ‘মানা করেছিলাম কি কেউ কোনো কথা বলবে না?’
নাজমা সবার কথা শুনছে চুপচাপ। কারও কথাই তার কানে যাচ্ছে না। সে শুধু ভাবছে, বোনটার বিয়ে হয়ে গেলেই হয়।
সেদিন ছুটিতে বাড়ি গিয়ে নিজের ঘরে ঢুকেই দরজায় খিল দিয়েছিল নাজমা। তারপর পোঁটলাটা হাতে নিয়ে খুব করে পরখ করে নিয়েছিল স্বর্ণের দুল জোড়া ঠিকঠাক আছে কি না। নাহ! আছে! মনটা বেশ খুশি হয়ে উঠেছিল নাজমার।
ছোট বোনটার বিয়ে আটকে আছে, এক জোড়া দুল চাই। জামাইকে একটা সাইকেল দিতে হবে। মাটির টুপা ভাঙলে হাজার পাঁচেক বের হবে। একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।
দুলজোড়া গত রাতেই চুরি করেছিল নাজমা। মেম সাহেবের এত্ত এত্ত গয়না, এক জোড়া গেলে কী আর তেমন ক্ষতি হবে! তা ছাড়া, পনেরো বছর বয়স থেকে এ বাড়িতে কাজ করছে নাজমা, আজ প্রায় ৯ বছর হতে চলল। চার আনার এক জোড়া কানের জিনিস তো তার হক আদায়েও পড়ে। কৃপণ লোকগুলো শুধু নিজের বাক্স ঠাসা করে রাখে।
নাজমারা তিন বোন। মা আছেন। তিনিও ছুটা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। সংসারে নাজমাই বড়, মেজোটাকে কোনোরকমে এসএসসি পাস করিয়েছে। ছোটটা মূক-বধির, ঘরেই থাকে।
বাবা বেঁচে থাকতে কলাগাছের গেট সাজিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাজমার বিয়ে দিয়েছিল। স্বামী একটা মুদির দোকানের মালিক ছিল, মানুষ হিসেবে মন্দ ছিল না। কিন্তু বিয়ের দুই বছর পরই স্বামী মারা যায় দুরারোগ্য এক ব্যাধিতে। সন্তান না থাকায় শ্বশুরালয় থেকে বিতাড়িত হতে হয় তাকে। এদিকে বাবাও গত হন বিয়ের ছয় মাস পরই। দুই বোন নিয়ে নাজমার মায়ের তখন বাতাস চিবিয়ে পেট ভরার অবস্থা। রাত হলে কখনো কখনো কটা ভাত মুখে গুঁজে দিতেন লবণ দিয়ে। নাজমার ফিরে আসা ছিল তখন গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো।
একবার মায়ের ভীষণ অসুখ হলো। ডাক্তার বললেন, আলসার, শিগগিরই অপারেশন লাগবে। হাঁড়িতে ভাত ছিল না, নাজমার কানে ছিল শেষ সম্বল—দুটি বালি। সেটা বিক্রি করেই অপারেশন হলো মায়ের। তারপর আরও কতবার মায়ের পেটে ব্যথা হলো! ডাক্তার দেখাতে পারেনি! মেজো বোনটা তখনো স্কুলে যায়।
একদিন সন্ধ্যায় পুকুরঘাটে নাজমাকে বুকে চেপে ধরেছিল মাতব্বরের ছেলে মতিন। কোমরের ভাঁজে আঙুল চালাতে চালাতে বলেছিল, ‘তোকে আমার বড় ভালো লাগে! তোকে বিয়ে করতে চাই রে নাজমা।’
সেই থেকে প্রতি রাতে নাজমার ফুটন্ত গোলাপের সৌরভ নিতে লাগল মতিন। নাজমা ভাবল, পয়সাওয়ালা লোক! বিয়ের পর তার মা-বোনকে আর না খেয়ে থাকতে হবে না! মায়ের চিকিৎসাও করাতে পারবে।
কিন্তু একদিন মধু খেতে খেতে ভ্রমরটি ঠিকই উড়ে গেল চিরাচরিত নিয়মে। কেউ জানল না কতটা খেয়ে গেল!
কাকে খেয়ে গেল। শুধু নাজমা জানল তার কতটা শেষ হয়েছিল। আর তার মা, আঁচলে গিঁট বেঁধে আড়াল করে রাখলেন মেয়ের শুকিয়ে যাওয়া গোলাপের পাপড়িগুলো!
তারপরই নাজমা পথে নামে জীবিকার তাগিদে। কিন্তু যেখানেই যায়, কাজের বদলে যৌবন কেড়ে নিতে চায় সবাই। চারদিকে কেবল হাতছানি। মানুষের ভেতর এত ভোজনেচ্ছা, এত দাহ, নাজমা কখনো ভাবতেও পারেনি। এই শরীরটা এত স্বাদের যে পৃথিবীর সব পশুত্বকে জাগিয়ে তোলে! মাঝেমাঝে গোসল করতে গিয়ে নাজমা নিজের নগ্ন শরীরটার দিকে তাকিয়ে ভাবত, এটাকে ব্যবসায় নামালে কেমন হয়!
শখে নয়, পীড়ন থেকেই এমন ভাবনা আসত মনে। পেটে ভাত না জুটলে নীতিবাক্য উষ্টা খেয়ে পড়ে যায় নর্দমার স্তূপে—এ কথা কে না জানে।
বহু ঘুরপাক সেরে অবশেষে নাজমা কাজ নেয় শহরের বিত্তশালী এক পরিবারে। দিনভর নিরলস কাজের বদলে থাকতে দেওয়া হয় একটি খুপরি ঘরে। তিন বেলা খাওয়া আর মাস গেলে নগদ দুই হাজার টাকা! কখনো হাত থেকে বাটি-বাসন পড়ে গেলে বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়।
নাজমার মন আজ ভীষণ খুশি। বোনের জন্য এক জোড়া কানের দুল সরাতে পেরেছে। জমানো কিছু টাকা আছে, সব মিলিয়ে একটা সাইকেল হয়ে যাবে।
বোনটার বিয়ে হবে। ঘর হবে। তারপর শুধু মা আর ছোট বোনটার দায়িত্ব। মায়ের পেটের চিকিৎসাও হবে। ছোট বোনটার জন্য একটা সেলাই মেশিন কিনে দেবে। কত কী পরিকল্পনা করছে নাজমা।
সেদিন মুখ ভার করে নাজমার মা বলছিলেন, ‘নাজমা, মেজোর হবু শাশুড়ি বলছিলেন, তুই যেন...!’
নাজমা বুঝে নিয়েছিল মা কী বলতে চাচ্ছেন। মাকে আশ্বস্ত করতে নাজমা শুধু বলেছিল, ‘হ্যাঁ
মা। কেউ জানবে না আমি কী কাজ করি! চিন্তা কোরো না।’
‘কষ্ট পাস নে মা। কী করব বল!’—নাজমার মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বলেছিলেন।
নাজমার এসবে আর মন খারাপ হয় না। তাদের কী দোষ, কাজের মেয়ে সত্যিই তো সমাজে কারও উন্নত পরিচয় বহন করে না। পৃথিবী নিতে জানে, দিতে যত আপত্তি। তাই নাজমা আজ জোর করে সব নিতে চায়। কানের দুল, সেদিন নিয়েছে ফ্রিজের বাটিতে জমা রাখা খাসির রেজালা।
পেটে ক্ষুধা নিয়ে সখ্য হয় না। নীতিবোধ প্রয়োজনের কাছে বেমানান। অভাব এক কঠিন অসুখ। যে চোখ একদিন সবুজ ঘাসের বুকে ঘাসফড়িংয়ের খোঁজে দৌড়ে হয়রান হতো, সেই চোখ আজ ধূর্ত শেয়ালের মতো লুটপাটের সুযোগ খোঁজে। নাজমা কিছুতেই আজ বিচলিত হয় না।
কারও প্রশ্নের জবাব দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করে না নাজমা। যত খুশি বলুক, নাজমা কিছুই বলবে না। তার এখন কেবল বোনটাকে বিয়ে দেওয়ার তাড়া।
কেউ একজন এসে কষে এক থাপ্পড় মারল নাজমার গালে। মেঝেতে গড়িয়ে পড়ল নাজমা তাৎক্ষণিক। এবার ধৈর্য হারিয়ে পরিবারের বড় বউ-ই থাপ্পড়টা মেরেছেন, আর ফোঁস ফোঁস করে কাঁপছেন।
নাজমার ঠোঁটের কোণে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। জিব দিয়ে ঠোঁটের রক্তটুকু চেটে নিল নাজমা। এ রক্ত ছিঁটকে পড়তে দেওয়া যাবে না।
বাড়ির বড় বউ তখনো চিৎকার করেই যাচ্ছেন, ‘তাহলে তুই স্বীকার করবি না হারামজাদি...!’
হিমালয় পাই এর নতুন বই’ ডিটাচমেন্ট টু ডিপার্চার’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি বাজারে এনেছে জনপ্রিয় প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ প্রকাশনী। বইটিতে মূলত উত্তর ভারতের বিভিন্ন শহর পরিভ্রমণের প্রেক্ষিতে লেখকের সোশিওলজিকাল, পলিটিক্যাল কালচারাল, হিস্টরিকাল, এনথ্রোপলজিকাল যেসব পর্যবেক্ষণ তৈরি হয়েছে সেগুলোকেই সোশ্যাল থিসিসরূ
১৪ দিন আগে‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫। আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কবিতার এই আসর। আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এটি জানানো হয়েছে...
২১ দিন আগেবাংলা একাডেমি ২০২৪ সালের ষাণ্মাসিক ফেলোশিপ এবং ছয়টি পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেছে। মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং ভাষা গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ফেলোশিপ পাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, নাটক এবং কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য মোট ছয়টি পুরস্কার দেওয়া হচ্
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪সূক্ষ্মচিন্তার খসড়াকে ধারণ করে শিল্প-সাহিত্য ভিত্তিক ছোটকাগজ ‘বামিহাল’। বগুড়ার সবুজ শ্যামল মায়াময় ‘বামিহাল’ গ্রামের নাম থেকেই এর নাম। ‘বামিহাল’ বিশ্বাস করে বাংলার আবহমান জীবন, মানুষ-প্রকৃতি কিংবা সুচিন্তার বিশ্বমুখী সূক্ষ্ম ভাবনার প্রকাশই আগামীর সবুজ-শ্যামল মানববসতি বিনির্মাণ করতে পারে...
২১ ডিসেম্বর ২০২৪