অনলাইন ডেস্ক
ভারতে কয়েক দশকের ‘জঙ্গল বিদ্রোহ’ কি অবশেষে সমাপ্তির দিকে এগোচ্ছে? গত সপ্তাহে দেশটির সবচেয়ে বেশি দিন ধরে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা মাওবাদী নেতা নাম্বালা কেশবরাও ছত্রিশগড় রাজ্যে এক অভিযানে ২৬ জনসহ নিহত হয়েছেন। তিনি বাসবরাজু নামেও পরিচিত। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানকে তিন দশকের মধ্যে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘সবচেয়ে কঠোর নিষ্পত্তিমূলক আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন। এই অভিযানে এক পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারিয়েছেন।
বাসবরাজুর মৃত্যু কেবল ভারত সরকারের কৌশলগত বিজয়ই নয়, মাওবাদীদের বস্তারে অবস্থিত শেষ প্রতিরক্ষা রেখাতেও ভাঙনের নির্দেশ করে। এই এলাকায় দলটি ১৯৮০-এর দশক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ তৈরি করেছিল।
১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি গ্রাম থেকে মাওবাদীদের বিদ্রোহ শুরু হয়। এ কারণে পরে তারা ‘নকশাল’ নামে পরিচিত হয়। কয়েক দশক ধরে পুনর্গঠিত হয়ে মধ্য ও পূর্ব ভারতজুড়ে এক ‘রেড করিডর’ তৈরি করে এই সশস্ত্র দল। এই করিডর পূর্বে ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত এবং দেশের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি জেলাজুড়ে এর অবস্থান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই বিদ্রোহকে ভারতের ‘সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
সাউথ এশিয়ান টেররিজম পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, কমিউনিস্ট শাসনের দাবিতে শুরু হওয়া এই সশস্ত্র সংগ্রাম ২০০০ সাল থেকে প্রায় ১২ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বিদ্রোহীরা বলে, তারা আদিবাসী, উপজাতি এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের অধিকারের জন্য লড়ছে। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে এই জনগোষ্ঠীগুলোকে অবহেলা করেছে এবং ভূমি দখল করে নিয়েছে।
মাওবাদী আন্দোলন আনুষ্ঠানিকভাবে বাম-উগ্রবাদ বলে বিবেচিত। ২০০৪ সালে প্রধান মার্কসবাদী-লেনিনবাদী গোষ্ঠীগুলো সিপিআই (মাওবাদী)-এর সঙ্গে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক রূপ নেয়। এই দলটির আদর্শিক শিকড় ১৯৪৬ সালের তেলেঙ্গানা রাজ্যের কৃষক বিদ্রোহে। এই সময়ে এসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে মাওবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা রণক্লান্ত বিদ্রোহ কি সত্যিই শেষ—নাকি এর দীর্ঘ, রক্তাক্ত পরিসরে কেবলই আরেকটি বিরতি?
সাংবাদিক, সমাজবিজ্ঞানী ও মাওবাদী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষক এন ভেনুগোপাল বলেন, ‘এটি সাময়িক বিরতি। তবে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আন্দোলনগুলো এখন এমন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছে, যা তারা মোকাবিলা করেছিল ৭০-এর দশকে নকশালদের শীর্ষ নেতৃত্ব নিহত হওয়ার সময়।’
তবে মাওবাদী বিরোধী অভিযান তদারক করা ভারত সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা এমএ গণপতি ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘মূলত, মাওবাদী আন্দোলন ছিল একটি আদর্শিক সংগ্রাম, কিন্তু সেই আদর্শ আকর্ষণ হারিয়েছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। শিক্ষিত যুবকেরা আর আগ্রহী নয়।’ তিনি বলেন, ‘বাসবরাজু নিহত হওয়ায়, তাদের মনোবল কমে গেছে। তারা তাদের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।’
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাওবাদী সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা ২০১৩ সালের ১ হাজার ১৩৬টি থেকে ২০২৩ সালে ৫৯৪ টিতে নেমে এসেছে, অর্থাৎ ৪৪ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে এসব ঘটনা সম্পর্কিত প্রাণহানি ৩৯৭ থেকে কমে ১৩৮ জন হয়েছে বা ৬৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে, ২০২৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হতাহতের সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান তীব্র হওয়াকেই উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ছত্তিশগড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য ছিল। মাওবাদী সংশ্লিষ্ট ঘটনার মোট ৬৩ শতাংশ এবং মোট প্রাণহানির ৬৬ শতাংশ ঘটেছে এই রাজ্যে। এ ছাড়া, মোট সহিংসতার ২৭ শতাংশ হয়েছে ঝাড়খণ্ডে এবং প্রাণহানির ২৩ শতাংশ হয়েছে এই রাজ্যে। বাকি ঘটনাগুলো মহারাষ্ট্র, ওডিশা, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে ঘটেছে।
এই পরিসংখ্যানের দিকে ইঙ্গিত করে এমএ গণপতি বলেন, ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের পতন এই আন্দোলনের ব্যাপকভাবে হীনবল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এক দশক আগে রাজ্যের পুলিশকে দুর্বল মনে করা হতো। কিন্তু এখন সেটা আর প্রতীয়মান হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ‘আজ কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর সাহায্যে সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। আধা-সামরিক বাহিনী যেখানে অবস্থান ধরে রেখেছে, সেখানে রাজ্যের বাহিনী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে লক্ষ্যবস্তুতে অভিযান চালিয়েছে।’
গণপতি আরও বলেন, মোবাইল ফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, রাস্তা এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। এর ফলে তারা সশস্ত্র গোপন আন্দোলনকে সমর্থন করতে কম আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠেছে, মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানুষ বাইরের বিশ্বের সংস্পর্শে আসছে। মাওবাদীরাও নতুন সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পেরে আর কত দিন দুর্গম জঙ্গলে লুকিয়ে থাকবে! জনসমর্থন ছাড়া কোনো বিদ্রোহ টিকতে পারে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক মাওবাদী নেতা আন্দোলনের পতনের পেছনে গভীর এক ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছেন। সেটি হলো—রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা। তিনি বলেন, ‘তারা সত্যিকারের পরিবর্তন এনেছিল তেলেঙ্গানায়। সেখানে তারা সামাজিক ন্যায়বিচার, ছত্তিশগড়ে উপজাতিদের একত্র করার মতো কাজ তারা করেছিল। কিন্তু এটিকে সুসংহত রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করতে পারেনি।’
এই ব্যর্থতার মূলে এক পুরোনো বিপ্লবী ধারণা—রাষ্ট্রের নাগালের বাইরে বিচ্ছিন্ন ‘মুক্তাঞ্চল’ তৈরি করা এবং ‘দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে আঘাত করার তত্ত্ব’। ওই সাবেক মাওবাদী বলেন, ‘এই পকেটগুলো ততক্ষণ কাজ করে, যতক্ষণ না রাষ্ট্র পাল্টা আঘাত করে। এরপর অঞ্চলগুলো ভেঙে পড়ে এবং হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। প্রশ্ন করার সময় এসেছে যে, আজকের ভারতে কি সত্যিই বিচ্ছিন্ন বনাঞ্চল থেকে একটি বিপ্লব পরিচালনা করা সম্ভব?’
ওই নেতা আরও বলেন, সিপিআই-এর (মাওবাদী) ২০০৭ সালের রাজনৈতিক দলিলে মাও-যুগের কৌশল আঁকড়ে ধরা হয়েছে। তাদের নীতি হলো, ‘একটি মুক্তাঞ্চল তৈরি করা এবং গ্রামাঞ্চল থেকে শহর ঘেরাও করা।’ কিন্তু এটা আর কাজ করে না এখন। দলটি এখনো কিছু বিচ্ছিন্ন পকেটে জনসমর্থন ধরে রেখেছে। মূলত পূর্ব মহারাষ্ট্র, দক্ষিণ ছত্তিশগড় এবং ওডিশা ও ঝাড়খণ্ডের কিছু উপজাতীয় অঞ্চলে তাদের সমর্থন রয়েছে। তবে তাদের কোনো শক্তিশালী সামরিক ভিত্তি নেই।
সরকারি বাহিনীর ব্যাপক অভিযান দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের ঘাঁটিগুলোতে মাওবাদীদের সামরিক অবকাঠামোকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করেছে। তাদের ক্যাডার ও নেতাদের এখন নিয়মিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এটি বিদ্রোহীদের নিজেদের রক্ষা করার ক্রমবর্ধমান অক্ষমতাকেই প্রতিফলিত করে। এমএ গণপতি বিশ্বাস করেন, ভারত সরকার এই ‘কৌশলটি পুরোপুরি পরিত্যাগ না করে, পুনর্বিবেচনা করতে পারে’ এবং এটাই ‘দরকার’। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে আন্ডারগ্রাউন্ড সংগ্রামের একটি জায়গা আছে। তবে ‘আসল চ্যালেঞ্জ হলো এটিকে নির্বাচনী রাজনীতির সঙ্গে মেশানো।’
ভেনুগোপালও অদূর ভবিষ্যতে মাওবাদীদের ‘অর্থপূর্ণ পাল্টা লড়াই’ করার সম্ভাবনা কম দেখেন। তিনি যুক্তি দেন, এখন ভিন্ন একটি পদ্ধতির সময় এসেছে, সেটি হলো আলোচনা। তিনি বলেন, ‘তাদের এখন আলোচনায় বসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে, হয়তো শর্তহীনভাবে বা শর্তগুলো জানিয়ে সরকারকে সেগুলো বিবেচনা করতে বলা উচিত। অকারণে নিজেদের ক্যাডারদের উদ্দেশ্যহীনভাবে বলি না দিয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার এটাই সময়।’
তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন পায় মাওবাদীরা। তেলেঙ্গানায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করেছে। ১০টি ছোট বামপন্থী দলও একই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি মাওবাদী নেতা ও ক্যাডারদের রক্ষা করার একটি প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে অতীতের সংগ্রামের কারণে মাওবাদী আন্দোলন এখনো এই রাজ্যগুলোর কিছু অংশে সামাজিক বৈধতার দাবি রাখে। নাগরিক সমাজের কর্মীরাও যুদ্ধবিরতির পক্ষে। কলকাতার অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটসে সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সুর বলেন, ‘আমরা অন্যান্য নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীর সঙ্গে দুই ধাপের প্রক্রিয়ার দাবি জানিয়েছি—প্রথমে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং এরপর শান্তি আলোচনা।’
মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যগুলো খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। এ কারণেই এগুলো সম্পত্তি নিয়ে যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু। ভেনুগোপাল মনে করেন, এটি সিপিআই (মাওবাদী)-এর টিকে থাকার মূল কারণ। উদাহরণস্বরূপ, ছত্তিশগড় ভারতের একমাত্র টিন ও বালির উৎপাদক। রাজ্যটি কয়লা, ডোলোমাইট, বক্সাইট ও উচ্চমানের লোহা আকরিকেরও প্রধান উৎস। খনিজ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই রাজ্যে দেশের ৩৬ শতাংশ টিন, ২০ শতাংশ লোহার আকরিক, ১৮ শতাংশ কয়লা, ১১ শতাংশ ডোলোমাইট ও ৪ শতাংশ হিরা ও মার্বেল মজুত আছে। কিন্তু সংঘাতের কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি খনি কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই সম্পদগুলো আহরণে সমস্যায় পড়েছে।
ভেনুগোপাল বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রবেশ করতে পারেনি। কারণ “পানি, জঙ্গল, জমি” স্লোগানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা মাওবাদী আন্দোলন দাবি করে যে, বনভূমি আদিবাসীদের, করপোরেশনের নয়। কিন্তু মাওবাদীরা এখন দুর্বল হওয়ায় ছত্তিশগড়ের অন্তত চারটি খনি ‘পছন্দের দরদাতাদের’ হাতে যাবে বলে সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ভেনুগোপাল মনে করেন, মাওবাদী নেতাদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিরোধ শেষ হবে না। নেতারা হয়তো মারা যাবেন, কিন্তু ক্ষোভ থাকবেই। যেখানেই অবিচার থাকবে, সেখানেই আন্দোলন হবে। আমরা হয়তো সেগুলোকে আর মাওবাদ বলব না। তবে সেগুলো থাকবে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকা সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
ভারতে কয়েক দশকের ‘জঙ্গল বিদ্রোহ’ কি অবশেষে সমাপ্তির দিকে এগোচ্ছে? গত সপ্তাহে দেশটির সবচেয়ে বেশি দিন ধরে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা মাওবাদী নেতা নাম্বালা কেশবরাও ছত্রিশগড় রাজ্যে এক অভিযানে ২৬ জনসহ নিহত হয়েছেন। তিনি বাসবরাজু নামেও পরিচিত। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানকে তিন দশকের মধ্যে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘সবচেয়ে কঠোর নিষ্পত্তিমূলক আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন। এই অভিযানে এক পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারিয়েছেন।
বাসবরাজুর মৃত্যু কেবল ভারত সরকারের কৌশলগত বিজয়ই নয়, মাওবাদীদের বস্তারে অবস্থিত শেষ প্রতিরক্ষা রেখাতেও ভাঙনের নির্দেশ করে। এই এলাকায় দলটি ১৯৮০-এর দশক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ তৈরি করেছিল।
১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি গ্রাম থেকে মাওবাদীদের বিদ্রোহ শুরু হয়। এ কারণে পরে তারা ‘নকশাল’ নামে পরিচিত হয়। কয়েক দশক ধরে পুনর্গঠিত হয়ে মধ্য ও পূর্ব ভারতজুড়ে এক ‘রেড করিডর’ তৈরি করে এই সশস্ত্র দল। এই করিডর পূর্বে ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত এবং দেশের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি জেলাজুড়ে এর অবস্থান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই বিদ্রোহকে ভারতের ‘সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
সাউথ এশিয়ান টেররিজম পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, কমিউনিস্ট শাসনের দাবিতে শুরু হওয়া এই সশস্ত্র সংগ্রাম ২০০০ সাল থেকে প্রায় ১২ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বিদ্রোহীরা বলে, তারা আদিবাসী, উপজাতি এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের অধিকারের জন্য লড়ছে। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে এই জনগোষ্ঠীগুলোকে অবহেলা করেছে এবং ভূমি দখল করে নিয়েছে।
মাওবাদী আন্দোলন আনুষ্ঠানিকভাবে বাম-উগ্রবাদ বলে বিবেচিত। ২০০৪ সালে প্রধান মার্কসবাদী-লেনিনবাদী গোষ্ঠীগুলো সিপিআই (মাওবাদী)-এর সঙ্গে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক রূপ নেয়। এই দলটির আদর্শিক শিকড় ১৯৪৬ সালের তেলেঙ্গানা রাজ্যের কৃষক বিদ্রোহে। এই সময়ে এসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে মাওবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা রণক্লান্ত বিদ্রোহ কি সত্যিই শেষ—নাকি এর দীর্ঘ, রক্তাক্ত পরিসরে কেবলই আরেকটি বিরতি?
সাংবাদিক, সমাজবিজ্ঞানী ও মাওবাদী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষক এন ভেনুগোপাল বলেন, ‘এটি সাময়িক বিরতি। তবে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আন্দোলনগুলো এখন এমন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছে, যা তারা মোকাবিলা করেছিল ৭০-এর দশকে নকশালদের শীর্ষ নেতৃত্ব নিহত হওয়ার সময়।’
তবে মাওবাদী বিরোধী অভিযান তদারক করা ভারত সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা এমএ গণপতি ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘মূলত, মাওবাদী আন্দোলন ছিল একটি আদর্শিক সংগ্রাম, কিন্তু সেই আদর্শ আকর্ষণ হারিয়েছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। শিক্ষিত যুবকেরা আর আগ্রহী নয়।’ তিনি বলেন, ‘বাসবরাজু নিহত হওয়ায়, তাদের মনোবল কমে গেছে। তারা তাদের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।’
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাওবাদী সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা ২০১৩ সালের ১ হাজার ১৩৬টি থেকে ২০২৩ সালে ৫৯৪ টিতে নেমে এসেছে, অর্থাৎ ৪৪ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে এসব ঘটনা সম্পর্কিত প্রাণহানি ৩৯৭ থেকে কমে ১৩৮ জন হয়েছে বা ৬৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে, ২০২৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হতাহতের সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান তীব্র হওয়াকেই উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ছত্তিশগড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য ছিল। মাওবাদী সংশ্লিষ্ট ঘটনার মোট ৬৩ শতাংশ এবং মোট প্রাণহানির ৬৬ শতাংশ ঘটেছে এই রাজ্যে। এ ছাড়া, মোট সহিংসতার ২৭ শতাংশ হয়েছে ঝাড়খণ্ডে এবং প্রাণহানির ২৩ শতাংশ হয়েছে এই রাজ্যে। বাকি ঘটনাগুলো মহারাষ্ট্র, ওডিশা, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে ঘটেছে।
এই পরিসংখ্যানের দিকে ইঙ্গিত করে এমএ গণপতি বলেন, ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের পতন এই আন্দোলনের ব্যাপকভাবে হীনবল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এক দশক আগে রাজ্যের পুলিশকে দুর্বল মনে করা হতো। কিন্তু এখন সেটা আর প্রতীয়মান হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ‘আজ কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর সাহায্যে সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। আধা-সামরিক বাহিনী যেখানে অবস্থান ধরে রেখেছে, সেখানে রাজ্যের বাহিনী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে লক্ষ্যবস্তুতে অভিযান চালিয়েছে।’
গণপতি আরও বলেন, মোবাইল ফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, রাস্তা এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। এর ফলে তারা সশস্ত্র গোপন আন্দোলনকে সমর্থন করতে কম আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠেছে, মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানুষ বাইরের বিশ্বের সংস্পর্শে আসছে। মাওবাদীরাও নতুন সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পেরে আর কত দিন দুর্গম জঙ্গলে লুকিয়ে থাকবে! জনসমর্থন ছাড়া কোনো বিদ্রোহ টিকতে পারে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক মাওবাদী নেতা আন্দোলনের পতনের পেছনে গভীর এক ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছেন। সেটি হলো—রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা। তিনি বলেন, ‘তারা সত্যিকারের পরিবর্তন এনেছিল তেলেঙ্গানায়। সেখানে তারা সামাজিক ন্যায়বিচার, ছত্তিশগড়ে উপজাতিদের একত্র করার মতো কাজ তারা করেছিল। কিন্তু এটিকে সুসংহত রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করতে পারেনি।’
এই ব্যর্থতার মূলে এক পুরোনো বিপ্লবী ধারণা—রাষ্ট্রের নাগালের বাইরে বিচ্ছিন্ন ‘মুক্তাঞ্চল’ তৈরি করা এবং ‘দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে আঘাত করার তত্ত্ব’। ওই সাবেক মাওবাদী বলেন, ‘এই পকেটগুলো ততক্ষণ কাজ করে, যতক্ষণ না রাষ্ট্র পাল্টা আঘাত করে। এরপর অঞ্চলগুলো ভেঙে পড়ে এবং হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। প্রশ্ন করার সময় এসেছে যে, আজকের ভারতে কি সত্যিই বিচ্ছিন্ন বনাঞ্চল থেকে একটি বিপ্লব পরিচালনা করা সম্ভব?’
ওই নেতা আরও বলেন, সিপিআই-এর (মাওবাদী) ২০০৭ সালের রাজনৈতিক দলিলে মাও-যুগের কৌশল আঁকড়ে ধরা হয়েছে। তাদের নীতি হলো, ‘একটি মুক্তাঞ্চল তৈরি করা এবং গ্রামাঞ্চল থেকে শহর ঘেরাও করা।’ কিন্তু এটা আর কাজ করে না এখন। দলটি এখনো কিছু বিচ্ছিন্ন পকেটে জনসমর্থন ধরে রেখেছে। মূলত পূর্ব মহারাষ্ট্র, দক্ষিণ ছত্তিশগড় এবং ওডিশা ও ঝাড়খণ্ডের কিছু উপজাতীয় অঞ্চলে তাদের সমর্থন রয়েছে। তবে তাদের কোনো শক্তিশালী সামরিক ভিত্তি নেই।
সরকারি বাহিনীর ব্যাপক অভিযান দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের ঘাঁটিগুলোতে মাওবাদীদের সামরিক অবকাঠামোকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করেছে। তাদের ক্যাডার ও নেতাদের এখন নিয়মিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এটি বিদ্রোহীদের নিজেদের রক্ষা করার ক্রমবর্ধমান অক্ষমতাকেই প্রতিফলিত করে। এমএ গণপতি বিশ্বাস করেন, ভারত সরকার এই ‘কৌশলটি পুরোপুরি পরিত্যাগ না করে, পুনর্বিবেচনা করতে পারে’ এবং এটাই ‘দরকার’। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে আন্ডারগ্রাউন্ড সংগ্রামের একটি জায়গা আছে। তবে ‘আসল চ্যালেঞ্জ হলো এটিকে নির্বাচনী রাজনীতির সঙ্গে মেশানো।’
ভেনুগোপালও অদূর ভবিষ্যতে মাওবাদীদের ‘অর্থপূর্ণ পাল্টা লড়াই’ করার সম্ভাবনা কম দেখেন। তিনি যুক্তি দেন, এখন ভিন্ন একটি পদ্ধতির সময় এসেছে, সেটি হলো আলোচনা। তিনি বলেন, ‘তাদের এখন আলোচনায় বসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে, হয়তো শর্তহীনভাবে বা শর্তগুলো জানিয়ে সরকারকে সেগুলো বিবেচনা করতে বলা উচিত। অকারণে নিজেদের ক্যাডারদের উদ্দেশ্যহীনভাবে বলি না দিয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার এটাই সময়।’
তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন পায় মাওবাদীরা। তেলেঙ্গানায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করেছে। ১০টি ছোট বামপন্থী দলও একই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি মাওবাদী নেতা ও ক্যাডারদের রক্ষা করার একটি প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে অতীতের সংগ্রামের কারণে মাওবাদী আন্দোলন এখনো এই রাজ্যগুলোর কিছু অংশে সামাজিক বৈধতার দাবি রাখে। নাগরিক সমাজের কর্মীরাও যুদ্ধবিরতির পক্ষে। কলকাতার অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটসে সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সুর বলেন, ‘আমরা অন্যান্য নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীর সঙ্গে দুই ধাপের প্রক্রিয়ার দাবি জানিয়েছি—প্রথমে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং এরপর শান্তি আলোচনা।’
মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যগুলো খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। এ কারণেই এগুলো সম্পত্তি নিয়ে যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু। ভেনুগোপাল মনে করেন, এটি সিপিআই (মাওবাদী)-এর টিকে থাকার মূল কারণ। উদাহরণস্বরূপ, ছত্তিশগড় ভারতের একমাত্র টিন ও বালির উৎপাদক। রাজ্যটি কয়লা, ডোলোমাইট, বক্সাইট ও উচ্চমানের লোহা আকরিকেরও প্রধান উৎস। খনিজ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই রাজ্যে দেশের ৩৬ শতাংশ টিন, ২০ শতাংশ লোহার আকরিক, ১৮ শতাংশ কয়লা, ১১ শতাংশ ডোলোমাইট ও ৪ শতাংশ হিরা ও মার্বেল মজুত আছে। কিন্তু সংঘাতের কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি খনি কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই সম্পদগুলো আহরণে সমস্যায় পড়েছে।
ভেনুগোপাল বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রবেশ করতে পারেনি। কারণ “পানি, জঙ্গল, জমি” স্লোগানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা মাওবাদী আন্দোলন দাবি করে যে, বনভূমি আদিবাসীদের, করপোরেশনের নয়। কিন্তু মাওবাদীরা এখন দুর্বল হওয়ায় ছত্তিশগড়ের অন্তত চারটি খনি ‘পছন্দের দরদাতাদের’ হাতে যাবে বলে সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ভেনুগোপাল মনে করেন, মাওবাদী নেতাদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিরোধ শেষ হবে না। নেতারা হয়তো মারা যাবেন, কিন্তু ক্ষোভ থাকবেই। যেখানেই অবিচার থাকবে, সেখানেই আন্দোলন হবে। আমরা হয়তো সেগুলোকে আর মাওবাদ বলব না। তবে সেগুলো থাকবে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকা সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে জ্বালানি তেল রপ্তানির অর্থই ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখলেও এখনো দেশটির কাছ থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করেনি। তথ্য বলছে, পশ্চিমা...
২৫ মিনিট আগেতবে এসব পদক্ষেপের প্রতীকী গুরুত্ব অনেক। ব্রিটিশ আইনি সংস্থা পিটার্স অ্যান্ড পিটার্সের সিনিয়র পার্টনার মাইকেল ও’কেইন বলেন, ‘এটিকে আমরা বলি সিগন্যালিং। সরকার জানিয়ে দেয়, আপনার আচরণ অগ্রহণযোগ্য।’ বিশেষ করে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ও অর্থমন্ত্রী স্মতরিচের ওপর কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্
১ দিন আগেচলমান আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের ‘পদ্ধতিগতভাবে’ মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী—আইডিএফ। ১৯ মাস ধরে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে এটি আইডিএফের খুবই সাধারণ কৌশল হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
২ দিন আগেইকবালের মৃত্যুতেই তাঁর পরিবারের ভোগান্তি শেষ হয়ে যায়নি। তাঁর মৃত্যু ছিল ভোগান্তির শুরু মাত্র। ইকবালের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্র ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইকবালকে সন্ত্রাসী বলে মিথ্যা অভিযোগ করে। এরপরই পুলিশ এক বিবৃতি দিয়ে এই দাবি খণ্ডন করে।
৪ দিন আগে