Ajker Patrika

দ্য উইকের প্রতিবেদন

চীনে খোশগল্পে মত্ত সি-পুতিন-মোদি, জ্বলছেন কি ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০: ৩০
এসসিও শীর্ষ সম্মেলন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এক্স
এসসিও শীর্ষ সম্মেলন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এক্স

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, তিন নেতা হাসিমুখে গল্প করছেন। ভূরাজনীতিতে এমন দৃশ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তিন নেতার হাসিমুখে গল্প করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানা মন্তব্য করছেন। যদিও এসব মন্তব্যে তেমন কিছু আসে যায় না, কিন্তু এই তিন দেশের যারা প্রতিদ্বন্দ্বী, তাদের এতে অনেক কিছুই আসে যায়। এই দেশগুলো হয়তো কিছু বলছে না, কিন্তু মোদি-সি-পুতিনের ভিডিওটিই তাদের জন্য একটি বার্তা।

সম্মেলন শেষে মোদি ও পুতিন একসঙ্গে একই গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এর মধ্যে পুতিনের সঙ্গে মোদির এমন ঘনিষ্ঠতা ভারতের সেই অবস্থানকেই ইঙ্গিত করে, শুল্ক নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চললেও দিল্লি ট্রাম্পকে খুশি করার জন্য অতিরিক্ত কিছু করতে আগ্রহী নয়।

জানা গেছে, এই বৈঠকে মোদি-পুতিন দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক, আর্থিক ও জ্বালানি সহযোগিতার পাশাপাশি ইউক্রেনসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এসসিও সম্মেলনে সি চিন পিং তাঁর বক্তব্যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ধমকানো নীতির’ সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, কয়েকটি দেশের নিজেদের তৈরি নিয়ম অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তিনি এসসিওর সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা, গোষ্ঠীগত সংঘাত এবং সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ধমকানো নীতির বিরোধিতা করার আহ্বান জানান।

সির প্রস্তাব সমর্থন করে পুতিন এসসিও সদস্যরাষ্ট্রগুলোর জন্য যৌথ বন্ড বিক্রির প্রস্তাব দেন। তিনি নিজেদের পেমেন্ট, সেটেলমেন্ট ও ডিপোজিটরি অবকাঠামো এবং একটি যৌথ বিনিয়োগ ব্যাংক তৈরির পক্ষেও মত দেন। তিনি মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো অর্থনৈতিক লেনদেনের কার্যকারিতা বাড়াবে এবং দেশগুলোকে বাহ্যিক পরিবেশের অস্থিরতা থেকে রক্ষা করবে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই দৃশ্য দেখে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অসন্তুষ্ট। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, ভারত এখন তাদের শুল্ক একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু তা অনেক দেরি হয়ে গেছে। তিনি ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে মার্কিন-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ককে ‘সম্পূর্ণ একপক্ষীয় বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, ‘ভারত আমাদের এখানে অনেক ব্যবসা করে, কিন্তু উচ্চ শুল্কের কারণে আমরা তাদের ওখানে পণ্য বিক্রি করতে পারি না।’ তাঁর এসব কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি ভারতের ওপর সন্তুষ্ট নন। এমন পরিস্থিতিতে সি-পুতিনের সঙ্গে মোদির দহরম-মহরম ট্রাম্পকে আরও খেপিয়ে তুলতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত, চীন ও রাশিয়ার এই ঘনিষ্ঠতা গ্লোবাল সাউথের জন্য একটি নতুন বিকল্প বৈশ্বিক জোটের বার্তা দিচ্ছে, যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে। চীন এসসিওকে ব্যবহার করে এশিয়া ও ইউরেশিয়ায় তার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে চীনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্ক বজায় রাখছে। অন্যদিকে ভারত নিজের স্বায়ত্তশাসন এবং ক্রমবর্ধমান প্রভাব বজায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে এই সম্পর্কগুলো পরিচালনা করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই জোট যদি কোনোভাবে তৈরি হয়ে যায়, তবে বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য আর থাকবে না। গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প যে বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়েছেন, এমন একচ্ছত্র মাতব্বরিও আর থাকবে না। তবে এটি নির্ভর করবে চীন, ভারত ও রাশিয়ার নতুন জোটের ওপর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত