অনলাইন ডেস্ক
ভারত বিমানবাহিনী আধুনিকায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আধুনিকায়নে অত্যাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান বহরে যুক্ত করা কি সঠিক সমাধান?
গত মাসে ওয়াশিংটন সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তাঁর দেশ ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়ার পথ তৈরি করছে। এই যুদ্ধবিমান মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদারদেরই সরবরাহ করা হয়।
এফ-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান। এ ধরনের যুদ্ধবিমানে উন্নত সেন্সর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত আক্রমণ ব্যবস্থা এবং উন্নত তথ্য বিনিময় প্রযুক্তি থাকে। এটি রাডারের নজর এড়িয়ে চলার সক্ষমতা রাখে, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু প্রতিটি যুদ্ধবিমানের মূল্য ৮০ মিলিয়ন ডলার হওয়ায় এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।
অনেকের মতে, ভারতের যুদ্ধবিমান বহর সংকুচিত হলেও চীনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশটির সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—ভারত কি বিপুল অর্থ খরচ করে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ কেনার পথে হাঁটবে, নাকি রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে সুখোই-৫৭ স্টেলথ যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করবে?
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি অতটাও সরল নয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কথিত প্রতিযোগিতাটি মূলত গণমাধ্যমের তৈরি হাইপ। সাম্প্রতিক সময়ে এটি আরও বেড়েছে। বিশেষ করে, যখন গত মাসে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ার বৃহত্তম এয়ার শো ‘অ্যারো ইন্ডিয়াতে’ উভয় দেশের যুদ্ধবিমানই প্রদর্শিত হয়।
ট্রাম্পের এফ-৩৫ দেওয়ার প্রস্তাবটি বাস্তবসম্মত নয়, বরং প্রতীকী—বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। মার্কিন থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো অ্যাশলি জে টেলিস মনে করেন, এটি মূলত মার্কিন অস্ত্র বিক্রির প্রচেষ্টারই একটি অংশ।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন পরিকল্পনা মূলত দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর। যেখানে স্বদেশে নির্মিত ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট’ ও ফরাসি ‘রাফালে’ যুদ্ধবিমান আছে। এ অবস্থায় এফ-৩৫ অন্তর্ভুক্ত করা কঠিন হবে। বিশেষ করে, যদি এই বিমানটি ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ উৎপাদনের অনুমতি না দেওয়া হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) বর্তমানে নিজস্ব স্টেলথ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট নির্মাণ করছে।
টেলিস বলেন, ‘এফ-৩৫ এর যৌথভাবে উৎপাদনের সুবিধা ভারতকে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই যদি ভারত এটি কেনেও, তবে তা সরাসরি ক্রয় হিসেবেই হবে। এটি মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং এফ-৩৫ বিক্রির ক্ষেত্রে যে কঠোর নজরদারি থাকবে, তা ভারত পছন্দ করবে না।’
এফ-৩৫ কেনার ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর বিপুল খরচ, জটিল রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপারেশনাল সীমাবদ্ধতা। মার্কিন বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা মাত্র ৫১ শতাংশ। নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্টিফেন ব্রায়েনের মতে, ‘প্রশ্ন হলো, ভারত কি হাজার হাজার কোটি রুপি খরচ করে এফ-৩৫ কিনবে, যখন একই টাকায় আরও ভালোভাবে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান কেনা সম্ভব?’
তবে অনেকে সু (সুখোই)-৫৭ কে এফ-৩৫ এর প্রকৃত বিকল্প হিসেবেও দেখছেন না। কারণ, ভারত ২০১৮ সালে এই বিমানটির যৌথ উৎপাদন প্রকল্প থেকে সরে আসে। এর কারণ ছিল, প্রযুক্তি হস্তান্তর, ব্যয় ভাগাভাগি ও স্পেসিফিকেশন সংক্রান্ত মতানৈক্য।
ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তার যুদ্ধবিমান বহরের ক্রমাগত সংকোচন। বর্তমানে দেশটির বিমানবাহিনী ৩১টি যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন পরিচালনা করছে, যা অনুমোদিত ৪২ টির তুলনায় অনেক কম। বিশেষ করে বহরের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানের দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প খুঁজে বের করাটাই এখন প্রধান লক্ষ্য।
বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি উল্লেখ করেছেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীন ৪৩৫টি নতুন যুদ্ধবিমান যুক্ত করেছে বহরে, পাকিস্তান ৩১ টি, কিন্তু ভারতের বহরে ১৫১টি কমে গেছে।
ভারতের পরিকল্পিত যুদ্ধবিমান উন্নয়ন বেশির ভাগই দেশীয় প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল। দেশটি ৫০০ টিরও বেশি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে, যার অধিকাংশই নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত হালকা যুদ্ধবিমান হবে। এরই মধ্যে ৮৩টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে এবং আরও ৯৭ টির অর্ডার আসতে চলেছে। পাশাপাশি, আরও উন্নত তেজস মার্ক-২ তৈরি হচ্ছে। তবে দেশীয় স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির বিষয়টি অন্তত আরও এক দশক দূরে।
ভারত বাইরের যুদ্ধবিমান ক্রয় পরিকল্পনার অধীনে ১১৪টি মাল্টি-রোল ফাইটার জেট কিনতে চায়, যেখানে বিদেশি নির্মাতাদের ভারতেই উৎপাদন করতে হবে। তবে ২০১৯ সাল থেকে প্রকল্পটি স্থগিত আছে। বিশেষ করে, ৩৬টি রাফালে কেনার সময় হওয়া বিতর্কের পর ভারত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার দিকে নজর দিচ্ছে।
ভারতের বিমানবাহিনী আধুনিকীকরণে তিনটি বড় বাধা—অর্থের ঘাটতি, দীর্ঘসূত্রতা ও বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা। দেশটির প্রতিরক্ষা বাজেট প্রকৃত অর্থমূল্যে কমছে এবং বিদেশি যুদ্ধবিমান ক্রয় প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দেশীয় বিমান তৈরির প্রতিশ্রুতি থাকলেও ডিআরডিও-এর দীর্ঘসূত্রতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে মাঝেমধ্যে বিদেশি বিমান কিনতে হচ্ছে। এর পুনরাবৃত্তি এড়াতে হলে দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্যভাবে ও সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্লেষক রাহুল ভাটিয়ার মতে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও বিমানবাহিনীর চাহিদার মধ্যে ব্যবধান রয়েছে। তেজস মার্ক-১ শুরুতে বিমানবাহিনীর সন্দেহের মুখে পড়েছিল, যা পরে আপগ্রেডের মাধ্যমে মার্ক-১এ ও মার্ক-২ সংস্করণে উন্নীত হয়েছে। ভাটিয়া বলেন, ‘তবে বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলতে থাকায় বিমানবাহিনী হতাশ হয়। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চাহিদা বদলায়, ফলে দেরি আরও বাড়ে।’
এমনকি ভারতীয় বিমানবাহিনীপ্রধান এপি সিংও দেরি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি চাইলে শপথ নিতে পারি যে শুধু দেশীয় বিমানই কিনব, কিন্তু যদি সেগুলো সময়মতো না আসে, তাহলে বাইরের দিকে তাকাতে হবে।’
ভারতের মূল লক্ষ্য দেশীয় স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরি করা, যেখানে এরই মধ্যেই এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, কেবল জরুরি হুমকি দেখা দিলেই বিদেশি স্টেলথ জেট কেনার চিন্তা করা হবে। অতএব, স্বল্পমেয়াদে জরুরি ক্রয় হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভারতের লক্ষ্য পরিষ্কার—নিজস্ব প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান নির্মাণ। তবে সেই লক্ষ্য সফল করতে হলে দেশীয় প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
ভারত বিমানবাহিনী আধুনিকায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আধুনিকায়নে অত্যাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান বহরে যুক্ত করা কি সঠিক সমাধান?
গত মাসে ওয়াশিংটন সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তাঁর দেশ ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়ার পথ তৈরি করছে। এই যুদ্ধবিমান মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদারদেরই সরবরাহ করা হয়।
এফ-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান। এ ধরনের যুদ্ধবিমানে উন্নত সেন্সর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত আক্রমণ ব্যবস্থা এবং উন্নত তথ্য বিনিময় প্রযুক্তি থাকে। এটি রাডারের নজর এড়িয়ে চলার সক্ষমতা রাখে, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু প্রতিটি যুদ্ধবিমানের মূল্য ৮০ মিলিয়ন ডলার হওয়ায় এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।
অনেকের মতে, ভারতের যুদ্ধবিমান বহর সংকুচিত হলেও চীনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশটির সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—ভারত কি বিপুল অর্থ খরচ করে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ কেনার পথে হাঁটবে, নাকি রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে সুখোই-৫৭ স্টেলথ যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করবে?
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি অতটাও সরল নয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কথিত প্রতিযোগিতাটি মূলত গণমাধ্যমের তৈরি হাইপ। সাম্প্রতিক সময়ে এটি আরও বেড়েছে। বিশেষ করে, যখন গত মাসে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ার বৃহত্তম এয়ার শো ‘অ্যারো ইন্ডিয়াতে’ উভয় দেশের যুদ্ধবিমানই প্রদর্শিত হয়।
ট্রাম্পের এফ-৩৫ দেওয়ার প্রস্তাবটি বাস্তবসম্মত নয়, বরং প্রতীকী—বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। মার্কিন থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো অ্যাশলি জে টেলিস মনে করেন, এটি মূলত মার্কিন অস্ত্র বিক্রির প্রচেষ্টারই একটি অংশ।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন পরিকল্পনা মূলত দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর। যেখানে স্বদেশে নির্মিত ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট’ ও ফরাসি ‘রাফালে’ যুদ্ধবিমান আছে। এ অবস্থায় এফ-৩৫ অন্তর্ভুক্ত করা কঠিন হবে। বিশেষ করে, যদি এই বিমানটি ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ উৎপাদনের অনুমতি না দেওয়া হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) বর্তমানে নিজস্ব স্টেলথ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট নির্মাণ করছে।
টেলিস বলেন, ‘এফ-৩৫ এর যৌথভাবে উৎপাদনের সুবিধা ভারতকে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই যদি ভারত এটি কেনেও, তবে তা সরাসরি ক্রয় হিসেবেই হবে। এটি মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং এফ-৩৫ বিক্রির ক্ষেত্রে যে কঠোর নজরদারি থাকবে, তা ভারত পছন্দ করবে না।’
এফ-৩৫ কেনার ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর বিপুল খরচ, জটিল রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপারেশনাল সীমাবদ্ধতা। মার্কিন বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা মাত্র ৫১ শতাংশ। নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্টিফেন ব্রায়েনের মতে, ‘প্রশ্ন হলো, ভারত কি হাজার হাজার কোটি রুপি খরচ করে এফ-৩৫ কিনবে, যখন একই টাকায় আরও ভালোভাবে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান কেনা সম্ভব?’
তবে অনেকে সু (সুখোই)-৫৭ কে এফ-৩৫ এর প্রকৃত বিকল্প হিসেবেও দেখছেন না। কারণ, ভারত ২০১৮ সালে এই বিমানটির যৌথ উৎপাদন প্রকল্প থেকে সরে আসে। এর কারণ ছিল, প্রযুক্তি হস্তান্তর, ব্যয় ভাগাভাগি ও স্পেসিফিকেশন সংক্রান্ত মতানৈক্য।
ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তার যুদ্ধবিমান বহরের ক্রমাগত সংকোচন। বর্তমানে দেশটির বিমানবাহিনী ৩১টি যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন পরিচালনা করছে, যা অনুমোদিত ৪২ টির তুলনায় অনেক কম। বিশেষ করে বহরের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানের দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প খুঁজে বের করাটাই এখন প্রধান লক্ষ্য।
বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি উল্লেখ করেছেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীন ৪৩৫টি নতুন যুদ্ধবিমান যুক্ত করেছে বহরে, পাকিস্তান ৩১ টি, কিন্তু ভারতের বহরে ১৫১টি কমে গেছে।
ভারতের পরিকল্পিত যুদ্ধবিমান উন্নয়ন বেশির ভাগই দেশীয় প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল। দেশটি ৫০০ টিরও বেশি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে, যার অধিকাংশই নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত হালকা যুদ্ধবিমান হবে। এরই মধ্যে ৮৩টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে এবং আরও ৯৭ টির অর্ডার আসতে চলেছে। পাশাপাশি, আরও উন্নত তেজস মার্ক-২ তৈরি হচ্ছে। তবে দেশীয় স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির বিষয়টি অন্তত আরও এক দশক দূরে।
ভারত বাইরের যুদ্ধবিমান ক্রয় পরিকল্পনার অধীনে ১১৪টি মাল্টি-রোল ফাইটার জেট কিনতে চায়, যেখানে বিদেশি নির্মাতাদের ভারতেই উৎপাদন করতে হবে। তবে ২০১৯ সাল থেকে প্রকল্পটি স্থগিত আছে। বিশেষ করে, ৩৬টি রাফালে কেনার সময় হওয়া বিতর্কের পর ভারত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার দিকে নজর দিচ্ছে।
ভারতের বিমানবাহিনী আধুনিকীকরণে তিনটি বড় বাধা—অর্থের ঘাটতি, দীর্ঘসূত্রতা ও বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা। দেশটির প্রতিরক্ষা বাজেট প্রকৃত অর্থমূল্যে কমছে এবং বিদেশি যুদ্ধবিমান ক্রয় প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দেশীয় বিমান তৈরির প্রতিশ্রুতি থাকলেও ডিআরডিও-এর দীর্ঘসূত্রতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে মাঝেমধ্যে বিদেশি বিমান কিনতে হচ্ছে। এর পুনরাবৃত্তি এড়াতে হলে দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্যভাবে ও সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্লেষক রাহুল ভাটিয়ার মতে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও বিমানবাহিনীর চাহিদার মধ্যে ব্যবধান রয়েছে। তেজস মার্ক-১ শুরুতে বিমানবাহিনীর সন্দেহের মুখে পড়েছিল, যা পরে আপগ্রেডের মাধ্যমে মার্ক-১এ ও মার্ক-২ সংস্করণে উন্নীত হয়েছে। ভাটিয়া বলেন, ‘তবে বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলতে থাকায় বিমানবাহিনী হতাশ হয়। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চাহিদা বদলায়, ফলে দেরি আরও বাড়ে।’
এমনকি ভারতীয় বিমানবাহিনীপ্রধান এপি সিংও দেরি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি চাইলে শপথ নিতে পারি যে শুধু দেশীয় বিমানই কিনব, কিন্তু যদি সেগুলো সময়মতো না আসে, তাহলে বাইরের দিকে তাকাতে হবে।’
ভারতের মূল লক্ষ্য দেশীয় স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরি করা, যেখানে এরই মধ্যেই এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, কেবল জরুরি হুমকি দেখা দিলেই বিদেশি স্টেলথ জেট কেনার চিন্তা করা হবে। অতএব, স্বল্পমেয়াদে জরুরি ক্রয় হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভারতের লক্ষ্য পরিষ্কার—নিজস্ব প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান নির্মাণ। তবে সেই লক্ষ্য সফল করতে হলে দেশীয় প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে শাসন—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ধরে আবার ফিরে এসেছে এই প্রক্রিয়া। আগের দিন কানাডা-মেক্সিকোর ওপর কঠোর শুল্ক চাপিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুললেন ট্রাম্প। পরদিনই স্বীকার করলেন, এই শুল্ক আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকে ধ্বংস করতে পারে। পরে, সেই শঙ্কা থেকে অটোমোবাইল
৪ ঘণ্টা আগেইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি শুধু ইউক্রেনের জন্যই নয়, দেশটির ইউরোপীয় মিত্রদের জন্যও বড় একটি ধাক্কা। ইউক্রেনকে সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউরোপের নেতারা মার্কিন প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় অনিশ্চয়তার কারণে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর চীনের প্রভাব বাড়তে পারে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন সমর্থন কমে গেলে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের কার্যকারিতা দুর্বল হতে পারে এবং চীনসহ অন্যান্য দেশ এ সুযোগ নেবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
৩ দিন আগেরাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা করছে ইউরোপের দেশগুলো। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র যে এটি করবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইউরোপ কি আসলেই এটি নিশ্চিত করতে পারবে?
৩ দিন আগে