অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন গত বুধবার রাতে রাষ্ট্রীয় বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে ফ্লোরিডা থেকে ফিরছিলেন, তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে সৎভাবে আলোচনা করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন কিনা?
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হতে দেখতে চায়, সত্যিই তাই।’ ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, সংঘাতে মস্কোর অবস্থান শক্তিশালী। রাশিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা অনেক এলাকা দখল করেছে। সুতরাং, (আলোচনার শর্ত নির্ধারণের) তাস তাদের হাতেই।’
২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান। কিন্তু তার পরও, গত ১০ দিনে তিনি যেভাবে সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার পথ তৈরি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তা চোখ ধাঁধানো। এই বিষয়টি আমেরিকার পশ্চিমা মিত্রদের হতবাক করেছে এবং ন্যাটো ঐক্যের ভাঙন ধরার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত আলোচনার বাইরে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ, সৌদি আরবে তাঁর কূটনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এবং ট্রেজারি সেক্রেটারি তথা অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কিথ কেলোগকে কিয়েভে পাঠিয়ে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি, যাতে তারা সমঝোতার পথে হাঁটে।
এ ছাড়া, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করেছেন, তাঁকে ‘একনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্পের ভাষায়, জেলেনস্কি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছেন এবং রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের জন্য মূলত দায়ী জেলেনস্কিই।
এই অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন নীতির এক নাটকীয় মোড়। তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে নীতি গ্রহণ করেছিল তার থেকে ট্রাম্পের অবস্থান অনেক দূরে। ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসন কিয়েভের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন, মস্কোকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা এবং পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কৌশল অনুসরণ করেছিল।
কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে দেখছে, যা অন্তত গত দুই দশকে করা হয়নি। অন্তত ২০০৮ সালে জর্জিয়ায় পুতিনের আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তও নয়। সে সময় থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো পুতিনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সতর্ক হতে শুরু করে।
এই পরিবর্তন শুধু রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কেই নয়, বরং ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও আমেরিকার সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। কয়েক দশক ধরে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের ভিত্তি যতটা শক্তিশালী ছিল, তা এখন তীব্র পরীক্ষার মুখে।
ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপের মিত্ররা, কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা এবং ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন যে, তিনি ‘বলপ্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ অর্জনের নীতির অনুসরণ করবেন। কিন্তু এর পরিবর্তে, তিনি দ্রুতই মস্কোর ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন। এই বিষয়টি বিশ্লেষকদের বিভ্রান্ত করেছে এবং তারা বুঝতে চেষ্টা করছেন যে, তাঁর নতুন কৌশল ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ক্রমবর্ধমান বহুমেরুক বিশ্ব ব্যবস্থায় আমেরিকার অবস্থানের জন্য কী ইঙ্গিত বহন করছে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির ট্রান্স-আটলান্টিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক আন্দ্রেয়া কেন্ডাল-টেইলর বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য হলো যেকোনো মূল্যে যুদ্ধের অবসান ঘটানো।’ কিন্তু ভবিষ্যতে এর সম্ভাব্য পরিণতি কী বা কেমন হতে পারে সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে না।
কেন্ডাল-টেইলর বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো, পুতিন কার্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ছাড় আদায় করে ভবিষ্যতে আরও আগ্রাসনের পথ সুগম করবেন। এটি কেবল পুতিনের আরও তৎপর হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো ছাড়া কিছুই নয়।’
কোলোরাডোর ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য জেসন ক্রো ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘বেশির ভাগ যুদ্ধের মতো’, ইউক্রেন যুদ্ধও শেষ পর্যন্ত আলোচনা টেবিলে গিয়ে গড়াবে, তবে ট্রাম্প সঠিক পদ্ধতিতে এটি করছেন না। তিনি বলেন, ‘প্রত্যক্ষ আলোচনার শুরুতেই ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে দেখা করে ট্রাম্প ভুল বার্তা দিয়েছেন এবং পুরো প্রক্রিয়াটিকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন।’
জেসন ক্রো আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া ও ইউক্রেন নীতি অস্থির এবং অসংগতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই নীতি প্রতিদিন টুইটের মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরা স্পষ্টতই পরস্পরবিরোধী বিবৃতি দিচ্ছেন এবং কখনো কখনো একে অপরের পরিপন্থী কাজ করছেন।’
মার্কিন-রাশিয়া পুনর্মিলনের এই ঝোড়ো প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন আলোচনা শুরুর মাধ্যমে। মার্কিন নাগরিক মার্ক ফোগেলকে মুক্তির জন্য একটি বন্দী বিনিময় চুক্তির ব্যবস্থা করতে এই আলোচনা শুরু করা হয়েছিল। ২০২১ সালের আগস্টে ফোগেলকে রাশিয়ায় গাঁজা নিয়ে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়।
উইটকফ ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে মস্কো যান এবং ফোগেলকে মুক্ত করে দেশে ফেরত আনেন। একই সঙ্গে তিনি সেখানে পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পর উইটকফ বলেন, ‘এটির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আমি মনে করি, এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের তরফ থেকে সৎ সদিচ্ছার পরিচায়ক ছিল...এবং এটি অনেক ইতিবাচক দিকের সূচনা করেছে।’
ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত সপ্তাহে গাজা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য আগেই রিয়াদে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাই ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য সৌদি আরবের রাজধানী ছিল যৌক্তিক স্থান। গত মঙ্গলবার সৌদি কর্মকর্তারা রিয়াদের দিরিয়াহ প্রাসাদে আমেরিকা ও রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের স্বাগত জানায়। সেখানে উভয় পক্ষ সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে আলোচনা করে।
পরে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা অনুভব করেছেন যে—রুশ কর্মকর্তারা খোলা মন নিয়ে আলোচনা করেছেন, ঐতিহাসিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বক্তৃতা দেননি। আলোচনার পর রুবিও বলেন, ‘আজকের আলোচনার পর আমি নিশ্চিত যে, তাঁরা (রাশিয়া) একটি গুরুতর প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে ইচ্ছুক, যাতে বোঝা যায় কীভাবে, কত দ্রুত এবং কোন পদ্ধতির মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়। তবে শেষ পর্যন্ত এটি নির্ভর করবে সংঘাতে জড়িত প্রতিটি পক্ষের কিছু বিষয় মেনে নেওয়ার সদিচ্ছার ওপর।’
জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেওয়া রিপাবলিকানদের মধ্যে কিছু আইনপ্রণেতা ট্রাম্পের রাশিয়া নীতির কারণে উদ্বিগ্ন। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর জন কেনেডি বলেন, ‘হোয়াইট হাউস যদি বলে যে, ইউক্রেন এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাহলে আমি একমত নই। আমি মনে করি, ভ্লাদিমির পুতিনই যুদ্ধ শুরু করেছেন। এ ছাড়া, তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমি বুঝেছি, ভ্লাদিমির পুতিন একজন গ্যাংস্টার।’
তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনাকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন এবং দলের ভেতরে যেকোনো সমালোচনা শুরুর আগেই দমনের চেষ্টা করেছেন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, তারা এমন একটি সংঘাতের সমাপ্তি টানতে চাইছেন যা তিন বছর ধরে চলমান।
গত বৃহস্পতিবার ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি রাশিয়ার সঙ্গে কথা না বলে কীভাবে যুদ্ধ শেষ করবেন? যদি সত্যিই সংঘাত বন্ধ করতে চান, তাহলে লড়াইয়ে জড়িত প্রতিটি পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শান্তি রাশিয়ার স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ইউক্রেনের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ইউরোপের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শান্তি আমেরিকার জনগণের স্বার্থের জন্য অপরিহার্য।’
উইটকফের মস্কো সফরের আগে ট্রাম্প ও তাঁর দল আশঙ্কা করছিল যে, পুতিন হয়তো আলোচনার টেবিলে আসতে জেলেনস্কির তুলনায় কম আগ্রহী। এমনকি তাঁরা মস্কোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে রুশ জ্বালানি খাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
কিন্তু গত সপ্তাহে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের অধিকার সংক্রান্ত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় ট্রাম্পের মনোভাব জেলেনস্কির প্রতি নেতিবাচক হয়ে ওঠে। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ব্যবসার আয়কৃত রাজস্বের অর্ধেক পেত।
হোয়াইট হাউসে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি খুবই হতাশ, কারণ তিনি আলোচনার টেবিলে আসেননি, তিনি (জেলেনস্কি) এই সুযোগ গ্রহণ করতে রাজি হননি। আমি মনে করি, শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি হবেন এবং আমি আশা করি এটি খুব দ্রুত ঘটবে।’
ব্রিটিশ থিংক ট্যাংক সিগনাম গ্লোবাল অ্যাডভাইজার্সের গ্লোবাল পলিসি গবেষণা প্রধান অ্যান্ড্রু বিশপ মনে করেন, ট্রাম্প উপলব্ধি করেছেন, যুদ্ধের স্থবিরতা ভাঙতে তাঁকে ‘নাটকীয় কিছু’ করতে হবে এবং তিনি রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করাকে বেশি সুবিধাজনক মনে করেছেন। তিনি বলেন, ‘জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের অনীহা এবং রাশিয়ার ওপর কঠোর তেল নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক খরচ বিবেচনায় নিয়ে, তিনি ইউক্রেনকেই টার্গেট করেছেন।’
জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সমালোচনা অনেকের কাছে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক ঠেকছে। ট্রাম্পের প্রথম দফা শাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন বোল্টন বলেন, ‘তিনি মনে করেন, পুতিন ও তিনি বন্ধু, আর তিনি জেলেনস্কিকে পছন্দ করেন না। ট্রাম্প এমন সব কথা বলছেন, যা রাশিয়া চায় বিশ্ব বিশ্বাস করুক, অথচ সেগুলো সত্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবার যখন আপনি এই বিষয়ে দৃষ্টিপাত করবেন, ততবার দেখবেন ট্রাম্প পুতিনকে আরও বড় সুবিধা দিয়ে দিচ্ছেন।’
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ম্যাক্স বার্গম্যান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত একটি গণতান্ত্রিক দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে, যে দেশটি স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, অথচ যার প্রতিপক্ষ একনায়ক এবং আমাদের দীর্ঘদিনের শত্রু।’
বার্গম্যান প্রশ্ন তোলেন, ‘এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র কী পাচ্ছে? রাশিয়া কী ধরনের ছাড় দিচ্ছে? আমরা রাশিয়া থেকে কী আদায় করতে পারছি?’
যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে কী অর্জন করবে, ইউরোপের অর্জন কী হবে, রাশিয়া কতটা লাভবান হবে এবং সর্বোপরি ইউক্রেন ও ইউক্রেনের জনগণ কী পাবে—এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস থেকে অনুবাদ করেছে আব্দুর রহমান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন গত বুধবার রাতে রাষ্ট্রীয় বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে ফ্লোরিডা থেকে ফিরছিলেন, তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে সৎভাবে আলোচনা করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন কিনা?
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হতে দেখতে চায়, সত্যিই তাই।’ ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, সংঘাতে মস্কোর অবস্থান শক্তিশালী। রাশিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা অনেক এলাকা দখল করেছে। সুতরাং, (আলোচনার শর্ত নির্ধারণের) তাস তাদের হাতেই।’
২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান। কিন্তু তার পরও, গত ১০ দিনে তিনি যেভাবে সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার পথ তৈরি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তা চোখ ধাঁধানো। এই বিষয়টি আমেরিকার পশ্চিমা মিত্রদের হতবাক করেছে এবং ন্যাটো ঐক্যের ভাঙন ধরার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত আলোচনার বাইরে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ, সৌদি আরবে তাঁর কূটনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এবং ট্রেজারি সেক্রেটারি তথা অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কিথ কেলোগকে কিয়েভে পাঠিয়ে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি, যাতে তারা সমঝোতার পথে হাঁটে।
এ ছাড়া, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করেছেন, তাঁকে ‘একনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্পের ভাষায়, জেলেনস্কি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছেন এবং রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের জন্য মূলত দায়ী জেলেনস্কিই।
এই অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন নীতির এক নাটকীয় মোড়। তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে নীতি গ্রহণ করেছিল তার থেকে ট্রাম্পের অবস্থান অনেক দূরে। ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসন কিয়েভের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন, মস্কোকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা এবং পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কৌশল অনুসরণ করেছিল।
কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে দেখছে, যা অন্তত গত দুই দশকে করা হয়নি। অন্তত ২০০৮ সালে জর্জিয়ায় পুতিনের আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তও নয়। সে সময় থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো পুতিনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সতর্ক হতে শুরু করে।
এই পরিবর্তন শুধু রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কেই নয়, বরং ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও আমেরিকার সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। কয়েক দশক ধরে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের ভিত্তি যতটা শক্তিশালী ছিল, তা এখন তীব্র পরীক্ষার মুখে।
ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপের মিত্ররা, কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা এবং ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন যে, তিনি ‘বলপ্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ অর্জনের নীতির অনুসরণ করবেন। কিন্তু এর পরিবর্তে, তিনি দ্রুতই মস্কোর ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন। এই বিষয়টি বিশ্লেষকদের বিভ্রান্ত করেছে এবং তারা বুঝতে চেষ্টা করছেন যে, তাঁর নতুন কৌশল ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ক্রমবর্ধমান বহুমেরুক বিশ্ব ব্যবস্থায় আমেরিকার অবস্থানের জন্য কী ইঙ্গিত বহন করছে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির ট্রান্স-আটলান্টিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক আন্দ্রেয়া কেন্ডাল-টেইলর বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য হলো যেকোনো মূল্যে যুদ্ধের অবসান ঘটানো।’ কিন্তু ভবিষ্যতে এর সম্ভাব্য পরিণতি কী বা কেমন হতে পারে সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে না।
কেন্ডাল-টেইলর বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো, পুতিন কার্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ছাড় আদায় করে ভবিষ্যতে আরও আগ্রাসনের পথ সুগম করবেন। এটি কেবল পুতিনের আরও তৎপর হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো ছাড়া কিছুই নয়।’
কোলোরাডোর ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য জেসন ক্রো ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘বেশির ভাগ যুদ্ধের মতো’, ইউক্রেন যুদ্ধও শেষ পর্যন্ত আলোচনা টেবিলে গিয়ে গড়াবে, তবে ট্রাম্প সঠিক পদ্ধতিতে এটি করছেন না। তিনি বলেন, ‘প্রত্যক্ষ আলোচনার শুরুতেই ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে দেখা করে ট্রাম্প ভুল বার্তা দিয়েছেন এবং পুরো প্রক্রিয়াটিকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন।’
জেসন ক্রো আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া ও ইউক্রেন নীতি অস্থির এবং অসংগতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই নীতি প্রতিদিন টুইটের মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরা স্পষ্টতই পরস্পরবিরোধী বিবৃতি দিচ্ছেন এবং কখনো কখনো একে অপরের পরিপন্থী কাজ করছেন।’
মার্কিন-রাশিয়া পুনর্মিলনের এই ঝোড়ো প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন আলোচনা শুরুর মাধ্যমে। মার্কিন নাগরিক মার্ক ফোগেলকে মুক্তির জন্য একটি বন্দী বিনিময় চুক্তির ব্যবস্থা করতে এই আলোচনা শুরু করা হয়েছিল। ২০২১ সালের আগস্টে ফোগেলকে রাশিয়ায় গাঁজা নিয়ে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়।
উইটকফ ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে মস্কো যান এবং ফোগেলকে মুক্ত করে দেশে ফেরত আনেন। একই সঙ্গে তিনি সেখানে পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পর উইটকফ বলেন, ‘এটির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আমি মনে করি, এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের তরফ থেকে সৎ সদিচ্ছার পরিচায়ক ছিল...এবং এটি অনেক ইতিবাচক দিকের সূচনা করেছে।’
ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত সপ্তাহে গাজা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য আগেই রিয়াদে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাই ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য সৌদি আরবের রাজধানী ছিল যৌক্তিক স্থান। গত মঙ্গলবার সৌদি কর্মকর্তারা রিয়াদের দিরিয়াহ প্রাসাদে আমেরিকা ও রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের স্বাগত জানায়। সেখানে উভয় পক্ষ সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে আলোচনা করে।
পরে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা অনুভব করেছেন যে—রুশ কর্মকর্তারা খোলা মন নিয়ে আলোচনা করেছেন, ঐতিহাসিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বক্তৃতা দেননি। আলোচনার পর রুবিও বলেন, ‘আজকের আলোচনার পর আমি নিশ্চিত যে, তাঁরা (রাশিয়া) একটি গুরুতর প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে ইচ্ছুক, যাতে বোঝা যায় কীভাবে, কত দ্রুত এবং কোন পদ্ধতির মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়। তবে শেষ পর্যন্ত এটি নির্ভর করবে সংঘাতে জড়িত প্রতিটি পক্ষের কিছু বিষয় মেনে নেওয়ার সদিচ্ছার ওপর।’
জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেওয়া রিপাবলিকানদের মধ্যে কিছু আইনপ্রণেতা ট্রাম্পের রাশিয়া নীতির কারণে উদ্বিগ্ন। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর জন কেনেডি বলেন, ‘হোয়াইট হাউস যদি বলে যে, ইউক্রেন এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাহলে আমি একমত নই। আমি মনে করি, ভ্লাদিমির পুতিনই যুদ্ধ শুরু করেছেন। এ ছাড়া, তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমি বুঝেছি, ভ্লাদিমির পুতিন একজন গ্যাংস্টার।’
তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনাকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন এবং দলের ভেতরে যেকোনো সমালোচনা শুরুর আগেই দমনের চেষ্টা করেছেন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, তারা এমন একটি সংঘাতের সমাপ্তি টানতে চাইছেন যা তিন বছর ধরে চলমান।
গত বৃহস্পতিবার ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি রাশিয়ার সঙ্গে কথা না বলে কীভাবে যুদ্ধ শেষ করবেন? যদি সত্যিই সংঘাত বন্ধ করতে চান, তাহলে লড়াইয়ে জড়িত প্রতিটি পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শান্তি রাশিয়ার স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ইউক্রেনের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ইউরোপের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শান্তি আমেরিকার জনগণের স্বার্থের জন্য অপরিহার্য।’
উইটকফের মস্কো সফরের আগে ট্রাম্প ও তাঁর দল আশঙ্কা করছিল যে, পুতিন হয়তো আলোচনার টেবিলে আসতে জেলেনস্কির তুলনায় কম আগ্রহী। এমনকি তাঁরা মস্কোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে রুশ জ্বালানি খাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
কিন্তু গত সপ্তাহে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের অধিকার সংক্রান্ত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় ট্রাম্পের মনোভাব জেলেনস্কির প্রতি নেতিবাচক হয়ে ওঠে। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ব্যবসার আয়কৃত রাজস্বের অর্ধেক পেত।
হোয়াইট হাউসে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি খুবই হতাশ, কারণ তিনি আলোচনার টেবিলে আসেননি, তিনি (জেলেনস্কি) এই সুযোগ গ্রহণ করতে রাজি হননি। আমি মনে করি, শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি হবেন এবং আমি আশা করি এটি খুব দ্রুত ঘটবে।’
ব্রিটিশ থিংক ট্যাংক সিগনাম গ্লোবাল অ্যাডভাইজার্সের গ্লোবাল পলিসি গবেষণা প্রধান অ্যান্ড্রু বিশপ মনে করেন, ট্রাম্প উপলব্ধি করেছেন, যুদ্ধের স্থবিরতা ভাঙতে তাঁকে ‘নাটকীয় কিছু’ করতে হবে এবং তিনি রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করাকে বেশি সুবিধাজনক মনে করেছেন। তিনি বলেন, ‘জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের অনীহা এবং রাশিয়ার ওপর কঠোর তেল নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক খরচ বিবেচনায় নিয়ে, তিনি ইউক্রেনকেই টার্গেট করেছেন।’
জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সমালোচনা অনেকের কাছে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক ঠেকছে। ট্রাম্পের প্রথম দফা শাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন বোল্টন বলেন, ‘তিনি মনে করেন, পুতিন ও তিনি বন্ধু, আর তিনি জেলেনস্কিকে পছন্দ করেন না। ট্রাম্প এমন সব কথা বলছেন, যা রাশিয়া চায় বিশ্ব বিশ্বাস করুক, অথচ সেগুলো সত্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবার যখন আপনি এই বিষয়ে দৃষ্টিপাত করবেন, ততবার দেখবেন ট্রাম্প পুতিনকে আরও বড় সুবিধা দিয়ে দিচ্ছেন।’
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ম্যাক্স বার্গম্যান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত একটি গণতান্ত্রিক দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে, যে দেশটি স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, অথচ যার প্রতিপক্ষ একনায়ক এবং আমাদের দীর্ঘদিনের শত্রু।’
বার্গম্যান প্রশ্ন তোলেন, ‘এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র কী পাচ্ছে? রাশিয়া কী ধরনের ছাড় দিচ্ছে? আমরা রাশিয়া থেকে কী আদায় করতে পারছি?’
যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে কী অর্জন করবে, ইউরোপের অর্জন কী হবে, রাশিয়া কতটা লাভবান হবে এবং সর্বোপরি ইউক্রেন ও ইউক্রেনের জনগণ কী পাবে—এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস থেকে অনুবাদ করেছে আব্দুর রহমান
ভারতের বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন টেক মোগল ইলন মাস্ক। রাজধানী নয়াদিল্লি ও মুম্বাইয়ে শোরুম স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে টেসলা। পাশাপাশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াও জোরদার করছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মাস্কের
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি এবং উচ্চ বৈদেশিক ঋণের চাপে রয়েছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি এসব দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার সক্ষমতাকে সীমিত করছে।
১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বেইজিং সফর শুরু করেছেন। এই দলে রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজের সদস্য, শিক্ষাবিদ এবং সাংবাদিকেরা রয়েছেন। এই দলটি গতকাল সোমবার ১০ দিনের সফরে চীন গেছে। প্রতিনিধি দলের এক নেতা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা চীন সরকার ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদ
৩ দিন আগেবিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি নতুন প্রশাসন ওয়াশিংটনে ক্ষমতায় বসেছে। এই প্রশাসন সরকারি আমলাতন্ত্রকে আরও কার্যকর করতে কর্পোরেট দক্ষতা ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। তারা লাখ লাখ সরকারি কর্মচারীকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এবং বাজেটে ভারসাম্য
৪ দিন আগে