Ajker Patrika

যেভাবে নিজেকে ‘সুরক্ষিত’ রাখছেন পুতিন

আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২, ২৩: ৪৪
যেভাবে নিজেকে ‘সুরক্ষিত’ রাখছেন পুতিন

যুদ্ধের সময় কারও ভাবনায়ই জটিল সমাধান আসে না, আসে সহজ সমাধান। ইউক্রেন ইস্যুতে দুটি সহজ ভাবনা কল্পনা করা যাক। এক. হুট করেই একদিন ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন। দুই. রাশিয়ায় ক্ষমতায় নেই পুতিন, যুদ্ধ বন্ধ করে রাশিয়া ইউক্রেন এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করল। কিন্তু বাস্তবতা হলো—পুতিন আপাতত যুদ্ধ বন্ধ করছেন এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। আর তাঁর জায়গায় কেউই আসার সম্ভাবনা রয়েছে কি না তা দেখে নেওয়া যাক। 

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে রুশ সাংবাদিক ওলেক কাশিন বলেছেন, ‘পশ্চিমাদের ভাবনা আসলে এটা নিয়েই। কেন রাশিয়ার ভেতরে পুতিনের দলের কেউই কেন তাঁকে সরিয়ে দিতে পারছে না।’ নিয়ম যতই কড়া হোক না কেন যে কোনো দেশে চাইলেই এমন হতে পারে। অনেক বছর চেষ্টার পর রুশ সরকারের একটি বড় ফাঁকে প্রবেশ করতে পেরেছিল পশ্চিমারা। 

ফাঁকটি হলো দুর্নীতি। পুতিনবিরোধী শিবিরের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি এমন কিছু ডকুমেন্টও প্রকাশ করেছিলেন। পুতিনের জনপ্রিয়তা কমার সুযোগ ছিল তখন। কিন্তু দুর্নীতি এমন একটি বিষয় যা কোনো সিস্টেমকে সহজে কলুষিত করতে পারলেও দায়ীকে আটকাতে পারে না। বিশেষ করে পুতিনের বানানো সিস্টেমে পুতিনকে আটকানো তো আরও সম্ভব নয়ই। 

নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুতিন নিজের দুর্নীতির অভিযোগ ঢেকে সেই দুর্নীতিকেই ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করে পুতিন নিজের দলের ‘পথ ভ্রষ্টদের’ সাজা দেন। বেছে বেছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অনেককেই এই শাস্তি দিয়েছেন তিনি। প্রথমদিকে কেউ ব্যাপারটি বুঝতে না পারলেও এখন বোঝা যাচ্ছে, তাঁর এই সিদ্ধান্তগুলো আসলে রাজনৈতিক। 

পুতিনের সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী অ্যালেক্সেই উলিয়ুকায়েভের কথাই আমলে নেওয়া যাক। পুতিনের বন্ধু ইগর সেচিনের সঙ্গে এই মন্ত্রীর দ্বন্দ্বের পর সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। রাশিয়ায় এখন দুর্নীতির আরেক নাম ‘উসকানি’। পুতিনে কথা মতো চললে যেকোনো দুর্নীতি করা যাবে। কিন্তু তাঁর কথা না শুনলে কিংবা তাঁর সন্দেহ হলেই যেতে হবে জেলে। 

ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের সময় এ সিস্টেমকে সমূলে উৎপাটনের সুযোগ ছিল। রাশিয়ার বাইরে থাকা সব সম্পত্তি হারানোর শঙ্কায় ছিল দেশটির ‘অলিগার্ক’ বলে খ্যাত এলিট শ্রেণির একটি অংশ। এতে, তাঁদের যাবতীয় ক্ষোভ পুতিনের ওপরই পড়ার কথা ছিল। কিন্তু পুতিনের কৌশলী কূটনীতিক চালের কারণে সেই সম্ভাবনাও তিরোহিত হয়ে যায়। 

ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বা অবদানের কারণে কোনো সামরিক কর্মকর্তারও জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার উপায় নেই। পুতিন সেই পথও বন্ধ রেখেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের নাম গোপন রাখা হচ্ছে। দেশটিতে তিনি ছাড়া তাঁর দলের কারও জনপ্রিয়তা বাড়েনি। যারা একটু আলোচনায় এসেছেন তাঁরা সবাই পুতিনের অনেক বেশি বিশ্বস্ত এবং অন্য যারা আলোচনায় আসার চেষ্টা করেছেন তাদেরই কৌশলে শান্ত করে দিয়েছেন পুতিন। এভাবেই পুতিন দিনের পর দিন নিজের ক্ষমতাকে সুসংহত এবং সুরক্ষিত করে রেখেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

ডিটারজেন্ট, তেল ও সোডা দিয়ে ভেজাল দুধ তৈরি, সরবরাহ মিল্ক ভিটায়

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান—৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

১৫৮ বছর আগে হারানো আলাস্কাতেই কি ইউক্রেনের জমি লিখে নেবে রাশিয়া

জট খুলছে ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড ক্রয়ের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত