Ajker Patrika

ইইউ-ট্রাম্পের নতুন নিষেধাজ্ঞাকে থোড়াই কেয়ার করছেন পুতিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সিএনএন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সিএনএন

এক সপ্তাহ আগেও মনে হচ্ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কৌশলে ব্যবহার করে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন পুতিন। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাশিয়ার অর্থনীতির মূল খাত জ্বালানি তেল শিল্পের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ।

এর পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। যেখানে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এলএনজি রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান উৎস বলে বিবেচিত।

তবে রুশ বিশ্লেষকদের মতে, এ পদক্ষেপ পুতিনের যুদ্ধনীতিতে খুব একটা পরিবর্তন আনবে না। রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্তানোভায়া বলছেন, রুশ কোম্পানিগুলো অনেক আগেই এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তাঁর ভাষায়, পুতিন যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে বড় ধরনের ক্ষতিও মেনে নিতে প্রস্তুত, আর ট্রাম্পের অবস্থানও সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে পারে।

রুশ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে স্তানোভায়া বলেন, রাশিয়া কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলবে, ঠিক আছে, তিন মাস পর ট্রাম্প নিজেই নরম হয়ে যাবে। আর পুতিনের কাছে এই যুদ্ধ অস্তিত্বের প্রশ্ন, তাই তিনি সহ্য করেই যাবেন।

গতকাল বুধবার তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যায়, যা নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত। তবে এর কার্যকারিতা শেষ পর্যন্ত নির্ভর করবে এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন এবং জ্বালানি ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়ার ওপর। নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো মূলত রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুক অয়েল এবং সারা বিশ্বে তাদের সঙ্গে ব্যবসা করা যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির ওপর আরোপ করেছে।

রাশিয়ার মোট বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসে তেল ও গ্যাস বিক্রি থেকে। তবে ইউক্রেনের উন্নত ড্রোন ও দীর্ঘপাল্লার হামলায় তেল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিল্প খাত এরই মধ্যে চাপে রয়েছে। তবুও রুশ বিশ্লেষকেরা মনে করেন, নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সীমিতই থাকবে।

তাঁরা উল্লেখ করেন, রাশিয়া এরই মধ্যে পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে যাওয়ার দক্ষতা অর্জন করেছে। দেশটি শত শত পুরোনো জাহাজ ব্যবহার করে, যেগুলোর কোনো পশ্চিমা বিমা নেই এবং তৃতীয় দেশের ছদ্ম কোম্পানির মাধ্যমে লেনদেন চালায়। তা ছাড়া বিশ্বের জ্বালানি তেলের বাজারের প্রায় ৯ শতাংশ রাশিয়ার। ফলে রুশ তেল বিশ্ববাজারে রপ্তানি না হলে সরবরাহও কমবে এবং দাম বাড়বে। এতে নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়বে।

কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সের্গেই ভাকুলেনকো বলেন, লুকওয়েল সমস্যায় পড়বে বটে, কিন্তু সেটি লুকওয়েলের সমস্যা, রাশিয়ার নয়।

পুতিন প্রশাসন বহু আগেই জানত নিষেধাজ্ঞা আসছে। তাই রাশিয়া এখন বিকল্প রুট, পুরোনো জাহাজ বহর ও ফাটকা কোম্পানির জটিল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তেল রপ্তানি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। অর্থাৎ ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও রাশিয়া তার প্রভাব আংশিকভাবে অকার্যকর করে দিতে পারবে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...