অনলাইন ডেস্ক
গত বছরের নির্বাচনী প্রচারে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিনিদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সমৃদ্ধির এক নতুন যুগ আনবেন। কিন্তু তাঁর প্রেসিডেন্সির দুই মাস পর তিনি একে অন্য রকম এক পটভূমিতে উপস্থাপন করছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, মূল্যস্ফীতি কমানো কঠিন এবং জনগণকে ‘সাময়িক এই অসুবিধা’ সহ্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তবেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, ট্রাম্পের নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র মন্দার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। তবে কি ট্রাম্প বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে মন্দার শুরু করতে চলেছেন?
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা এক দীর্ঘকালব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক অবনতির অবস্থা, যা সাধারণত বেকারত্ব বৃদ্ধি ও আয় কমে যাওয়ার মাধ্যমে বোঝা যায়। একদল অর্থনৈতিক বিশ্লেষক সম্প্রতি সতর্ক করেছে, মন্দার পরিস্থিতির ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জেপি মরগানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মন্দার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ। বছরের শুরুতে এই আশঙ্কা ছিল ৩০ শতাংশ। জেপি মরগান সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ‘বৃদ্ধি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।’ বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জ্যাঁদির মতে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা ১৫ থেকে বেড়ে ৩৫ শতাংশে উঠে গেছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০টি বৃহত্তম কোম্পানির শেয়ারবাজার এসঅ্যান্ডপি-৫০০ এর পতনের পরপরই এই পূর্বাভাসগুলো দেওয়া হয়েছে। এই বাজারের সূচক গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাজারের এই অস্থিরতা আংশিকভাবে ট্রাম্পের নীতির কারণে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তিন বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন এবং আরও বিস্তৃত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়াবে এবং প্রবৃদ্ধি কমাবে।
ট্রাম্প এবং তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জনগণকে কিছু অর্থনৈতিক কষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন, তবে বাজারের উদ্বেগকে উপেক্ষা করেছেন। এই অবস্থান ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের তুলনায় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। সে সময় তিনি প্রায়ই শেয়ারবাজারকে তাঁর নিজের সাফল্যের মাপকাঠি হিসেবে উল্লেখ করতেন।
গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীরা অর্থনীতি নিয়ে আরও নিশ্চয়তা চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘সব সময় পরিবর্তন ঘটবে তবে সামঞ্জস্যও থাকবে।’ এই অবস্থান তাঁর পরিকল্পনার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাচ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা ১৫ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। তারা বলেছে, তারা ট্রাম্পের নীতিগত পরিবর্তনকে দেশটির ‘অর্থনীতির প্রধান ঝুঁকি’ হিসেবে দেখছে। তবে তারা উল্লেখ করেছে, হোয়াইট হাউসের কাছে ‘যদি পতনের ঝুঁকি আরও গুরুতর হয়ে উঠলে তারা হয়তো নীতি পুনর্বিবেচনা করবে।’
গোল্ডম্যান স্যাচের বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘যদি হোয়াইট হাউস তাদের নীতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকে, তবে মন্দার ঝুঁকি আরও বাড়বে।’
অনেক কোম্পানির জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে ট্যারিফ। আমদানি পণ্যের ওপর কর আরোপের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়িয়ে দেবে। ট্রাম্প শুল্ক পরিকল্পনা ঘোষণার পর, অনেক কোম্পানি এখন কম মুনাফা পাচ্ছে এবং তারা বিনিয়োগ এবং নিয়োগে বিরতি নিয়েছে। কারণ, তারা ভবিষ্যৎ কী হবে তা বুঝতে চেষ্টা করছে।
বিনিয়োগকারীরা সরকারি কর্মচারী সংখ্যা কমানোর এবং সরকারি খরচ কমানোর বিষয়েও উদ্বিগ্ন। স্টিফেল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের নীতি কৌশল বিভাগের প্রধান ব্রায়ান গার্ডনার বলেন, ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীরা ভাবছিলেন যে, ট্রাম্প শুল্ককে আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন।
গার্ডনার বলেন, ‘কিন্তু প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর মন্ত্রিপরিষদ যা সংকেত দিচ্ছে তা আসলে একটি বড় বিষয়। এটি আমেরিকান অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং এটাই গত কয়েক সপ্তাহে বাজার প্রভাবিত করেছে, বলা ভালো পরিচালিত করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগে থেকেই ধীর গতিতে চলছিল। এর আংশিক কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সুদহার বাড়িয়ে রেখেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, কিছু তথ্য মার্কিন অর্থনীতির আরও দ্রুত দুর্বলতার লক্ষণ দেখাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে খুচরা বিক্রি কমে গেছে। বাজারের প্রতি আত্মবিশ্বাস এখন কমে গেছে এবং বড় বড় কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন এয়ারলাইনস, ওয়ালমার্ট, টার্গেট এবং উৎপাদনকারীরা বাজার থেকে পণ্য প্রত্যাহারের সতর্কতা দিয়েছে। অথচ, ট্রাম্পের নির্বাচনে জয় লাভের পর বেশ কয়েকটি জরিপে বাজারের প্রতি আস্থা ছিল সবার।
কিছু বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, শেয়ারবাজারের পতন আরও বড়সড় ব্যয় সংকোচন তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর এক বড় আঘাত হয়ে উঠতে পারে। কারণ, পুঁজিবাজার ভোক্তাদের ব্যয়ে চালিত এবং এখন এটি আরও বেশি বেশি উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোর ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। কারণ, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো মূল্যস্ফীতির কারণে চাপের মুখে আছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান জেরোম পাওয়েল গত সপ্তাহে এক বক্তৃতায় আশ্বস্ত করেছেন যে, সম্প্রতি অনিশ্চিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মাত্রার অনিশ্চয়তার পরও মার্কিন অর্থনীতি এখনো ভালো অবস্থানে আছে।’
ব্রোক্রার ট্রেডিং কোম্পানি এক্সবিটির গবেষণা পরিচালক ক্যাথলিন ব্রুক সতর্ক করে বলেছেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। তিনি বলেন, ‘ট্যারিফ যদি এই সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে এবং যদি একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগেই ধীর হয়ে যায়. . তবে তা সত্যিই মন্দার আশঙ্কাকে উসকে দিচ্ছে।’
তবে বাজারের অস্থিরতা কেবল ট্রাম্পের কারণে নয়। গত দুই বছর বড় লাভের পর বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্প আসার পর শেয়ারবাজারে সূচকের পরিবর্তনের (১০-২০ শতাংশ পতন) সম্ভাবনার কারণে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এই প্রবৃদ্ধি হয়েছিল মূলত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের আকস্মিক বৃদ্ধির। বিশেষ করে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী মনোভাবের কারণে এই বৃদ্ধি হয়েছিল।
উদাহরণস্বরূপ, ধরা যেতে পারে এনভিডিয়ার কথা। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য ছিল ১৫ ডলারের নিচে, কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে শেয়ার মূল্য প্রায় ১৫০ ডলারে পৌঁছে যায়। এ ধরনের বৃদ্ধির ফলে ‘এআই বুদ্বুদ’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এখন বিনিয়োগকারীরা এই বুদবুদে ফেটে যাওয়ার দিকে নজর রাখছে। এমনটা হলে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
এখন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ‘অন্ধকার দৃষ্টিভঙ্গি’ উন্মোচিত হচ্ছে, তখন এআই সম্পর্কিত আশাবাদ টিকিয়ে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। ডিপওয়াটার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রযুক্তি বিশ্লেষক জিন মুনস্টার এই সপ্তাহে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, তাঁর আশাবাদ ‘এক ধাপ পিছিয়ে গেছে’ এবং গত মাসে মন্দার সম্ভাবনা ‘গুরুতরভাবে’ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জিন মুনস্টার লিখেছেন, ‘মূল বিষয় হলো, যদি আমরা মন্দার মধ্যে ঢুকি, তবে এআই খাতে আগের মতো আশাবাদ বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।’
বিবিসি অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান
গত বছরের নির্বাচনী প্রচারে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিনিদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সমৃদ্ধির এক নতুন যুগ আনবেন। কিন্তু তাঁর প্রেসিডেন্সির দুই মাস পর তিনি একে অন্য রকম এক পটভূমিতে উপস্থাপন করছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, মূল্যস্ফীতি কমানো কঠিন এবং জনগণকে ‘সাময়িক এই অসুবিধা’ সহ্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তবেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, ট্রাম্পের নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র মন্দার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। তবে কি ট্রাম্প বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে মন্দার শুরু করতে চলেছেন?
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা এক দীর্ঘকালব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক অবনতির অবস্থা, যা সাধারণত বেকারত্ব বৃদ্ধি ও আয় কমে যাওয়ার মাধ্যমে বোঝা যায়। একদল অর্থনৈতিক বিশ্লেষক সম্প্রতি সতর্ক করেছে, মন্দার পরিস্থিতির ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জেপি মরগানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মন্দার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ। বছরের শুরুতে এই আশঙ্কা ছিল ৩০ শতাংশ। জেপি মরগান সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ‘বৃদ্ধি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।’ বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জ্যাঁদির মতে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা ১৫ থেকে বেড়ে ৩৫ শতাংশে উঠে গেছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০টি বৃহত্তম কোম্পানির শেয়ারবাজার এসঅ্যান্ডপি-৫০০ এর পতনের পরপরই এই পূর্বাভাসগুলো দেওয়া হয়েছে। এই বাজারের সূচক গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাজারের এই অস্থিরতা আংশিকভাবে ট্রাম্পের নীতির কারণে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তিন বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন এবং আরও বিস্তৃত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়াবে এবং প্রবৃদ্ধি কমাবে।
ট্রাম্প এবং তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জনগণকে কিছু অর্থনৈতিক কষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন, তবে বাজারের উদ্বেগকে উপেক্ষা করেছেন। এই অবস্থান ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের তুলনায় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। সে সময় তিনি প্রায়ই শেয়ারবাজারকে তাঁর নিজের সাফল্যের মাপকাঠি হিসেবে উল্লেখ করতেন।
গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীরা অর্থনীতি নিয়ে আরও নিশ্চয়তা চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘সব সময় পরিবর্তন ঘটবে তবে সামঞ্জস্যও থাকবে।’ এই অবস্থান তাঁর পরিকল্পনার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাচ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা ১৫ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। তারা বলেছে, তারা ট্রাম্পের নীতিগত পরিবর্তনকে দেশটির ‘অর্থনীতির প্রধান ঝুঁকি’ হিসেবে দেখছে। তবে তারা উল্লেখ করেছে, হোয়াইট হাউসের কাছে ‘যদি পতনের ঝুঁকি আরও গুরুতর হয়ে উঠলে তারা হয়তো নীতি পুনর্বিবেচনা করবে।’
গোল্ডম্যান স্যাচের বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘যদি হোয়াইট হাউস তাদের নীতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকে, তবে মন্দার ঝুঁকি আরও বাড়বে।’
অনেক কোম্পানির জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে ট্যারিফ। আমদানি পণ্যের ওপর কর আরোপের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়িয়ে দেবে। ট্রাম্প শুল্ক পরিকল্পনা ঘোষণার পর, অনেক কোম্পানি এখন কম মুনাফা পাচ্ছে এবং তারা বিনিয়োগ এবং নিয়োগে বিরতি নিয়েছে। কারণ, তারা ভবিষ্যৎ কী হবে তা বুঝতে চেষ্টা করছে।
বিনিয়োগকারীরা সরকারি কর্মচারী সংখ্যা কমানোর এবং সরকারি খরচ কমানোর বিষয়েও উদ্বিগ্ন। স্টিফেল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের নীতি কৌশল বিভাগের প্রধান ব্রায়ান গার্ডনার বলেন, ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীরা ভাবছিলেন যে, ট্রাম্প শুল্ককে আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন।
গার্ডনার বলেন, ‘কিন্তু প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর মন্ত্রিপরিষদ যা সংকেত দিচ্ছে তা আসলে একটি বড় বিষয়। এটি আমেরিকান অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং এটাই গত কয়েক সপ্তাহে বাজার প্রভাবিত করেছে, বলা ভালো পরিচালিত করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগে থেকেই ধীর গতিতে চলছিল। এর আংশিক কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সুদহার বাড়িয়ে রেখেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, কিছু তথ্য মার্কিন অর্থনীতির আরও দ্রুত দুর্বলতার লক্ষণ দেখাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে খুচরা বিক্রি কমে গেছে। বাজারের প্রতি আত্মবিশ্বাস এখন কমে গেছে এবং বড় বড় কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন এয়ারলাইনস, ওয়ালমার্ট, টার্গেট এবং উৎপাদনকারীরা বাজার থেকে পণ্য প্রত্যাহারের সতর্কতা দিয়েছে। অথচ, ট্রাম্পের নির্বাচনে জয় লাভের পর বেশ কয়েকটি জরিপে বাজারের প্রতি আস্থা ছিল সবার।
কিছু বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, শেয়ারবাজারের পতন আরও বড়সড় ব্যয় সংকোচন তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর এক বড় আঘাত হয়ে উঠতে পারে। কারণ, পুঁজিবাজার ভোক্তাদের ব্যয়ে চালিত এবং এখন এটি আরও বেশি বেশি উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোর ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। কারণ, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো মূল্যস্ফীতির কারণে চাপের মুখে আছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান জেরোম পাওয়েল গত সপ্তাহে এক বক্তৃতায় আশ্বস্ত করেছেন যে, সম্প্রতি অনিশ্চিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মাত্রার অনিশ্চয়তার পরও মার্কিন অর্থনীতি এখনো ভালো অবস্থানে আছে।’
ব্রোক্রার ট্রেডিং কোম্পানি এক্সবিটির গবেষণা পরিচালক ক্যাথলিন ব্রুক সতর্ক করে বলেছেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। তিনি বলেন, ‘ট্যারিফ যদি এই সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে এবং যদি একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগেই ধীর হয়ে যায়. . তবে তা সত্যিই মন্দার আশঙ্কাকে উসকে দিচ্ছে।’
তবে বাজারের অস্থিরতা কেবল ট্রাম্পের কারণে নয়। গত দুই বছর বড় লাভের পর বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্প আসার পর শেয়ারবাজারে সূচকের পরিবর্তনের (১০-২০ শতাংশ পতন) সম্ভাবনার কারণে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এই প্রবৃদ্ধি হয়েছিল মূলত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের আকস্মিক বৃদ্ধির। বিশেষ করে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী মনোভাবের কারণে এই বৃদ্ধি হয়েছিল।
উদাহরণস্বরূপ, ধরা যেতে পারে এনভিডিয়ার কথা। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য ছিল ১৫ ডলারের নিচে, কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে শেয়ার মূল্য প্রায় ১৫০ ডলারে পৌঁছে যায়। এ ধরনের বৃদ্ধির ফলে ‘এআই বুদ্বুদ’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এখন বিনিয়োগকারীরা এই বুদবুদে ফেটে যাওয়ার দিকে নজর রাখছে। এমনটা হলে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
এখন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ‘অন্ধকার দৃষ্টিভঙ্গি’ উন্মোচিত হচ্ছে, তখন এআই সম্পর্কিত আশাবাদ টিকিয়ে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। ডিপওয়াটার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রযুক্তি বিশ্লেষক জিন মুনস্টার এই সপ্তাহে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, তাঁর আশাবাদ ‘এক ধাপ পিছিয়ে গেছে’ এবং গত মাসে মন্দার সম্ভাবনা ‘গুরুতরভাবে’ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জিন মুনস্টার লিখেছেন, ‘মূল বিষয় হলো, যদি আমরা মন্দার মধ্যে ঢুকি, তবে এআই খাতে আগের মতো আশাবাদ বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।’
বিবিসি অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব একসময় নিরঙ্কুশ ছিল। কিন্তু এখন পররাষ্ট্রনীতিতে অবিমৃশ্যকারিতার কারণে দেশটির অবস্থান টালমাটাল। ২০২৩ সালের জুনে ভারতের নতুন সংসদ ভবনে ‘অখণ্ড ভারত’–এর একটি মানচিত্র রাখা হয়েছে, যেখানে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কাকে এর অংশ দেখান
৯ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতি দিয়ে কৌশলগতভাবে রাশিয়াকে চাপে ফেলেছে ইউক্রেন। এত দিন শান্তির কথা বলার পর এখন যদি রাশিয়া বেঁকে বসে, তাহলে খলনায়ক হয়ে যেতে পারে মস্কো। পুতিন সব সময়ই শান্তির কথা বলে মুখে ফেনা তুললেও তিনি এখনো ‘তালগাছটি আমার’ অবস্থান নিয়েই আছেন...
১ দিন আগেকানাডার পণ্যের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক দেশটির নেতাদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় অন্টারিও প্রদেশ আমেরিকান মদ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড তিনটি মার্কিন রাজ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছেন।
১ দিন আগেচীনে এআইভিত্তিক ব্যবসা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এরই মধ্যে ৪ হাজার ৫০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান এআই নিয়ে কাজ করছে। বেইজিংয়ের স্কুলগুলোতে শিশুদের জন্য এআই কোর্স চালু করা হবে, আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এআই শিক্ষা সম্প্রসারণে কাজ করে চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আগামী ১৫ বছরে চীন ১০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান
২ দিন আগে