সম্পাদকীয়
কবি আল্লামা ইকবালের জন্মবার্ষিকী নভেম্বরের ৯ তারিখ। ১৯৭১ সালের সেই ভয়ংকর দিনগুলোয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পালন করা হচ্ছিল ইকবালজয়ন্তী। জনা পনেরো মানুষ, যার মধ্যে চার-পাঁচজন সামরিক কর্মকর্তা। পাকিস্তান যে এখনো টিকে আছে, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা! উপস্থিতদের মধ্যে নাজিম মাহমুদও ছিলেন। সূচনা বক্তব্যের পর ছিল আলোচনা সভা ও কবিতাপাঠ। না বলে দিলে বুঝতে অসুবিধে হতে পারে, বাংলার মাটিতে বাংলার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনুষ্ঠানটি হচ্ছিল, তার পুরোটাই ছিল ইংরেজি ও উর্দুতে ভরা, বাংলার কোনো স্থান সেখানে ছিল না। পুরো অনুষ্ঠানে ব্যতিক্রম ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী। ড. বারী ভাষণ দিয়েছিলেন খাঁটি বাংলা ভাষায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, তিনি বক্তৃতার জন্য বাংলা ভাষাটাই ব্যবহার করতেন। এ নিয়ে দালাল শিক্ষকদের মধ্যে কথা হতো। যেমন সহকর্মী সৈয়দ ইবনে আহমদ এতে খুবই অস্বস্তি বোধ করতেন। তিনি নাজিম মাহমুদকে বললেন, ‘ড. বারীর উচিত ইংরেজিতে বক্তৃতা করা। কারণ, এখানে আর্মি অফিসাররা শুনছেন। তাঁদের সামনে ইমেজ বিল্ডআপ করা দরকার।’
অনুষ্ঠান চলার মাঝেই মাগরিবের নামাজের সময় হলো। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল কে আগে নামাজ পড়বেন। সামরিক কর্তারা কিন্তু সোফায় বসে পা দুলিয়ে সিগারেট ফুঁকতে লাগলেন। এ সময় নাজিম মাহমুদ উপাচার্য ভবনের সামনে পায়চারি করছিলেন। সহকর্মী কলেজ পরিদর্শক ওমর ফারুক মৃদুকণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি মৃত্যুর ভয়ে নার্ভাস হয়ে পড়েছেন?’
নাজিম মাহমুদ কথাটা স্বীকার করে নিলেন। তখন ওমর ফারুক স্পষ্ট প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, এখন আপনি কেমন আছেন? মৃত্যু কি তার চেয়েও ভয়ংকর কিছু?’
এই একটা ছোট্ট প্রশ্ন বদলে দিল নাজিম মাহমুদের জীবন। তাঁর চোখের সামনে থেকে পর্দা সরিয়ে দিল। মৃত্যুভয় যে বর্তমানে কাটানো জীবনের চেয়ে কোনো অংশেই বড় কিছু নয়, সেটা বোঝার পর মন থেকে একটা পাথর সরে গেল।
সূত্র: নাজিম মাহমুদ, যখন ক্রীতদাস: স্মৃতি ৭১, পৃষ্ঠা ৩৪-৩৫
কবি আল্লামা ইকবালের জন্মবার্ষিকী নভেম্বরের ৯ তারিখ। ১৯৭১ সালের সেই ভয়ংকর দিনগুলোয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পালন করা হচ্ছিল ইকবালজয়ন্তী। জনা পনেরো মানুষ, যার মধ্যে চার-পাঁচজন সামরিক কর্মকর্তা। পাকিস্তান যে এখনো টিকে আছে, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা! উপস্থিতদের মধ্যে নাজিম মাহমুদও ছিলেন। সূচনা বক্তব্যের পর ছিল আলোচনা সভা ও কবিতাপাঠ। না বলে দিলে বুঝতে অসুবিধে হতে পারে, বাংলার মাটিতে বাংলার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনুষ্ঠানটি হচ্ছিল, তার পুরোটাই ছিল ইংরেজি ও উর্দুতে ভরা, বাংলার কোনো স্থান সেখানে ছিল না। পুরো অনুষ্ঠানে ব্যতিক্রম ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী। ড. বারী ভাষণ দিয়েছিলেন খাঁটি বাংলা ভাষায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, তিনি বক্তৃতার জন্য বাংলা ভাষাটাই ব্যবহার করতেন। এ নিয়ে দালাল শিক্ষকদের মধ্যে কথা হতো। যেমন সহকর্মী সৈয়দ ইবনে আহমদ এতে খুবই অস্বস্তি বোধ করতেন। তিনি নাজিম মাহমুদকে বললেন, ‘ড. বারীর উচিত ইংরেজিতে বক্তৃতা করা। কারণ, এখানে আর্মি অফিসাররা শুনছেন। তাঁদের সামনে ইমেজ বিল্ডআপ করা দরকার।’
অনুষ্ঠান চলার মাঝেই মাগরিবের নামাজের সময় হলো। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল কে আগে নামাজ পড়বেন। সামরিক কর্তারা কিন্তু সোফায় বসে পা দুলিয়ে সিগারেট ফুঁকতে লাগলেন। এ সময় নাজিম মাহমুদ উপাচার্য ভবনের সামনে পায়চারি করছিলেন। সহকর্মী কলেজ পরিদর্শক ওমর ফারুক মৃদুকণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি মৃত্যুর ভয়ে নার্ভাস হয়ে পড়েছেন?’
নাজিম মাহমুদ কথাটা স্বীকার করে নিলেন। তখন ওমর ফারুক স্পষ্ট প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, এখন আপনি কেমন আছেন? মৃত্যু কি তার চেয়েও ভয়ংকর কিছু?’
এই একটা ছোট্ট প্রশ্ন বদলে দিল নাজিম মাহমুদের জীবন। তাঁর চোখের সামনে থেকে পর্দা সরিয়ে দিল। মৃত্যুভয় যে বর্তমানে কাটানো জীবনের চেয়ে কোনো অংশেই বড় কিছু নয়, সেটা বোঝার পর মন থেকে একটা পাথর সরে গেল।
সূত্র: নাজিম মাহমুদ, যখন ক্রীতদাস: স্মৃতি ৭১, পৃষ্ঠা ৩৪-৩৫
১৯৭১ সালের ১ মার্চ দুপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ৩ মার্চ আসন্ন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। এই প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্তে শুধু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই ক্ষুব্ধ হননি, রাস্তায় নামে বিক্ষুব্ধ সাধারণ জনতা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
৬ দিন আগে...ভাইস চ্যান্সেলর সৈয়দ মোয়াজ্জম হোসেনের কথা বলতে যেয়েই অধ্যাপক রাজ্জাক বললেন: ১৯৫২-তে ভাষা আন্দোলনের সময়ে, আর কিছুর জন্য নয়, সাহসের অভাবে, হি (সৈয়দ মোয়াজ্জম হোসেন) অকেজন্ড মাচ ট্রাবল। আমার মনে আছে যেদিন গুলিটা হলো, ইউনিভার্সিটির ঐ পুরানা দালানে (বর্তমান মেডিকেল কলেজ হসপিটাল বিল্ডিং-এর দক্ষিণ দিক)..
৭ দিন আগেযদি কেউ ভালোবাসা দিবসে তাঁর সঙ্গীর জন্য একটি কার্ড কিনে থাকেন, তাহলে সহজেই বলে দেওয়া যায়—কার্ড কেনা মানুষটি একজন পুরুষ। কারণ সাধারণত পুরুষেরাই নারীদের তুলনায় বেশি রোমান্টিক। এটি একটি সর্বজনবিদিত সত্য, তবে স্বীকৃতি খুবই কম।
২০ দিন আগেএক বছরেও শুকায়নি হৃদয়ের ক্ষত। রক্তাক্ত স্মৃতি বুকে নিয়ে ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। তাঁদের উদ্দেশ্য শুধু ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করা নয়, বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অর্জনও প্রধান লক্ষ্য।
২২ দিন আগে