শিপ্ত বড়ুয়া

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাক নাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি বুদ্ধত্ব ও বোধি জ্ঞান লাভের পর গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ জ্ঞানী বা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত ব্যক্তি। তিনি নিজেকে সাধারণত ‘তথাগত’ বলে আখ্যায়িত করতেন এবং শ্রদ্ধা করে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ‘ভগবা’ বলে সম্বোধন করতেন। অন্যদের কাছে গৌতম কিংবা শাক্যমুনি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন বুদ্ধ।
গৌতম বুদ্ধ যদিও রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার পরও রাজদরবারের বাইরের দুঃখময় পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর জানার আগ্রহ জন্মেছিল। গৌতমকে ছোটকাল থেকে রাজকীয়ভাবে লালন-পালন করেছিল তাঁর পরিবার। তা ছাড়া তাঁর পরিবার সব দিক থেকেই ছিল পরিমিত ও অমলিন। তাঁর উপস্থিতি ছিল সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠ উপহার।
আর গৌতম সেই রাজপরিবারের একমাত্র উত্তরাধিকার ছিলেন। উপযুক্ত, উদ্দীপক, বিশ্বাসী ও মহিমান্বিত ছিলেন তিনি। গৌতম ১৬ বছর বয়সে তাঁর মামাতো বোন যশোধারাকে বিয়ে করেছিলেন। পরে রাহুল নামে তাঁদের এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। যশোধারা ছিলেন ঐশ্বর্যশালী, সব সময় প্রফুল্ল, লাবণ্যময়ী ও মর্যাদাপূর্ণ। রাজপরিবার, সুন্দর স্ত্রী-পুত্র থাকা সত্ত্বেও গৌতমের মনে হয় তাঁর অন্তর বিলাসিতার কাছে আটকা পড়েছে। মনে হলো তিনি যেন সোনার খাঁচায় বন্দী এক পাখি।
হঠাৎ একদিন রাজ্য ভ্রমণে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গৌতম। রাজ্য ভ্রমণে বের হয়ে চার দিনে চারটি ভিন্ন দৃশ্য দেখেন তিনি। প্রথম দিনের ভ্রমণে তিনি একজন বৃদ্ধকে দেখেন, দ্বিতীয় দিনে এক রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, তৃতীয় দিন মরদেহ এবং শেষ দিনে একজন নির্জনবাসী সন্ন্যাসীকে দেখেন। দিনের পর দিন এসব দৃশ্য দেখার পর গৌতমের চিন্তা আসে, ‘জীবন কি তাহলে জন্ম থেকে মৃত্যুর মাঝে একটি ছোট অধ্যায় মাত্র?’ নিজেকে প্রশ্ন করলেন গৌতম—জীবনের শেষ গন্তব্য কোথায়; যেখানে জন্ম কিংবা মৃত্যু নেই?
সিদ্ধার্থ ভবজীবনের তৃষ্ণা ত্যাগ করেছিলেন। স্থির হয়েছিলেন রাজ্য ভ্রমণের শেষ দিনে দেখা সন্ন্যাসীজীবনে। তিনি গভীরভাবে চিন্তা করলেন। সেই সময়ের ভাবনা ছিল গৌতমের গৃহত্যাগের প্রথম অধ্যায়ের সূত্রপাত।
সর্বজনীন দুঃখমুক্তির উপায় জানতে গৌতম দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন এবং অবশেষে গৃহত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ২৯ বছর বয়সে এক রাতে ঘুমন্ত অবস্থার স্ত্রী যশোধারা ও পুত্র রাহুলকে নীরব বিদায় জানিয়ে ব্যক্তিগত ঘোড়া অশ্বকন্থকের পিঠে চড়ে গভীর জঙ্গলের দিকে রওনা হলেন। ইতিহাসের পাতায় গৌতমের গৃহত্যাগ ছিল নজিরবিহীন। এক রাজপরিবারের সন্তান ক্ষমতা, আনন্দ, রাজকীয় জীবন, ধন-সম্পদের মালিকানা ছেড়ে নানা অসুবিধা, অনিশ্চয়তা নিয়ে সন্ন্যাসী হিসেবে বিচরণ শুরু করলেন। গৃহত্যাগের সময় শুধু গেরুয়া রঙের একটি পোশাক ছিল গৌতমের শরীরে, যা দিয়ে প্রবল রোদ, বৃষ্টি, শীত ও বাতাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতেন তিনি। বাস করতে শুরু করলেন পাহাড়ের গুহায় ও জঙ্গলে।
গৌতম তাঁর পূর্ব অবস্থান, সম্পদ, নাম-যশ এবং ক্ষমতা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করলেন। আর নিজের জীবনকে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করলেন। এসব তাঁকে দুঃখমুক্তির পথ অনুসন্ধানে পরিচালিত করে, যা আগে কেউ খোঁজ করেও পায়নি। দীর্ঘ ছয় বছরের কঠোর সাধনা তাঁর জন্য মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গৌতম সেই সময়ের উচ্চতর লেখাপড়া করেছিলেন। এই সময়ে মুক্তির পথের আশায় বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষকের কাছ থেকে ধর্মীয় শিক্ষাও তিনি নিয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন এভাবে অধ্যয়নের পরও তিনি কোনো মুক্তির পথ না দেখে একদিন সন্ন্যাসীদের একটি দলে যোগ দেন। তাঁদের ধ্যানরীতি অনুসরণ করেন তিনি। গৌতম প্রায় বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন যে, এভাবে বুদ্ধত্ব লাভ বা দুঃখমুক্তি হতে পারে। গৌতম প্রচুর ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন। এমনকি তপস্যাতেও অন্যান্য তপস্বীকে তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ উপবাস করতে গিয়ে তিনি যখন দেখলেন, তাঁর শরীরের চামড়া শুকিয়ে গেছে, পেট ও শিরদাঁড়া এক হয়ে গেছে, তখন থেকে অল্প অল্প খেয়ে ধ্যান-সাধনা শুরু করেন তিনি।
গৌতম এমন কঠোরভাবে ধ্যান করেছিলেন, যা এর আগে কেউ করেনি। একসময় এমন ধ্যান-সাধনা করতে থাকলে মারা যেতে পারেন বলে উপলব্ধি এল তাঁর। এক বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে গৌতম গয়ার বোধীবৃক্ষ বা অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে ধ্যানে বসলেন এবং কঠোর ধ্যানে মগ্ন হয়ে পড়লেন। সে সময় তিনি মহাবিশ্বের নানা প্রশ্ন এবং মানবজীবন ও প্রকৃতির দুঃখমুক্তির সন্ধানে তাঁর মন ব্রতী হলো।
অবশেষে ৩৫ বছর বয়সে গৌতম একজন আলোকিত মানবরূপে বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং হয়ে ওঠেন বুদ্ধ। প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে মহামতি গৌতম বুদ্ধ ভারতের অনির্দিষ্ট পথে হেঁটেছেন এবং তাঁর সাধনায় প্রাপ্ত জ্ঞান ও ধর্ম মানুষের মাঝে বিলি করেছেন, যাতে সাধারণ মানুষও চর্চার মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে দুঃখহীন ও উন্নত করতে পারে। পরবর্তী সময়ে যাঁরা বুদ্ধের দেখানো পথ ধরে সন্ন্যাসী হয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি কিছু বিধি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখনকার বর্ণপ্রথা, নারীর অধিকার, ধর্মীয় চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার প্রসারের দ্বার উন্মোচন করার জন্য এবং সমস্ত মানবজাতিকে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ দেখাতে তিনি বিচরণ করেছেন নানা জায়গায়। জীবনের সবটুকু সময় ধনী-গরিব উভয়ের কাছেই ব্যয় করেছেন।
এমনকি গৌতম বুদ্ধ আঙুলিমালের মতো পাপী থেকে শুরু করে সেই সময়ে বেশ্যাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত আম্রপালীর জীবনেও এনে দিয়েছিলেন নতুন সম্ভাবনা; তাঁদের জীবনকে করেছেন উন্নত। মহামতি গৌতম বুদ্ধ জ্ঞান ও বুদ্ধিদীপ্ততার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। প্রতিটি সমস্যার বিষয় নিয়ে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং এসব সমস্যার উৎপত্তি, কারণ ও পুনরায় ব্যাখ্যা করেছেন।
প্রশ্ন-উত্তরে গৌতম বুদ্ধকে কেউ পরাস্ত করতে পারেননি আজ অবধি। গৌতম বুদ্ধ সর্বপ্রথম মনোজগৎ ও জীবনের নানা দিকের সর্বাধিক বিশ্লেষণ হাজির করেন। তিনি একজন অতুলনীয় শিক্ষক, যিনি বর্তমানেও অনন্য। ইতিহাসের পাতায় প্রথম মানবজাতিকে নিজের জীবন নিয়ে, দুঃখ নিয়ে আলোচনার উপায় বের করে দিয়েছিলেন, মানবজাতির মূল্য উত্থাপন করেছিলেন এবং নিজের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ দেখিয়েছিলেন যে, মানুষ নিজের পরিশ্রম ও চেষ্টায় জ্ঞান ও মুক্তির সর্বোচ্চ স্তরে পোঁছাতে পারে।
এত জ্ঞান এবং একজন রাজবংশের উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কখনোই সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা করেননি। শ্রেণি ও বর্ণের পার্থক্যকে তিনি কোনো পাত্তা দিতেন না। তাঁর মতে, সবাই সমান। ধনী-গরিব কোনো পরিচয়ই তাঁর কাছে মুখ্য ছিল না। অনায়াসে সবাইকে তিনি দীক্ষিত করেছিলেন।
এমনকি গৌতম বুদ্ধের কাছে যখন ভিন্ন বর্ণের কিংবা গরিব কেউ আসতেন, তাঁদের অনেক বেশি সম্মান করা হতো। তাঁরা মহৎ সত্তার জীবনে উন্নীত হওয়ার পরামর্শ পেতেন। মহামতি গৌতম বুদ্ধ সবার প্রতি ছিলেন খুবই সহানুভূতিশীল (করুণা) এবং জ্ঞানের আলোকবর্তিকা, আলাদাভাবে একেক ব্যক্তির জ্ঞানের স্তর তিনি বুঝতে পারতেন এবং সে অনুযায়ী কাকে কীভাবে দুঃখমুক্তির পথ দেখানো যায়, তা তিনি ভালোভাবে আয়ত্ত করেছিলেন।
শুধু একজন আলাদা ব্যক্তিকে জ্ঞানের পথ এবং দীক্ষা দেওয়ার জন্য বুদ্ধ অনেক দূরের পথ হেঁটে যেতেন। তাঁর শিষ্যদের প্রতি গৌতম বুদ্ধ ছিলেন স্নেহশীল। সব সময় তাঁদের পরিবর্তন ও উন্নতির অবস্থানবিষয়ক খোঁজ-খবর নিতেন। যখন তিনি বিহারে থাকতেন, প্রতিদিন অসুস্থ শিষ্যদের দেখতে যেতেন। অসুস্থ শিষ্যদের প্রতি মমত্ববোধ ও পরামর্শ হিসেবে তিনি বলতেন, ‘তোমরা যে অসুস্থ হয়েছ, তার মানে তোমরা আমার খুব কাছাকাছি এসেছ।’
শিষ্যদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধ সব সময় তাঁদের মধ্যে নিয়ম ও আদেশ জারি রাখতেন। সেই সময়ের প্রাসন্ধি নামে এক রাজা বুঝতে পারতেন না, বুদ্ধ তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের কীভাবে সহজেই একসঙ্গে রাখতেন, মানিয়ে রাখতেন এবং সুন্দরভাবে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতেন। প্রাসন্ধি যখন রাজা ছিলেন, তাঁর ক্ষমতা ছিল এবং তখন প্রজাদের নানা শাস্তি দেওয়ার পরও তিনি তাঁদের মানিয়ে রাখতে পারতেন না। এ নিয়ে তিনি অবাক হয়ে পড়েছিলেন।
অনেক অলৌকিক ক্ষমতা বুদ্ধের ছিল। কিন্তু এসব নিয়ে তিনি কখনোই তেমন ভাবেননি। তাঁর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক ক্ষমতা ছিল সত্যকে এবং মানবজীবনের দুঃখকে ব্যাখ্যা করার এবং একজন সাধারণ মানুষকে তা উপলব্ধি করানোর। নানা চিন্তা ও জীবনের দুঃখমুক্তির শেকল থেকে মানবজাতিকে কীভাবে মুক্ত করা যায়, তা নিয়ে তিনি যুক্তিগত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন।
মানবজাতির দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় বলেছেন গৌতম বুদ্ধ। বুদ্ধ কখনোই দাবি করেননি যে তিনি বৈশ্বিক পরিস্থিতি, সর্বজনীন নানা ঘটনা, জীবনবিধি আমাদের দিয়েছেন, যাকে আমরা ধর্ম বলে দাবি করি। তিনি নিজেকে শুধু ‘লোকাবিধো’ অথবা ‘বিশ্বজগতের জ্ঞানী’ হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন। সর্বজনীন বিশ্বাস ও ধর্মীয় ব্যবস্থার কাছে তখন থেকে মহামতি গৌতম বুদ্ধ কখনোই অনুগত বন্দী হিসেবে থাকেননি।
তিনি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন যে, ধর্ম সৃষ্টি থেকে শুরু করে বিশ্বজগতের নানা কাজ কখনোই সময় মেনে হতে পারে না। বরং এসব নিরবধি এবং এসবের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। এই সবকিছুর গতিবিধি পরম অর্থে স্বাধীন। মহাবিশ্বের বিদ্যমান প্রতিটি শর্তযুক্ত ক্রিয়া তার নিজস্ব ধর্মের ক্রিয়ার সপক্ষে কাজ করে। বুদ্ধ যা করেছিলেন (তার পূর্বোক্ত বুদ্ধদের ন্যায়), তা হলো নিশ্চিত জ্ঞানকে অনুধাবন করা এবং মানব মুক্তির পথ পুনরুদ্ধার করে মানবজাতির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
এসব জ্ঞান অর্জনের পর অন্তহীন জন্মচক্রে আবর্তনের প্রক্রিয়া থেকে কীভাবে চূড়ান্তভাবে নিজেকে মুক্ত করা যায়, সে উপায়গুলো খুঁজে পেয়েছিলেন বুদ্ধ। তাঁর ধর্ম প্রসারের ৪৫ বছর পর, গৌতম বুদ্ধ ৮০ বছর বয়সে কুশিনারাতে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। হাজারো বৌদ্ধ ভিক্ষু, অনুসারী এবং মানবমুক্তির অমূল্য সব নির্দেশনা রেখে যান তিনি, যা বুদ্ধের ত্যাগ এবং অসীম ভালোবাসার শক্তি এখনো বিরাজমান।
ইংরেজ লেখক এইচ জি ওয়েলস বলেছেন, ‘আপনি বুদ্ধকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ, সহজ, ধর্মপ্রাণ, একাকী হিসেবে দেখতে পাবেন, যিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য লড়েছেন একজন মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন ব্যক্তি মানুষ হিসেবে। আর এসব শুধু শ্রুতি বা শোনা কথা নয়। তিনি মানবজাতির আচার-আচরণ নিয়ে বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। বেশির ভাগ আধুনিক উন্নত চিন্তা ও ধারণা বুদ্ধের সেই সময়ের ধারণার সঙ্গে এখনো সংগতিপূর্ণ। স্বার্থপরতাই মানবজীবনের সব দুর্দশা-কষ্ট এবং অতৃপ্তি ও বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়। কোনো মানুষ নির্মল হয়ে ওঠার আগে তাকে নিজের ইন্দ্রিয় বা নিজের জন্য বেঁচে থাকতে হবে। তারপর তিনি বিশালতায় মিশে যেতে পারেন। বুদ্ধদর্শন ভিন্ন এক অধ্যায়। কিছু কিছু মাধ্যমে তিনি আমাদের খুব কাছে ছিলেন; আমাদের প্রয়োজনীয়তার কাছে। আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয়তায় গৌতম বুদ্ধের যথেষ্ট রসদ ছিল এবং তা খ্রিষ্টধর্ম আসার পরও এবং ব্যক্তিগত অনৈতিকতার প্রশ্নেও।
‘হোয়াট বুড্ডিস্ট বিলিভ’ বইয়ে ভেন কে শ্রী ধম্মানন্দের লেখা ‘লাইফ অ্যান্ড নেচার অব বুদ্ধ’ প্রবন্ধের ইংরেজি থেকে অনুবাদ

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাক নাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি বুদ্ধত্ব ও বোধি জ্ঞান লাভের পর গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ জ্ঞানী বা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত ব্যক্তি। তিনি নিজেকে সাধারণত ‘তথাগত’ বলে আখ্যায়িত করতেন এবং শ্রদ্ধা করে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ‘ভগবা’ বলে সম্বোধন করতেন। অন্যদের কাছে গৌতম কিংবা শাক্যমুনি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন বুদ্ধ।
গৌতম বুদ্ধ যদিও রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার পরও রাজদরবারের বাইরের দুঃখময় পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর জানার আগ্রহ জন্মেছিল। গৌতমকে ছোটকাল থেকে রাজকীয়ভাবে লালন-পালন করেছিল তাঁর পরিবার। তা ছাড়া তাঁর পরিবার সব দিক থেকেই ছিল পরিমিত ও অমলিন। তাঁর উপস্থিতি ছিল সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠ উপহার।
আর গৌতম সেই রাজপরিবারের একমাত্র উত্তরাধিকার ছিলেন। উপযুক্ত, উদ্দীপক, বিশ্বাসী ও মহিমান্বিত ছিলেন তিনি। গৌতম ১৬ বছর বয়সে তাঁর মামাতো বোন যশোধারাকে বিয়ে করেছিলেন। পরে রাহুল নামে তাঁদের এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। যশোধারা ছিলেন ঐশ্বর্যশালী, সব সময় প্রফুল্ল, লাবণ্যময়ী ও মর্যাদাপূর্ণ। রাজপরিবার, সুন্দর স্ত্রী-পুত্র থাকা সত্ত্বেও গৌতমের মনে হয় তাঁর অন্তর বিলাসিতার কাছে আটকা পড়েছে। মনে হলো তিনি যেন সোনার খাঁচায় বন্দী এক পাখি।
হঠাৎ একদিন রাজ্য ভ্রমণে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গৌতম। রাজ্য ভ্রমণে বের হয়ে চার দিনে চারটি ভিন্ন দৃশ্য দেখেন তিনি। প্রথম দিনের ভ্রমণে তিনি একজন বৃদ্ধকে দেখেন, দ্বিতীয় দিনে এক রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, তৃতীয় দিন মরদেহ এবং শেষ দিনে একজন নির্জনবাসী সন্ন্যাসীকে দেখেন। দিনের পর দিন এসব দৃশ্য দেখার পর গৌতমের চিন্তা আসে, ‘জীবন কি তাহলে জন্ম থেকে মৃত্যুর মাঝে একটি ছোট অধ্যায় মাত্র?’ নিজেকে প্রশ্ন করলেন গৌতম—জীবনের শেষ গন্তব্য কোথায়; যেখানে জন্ম কিংবা মৃত্যু নেই?
সিদ্ধার্থ ভবজীবনের তৃষ্ণা ত্যাগ করেছিলেন। স্থির হয়েছিলেন রাজ্য ভ্রমণের শেষ দিনে দেখা সন্ন্যাসীজীবনে। তিনি গভীরভাবে চিন্তা করলেন। সেই সময়ের ভাবনা ছিল গৌতমের গৃহত্যাগের প্রথম অধ্যায়ের সূত্রপাত।
সর্বজনীন দুঃখমুক্তির উপায় জানতে গৌতম দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন এবং অবশেষে গৃহত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ২৯ বছর বয়সে এক রাতে ঘুমন্ত অবস্থার স্ত্রী যশোধারা ও পুত্র রাহুলকে নীরব বিদায় জানিয়ে ব্যক্তিগত ঘোড়া অশ্বকন্থকের পিঠে চড়ে গভীর জঙ্গলের দিকে রওনা হলেন। ইতিহাসের পাতায় গৌতমের গৃহত্যাগ ছিল নজিরবিহীন। এক রাজপরিবারের সন্তান ক্ষমতা, আনন্দ, রাজকীয় জীবন, ধন-সম্পদের মালিকানা ছেড়ে নানা অসুবিধা, অনিশ্চয়তা নিয়ে সন্ন্যাসী হিসেবে বিচরণ শুরু করলেন। গৃহত্যাগের সময় শুধু গেরুয়া রঙের একটি পোশাক ছিল গৌতমের শরীরে, যা দিয়ে প্রবল রোদ, বৃষ্টি, শীত ও বাতাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতেন তিনি। বাস করতে শুরু করলেন পাহাড়ের গুহায় ও জঙ্গলে।
গৌতম তাঁর পূর্ব অবস্থান, সম্পদ, নাম-যশ এবং ক্ষমতা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করলেন। আর নিজের জীবনকে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করলেন। এসব তাঁকে দুঃখমুক্তির পথ অনুসন্ধানে পরিচালিত করে, যা আগে কেউ খোঁজ করেও পায়নি। দীর্ঘ ছয় বছরের কঠোর সাধনা তাঁর জন্য মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গৌতম সেই সময়ের উচ্চতর লেখাপড়া করেছিলেন। এই সময়ে মুক্তির পথের আশায় বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষকের কাছ থেকে ধর্মীয় শিক্ষাও তিনি নিয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন এভাবে অধ্যয়নের পরও তিনি কোনো মুক্তির পথ না দেখে একদিন সন্ন্যাসীদের একটি দলে যোগ দেন। তাঁদের ধ্যানরীতি অনুসরণ করেন তিনি। গৌতম প্রায় বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন যে, এভাবে বুদ্ধত্ব লাভ বা দুঃখমুক্তি হতে পারে। গৌতম প্রচুর ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন। এমনকি তপস্যাতেও অন্যান্য তপস্বীকে তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ উপবাস করতে গিয়ে তিনি যখন দেখলেন, তাঁর শরীরের চামড়া শুকিয়ে গেছে, পেট ও শিরদাঁড়া এক হয়ে গেছে, তখন থেকে অল্প অল্প খেয়ে ধ্যান-সাধনা শুরু করেন তিনি।
গৌতম এমন কঠোরভাবে ধ্যান করেছিলেন, যা এর আগে কেউ করেনি। একসময় এমন ধ্যান-সাধনা করতে থাকলে মারা যেতে পারেন বলে উপলব্ধি এল তাঁর। এক বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে গৌতম গয়ার বোধীবৃক্ষ বা অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে ধ্যানে বসলেন এবং কঠোর ধ্যানে মগ্ন হয়ে পড়লেন। সে সময় তিনি মহাবিশ্বের নানা প্রশ্ন এবং মানবজীবন ও প্রকৃতির দুঃখমুক্তির সন্ধানে তাঁর মন ব্রতী হলো।
অবশেষে ৩৫ বছর বয়সে গৌতম একজন আলোকিত মানবরূপে বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং হয়ে ওঠেন বুদ্ধ। প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে মহামতি গৌতম বুদ্ধ ভারতের অনির্দিষ্ট পথে হেঁটেছেন এবং তাঁর সাধনায় প্রাপ্ত জ্ঞান ও ধর্ম মানুষের মাঝে বিলি করেছেন, যাতে সাধারণ মানুষও চর্চার মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে দুঃখহীন ও উন্নত করতে পারে। পরবর্তী সময়ে যাঁরা বুদ্ধের দেখানো পথ ধরে সন্ন্যাসী হয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি কিছু বিধি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখনকার বর্ণপ্রথা, নারীর অধিকার, ধর্মীয় চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার প্রসারের দ্বার উন্মোচন করার জন্য এবং সমস্ত মানবজাতিকে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ দেখাতে তিনি বিচরণ করেছেন নানা জায়গায়। জীবনের সবটুকু সময় ধনী-গরিব উভয়ের কাছেই ব্যয় করেছেন।
এমনকি গৌতম বুদ্ধ আঙুলিমালের মতো পাপী থেকে শুরু করে সেই সময়ে বেশ্যাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত আম্রপালীর জীবনেও এনে দিয়েছিলেন নতুন সম্ভাবনা; তাঁদের জীবনকে করেছেন উন্নত। মহামতি গৌতম বুদ্ধ জ্ঞান ও বুদ্ধিদীপ্ততার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। প্রতিটি সমস্যার বিষয় নিয়ে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং এসব সমস্যার উৎপত্তি, কারণ ও পুনরায় ব্যাখ্যা করেছেন।
প্রশ্ন-উত্তরে গৌতম বুদ্ধকে কেউ পরাস্ত করতে পারেননি আজ অবধি। গৌতম বুদ্ধ সর্বপ্রথম মনোজগৎ ও জীবনের নানা দিকের সর্বাধিক বিশ্লেষণ হাজির করেন। তিনি একজন অতুলনীয় শিক্ষক, যিনি বর্তমানেও অনন্য। ইতিহাসের পাতায় প্রথম মানবজাতিকে নিজের জীবন নিয়ে, দুঃখ নিয়ে আলোচনার উপায় বের করে দিয়েছিলেন, মানবজাতির মূল্য উত্থাপন করেছিলেন এবং নিজের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ দেখিয়েছিলেন যে, মানুষ নিজের পরিশ্রম ও চেষ্টায় জ্ঞান ও মুক্তির সর্বোচ্চ স্তরে পোঁছাতে পারে।
এত জ্ঞান এবং একজন রাজবংশের উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কখনোই সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা করেননি। শ্রেণি ও বর্ণের পার্থক্যকে তিনি কোনো পাত্তা দিতেন না। তাঁর মতে, সবাই সমান। ধনী-গরিব কোনো পরিচয়ই তাঁর কাছে মুখ্য ছিল না। অনায়াসে সবাইকে তিনি দীক্ষিত করেছিলেন।
এমনকি গৌতম বুদ্ধের কাছে যখন ভিন্ন বর্ণের কিংবা গরিব কেউ আসতেন, তাঁদের অনেক বেশি সম্মান করা হতো। তাঁরা মহৎ সত্তার জীবনে উন্নীত হওয়ার পরামর্শ পেতেন। মহামতি গৌতম বুদ্ধ সবার প্রতি ছিলেন খুবই সহানুভূতিশীল (করুণা) এবং জ্ঞানের আলোকবর্তিকা, আলাদাভাবে একেক ব্যক্তির জ্ঞানের স্তর তিনি বুঝতে পারতেন এবং সে অনুযায়ী কাকে কীভাবে দুঃখমুক্তির পথ দেখানো যায়, তা তিনি ভালোভাবে আয়ত্ত করেছিলেন।
শুধু একজন আলাদা ব্যক্তিকে জ্ঞানের পথ এবং দীক্ষা দেওয়ার জন্য বুদ্ধ অনেক দূরের পথ হেঁটে যেতেন। তাঁর শিষ্যদের প্রতি গৌতম বুদ্ধ ছিলেন স্নেহশীল। সব সময় তাঁদের পরিবর্তন ও উন্নতির অবস্থানবিষয়ক খোঁজ-খবর নিতেন। যখন তিনি বিহারে থাকতেন, প্রতিদিন অসুস্থ শিষ্যদের দেখতে যেতেন। অসুস্থ শিষ্যদের প্রতি মমত্ববোধ ও পরামর্শ হিসেবে তিনি বলতেন, ‘তোমরা যে অসুস্থ হয়েছ, তার মানে তোমরা আমার খুব কাছাকাছি এসেছ।’
শিষ্যদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধ সব সময় তাঁদের মধ্যে নিয়ম ও আদেশ জারি রাখতেন। সেই সময়ের প্রাসন্ধি নামে এক রাজা বুঝতে পারতেন না, বুদ্ধ তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের কীভাবে সহজেই একসঙ্গে রাখতেন, মানিয়ে রাখতেন এবং সুন্দরভাবে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতেন। প্রাসন্ধি যখন রাজা ছিলেন, তাঁর ক্ষমতা ছিল এবং তখন প্রজাদের নানা শাস্তি দেওয়ার পরও তিনি তাঁদের মানিয়ে রাখতে পারতেন না। এ নিয়ে তিনি অবাক হয়ে পড়েছিলেন।
অনেক অলৌকিক ক্ষমতা বুদ্ধের ছিল। কিন্তু এসব নিয়ে তিনি কখনোই তেমন ভাবেননি। তাঁর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক ক্ষমতা ছিল সত্যকে এবং মানবজীবনের দুঃখকে ব্যাখ্যা করার এবং একজন সাধারণ মানুষকে তা উপলব্ধি করানোর। নানা চিন্তা ও জীবনের দুঃখমুক্তির শেকল থেকে মানবজাতিকে কীভাবে মুক্ত করা যায়, তা নিয়ে তিনি যুক্তিগত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন।
মানবজাতির দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় বলেছেন গৌতম বুদ্ধ। বুদ্ধ কখনোই দাবি করেননি যে তিনি বৈশ্বিক পরিস্থিতি, সর্বজনীন নানা ঘটনা, জীবনবিধি আমাদের দিয়েছেন, যাকে আমরা ধর্ম বলে দাবি করি। তিনি নিজেকে শুধু ‘লোকাবিধো’ অথবা ‘বিশ্বজগতের জ্ঞানী’ হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন। সর্বজনীন বিশ্বাস ও ধর্মীয় ব্যবস্থার কাছে তখন থেকে মহামতি গৌতম বুদ্ধ কখনোই অনুগত বন্দী হিসেবে থাকেননি।
তিনি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন যে, ধর্ম সৃষ্টি থেকে শুরু করে বিশ্বজগতের নানা কাজ কখনোই সময় মেনে হতে পারে না। বরং এসব নিরবধি এবং এসবের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। এই সবকিছুর গতিবিধি পরম অর্থে স্বাধীন। মহাবিশ্বের বিদ্যমান প্রতিটি শর্তযুক্ত ক্রিয়া তার নিজস্ব ধর্মের ক্রিয়ার সপক্ষে কাজ করে। বুদ্ধ যা করেছিলেন (তার পূর্বোক্ত বুদ্ধদের ন্যায়), তা হলো নিশ্চিত জ্ঞানকে অনুধাবন করা এবং মানব মুক্তির পথ পুনরুদ্ধার করে মানবজাতির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
এসব জ্ঞান অর্জনের পর অন্তহীন জন্মচক্রে আবর্তনের প্রক্রিয়া থেকে কীভাবে চূড়ান্তভাবে নিজেকে মুক্ত করা যায়, সে উপায়গুলো খুঁজে পেয়েছিলেন বুদ্ধ। তাঁর ধর্ম প্রসারের ৪৫ বছর পর, গৌতম বুদ্ধ ৮০ বছর বয়সে কুশিনারাতে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। হাজারো বৌদ্ধ ভিক্ষু, অনুসারী এবং মানবমুক্তির অমূল্য সব নির্দেশনা রেখে যান তিনি, যা বুদ্ধের ত্যাগ এবং অসীম ভালোবাসার শক্তি এখনো বিরাজমান।
ইংরেজ লেখক এইচ জি ওয়েলস বলেছেন, ‘আপনি বুদ্ধকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ, সহজ, ধর্মপ্রাণ, একাকী হিসেবে দেখতে পাবেন, যিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য লড়েছেন একজন মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন ব্যক্তি মানুষ হিসেবে। আর এসব শুধু শ্রুতি বা শোনা কথা নয়। তিনি মানবজাতির আচার-আচরণ নিয়ে বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। বেশির ভাগ আধুনিক উন্নত চিন্তা ও ধারণা বুদ্ধের সেই সময়ের ধারণার সঙ্গে এখনো সংগতিপূর্ণ। স্বার্থপরতাই মানবজীবনের সব দুর্দশা-কষ্ট এবং অতৃপ্তি ও বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়। কোনো মানুষ নির্মল হয়ে ওঠার আগে তাকে নিজের ইন্দ্রিয় বা নিজের জন্য বেঁচে থাকতে হবে। তারপর তিনি বিশালতায় মিশে যেতে পারেন। বুদ্ধদর্শন ভিন্ন এক অধ্যায়। কিছু কিছু মাধ্যমে তিনি আমাদের খুব কাছে ছিলেন; আমাদের প্রয়োজনীয়তার কাছে। আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয়তায় গৌতম বুদ্ধের যথেষ্ট রসদ ছিল এবং তা খ্রিষ্টধর্ম আসার পরও এবং ব্যক্তিগত অনৈতিকতার প্রশ্নেও।
‘হোয়াট বুড্ডিস্ট বিলিভ’ বইয়ে ভেন কে শ্রী ধম্মানন্দের লেখা ‘লাইফ অ্যান্ড নেচার অব বুদ্ধ’ প্রবন্ধের ইংরেজি থেকে অনুবাদ

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৪ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৫ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৯ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাকনাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি যখন বুদ্ধত্ব এবং বোধি জ্ঞান লাভের পর তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
১৫ মে ২০২২
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৫ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৯ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাকনাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি যখন বুদ্ধত্ব এবং বোধি জ্ঞান লাভের পর তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
১৫ মে ২০২২
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৪ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৯ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাকনাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি যখন বুদ্ধত্ব এবং বোধি জ্ঞান লাভের পর তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
১৫ মে ২০২২
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৪ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৫ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ডাকনাম ছিল সিদ্ধার্থ; কিন্তু পারিবারিক নাম ছিল গৌতম। তিনি যখন বুদ্ধত্ব এবং বোধি জ্ঞান লাভের পর তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিতি পান।
১৫ মে ২০২২
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৪ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৫ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৯ দিন আগে