Ajker Patrika

বারীন দত্ত

সম্পাদকীয়
বারীন দত্ত

আমাদের দেশে মানবমুক্তি তথা সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম অগ্রসর করার জন্য যাঁরা আজীবন ব্রতী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন বারীন দত্ত। ১৯১১ সালের ২০ ডিসেম্বর সিলেটের হবিগঞ্জের লাখাই গ্রামে এক প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালের ২০ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়।

স্কুলে পড়াকালীন তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২৭ সালে যখন তিনি অষ্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে উঠেছেন, তখনই সন্ত্রাসবাদী দলে রিক্রুট হওয়ার জন্য ‘তরুণ সংঘ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। পরে সন্ত্রাসবাদী দলগুলোর মধ্যকার দলাদলির কারণে ‘তরুণ সংঘ’ ছেড়ে দিয়ে একটি ছাত্র সংগঠনও গড়ে তোলেন।

তিনি ‘সংগ্রামমুখর দিনগুলি’ নামের আত্মস্মৃতিতে লিখেছেন: ‘১৯৩৩ সালের শেষ দিকে কলকাতার যুগান্তর দলের সাথে সিলেট জেলার গ্রুপগুলোর যোগাযোগ করতে গেলে নেমে আসে চরম দমন-পীড়ন। এ সময় অন্যদের সাথে আমিও গ্রেফতার হয়ে যাই। এ বন্দিত্ব যখন শেষ হয়, তখন আমার জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সন্ত্রাসবাদী পথ পরিত্যাগ করেছি। গ্রহণ করেছি মার্কসবাদী লেনিনবাদী বিজ্ঞানকে।’ 
পরে তিনি সিলেট অঞ্চলে কৃষক ও চা-শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করেন। বিগত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে সাধারণ প্রজাদের জমির লড়াই ঐতিহাসিক ‘নানকার আন্দোলনে’ তিনি নেতৃত্ব দেন।

১৯৬৯ সালে কমিউনিস্টদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সোভিয়েত রাশিয়ায় তিনি যান, কিন্তু দেশে গণ-আন্দোলন শুরু হওয়ায় পার্টির নির্দেশে সম্মেলনের আগেই ফিরে আসেন।

বারীন দত্ত পাকিস্তান আমলে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হলে ‘আব্দুস সালাম’ নাম নিয়ে কাজ করেন। পরে তিনি এই নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন। জীবনের এক দশকের বেশি সময় তিনি কারাগারে কাটান। আবার জীবনের ৩০ বছর কাটিয়েছেন আত্মগোপনে।

১৯৬৮ সালে গোপনে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে তাঁকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত