বিভুরঞ্জন সরকার

একেবারে ছোটবেলায় আমি নাকি খুব জেদি ছিলাম। কারও কাছে ভালো কিছু দেখলে সেটাই আমি চাইতাম। যেমন কারও মাথায় বড় চুল দেখলে আমি ওই রকম চুল চাইতাম। আবার বড় চুল থাকত কেবল মেয়েদের মাথায়। আমাকে নাকি শাসিয়ে বলা হতো, তুই কি মেয়ে নাকি যে, তোর মাথায় বড় চুল হবে!
বড় চুলের জন্য ছোটবেলার আদিখ্যেতার জন্যই বুঝি আজ বড়বেলায় আমার মাথায় চুলের এমন বাড়বাড়ন্ত অবস্থা!
যার যা আছে, তাই নিয়ে খুশি থাকতে হয়, আনন্দে থাকতে হয়। আমার স্বভাব নাকি ছিল তার বিপরীত। যা নেই, তার জন্যই আমরা বায়না হতো প্রবল। একেবারে যখন ছোট ছিলাম, তখন নাকি আমাদের সংসারে খুব একটা টানাটানি ছিল না। অভাবের হা-মুখ দৈত্য দাপিয়ে বেড়াত না। ফলে যা চাইতাম, তা দেওয়ার চেষ্টা করা হতো বড়দের পক্ষ থেকে। প্রশ্রয়টা পেয়েছি প্রধানত মেয়েদের কাছ থেকে। মেয়ে মানে আমার ঠাকুরমা (বাবার মা), দিদিমা (মায়ের মা) এবং আমার মার কাছ থেকে। পুরুষদের তুলনায় আমাদের পরিবারে নারীর সংখ্যা বেশি ছিল। পুরুষ বলতে শুধু আমার বাবা। নিজের বাবাকে খুব কম বয়সে হারিয়ে আমার বাবাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল, যখন আসলে তাঁর স্কুলে যাওয়ার বয়স।
আমাকে নিয়ে বড়রা সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতেন। কখন কার কাছে কী দেখে সেটা পাওয়ার জন্য আমি বায়না ধরে বসি, সেটাই ছিল ভয়ের কারণ। ভয় কি সংক্রামক? আমার ছোটবেলায় বড়রা আমাকে নিয়ে যে ভয় পেতেন, তাই কি আমার মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে? না হলে আমার এত ভয় কেন? কত মানুষকে দেখি নির্ভয়ে চলতে; কিন্তু আমাকে সারাক্ষণ তাড়া করে ভয়! আচ্ছা, আমার যা নেই বা ছিল না, তা-ই নিয়ে যদি আমি বায়না ধরে থাকি, তাহলে আমার যে সাহসের অভাব, তা আমাকে দেওয়ার জন্য কি আমি কখনো জেদ করিনি, বায়না ধরিনি। আহা, সাহসের জন্য যদি একটু জেদ ধরতাম, তাহলে কি আমাকে আজ এভাবে ভয়ে ভয়ে জীবন কাটাতে হয়?
ছোটবেলায় কারও হাতের আঙুলে আংটি দেখে আমারও আংটির শখ হয়েছিল। না, তখন অবশ্যই আংটি বদলের বিষয়টি মাথায় আসার বয়স নয়। আমার আংটি ছিল না বলেই সেটা পাওয়ার সাধ জেগেছিল। আঙুলে একটি আংটি জুটেওছিল। আবার আংটিটি কীভাবে যেন একদিন হারিয়েও গেল। আংটি হারিয়ে আমি তো ভয়ে কাঠ। আমার পিঠে যে চেলাকাঠের দৌড় প্রতিযোগিতা হবে, সেটা বেশ বুঝতে পারছিলাম। তবে আমি আংটি হারানোর কথা কাউকে নিজে থেকে বললাম না। ফলে কেউ বুঝতেও পারল না। যখন জানাজানি হলো, তত দিনে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এর মধ্যেই এক রাতে সিঁধেল চোর আমাদের ঘরে ঢুকে অনেক কিছুই নিয়ে গেছে। আমি হাপুস নয়নে কেঁদে আমার আংটি চুরির গল্প বিশ্বাসযোগ্য করে তুললাম এবং আংটি হারানোর পিটুনি থেকে কেমন বেকসুর খালাস পেয়ে গেলাম। ভয় তাড়ানোর এই বুদ্ধি কীভাবে মাথায় এসেছিল, এখন আর তা মনে নেই।
ছোটবেলায় মেয়েদের কাছে বেশি বায়না ধরলেও মেয়েদের আমার সব সময় কেমন যেন ভয় ভয় লাগত। কারণ বড়দের মুখে আলোচনা শুনতাম, নারীদের সম্মান না করলে নাকি সম্মান পাওয়া যায় না। সম্মান জিনিসটা আসলে কী, তা তো আর ওই বয়সে বুঝতাম না। তখন আমি মনে করতাম, কাউকে সম্মান করা মানে তাকে ভয় করা বা ভয় পাওয়া। তাই পারতপক্ষে ছোটবেলায় আমি নারী-সঙ্গ এড়িয়ে চলতাম। অবশ্য মা, ঠাকুমা, দিদিমা এবং পরে কাকিমাকে আমি ভয় করিনি। তাঁরা আমার কাছে নারী ছিলেন না, আমার কাছে তখন নারী মানে পরনারী এবং সর্বদা যাদের ভয় পেতে হবে!
আমি যখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার এক পিসতুত দাদার বিয়ে হলো। এল আমার অতি সুন্দরী গীতা বৌদি। গীতা বৌদিকে আমি কেন যেন ভয় পেতাম না। তিনিও আমাকে খুব আদর করতেন। কোলে নিয়ে গালটাল টিপে দিতেন। শরীর এমন চিপাচিপি করতেন যে, আমি কেমন যেন তাঁর এই আদরের জন্য অপেক্ষা করতাম। গীতা বৌদি আমাকে দলেমলে একাকার করতেন আর বলতেন, ‘মেয়েরা তোকে খুব ভালোবাসবে। দেখবি মেয়েরা তোর জন্য পাগল হয়ে যাবে।’
শুনে লজ্জা পেতাম আবার ভালোও লাগত। ওই বয়সেই কেমন যেন একটি সুখানুভূতি হতো বলে এখনো মনে পড়ে।
বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়ে-ভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদিন গীতা বৌদি আমাকে বললেন, ‘এবার একটি মেয়েকে পছন্দ করে ভালোবাসার কথা বল।’
-যদি রাজি না হয়?
-আর একজনকে বলবি!
-সে রাজি না হলে?
-আরেকজন খুঁজে বের করবি। আর এর মধ্যে তোকে যদি কেউ নিজে থেকে ভালোবাসার কথা বলে, তবে তো হয়েই গেল!
আমি দেখেশুনে একটি মেয়েকে মোটামুটি পছন্দ করলাম। শ্যামলা বরণ। চোখ দুটি মায়াভরা। ওমর আলীর কবিতার মতো, ‘এ দেশের শ্যামলিমা শ্যামল রং রমণীর অনেক সুনাম শুনেছি!’ হাঁটু পর্যন্ত চুল। ওকে দেখেই আমার মনে গুনগুনিয়ে উঠত, ‘তোমার কাজলকেশ ছড়ানো বলে এই রাত মধুর এমন।’ মনে মনে ভাবি, একদিন বলে ফেলব, ‘আই লাভ ইউ।’
মেয়েটির পিছু নেই। কিন্তু সে যখন আমার দিকে তাকায়, তখনই আমার পা কাঁপা শুরু হয়। উল্টো পথ ধরি আমি। একদিন ওর পিছু নিলাম। ভাবছি, একটু একা পেলেই বলব, ‘কুন্তল বন্যা, কে দিল, তোমায় বলো কন্যা!’
আমাকে অনুসরণ করতে দেখে মেয়েটা হাঁটার গতি শ্লথ করল। তারপর আমার দিকে গ্রীবা ঘুরিয়ে বলল, ‘কিছু বলবেন?’
-আমি চটপট জবাব দিই, ‘আমি? আপনাকে? না-তো।’
মেয়েটি আমার দিকে কেমন একটা ঘৃণার চোখে তাকাল। তারপর যেন আপন মনেই বলল, ‘কাওয়ার্ড কোথাকার!’
আমার মনে হলো কেউ যেন আমার কানে গরম সিসা ঢেলে দিল। কয়েক দিন খুব মনমরা থাকলাম। মনে হলো, একবার বাড়ি গিয়ে গীতা বৌদিকে দেখে আসি। তাঁকে জানিয়ে আসি, তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ঠিক হলো না। আমি কাউকে ‘আই লাভ ইউ’ বলতে পারলাম না। আমাকেও কেউ বলল না।
এক ছুটিতে বাড়ি গিয়ে শুনলাম সেই ভয়াবহ দুঃসংবাদ: গীতা বৌদি আত্মহত্যা করেছেন। আচ্ছা, গীতা বৌদি আত্মহত্যা করেছিলেন কেন? তাঁর কি বিশেষ কোনো দুঃখবোধ ছিল? দুঃখী মানুষেরা কি আত্মহত্যা করে? নাকি ভীরুতা আত্মহত্যার নিয়ামক? তার পর থেকে আমার আত্মহত্যায়ও দারুণ ভয়। ভয়কে জয় করার কোনো ওষুধ আবিষ্কারের কথা কি কেউ কখনো ভেবেছেন?
তার পর কত বছর চলে গেছে। আমার সংসার জীবনেরও তিন দশকের বেশি হয়েছে। এই তো কিছুদিন আগে কী মনে করে যেন গিন্নিকে কাছে ডেকে বললাম, ‘আই লাভ ইউ।’ মুখ ঝামটা দিয়ে গিন্নি বললেন, ‘ভীমরতি ধরেছে! ছেলেমেয়েরা শুনলে কী ভাববে?’
ভয় তাড়াতে গিয়ে নতুন ভয়ের শিকার হলাম। ছোটবেলার ছোট ভয়, বড় বেলায় বড় ভয় হয়ে উঠেছে।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

একেবারে ছোটবেলায় আমি নাকি খুব জেদি ছিলাম। কারও কাছে ভালো কিছু দেখলে সেটাই আমি চাইতাম। যেমন কারও মাথায় বড় চুল দেখলে আমি ওই রকম চুল চাইতাম। আবার বড় চুল থাকত কেবল মেয়েদের মাথায়। আমাকে নাকি শাসিয়ে বলা হতো, তুই কি মেয়ে নাকি যে, তোর মাথায় বড় চুল হবে!
বড় চুলের জন্য ছোটবেলার আদিখ্যেতার জন্যই বুঝি আজ বড়বেলায় আমার মাথায় চুলের এমন বাড়বাড়ন্ত অবস্থা!
যার যা আছে, তাই নিয়ে খুশি থাকতে হয়, আনন্দে থাকতে হয়। আমার স্বভাব নাকি ছিল তার বিপরীত। যা নেই, তার জন্যই আমরা বায়না হতো প্রবল। একেবারে যখন ছোট ছিলাম, তখন নাকি আমাদের সংসারে খুব একটা টানাটানি ছিল না। অভাবের হা-মুখ দৈত্য দাপিয়ে বেড়াত না। ফলে যা চাইতাম, তা দেওয়ার চেষ্টা করা হতো বড়দের পক্ষ থেকে। প্রশ্রয়টা পেয়েছি প্রধানত মেয়েদের কাছ থেকে। মেয়ে মানে আমার ঠাকুরমা (বাবার মা), দিদিমা (মায়ের মা) এবং আমার মার কাছ থেকে। পুরুষদের তুলনায় আমাদের পরিবারে নারীর সংখ্যা বেশি ছিল। পুরুষ বলতে শুধু আমার বাবা। নিজের বাবাকে খুব কম বয়সে হারিয়ে আমার বাবাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল, যখন আসলে তাঁর স্কুলে যাওয়ার বয়স।
আমাকে নিয়ে বড়রা সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতেন। কখন কার কাছে কী দেখে সেটা পাওয়ার জন্য আমি বায়না ধরে বসি, সেটাই ছিল ভয়ের কারণ। ভয় কি সংক্রামক? আমার ছোটবেলায় বড়রা আমাকে নিয়ে যে ভয় পেতেন, তাই কি আমার মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে? না হলে আমার এত ভয় কেন? কত মানুষকে দেখি নির্ভয়ে চলতে; কিন্তু আমাকে সারাক্ষণ তাড়া করে ভয়! আচ্ছা, আমার যা নেই বা ছিল না, তা-ই নিয়ে যদি আমি বায়না ধরে থাকি, তাহলে আমার যে সাহসের অভাব, তা আমাকে দেওয়ার জন্য কি আমি কখনো জেদ করিনি, বায়না ধরিনি। আহা, সাহসের জন্য যদি একটু জেদ ধরতাম, তাহলে কি আমাকে আজ এভাবে ভয়ে ভয়ে জীবন কাটাতে হয়?
ছোটবেলায় কারও হাতের আঙুলে আংটি দেখে আমারও আংটির শখ হয়েছিল। না, তখন অবশ্যই আংটি বদলের বিষয়টি মাথায় আসার বয়স নয়। আমার আংটি ছিল না বলেই সেটা পাওয়ার সাধ জেগেছিল। আঙুলে একটি আংটি জুটেওছিল। আবার আংটিটি কীভাবে যেন একদিন হারিয়েও গেল। আংটি হারিয়ে আমি তো ভয়ে কাঠ। আমার পিঠে যে চেলাকাঠের দৌড় প্রতিযোগিতা হবে, সেটা বেশ বুঝতে পারছিলাম। তবে আমি আংটি হারানোর কথা কাউকে নিজে থেকে বললাম না। ফলে কেউ বুঝতেও পারল না। যখন জানাজানি হলো, তত দিনে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এর মধ্যেই এক রাতে সিঁধেল চোর আমাদের ঘরে ঢুকে অনেক কিছুই নিয়ে গেছে। আমি হাপুস নয়নে কেঁদে আমার আংটি চুরির গল্প বিশ্বাসযোগ্য করে তুললাম এবং আংটি হারানোর পিটুনি থেকে কেমন বেকসুর খালাস পেয়ে গেলাম। ভয় তাড়ানোর এই বুদ্ধি কীভাবে মাথায় এসেছিল, এখন আর তা মনে নেই।
ছোটবেলায় মেয়েদের কাছে বেশি বায়না ধরলেও মেয়েদের আমার সব সময় কেমন যেন ভয় ভয় লাগত। কারণ বড়দের মুখে আলোচনা শুনতাম, নারীদের সম্মান না করলে নাকি সম্মান পাওয়া যায় না। সম্মান জিনিসটা আসলে কী, তা তো আর ওই বয়সে বুঝতাম না। তখন আমি মনে করতাম, কাউকে সম্মান করা মানে তাকে ভয় করা বা ভয় পাওয়া। তাই পারতপক্ষে ছোটবেলায় আমি নারী-সঙ্গ এড়িয়ে চলতাম। অবশ্য মা, ঠাকুমা, দিদিমা এবং পরে কাকিমাকে আমি ভয় করিনি। তাঁরা আমার কাছে নারী ছিলেন না, আমার কাছে তখন নারী মানে পরনারী এবং সর্বদা যাদের ভয় পেতে হবে!
আমি যখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার এক পিসতুত দাদার বিয়ে হলো। এল আমার অতি সুন্দরী গীতা বৌদি। গীতা বৌদিকে আমি কেন যেন ভয় পেতাম না। তিনিও আমাকে খুব আদর করতেন। কোলে নিয়ে গালটাল টিপে দিতেন। শরীর এমন চিপাচিপি করতেন যে, আমি কেমন যেন তাঁর এই আদরের জন্য অপেক্ষা করতাম। গীতা বৌদি আমাকে দলেমলে একাকার করতেন আর বলতেন, ‘মেয়েরা তোকে খুব ভালোবাসবে। দেখবি মেয়েরা তোর জন্য পাগল হয়ে যাবে।’
শুনে লজ্জা পেতাম আবার ভালোও লাগত। ওই বয়সেই কেমন যেন একটি সুখানুভূতি হতো বলে এখনো মনে পড়ে।
বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়ে-ভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদিন গীতা বৌদি আমাকে বললেন, ‘এবার একটি মেয়েকে পছন্দ করে ভালোবাসার কথা বল।’
-যদি রাজি না হয়?
-আর একজনকে বলবি!
-সে রাজি না হলে?
-আরেকজন খুঁজে বের করবি। আর এর মধ্যে তোকে যদি কেউ নিজে থেকে ভালোবাসার কথা বলে, তবে তো হয়েই গেল!
আমি দেখেশুনে একটি মেয়েকে মোটামুটি পছন্দ করলাম। শ্যামলা বরণ। চোখ দুটি মায়াভরা। ওমর আলীর কবিতার মতো, ‘এ দেশের শ্যামলিমা শ্যামল রং রমণীর অনেক সুনাম শুনেছি!’ হাঁটু পর্যন্ত চুল। ওকে দেখেই আমার মনে গুনগুনিয়ে উঠত, ‘তোমার কাজলকেশ ছড়ানো বলে এই রাত মধুর এমন।’ মনে মনে ভাবি, একদিন বলে ফেলব, ‘আই লাভ ইউ।’
মেয়েটির পিছু নেই। কিন্তু সে যখন আমার দিকে তাকায়, তখনই আমার পা কাঁপা শুরু হয়। উল্টো পথ ধরি আমি। একদিন ওর পিছু নিলাম। ভাবছি, একটু একা পেলেই বলব, ‘কুন্তল বন্যা, কে দিল, তোমায় বলো কন্যা!’
আমাকে অনুসরণ করতে দেখে মেয়েটা হাঁটার গতি শ্লথ করল। তারপর আমার দিকে গ্রীবা ঘুরিয়ে বলল, ‘কিছু বলবেন?’
-আমি চটপট জবাব দিই, ‘আমি? আপনাকে? না-তো।’
মেয়েটি আমার দিকে কেমন একটা ঘৃণার চোখে তাকাল। তারপর যেন আপন মনেই বলল, ‘কাওয়ার্ড কোথাকার!’
আমার মনে হলো কেউ যেন আমার কানে গরম সিসা ঢেলে দিল। কয়েক দিন খুব মনমরা থাকলাম। মনে হলো, একবার বাড়ি গিয়ে গীতা বৌদিকে দেখে আসি। তাঁকে জানিয়ে আসি, তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ঠিক হলো না। আমি কাউকে ‘আই লাভ ইউ’ বলতে পারলাম না। আমাকেও কেউ বলল না।
এক ছুটিতে বাড়ি গিয়ে শুনলাম সেই ভয়াবহ দুঃসংবাদ: গীতা বৌদি আত্মহত্যা করেছেন। আচ্ছা, গীতা বৌদি আত্মহত্যা করেছিলেন কেন? তাঁর কি বিশেষ কোনো দুঃখবোধ ছিল? দুঃখী মানুষেরা কি আত্মহত্যা করে? নাকি ভীরুতা আত্মহত্যার নিয়ামক? তার পর থেকে আমার আত্মহত্যায়ও দারুণ ভয়। ভয়কে জয় করার কোনো ওষুধ আবিষ্কারের কথা কি কেউ কখনো ভেবেছেন?
তার পর কত বছর চলে গেছে। আমার সংসার জীবনেরও তিন দশকের বেশি হয়েছে। এই তো কিছুদিন আগে কী মনে করে যেন গিন্নিকে কাছে ডেকে বললাম, ‘আই লাভ ইউ।’ মুখ ঝামটা দিয়ে গিন্নি বললেন, ‘ভীমরতি ধরেছে! ছেলেমেয়েরা শুনলে কী ভাববে?’
ভয় তাড়াতে গিয়ে নতুন ভয়ের শিকার হলাম। ছোটবেলার ছোট ভয়, বড় বেলায় বড় ভয় হয়ে উঠেছে।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৪ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়েভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদ
১০ জুলাই ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়েভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদ
১০ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৪ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়েভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদ
১০ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৪ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

বয়স বাড়ে। কোনো মেয়ে আমাকে ভালোবাসে না। কেউ কেউ বরং আমাকে দেখে হাসাহাসি করত আর বলত, তুই কি মেয়ে নাকি রে! আমাকে দেখতে নাকি তখন মেয়ে মেয়ে লাগত! এতে আমার মেয়েভীতি আরও বেড়ে গেল। ছোট ক্লাসে থাকতেই একদিন এক মেয়ে বর-বউ খেলার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি নাকি দৌড়ে পালিয়েছিলাম। তবে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম, তখন একদ
১০ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৪ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে