বিশ্ব বাঁশ দিবস
আবদুল বাছেদ, ঢাকা

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
আলাপচারিতার এক ফাঁকে বন্ধু কফিল হঠাৎ গম্ভীর মুখে আমাকে জিজ্ঞেস করল, দোস্ত, তুই কি বলতে পারিস, পাণ্ডা কেন বাঁশ খায়? আমি তখন ভেবেছিলাম ও হয়তো জীববিজ্ঞানের কোনো জটিল বিষয় জানতে চাইছে অথবা আমার জানাশোনার দৌড় যাচাই করছে। আমি ভাবান্তরেই বললাম, পাণ্ডার পাচনতন্ত্রে হয়তো বাঁশ হজম করার বিশেষ এনজাইম আছে—তাই বোধহয়।
কফিল তৎক্ষণাৎ হো হো করে হেসে উঠল, যেন আমি নিরেট গাধা। এরপর ও নিজেই ব্যাখ্যা করতে শুরু করল, ঠিক যেন দর্শনের ক্লাসে বক্তৃতা দিচ্ছে। দীর্ঘ বক্তৃতায় ও আমাকে যা বোঝাল, তাতে নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবার কোনো হেতু পাইনি। কফিল বলল, ‘বোকা! পাণ্ডা বাঁশ খায় কারণ ওর কপালে সান্ডা জোটে না। এই দেশে অনেক চতুর কফিল আছে। তাঁদের কপালেই জোটে চর্বিযুক্ত সান্ডার নানা রেসিপি।’
আমি বললাম, ‘ব্যাটা, তোর নামও তো কফিল। নিজের নাম-জাতকে এভাবে শোষকদের কাতারে তুলছিস কীভাবে?’ বন্ধু কফিল বলে, ‘শুধু নাম দিয়ে কি সব হয়, আমি তো আর কামের কফিল না।’ এই বলেই কি এক আক্ষেপ তাঁর, যেন হতাশার সাগরে ডুবে গেল!
আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম, ‘দোয়া করি, তোর প্লেটেও একদিন পড়ুক সান্ডার ফ্রাই!’
কফিল আমার কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে এক মনে বলতে থাকে, ‘বুঝলি রে ব্যাটা, আমাদের দেশের জনগণ পাণ্ডার মতোই অলস আর নির্বোধ, কিন্তু আছে একদল ধূর্ত কফিল। এরা আশ্চর্য এক প্রাণী, চেহারা–সুরতে মানুষ, কিন্তু স্বভাবে হিংস্র হায়েনা, খায় শুধু সান্ডার ফ্রাই। সান্ডা না পেলে কফিলেরা রাতে ঘুমোতে পারে না।’
পাঁচ বছর পরপর এই কফিলেরা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যায়। তখন ওদের ভাষা একেবারে ভদ্রলোকের মতো। মধুময় কণ্ঠে বলবে, ‘ভাই, একবার ভোটটা দেন, প্রতিবেলা আপনার প্লেটে থাকবে সান্ডা। রাস্তাঘাটে উন্নয়নের সান্ডা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধির সান্ডা, বৈদেশিক বিনিয়োগে ঝাঁকে ঝাঁকে সান্ডা।’
জনগণও তখন ভাবে, ‘আহা, এতদিন তো চতুর্মুখী বাঁশ খেয়েছি, এবার বুঝি সত্যি সত্যি সান্ডার স্বাদ পাব।’
এসে যায় ভোটের দিন। একেবারে পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবমুখর পরিবেশ। শুধু হালখাতা নেই, আছে সান্ডার লোভে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। খাই খাই রোদ, কপালে ঘাম, হাতে ব্যালট পেপার। পাশ থেকে কফিলের লোকজন বারবার মনে করিয়ে দেয়, ভুলে যাইয়েন না কিন্তু, সান্ডা মার্কায় ভোট দিলেই পাবেন এক একটি সান্ডা! জনগণও ভোট দেয়, আর মনে মনে ভাবে, এই ভোটই আমাদের বাঁশ খাওয়া থেকে মুক্তির পথ।
কিন্তু হায়! ভোটের পরদিন থেকেই অদ্ভুত ব্যাপার শুরু হয়। কফিলেরা হঠাৎই বিদেশ ভ্রমণে যায়, নতুন গাড়ি কেনে, অট্টালিকা তোলে। সান্ডার ফ্রাই সব চলে যায় পাঁচতারা হোটেলের ভোজনশালায়।
আর জনগণ খায় সেই চিরাচরিত বাঁশ। দ্রব্যমূল্যের বাজারে বাঁশ, চাকরির বাজারে বাঁশ, ট্যাক্স দিতে গিয়ে বাঁশ, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েও বাঁশ। এর প্রতিবাদ করলে মেলে বেউড় বাঁশ, খেয়ে হয়ে যায় সবাই চুপ। যেন সেই গানের লাইনের মতো, ‘চুপ চুপ চুপ, অনামিকা চুপ, কথা বলো না...তুমি আমি বাঁশ খাই, কেউ জানে না। শুধু কথা বলো না।’ কোথাও কোনো অনামিকা আর কথা বলেও না।
তবে সান্ডার বদলে বাঁশ দেওয়া নিয়ে কফিলের যুক্তির কমতি নেই। একদিন টকশোতে কফিলকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘জনগণকে তো সান্ডা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন বাঁশ কেন?’
কফিল গম্ভীর মুখে বলল, ‘বাঁশে আছে ফাইবার, আছে ক্যালসিয়াম। খেলে দাঁত শক্ত হয়, শরীর হালকা থাকে। আমরা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করি। তাই বাঁশ দিচ্ছি।’
শুনে শ্রোতারা হাততালি দেয়। কফিলের যুক্তিতে কারও কারও জেগে ওঠে দেশপ্রেম। বাঁশ খেয়ে গর্ব করে বলে, ‘আমরা আসল নাগরিক, আমরা দেশের তরে কঠিন বাঁশ খাই ও সহ্য করি!’
কফিল থামে না। দেশের রাজনীতিতে বাঁশের বহুবিধ ব্যবহার জাহির করে ঢুকে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বলতে থাকে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা দুনিয়ায় একই অবস্থা। ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে বাঁশ দিয়ে বলে, ‘তোমাদের তো মেরুদণ্ড দুর্বল, শক্তভাবে বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে পারো না। তোমাদের মেরুদণ্ডকে বাঁশ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো, শক্তিমান হও, তবেই না বিশ্বমঞ্চে জোরগলায় দুটো কথা বলতে পারবে।’
গরিব দেশগুলো বলে, সাধু সাধু! কতই না ভুল বুঝি আপনাদের। দিন, আমাদের আরও আরও বাঁশ দিন।’
আমি এবার বন্ধু কফিলকে থামাতে বাধ্য হই। বন্ধু কফিলকে জিজ্ঞেস করি, ‘তুই কি শুধু নামের নয়, কামের কফিলও হতে চাস।’ উত্তর না দিয়ে মুচকি হাসে কফিল। আপনিও ওর মতো মুচকি হাসছেন সম-বাসনায়?

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
আলাপচারিতার এক ফাঁকে বন্ধু কফিল হঠাৎ গম্ভীর মুখে আমাকে জিজ্ঞেস করল, দোস্ত, তুই কি বলতে পারিস, পাণ্ডা কেন বাঁশ খায়? আমি তখন ভেবেছিলাম ও হয়তো জীববিজ্ঞানের কোনো জটিল বিষয় জানতে চাইছে অথবা আমার জানাশোনার দৌড় যাচাই করছে। আমি ভাবান্তরেই বললাম, পাণ্ডার পাচনতন্ত্রে হয়তো বাঁশ হজম করার বিশেষ এনজাইম আছে—তাই বোধহয়।
কফিল তৎক্ষণাৎ হো হো করে হেসে উঠল, যেন আমি নিরেট গাধা। এরপর ও নিজেই ব্যাখ্যা করতে শুরু করল, ঠিক যেন দর্শনের ক্লাসে বক্তৃতা দিচ্ছে। দীর্ঘ বক্তৃতায় ও আমাকে যা বোঝাল, তাতে নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবার কোনো হেতু পাইনি। কফিল বলল, ‘বোকা! পাণ্ডা বাঁশ খায় কারণ ওর কপালে সান্ডা জোটে না। এই দেশে অনেক চতুর কফিল আছে। তাঁদের কপালেই জোটে চর্বিযুক্ত সান্ডার নানা রেসিপি।’
আমি বললাম, ‘ব্যাটা, তোর নামও তো কফিল। নিজের নাম-জাতকে এভাবে শোষকদের কাতারে তুলছিস কীভাবে?’ বন্ধু কফিল বলে, ‘শুধু নাম দিয়ে কি সব হয়, আমি তো আর কামের কফিল না।’ এই বলেই কি এক আক্ষেপ তাঁর, যেন হতাশার সাগরে ডুবে গেল!
আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম, ‘দোয়া করি, তোর প্লেটেও একদিন পড়ুক সান্ডার ফ্রাই!’
কফিল আমার কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে এক মনে বলতে থাকে, ‘বুঝলি রে ব্যাটা, আমাদের দেশের জনগণ পাণ্ডার মতোই অলস আর নির্বোধ, কিন্তু আছে একদল ধূর্ত কফিল। এরা আশ্চর্য এক প্রাণী, চেহারা–সুরতে মানুষ, কিন্তু স্বভাবে হিংস্র হায়েনা, খায় শুধু সান্ডার ফ্রাই। সান্ডা না পেলে কফিলেরা রাতে ঘুমোতে পারে না।’
পাঁচ বছর পরপর এই কফিলেরা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যায়। তখন ওদের ভাষা একেবারে ভদ্রলোকের মতো। মধুময় কণ্ঠে বলবে, ‘ভাই, একবার ভোটটা দেন, প্রতিবেলা আপনার প্লেটে থাকবে সান্ডা। রাস্তাঘাটে উন্নয়নের সান্ডা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধির সান্ডা, বৈদেশিক বিনিয়োগে ঝাঁকে ঝাঁকে সান্ডা।’
জনগণও তখন ভাবে, ‘আহা, এতদিন তো চতুর্মুখী বাঁশ খেয়েছি, এবার বুঝি সত্যি সত্যি সান্ডার স্বাদ পাব।’
এসে যায় ভোটের দিন। একেবারে পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবমুখর পরিবেশ। শুধু হালখাতা নেই, আছে সান্ডার লোভে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। খাই খাই রোদ, কপালে ঘাম, হাতে ব্যালট পেপার। পাশ থেকে কফিলের লোকজন বারবার মনে করিয়ে দেয়, ভুলে যাইয়েন না কিন্তু, সান্ডা মার্কায় ভোট দিলেই পাবেন এক একটি সান্ডা! জনগণও ভোট দেয়, আর মনে মনে ভাবে, এই ভোটই আমাদের বাঁশ খাওয়া থেকে মুক্তির পথ।
কিন্তু হায়! ভোটের পরদিন থেকেই অদ্ভুত ব্যাপার শুরু হয়। কফিলেরা হঠাৎই বিদেশ ভ্রমণে যায়, নতুন গাড়ি কেনে, অট্টালিকা তোলে। সান্ডার ফ্রাই সব চলে যায় পাঁচতারা হোটেলের ভোজনশালায়।
আর জনগণ খায় সেই চিরাচরিত বাঁশ। দ্রব্যমূল্যের বাজারে বাঁশ, চাকরির বাজারে বাঁশ, ট্যাক্স দিতে গিয়ে বাঁশ, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েও বাঁশ। এর প্রতিবাদ করলে মেলে বেউড় বাঁশ, খেয়ে হয়ে যায় সবাই চুপ। যেন সেই গানের লাইনের মতো, ‘চুপ চুপ চুপ, অনামিকা চুপ, কথা বলো না...তুমি আমি বাঁশ খাই, কেউ জানে না। শুধু কথা বলো না।’ কোথাও কোনো অনামিকা আর কথা বলেও না।
তবে সান্ডার বদলে বাঁশ দেওয়া নিয়ে কফিলের যুক্তির কমতি নেই। একদিন টকশোতে কফিলকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘জনগণকে তো সান্ডা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন বাঁশ কেন?’
কফিল গম্ভীর মুখে বলল, ‘বাঁশে আছে ফাইবার, আছে ক্যালসিয়াম। খেলে দাঁত শক্ত হয়, শরীর হালকা থাকে। আমরা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করি। তাই বাঁশ দিচ্ছি।’
শুনে শ্রোতারা হাততালি দেয়। কফিলের যুক্তিতে কারও কারও জেগে ওঠে দেশপ্রেম। বাঁশ খেয়ে গর্ব করে বলে, ‘আমরা আসল নাগরিক, আমরা দেশের তরে কঠিন বাঁশ খাই ও সহ্য করি!’
কফিল থামে না। দেশের রাজনীতিতে বাঁশের বহুবিধ ব্যবহার জাহির করে ঢুকে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বলতে থাকে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা দুনিয়ায় একই অবস্থা। ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে বাঁশ দিয়ে বলে, ‘তোমাদের তো মেরুদণ্ড দুর্বল, শক্তভাবে বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে পারো না। তোমাদের মেরুদণ্ডকে বাঁশ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো, শক্তিমান হও, তবেই না বিশ্বমঞ্চে জোরগলায় দুটো কথা বলতে পারবে।’
গরিব দেশগুলো বলে, সাধু সাধু! কতই না ভুল বুঝি আপনাদের। দিন, আমাদের আরও আরও বাঁশ দিন।’
আমি এবার বন্ধু কফিলকে থামাতে বাধ্য হই। বন্ধু কফিলকে জিজ্ঞেস করি, ‘তুই কি শুধু নামের নয়, কামের কফিলও হতে চাস।’ উত্তর না দিয়ে মুচকি হাসে কফিল। আপনিও ওর মতো মুচকি হাসছেন সম-বাসনায়?
বিশ্ব বাঁশ দিবস
আবদুল বাছেদ, ঢাকা

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
আলাপচারিতার এক ফাঁকে বন্ধু কফিল হঠাৎ গম্ভীর মুখে আমাকে জিজ্ঞেস করল, দোস্ত, তুই কি বলতে পারিস, পাণ্ডা কেন বাঁশ খায়? আমি তখন ভেবেছিলাম ও হয়তো জীববিজ্ঞানের কোনো জটিল বিষয় জানতে চাইছে অথবা আমার জানাশোনার দৌড় যাচাই করছে। আমি ভাবান্তরেই বললাম, পাণ্ডার পাচনতন্ত্রে হয়তো বাঁশ হজম করার বিশেষ এনজাইম আছে—তাই বোধহয়।
কফিল তৎক্ষণাৎ হো হো করে হেসে উঠল, যেন আমি নিরেট গাধা। এরপর ও নিজেই ব্যাখ্যা করতে শুরু করল, ঠিক যেন দর্শনের ক্লাসে বক্তৃতা দিচ্ছে। দীর্ঘ বক্তৃতায় ও আমাকে যা বোঝাল, তাতে নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবার কোনো হেতু পাইনি। কফিল বলল, ‘বোকা! পাণ্ডা বাঁশ খায় কারণ ওর কপালে সান্ডা জোটে না। এই দেশে অনেক চতুর কফিল আছে। তাঁদের কপালেই জোটে চর্বিযুক্ত সান্ডার নানা রেসিপি।’
আমি বললাম, ‘ব্যাটা, তোর নামও তো কফিল। নিজের নাম-জাতকে এভাবে শোষকদের কাতারে তুলছিস কীভাবে?’ বন্ধু কফিল বলে, ‘শুধু নাম দিয়ে কি সব হয়, আমি তো আর কামের কফিল না।’ এই বলেই কি এক আক্ষেপ তাঁর, যেন হতাশার সাগরে ডুবে গেল!
আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম, ‘দোয়া করি, তোর প্লেটেও একদিন পড়ুক সান্ডার ফ্রাই!’
কফিল আমার কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে এক মনে বলতে থাকে, ‘বুঝলি রে ব্যাটা, আমাদের দেশের জনগণ পাণ্ডার মতোই অলস আর নির্বোধ, কিন্তু আছে একদল ধূর্ত কফিল। এরা আশ্চর্য এক প্রাণী, চেহারা–সুরতে মানুষ, কিন্তু স্বভাবে হিংস্র হায়েনা, খায় শুধু সান্ডার ফ্রাই। সান্ডা না পেলে কফিলেরা রাতে ঘুমোতে পারে না।’
পাঁচ বছর পরপর এই কফিলেরা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যায়। তখন ওদের ভাষা একেবারে ভদ্রলোকের মতো। মধুময় কণ্ঠে বলবে, ‘ভাই, একবার ভোটটা দেন, প্রতিবেলা আপনার প্লেটে থাকবে সান্ডা। রাস্তাঘাটে উন্নয়নের সান্ডা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধির সান্ডা, বৈদেশিক বিনিয়োগে ঝাঁকে ঝাঁকে সান্ডা।’
জনগণও তখন ভাবে, ‘আহা, এতদিন তো চতুর্মুখী বাঁশ খেয়েছি, এবার বুঝি সত্যি সত্যি সান্ডার স্বাদ পাব।’
এসে যায় ভোটের দিন। একেবারে পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবমুখর পরিবেশ। শুধু হালখাতা নেই, আছে সান্ডার লোভে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। খাই খাই রোদ, কপালে ঘাম, হাতে ব্যালট পেপার। পাশ থেকে কফিলের লোকজন বারবার মনে করিয়ে দেয়, ভুলে যাইয়েন না কিন্তু, সান্ডা মার্কায় ভোট দিলেই পাবেন এক একটি সান্ডা! জনগণও ভোট দেয়, আর মনে মনে ভাবে, এই ভোটই আমাদের বাঁশ খাওয়া থেকে মুক্তির পথ।
কিন্তু হায়! ভোটের পরদিন থেকেই অদ্ভুত ব্যাপার শুরু হয়। কফিলেরা হঠাৎই বিদেশ ভ্রমণে যায়, নতুন গাড়ি কেনে, অট্টালিকা তোলে। সান্ডার ফ্রাই সব চলে যায় পাঁচতারা হোটেলের ভোজনশালায়।
আর জনগণ খায় সেই চিরাচরিত বাঁশ। দ্রব্যমূল্যের বাজারে বাঁশ, চাকরির বাজারে বাঁশ, ট্যাক্স দিতে গিয়ে বাঁশ, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েও বাঁশ। এর প্রতিবাদ করলে মেলে বেউড় বাঁশ, খেয়ে হয়ে যায় সবাই চুপ। যেন সেই গানের লাইনের মতো, ‘চুপ চুপ চুপ, অনামিকা চুপ, কথা বলো না...তুমি আমি বাঁশ খাই, কেউ জানে না। শুধু কথা বলো না।’ কোথাও কোনো অনামিকা আর কথা বলেও না।
তবে সান্ডার বদলে বাঁশ দেওয়া নিয়ে কফিলের যুক্তির কমতি নেই। একদিন টকশোতে কফিলকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘জনগণকে তো সান্ডা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন বাঁশ কেন?’
কফিল গম্ভীর মুখে বলল, ‘বাঁশে আছে ফাইবার, আছে ক্যালসিয়াম। খেলে দাঁত শক্ত হয়, শরীর হালকা থাকে। আমরা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করি। তাই বাঁশ দিচ্ছি।’
শুনে শ্রোতারা হাততালি দেয়। কফিলের যুক্তিতে কারও কারও জেগে ওঠে দেশপ্রেম। বাঁশ খেয়ে গর্ব করে বলে, ‘আমরা আসল নাগরিক, আমরা দেশের তরে কঠিন বাঁশ খাই ও সহ্য করি!’
কফিল থামে না। দেশের রাজনীতিতে বাঁশের বহুবিধ ব্যবহার জাহির করে ঢুকে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বলতে থাকে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা দুনিয়ায় একই অবস্থা। ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে বাঁশ দিয়ে বলে, ‘তোমাদের তো মেরুদণ্ড দুর্বল, শক্তভাবে বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে পারো না। তোমাদের মেরুদণ্ডকে বাঁশ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো, শক্তিমান হও, তবেই না বিশ্বমঞ্চে জোরগলায় দুটো কথা বলতে পারবে।’
গরিব দেশগুলো বলে, সাধু সাধু! কতই না ভুল বুঝি আপনাদের। দিন, আমাদের আরও আরও বাঁশ দিন।’
আমি এবার বন্ধু কফিলকে থামাতে বাধ্য হই। বন্ধু কফিলকে জিজ্ঞেস করি, ‘তুই কি শুধু নামের নয়, কামের কফিলও হতে চাস।’ উত্তর না দিয়ে মুচকি হাসে কফিল। আপনিও ওর মতো মুচকি হাসছেন সম-বাসনায়?

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
আলাপচারিতার এক ফাঁকে বন্ধু কফিল হঠাৎ গম্ভীর মুখে আমাকে জিজ্ঞেস করল, দোস্ত, তুই কি বলতে পারিস, পাণ্ডা কেন বাঁশ খায়? আমি তখন ভেবেছিলাম ও হয়তো জীববিজ্ঞানের কোনো জটিল বিষয় জানতে চাইছে অথবা আমার জানাশোনার দৌড় যাচাই করছে। আমি ভাবান্তরেই বললাম, পাণ্ডার পাচনতন্ত্রে হয়তো বাঁশ হজম করার বিশেষ এনজাইম আছে—তাই বোধহয়।
কফিল তৎক্ষণাৎ হো হো করে হেসে উঠল, যেন আমি নিরেট গাধা। এরপর ও নিজেই ব্যাখ্যা করতে শুরু করল, ঠিক যেন দর্শনের ক্লাসে বক্তৃতা দিচ্ছে। দীর্ঘ বক্তৃতায় ও আমাকে যা বোঝাল, তাতে নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবার কোনো হেতু পাইনি। কফিল বলল, ‘বোকা! পাণ্ডা বাঁশ খায় কারণ ওর কপালে সান্ডা জোটে না। এই দেশে অনেক চতুর কফিল আছে। তাঁদের কপালেই জোটে চর্বিযুক্ত সান্ডার নানা রেসিপি।’
আমি বললাম, ‘ব্যাটা, তোর নামও তো কফিল। নিজের নাম-জাতকে এভাবে শোষকদের কাতারে তুলছিস কীভাবে?’ বন্ধু কফিল বলে, ‘শুধু নাম দিয়ে কি সব হয়, আমি তো আর কামের কফিল না।’ এই বলেই কি এক আক্ষেপ তাঁর, যেন হতাশার সাগরে ডুবে গেল!
আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম, ‘দোয়া করি, তোর প্লেটেও একদিন পড়ুক সান্ডার ফ্রাই!’
কফিল আমার কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে এক মনে বলতে থাকে, ‘বুঝলি রে ব্যাটা, আমাদের দেশের জনগণ পাণ্ডার মতোই অলস আর নির্বোধ, কিন্তু আছে একদল ধূর্ত কফিল। এরা আশ্চর্য এক প্রাণী, চেহারা–সুরতে মানুষ, কিন্তু স্বভাবে হিংস্র হায়েনা, খায় শুধু সান্ডার ফ্রাই। সান্ডা না পেলে কফিলেরা রাতে ঘুমোতে পারে না।’
পাঁচ বছর পরপর এই কফিলেরা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যায়। তখন ওদের ভাষা একেবারে ভদ্রলোকের মতো। মধুময় কণ্ঠে বলবে, ‘ভাই, একবার ভোটটা দেন, প্রতিবেলা আপনার প্লেটে থাকবে সান্ডা। রাস্তাঘাটে উন্নয়নের সান্ডা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধির সান্ডা, বৈদেশিক বিনিয়োগে ঝাঁকে ঝাঁকে সান্ডা।’
জনগণও তখন ভাবে, ‘আহা, এতদিন তো চতুর্মুখী বাঁশ খেয়েছি, এবার বুঝি সত্যি সত্যি সান্ডার স্বাদ পাব।’
এসে যায় ভোটের দিন। একেবারে পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবমুখর পরিবেশ। শুধু হালখাতা নেই, আছে সান্ডার লোভে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। খাই খাই রোদ, কপালে ঘাম, হাতে ব্যালট পেপার। পাশ থেকে কফিলের লোকজন বারবার মনে করিয়ে দেয়, ভুলে যাইয়েন না কিন্তু, সান্ডা মার্কায় ভোট দিলেই পাবেন এক একটি সান্ডা! জনগণও ভোট দেয়, আর মনে মনে ভাবে, এই ভোটই আমাদের বাঁশ খাওয়া থেকে মুক্তির পথ।
কিন্তু হায়! ভোটের পরদিন থেকেই অদ্ভুত ব্যাপার শুরু হয়। কফিলেরা হঠাৎই বিদেশ ভ্রমণে যায়, নতুন গাড়ি কেনে, অট্টালিকা তোলে। সান্ডার ফ্রাই সব চলে যায় পাঁচতারা হোটেলের ভোজনশালায়।
আর জনগণ খায় সেই চিরাচরিত বাঁশ। দ্রব্যমূল্যের বাজারে বাঁশ, চাকরির বাজারে বাঁশ, ট্যাক্স দিতে গিয়ে বাঁশ, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েও বাঁশ। এর প্রতিবাদ করলে মেলে বেউড় বাঁশ, খেয়ে হয়ে যায় সবাই চুপ। যেন সেই গানের লাইনের মতো, ‘চুপ চুপ চুপ, অনামিকা চুপ, কথা বলো না...তুমি আমি বাঁশ খাই, কেউ জানে না। শুধু কথা বলো না।’ কোথাও কোনো অনামিকা আর কথা বলেও না।
তবে সান্ডার বদলে বাঁশ দেওয়া নিয়ে কফিলের যুক্তির কমতি নেই। একদিন টকশোতে কফিলকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘জনগণকে তো সান্ডা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন বাঁশ কেন?’
কফিল গম্ভীর মুখে বলল, ‘বাঁশে আছে ফাইবার, আছে ক্যালসিয়াম। খেলে দাঁত শক্ত হয়, শরীর হালকা থাকে। আমরা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করি। তাই বাঁশ দিচ্ছি।’
শুনে শ্রোতারা হাততালি দেয়। কফিলের যুক্তিতে কারও কারও জেগে ওঠে দেশপ্রেম। বাঁশ খেয়ে গর্ব করে বলে, ‘আমরা আসল নাগরিক, আমরা দেশের তরে কঠিন বাঁশ খাই ও সহ্য করি!’
কফিল থামে না। দেশের রাজনীতিতে বাঁশের বহুবিধ ব্যবহার জাহির করে ঢুকে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বলতে থাকে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা দুনিয়ায় একই অবস্থা। ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে বাঁশ দিয়ে বলে, ‘তোমাদের তো মেরুদণ্ড দুর্বল, শক্তভাবে বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে পারো না। তোমাদের মেরুদণ্ডকে বাঁশ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো, শক্তিমান হও, তবেই না বিশ্বমঞ্চে জোরগলায় দুটো কথা বলতে পারবে।’
গরিব দেশগুলো বলে, সাধু সাধু! কতই না ভুল বুঝি আপনাদের। দিন, আমাদের আরও আরও বাঁশ দিন।’
আমি এবার বন্ধু কফিলকে থামাতে বাধ্য হই। বন্ধু কফিলকে জিজ্ঞেস করি, ‘তুই কি শুধু নামের নয়, কামের কফিলও হতে চাস।’ উত্তর না দিয়ে মুচকি হাসে কফিল। আপনিও ওর মতো মুচকি হাসছেন সম-বাসনায়?

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৬ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৭ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
১১ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৬ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৭ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
১১ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
৬ ঘণ্টা আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৭ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
১১ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৬ দিন আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
১১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। জীবনে নানাভাবেই বাঁশ খেয়েই চলেছি, আক্ষরিক অর্থে না হলেও ভাবগত দিক থেকে তো বটেই। এই রুঢ় জীবন বাস্তবতায় সব মানুষকেই কখনো না কখনো একটু-আধটু বাঁশ খেতেই হয়। তো বাঁশ দিবসে কাজের ফাঁকে আমার বন্ধু কফিলের সঙ্গে এই ‘বাঁশ খাওয়া’ নিয়েই আলাপ করছিলাম।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৬ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৭ দিন আগে