জাহাঙ্গীর আলম
বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।
অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!
বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।
অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!
জাহাঙ্গীর আলম
বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।
অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!
বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।
অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৯ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেকুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৯ ঘণ্টা আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৯ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৯ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগে