ইশতিয়াক হাসান
গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!
গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!
ইশতিয়াক হাসান
গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!
গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৫ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেকুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৫ ঘণ্টা আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৫ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১৫ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৬ দিন আগে