Ajker Patrika

ঋত্বিক ঘটক

সম্পাদকীয়
ঋত্বিক ঘটক

ঋত্বিক কুমার ঘটককে বলা হয় ‘সিনেমার বিপ্লবী’। সিনেমা বানানো তাঁর কাছে শুধু শিল্প ছিল না, ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলার মাধ্যম। জন্মগ্রহণ করেন পুরান ঢাকায়, ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর। তিনি ১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৪৮ সালে কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ-তে অধ্যয়ন করলেও ফাইনাল পরীক্ষা দেননি। দেশভাগের পর কলকাতায় চলে যান। ১৯৪৭ সালে চিদানন্দ দাশগুপ্ত ও সত্যজিৎ রায় মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ‘কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি’।

নিজের জন্মভূমি ত্যাগের ঘটনা আজীবন তাঁকে যন্ত্রণা দিয়েছে। তাই এর প্রভাব তাঁর সিনেমায় দেখা যায়। দেশভাগের সময়েই গল্প-কবিতা লেখার প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে নাটকও লিখেছেন। কলকাতায় গিয়ে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক সংগঠন ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে।

মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানোর মাধ্যম হিসেবে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। জীবন আর সিনেমা তাঁর কাছে পরস্পরের পরিপূরক ছিল।

১৯৫০ সালে নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ সিনেমায় তিনি সহকারী পরিচালক ও অভিনেতা ছিলেন। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’। এটি মুক্তি পায় তাঁর মৃত্যুর পর। এ ছাড়া তিনি নির্মাণ করেন—অযান্ত্রিক, বাড়ী থেকে পালিয়ে, মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা, তিতাস একটি নদীর নাম। জীবনের শেষ সিনেমা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’। এটিকে তাঁর আত্মজীবনীমূলক সিনেমা বলা হয়।

১৯৬৬ সালে ঋত্বিক পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগ দেন এবং পরে উপাধ্যক্ষ হন।

অতিরিক্ত মদ্যপানে শরীর ভেঙে পড়ায় ১৯৬৯ সালের দিকে তাঁকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তিনি কিছু তথ্যচিত্র ও শর্টফিল্মের কাজ করেন। যেমন সায়েন্টিস্টস্ অব টুমরো, ইয়ে কিঁউ, পুরুলিয়ার ছৌ, আমার লেনিন, ওস্তাদ আলাউদ্দীন খান, রামকিঙ্কর (অসমাপ্ত)।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সাহায্য সংগ্রহে তিনি পালন করেন উদ্যোগী ভূমিকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত