ইশতিয়াক হাসান
দক্ষিণ তিউনিসিয়ার মাতমাতা শহরে গেলে অবাক হবেন। কারণ সেখানকার মানুষেরা এখনো বাস করে গুহায়। মূলত আরব আঞ্চলের গরম আবহাওয়ায় একটু আরাম পেতেই বহু বছর ধরে এভাবে গুহা বানিয়ে বাস করে আসছেন তাঁরা।
দজেবাল দাহার অঞ্চলের উষর মালভূমি এলাকায় মাতমাতার অবস্থান। এখানকার বারবার গোত্রের লোকদের এই গুহাজীবনের কারণে জায়গাটি তিউনিসিয়া ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে মোটামুটি পরিচিতি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায় স্টার ওয়ার্স চলচ্চিত্রটি। ছবিটির কিছু দৃশ্যায়ন হয় মাতমাতার পাতাল রাজ্যে। ব্যাস পর্যটকদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠল মাতমাতা।
লিবিয়া এবং তিউনিসিয়ার সীমান্ত এলাকায় বাস করা বারবার গোত্রের লোকেরা দস্যুদের আক্রমণের শিকার হতো বেশি। এতে বাধ্য হয় মাতমাতা মালভূমিতে এসে পর্বতের উপরে গর্ত খুঁড়ে আবাস তৈরি করতে শুরু করেন। পরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে, তাঁদের অনেকেই পর্বতের নিচের দিকে ঢালে এমনকী সমতলে গ্রাম তৈরি করতে থাকতে শুরু করেন।
মাতমতার বসতি গড়ে উঠেছে বেলে পাথরের তাকের ওপর। এখানে সাধারণ যন্ত্রপাতির সাহায্যেও অনায়াসে খুঁড়া যায়। এভাবে এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে ঘর তৈরি করে আসছে মাতমাতার বারবাররা। যখন তৈরি হয়ে যায় এ বাড়িগুলো হয়ে ওঠে আরব অঞ্চলের অত্যাধিক গরম থেকে বাঁচার একটি বড় আশ্রয়। এ ধরনের বাড়িগুলো বেশ শক্তপোক্ত, অনেক বছর টিকে থাকে। অবশ্য ১৯৬০-র দশকের সেই প্রবল বৃষ্টির মতো কিছু হলে আলাদা কথা। তখন বৃষ্টি ও বন্যায় মাতমাতার পাতাল বসতিরও ক্ষতি হয়।
পৃথিবীতে আরও কিছু এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা গুহায় থাকার নজির আছে। তবে ওই সব জায়গার অধিবাসীরা সাধারণত পাহাড় বা পর্বতঘেঁষে বাসস্থান তৈরি করলেও মাতমাতা ব্যাতিক্রম। এর বদলে মাটিতে বড় একটি গর্ত খুঁড়ে তাঁরা। তারপর ওই গর্তের চারপাশে গুহা তৈরি করে রুম হিসেবে ব্যাবহার করেন। গর্তের মাঝের সমতল জায়গাটি ব্যাবহ্নত হয় বাড়ির উঠোন হিসেবে।
১৯৮৭ সালে স্টার ওয়ার্স চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। সিনেমায় দেখানো লুক স্কাইওয়াকারের বাড়িটি তিউনিসিয়ার মাতমাতার পাতালরাজ্যে। বলা চলে তারপরই স্টার ওয়াসর ভক্ত থেকে শুরু করে সাধারণ পর্যটকদের কাছেও পরিচিতি পেয়ে যায় বসতিটি।
মাতমাতার এমন একটি পাতাল বাড়িতে ভ্রমণ আসলেই অসাধারণ অভিজ্ঞতা। উঠান থেকে একটি কামরায় প্রবেশের পর বিভিন্ন সুড়ঙ্গের মাধ্যমে সহজেই অন্যান্য কামরায় চলে যেতে পারবেন। আমাদের সাধারণ বাসা কিংবা বাড়ির মতোই কামরাগুলোর কোনোটা শোবার ঘর, কোনো রান্নাঘর, কোনোটা ডাইনিং, কোনোটা ড্রইং রুম। মাঝখানের উঠোনটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি প্রয়োজনীয় তাজা বাতাসের যোগান দেয়। পরিবারের সদস্যদের আড্ডা কিংবা আত্মীয়-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানোর একটি জায়গা হিসেবেও এটি ব্যাবহার করা হয়।
সেখানে গেলে জামাল, সালেহার মতো আরও কাউকে কাউকে খুঁজে পাবেন। নিজেদের পাতাল আবাস ঘুরিয়ে দেখাবার পাশাপাশি আপনাকে খুব পছন্দ হয়ে গেলে, তাঁদের বিখ্যাত খাবার কসকস বানানো কিংবা গালিচা বুনার কৌশলও শেখাতে পারে । বযেসব যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করে পাতালাজ্য বানাতে তাও দেখার সুযোগ মিলতে পারে। তাঁদের সঙ্গে চাইলে একটা বেলা খেতেও পারেন।
তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই পুরনো বাসস্থান ছেড়ে যাচ্ছেন। ১৯৬০ ও ১৯৭০-র দশকেই যার সূচনা হয়। বিদেশী পর্যটক আসা কমে যাওয়ায় ইদানিং আরও অনেকেই ছেড়ে যাচ্ছেন সাধের গুহা বাড়ি। তবে এরপরও কিছু বারবার পরিবারসমেত রয়ে গেছেন গুহাবাড়িতে। নিজেদের জলপাই বাগানে কাজ করেন তাঁরা। আর মাঝেমাঝে যেসব পর্যটক এখানে আসেন নিজেদের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখিয়ে কিছু রোজগার হয় তাঁদের। এমনকী কীভাবে এ ধরনের মাটি খুঁড়ে এ ধরনের বাড়ি তৈরি করতে হয় এবং এগুলোর দেখভাল করতে হয় এমন মানুষের সংখ্যাও খুব বেশি নয়।
এখন অবশ্য মাতমাতার বেশ কিছু খালি বাড়িকে পর্যটকদের জন্য হোটেল ও রেস্তোঁরায় পরিবর্তিত করা হয়েছে। স্টার ওয়ারস ছাড়াও আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে জায়গাটিতে। স্টার ওয়ারস ভক্তরা চাইলে মাতমাতায় লুক স্কাইওয়াকারের বাড়িতে রাতও কাটাতে পারেন। সেটি এখন রূপান্তরিত হয়েছে হোটেল সিদি ড্রিসে, যেটি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। কাজেই এখানকার গুহাবাসীদের দেখার পাশাপাশি কোনো গুহা হোটেলে রাত কাটাতে চাইলে কিংবা নিদেনপক্ষে রেস্তোঁরায় নাস্তা করতে চাইলে মাতমাতার ঘুরে আসতেই পারেন। সেই সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এখানকার বিখ্যাত জলপাই বাগানেও।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, আ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এনগেইজিং কালচারস. কম, কার্থাজ ম্যাগাজিন. কম
দক্ষিণ তিউনিসিয়ার মাতমাতা শহরে গেলে অবাক হবেন। কারণ সেখানকার মানুষেরা এখনো বাস করে গুহায়। মূলত আরব আঞ্চলের গরম আবহাওয়ায় একটু আরাম পেতেই বহু বছর ধরে এভাবে গুহা বানিয়ে বাস করে আসছেন তাঁরা।
দজেবাল দাহার অঞ্চলের উষর মালভূমি এলাকায় মাতমাতার অবস্থান। এখানকার বারবার গোত্রের লোকদের এই গুহাজীবনের কারণে জায়গাটি তিউনিসিয়া ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে মোটামুটি পরিচিতি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায় স্টার ওয়ার্স চলচ্চিত্রটি। ছবিটির কিছু দৃশ্যায়ন হয় মাতমাতার পাতাল রাজ্যে। ব্যাস পর্যটকদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠল মাতমাতা।
লিবিয়া এবং তিউনিসিয়ার সীমান্ত এলাকায় বাস করা বারবার গোত্রের লোকেরা দস্যুদের আক্রমণের শিকার হতো বেশি। এতে বাধ্য হয় মাতমাতা মালভূমিতে এসে পর্বতের উপরে গর্ত খুঁড়ে আবাস তৈরি করতে শুরু করেন। পরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে, তাঁদের অনেকেই পর্বতের নিচের দিকে ঢালে এমনকী সমতলে গ্রাম তৈরি করতে থাকতে শুরু করেন।
মাতমতার বসতি গড়ে উঠেছে বেলে পাথরের তাকের ওপর। এখানে সাধারণ যন্ত্রপাতির সাহায্যেও অনায়াসে খুঁড়া যায়। এভাবে এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে ঘর তৈরি করে আসছে মাতমাতার বারবাররা। যখন তৈরি হয়ে যায় এ বাড়িগুলো হয়ে ওঠে আরব অঞ্চলের অত্যাধিক গরম থেকে বাঁচার একটি বড় আশ্রয়। এ ধরনের বাড়িগুলো বেশ শক্তপোক্ত, অনেক বছর টিকে থাকে। অবশ্য ১৯৬০-র দশকের সেই প্রবল বৃষ্টির মতো কিছু হলে আলাদা কথা। তখন বৃষ্টি ও বন্যায় মাতমাতার পাতাল বসতিরও ক্ষতি হয়।
পৃথিবীতে আরও কিছু এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা গুহায় থাকার নজির আছে। তবে ওই সব জায়গার অধিবাসীরা সাধারণত পাহাড় বা পর্বতঘেঁষে বাসস্থান তৈরি করলেও মাতমাতা ব্যাতিক্রম। এর বদলে মাটিতে বড় একটি গর্ত খুঁড়ে তাঁরা। তারপর ওই গর্তের চারপাশে গুহা তৈরি করে রুম হিসেবে ব্যাবহার করেন। গর্তের মাঝের সমতল জায়গাটি ব্যাবহ্নত হয় বাড়ির উঠোন হিসেবে।
১৯৮৭ সালে স্টার ওয়ার্স চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। সিনেমায় দেখানো লুক স্কাইওয়াকারের বাড়িটি তিউনিসিয়ার মাতমাতার পাতালরাজ্যে। বলা চলে তারপরই স্টার ওয়াসর ভক্ত থেকে শুরু করে সাধারণ পর্যটকদের কাছেও পরিচিতি পেয়ে যায় বসতিটি।
মাতমাতার এমন একটি পাতাল বাড়িতে ভ্রমণ আসলেই অসাধারণ অভিজ্ঞতা। উঠান থেকে একটি কামরায় প্রবেশের পর বিভিন্ন সুড়ঙ্গের মাধ্যমে সহজেই অন্যান্য কামরায় চলে যেতে পারবেন। আমাদের সাধারণ বাসা কিংবা বাড়ির মতোই কামরাগুলোর কোনোটা শোবার ঘর, কোনো রান্নাঘর, কোনোটা ডাইনিং, কোনোটা ড্রইং রুম। মাঝখানের উঠোনটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি প্রয়োজনীয় তাজা বাতাসের যোগান দেয়। পরিবারের সদস্যদের আড্ডা কিংবা আত্মীয়-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানোর একটি জায়গা হিসেবেও এটি ব্যাবহার করা হয়।
সেখানে গেলে জামাল, সালেহার মতো আরও কাউকে কাউকে খুঁজে পাবেন। নিজেদের পাতাল আবাস ঘুরিয়ে দেখাবার পাশাপাশি আপনাকে খুব পছন্দ হয়ে গেলে, তাঁদের বিখ্যাত খাবার কসকস বানানো কিংবা গালিচা বুনার কৌশলও শেখাতে পারে । বযেসব যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করে পাতালাজ্য বানাতে তাও দেখার সুযোগ মিলতে পারে। তাঁদের সঙ্গে চাইলে একটা বেলা খেতেও পারেন।
তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই পুরনো বাসস্থান ছেড়ে যাচ্ছেন। ১৯৬০ ও ১৯৭০-র দশকেই যার সূচনা হয়। বিদেশী পর্যটক আসা কমে যাওয়ায় ইদানিং আরও অনেকেই ছেড়ে যাচ্ছেন সাধের গুহা বাড়ি। তবে এরপরও কিছু বারবার পরিবারসমেত রয়ে গেছেন গুহাবাড়িতে। নিজেদের জলপাই বাগানে কাজ করেন তাঁরা। আর মাঝেমাঝে যেসব পর্যটক এখানে আসেন নিজেদের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখিয়ে কিছু রোজগার হয় তাঁদের। এমনকী কীভাবে এ ধরনের মাটি খুঁড়ে এ ধরনের বাড়ি তৈরি করতে হয় এবং এগুলোর দেখভাল করতে হয় এমন মানুষের সংখ্যাও খুব বেশি নয়।
এখন অবশ্য মাতমাতার বেশ কিছু খালি বাড়িকে পর্যটকদের জন্য হোটেল ও রেস্তোঁরায় পরিবর্তিত করা হয়েছে। স্টার ওয়ারস ছাড়াও আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে জায়গাটিতে। স্টার ওয়ারস ভক্তরা চাইলে মাতমাতায় লুক স্কাইওয়াকারের বাড়িতে রাতও কাটাতে পারেন। সেটি এখন রূপান্তরিত হয়েছে হোটেল সিদি ড্রিসে, যেটি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। কাজেই এখানকার গুহাবাসীদের দেখার পাশাপাশি কোনো গুহা হোটেলে রাত কাটাতে চাইলে কিংবা নিদেনপক্ষে রেস্তোঁরায় নাস্তা করতে চাইলে মাতমাতার ঘুরে আসতেই পারেন। সেই সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এখানকার বিখ্যাত জলপাই বাগানেও।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, আ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এনগেইজিং কালচারস. কম, কার্থাজ ম্যাগাজিন. কম
নারীর বগলের গন্ধ পুরুষদের আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি তাদের মানসিক চাপও কমাতে পারে। এমনটাই জানা গেছে, জাপানে হওয়া এক চমকপ্রদ গবেষণা থেকে। তবে এই প্রভাব সব সময় দেখা যায় না। মাসের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে, যখন নারীদের গন্ধ পুরুষদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়, তখনই এই প্রভাব দেখা যায়।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সী এমিলি এনজার এখন নিয়মিত আয় করছেন বুকের দুধ বিক্রি করে। পাঁচ সন্তানের এই মা প্রতিদিন সন্তানদের দুধ পান করানোর পর অতিরিক্ত যে দুধ পাম্প করেন, তা ব্যাগে ভরে সংরক্ষণ করেন ফ্রিজে। উদ্দেশ্য—নিজের সন্তানের জন্য নয়, বরং বিক্রি করে বাড়তি আয় করা।
৩ দিন আগেচীনের হুবেই প্রদেশের শিয়াংইয়াং শহরে ঘটেছে এক আজব দুর্ঘটনা। বাগানে কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে একটি পাথরে বসেছিলেন ৭২ বছর বয়সী এক নারী। বসতেই গরমের আঁচ টের পেলেন খুব ভালোমতো! মাত্র ১০ সেকেন্ডেই তাঁর নিতম্ব পুড়ে গেল। যেনতেন পোড়া নয়, রীতিমতো ‘থার্ড ডিগ্রি বার্ন।’ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
৪ দিন আগেসাপের কামড়ে মানুষ মারা যাবে—এ তো চিরচেনা খবর! কিন্তু এবার খবর উল্টো। বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামে ১ বছরের এক শিশু কামড়ে মেরে ফেলেছে বিষধর গোখরাকে! চোখ কপালে তুলে দেওয়া এই ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের পশ্চিম চম্পারণ জেলার মোহাচ্ছি বাংকটওয়া গ্রামে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা তাঁরা জীবনে কখনো দেখেননি—শুধু সিনেমাতে
৬ দিন আগে