Ajker Patrika

পাঁচ বাক্সে লুকানো আছে ২৪ কোটি টাকার গুপ্তধন, সূত্র মিলবে বইয়ে

অনলাইন ডেস্ক    
Thumbnail image
গুপ্তধনের বাক্সটিতে ৬৫টির বেশি দুর্লভ জিনিসপত্র রয়েছে, পাশাপাশি স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু রয়েছে। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক

গুপ্তধন উদ্ধারের অভিযান নিয়ে বই পড়েননি কিংবা সিনেমা দেখেননি এমন মানুষ বিরল। তেমনি ছোটবেলায় লুকানো জিনিস খুঁজে বের করার খেলায় অংশ নিয়েছেন অনেকে। তবে সত্যি গুপ্তধন উদ্ধারের খেলায় মানুষকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৫টি গুপ্তধনের বাক্স লুকিয়ে রেখেছেন তিনি, যার মূল্য ২০ লাখ ডলারেরও বেশি (বাংলাদেশি টাকায় ২৪ কোটি টাকা)।

এখন নিশ্চয় জনতে ইচ্ছা করছে গুপ্তধন উদ্ধারের সূত্র পাওয়া যাবে কোথায়? জন কলিন্স-ব্ল্যাকের সদ্য প্রকাশিত বই ‘দেয়ার’স ট্রেজার ইনসাইডে’ মিলবে গুপ্তধন শিকারিদের জন্য সংকেত। এগুলো অনুসরণ করে যে কেউ খুঁজে পেতে পারেন লুকানো গুপ্তধন ভর্তি পাঁচটি বাক্স।

এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে।

ছোটবেলা থেকেই ফ্যান্টাসি জগতের ভক্ত ছিলেন কলিন্স-ব্ল্যাক। ২০১৫ সালের দিকে, এই সফল সংগীতশিল্পী ও উদ্যোক্তা নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করেন। তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি কিছু করতে, যা শৈশবের সেই কল্পনার জগতে আবার ফিরিয়ে নেবে তাকে।

দেয়ার’স ট্রেজার ইনসাইড বইটিতে গুপ্তধনের বাক্সগুলো খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ক্লু রয়েছে। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক
দেয়ার’স ট্রেজার ইনসাইড বইটিতে গুপ্তধনের বাক্সগুলো খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ক্লু রয়েছে। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক

ফরেস্ট ফেনের ২০১০ সালের বিখ্যাত গুপ্তধন অনুসন্ধানের সেই কাহিনিতে অনুপ্রাণিত হয়ে, তিনি সবাই সহজে অংশ নিতে পারবে এমন একটি গুপ্তধন শিকার অভিযানের ছক কষেন। ফেন যেখানে মাত্র একটি বাক্স রকি পর্বতে লুকিয়ে রেখেছিলেন, সেখানে কলিন্স-ব্ল্যাক যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৫টি বাক্স লুকিয়ে রেখেছেন।

‘আমি চেয়েছিলাম বাক্সগুলো এমনভাবে ছড়িয়ে দিতে, যাতে দেশের প্রতিটি রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষ গুপ্তধন উদ্ধারের ব্যাপারে আশাবাদী হতে পার।’ বলেন তিনি।

কলিন্স-ব্ল্যাক তার বই ‘দেয়ার’স ট্রেজার ইনসাইড’ এমনভাবে লিখেছেন যাতে গুপ্তধন শিকার অভিযানে অংশ না নিলেও সাধারণ পাঠকেরা বঞ্চিত না হন। প্রতিটি অধ্যায়ে একটি করে গুপ্তধনের বাক্স খুঁজে বের করার সংকেত রয়েছে।

জন কলিন্স-ব্ল্যাক।  ছবি: সংগৃহীত
জন কলিন্স-ব্ল্যাক। ছবি: সংগৃহীত

যদিও তিনি বইয়ের বিস্তারিত প্রকাশ করেননি, তিনি নিশ্চিত করেছেন, ‘প্রয়োজনীয় সব সংকেত বইতেই আছে।’

গুপ্তধন অনুসন্ধানের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার জন্য কলিন্স-ব্ল্যাক খুব অল্পসংখ্যক সহযোগী নিয়েছিলেন পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে। এমনকি তিনি তার স্ত্রীকেও লুকানোর সঠিক স্থান জানাননি।

‘আমি অন্য কারও সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করতে চাইনি, কারণ এটি তাদের জন্য একটা বোঝা হয়ে যেত।’ বলেন তিনি।

বইটি ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া জাগিয়েছে। হাজারো অংশগ্রহণকারী ‘ডিসকর্ডে’র মতো আলোচনা চ্যানেলে একত্রিত হয়ে তাদের তত্ত্বগুলো শেয়ার করছে। এমনকি অনেকেই মনে করছেন তারা সেই অঙ্গরাজ্যগুলোর সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করতে পেরেছেন, যেখানে গুপ্তধন লুকানো রয়েছে, জানান কলিন্স-ব্ল্যাক।

জ্যাকুলিন কেনেডি ওনাসিস হোয়াইট হাউসে থাকার সময় এই নীলা ও হিরার ব্রোচটির মালিক ছিলেন। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক
জ্যাকুলিন কেনেডি ওনাসিস হোয়াইট হাউসে থাকার সময় এই নীলা ও হিরার ব্রোচটির মালিক ছিলেন। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক

অভিযাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন কলিন্স। কারণ এ অভিযানে বিপজ্জনক কোনো কাজ, যেমন জলে ডুব দেওয়া, পাহাড়ে চড়া বা ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে প্রবেশ করার প্রয়োজন নেই। সাধারণ স্বাস্থ্যের অধিকারী যে কেউ এই স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন। এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, গুপ্তধন খুঁজে পেতে মাটি খোঁড়ার প্রয়োজন নেই।

যদিও কলিন্স-ব্ল্যাক চান গুপ্তধন শিকার একটি চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা হোক, তবুও তিনি এই অভিযানের সময়সীমা নিয়েও ভেবেছেন। ‘আমি আশা করি এবং বিশ্বাস করি এটি একটু সময় নেবে, তবে তাই বলে চাই না এটি অনন্তকাল ধরে চলতে থাকুক।’ বলেন তিনি।

যদি কয়েক বছর পরেও বাক্সগুলো খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে তিনি আরও সংকেত প্রকাশ করবেন বলে ভাবছেন—বা হয়তো বইটির একটি সিক্যুয়েল তৈরি করবেন—যাতে তার এই অভিযান সফলভাবে শেষ হয়।

লুকানো প্রতিটি বাক্সে এটি খোলার নির্দেশাবলিও পাবেন। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক
লুকানো প্রতিটি বাক্সে এটি খোলার নির্দেশাবলিও পাবেন। ছবি: জন কলিন্স-ব্ল্যাক

এখন নিশ্চয় আপনার জানতে ইচ্ছে করছে বাক্সগুলোতে কী কী গুপ্তধন রয়েছে? জাহাজডুবির গুপ্তধন, খেলাধুলার সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন নানা স্মারক, স্বর্ণ, মূল্যবান ধাতুসহ হরেক রকমের জিনিসই পাবেন। এর মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিসও রয়েছে। যেমন পাবলো পিকাসোর ব্যবহৃত এবং তাঁর তৈরি সামগ্রী, অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট এবং জ্যাকুলিন কেনেডি ওনাসিসের ব্যবহৃত জিনিস।

সবচেয়ে মূল্যবান একটি বাক্সকে ইচ্ছাকৃতভাবে বড় এবং আরও আকর্ষণীয় করা হয়েছে। যাতে এটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় এমন গুপ্তধন শিকারের অভিযান হাতছাড়া করা উচিত নয়, কী বলেন! তবে এর জন্য অবশ্যই আপনাকে মার্কিন মুলুকে যেতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত