Ajker Patrika

রহস্যময় ছায়ামূর্তি আর লম্বা কালো হাত থেকে সাবধান 

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৬: ১৬
রহস্যময় ছায়ামূর্তি আর লম্বা কালো হাত থেকে সাবধান 

বাড়িটির যে নাম তার বাংলা করলে দাঁড়ায় হাজার দরজা। ইন্দোনেশিয়ার এই বাড়িটি সত্যি অনেক দরজা থাকলেও এটি বেশি পরিচিত এর অতীত ইতিহাস আর একে ঘিরে ঘটা নানা ভৌতিক কাণ্ড–কীর্তির জন্য।

ইন্দোনেশিয়ায় সে সময় কলোনি স্থাপন করা ডাচরা বিশ শতকের গোড়ার দিকে লাওয়াং সিও নামে পরিচিত বাড়িটি তৈরি করে জাভার সিমারাং শহরে। ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল কোম্পানির সদর দপ্তর করা হয় একে। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা একে ডিটেনশন ক্যাম্প বা বন্দী শিবিরে রূপান্তর করেন। যুদ্ধের সময় ভয়ংকর কিছু ইন্টারোগেশন বা জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন এবং মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা ঘটে দালানটির চার দেয়ালের মধ্যে। স্থানীয়দের বিশ্বাস এ ঘটনাগুলোর ফলাফল হিসেবেই এই দালানটিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের ভুতুড়ে আর অতিপ্রাকৃত ঘটনার বিস্তার শুরু হয়। এমনকি এখনো এখানে অস্বাভাবিক শক্তি বা অশরীরীর উপস্থিতির অভিযোগ করেন পর্যটকেরা।

দালান বি–এর বেসমেন্ট ঘিরেই রহস্যময় ঘটনা ঘটে বেশি। ছবি: উইকিপিডিয়া

শুরুতে ভাবা হয়েছিল এর অতীতের কারণে পর্যটকেরা এখানে যেতে সাহস করবেন না। কিন্তু এখন গড়ে প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার মানুষ হাজির হন ভুতুড়ে বাড়িটিতে। যেসব পর্যটক এখন পরিত্যক্ত ভবনটিতে যান, বেশিরভাগের উদ্দেশ থাকে একে ঘিরে যেসব রহস্যময় ও অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটছে তার সত্যতা যাচাই। কিংবা এ রকম কোনো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার আশায়ও যান অনেকেই। 

১৯০৩–০৪ সালের দিকে লাওয়াং সিওর মূল দালান অর্থাৎ বিল্ডিং এ এর কাজ শুরু হয়। এল আকারের দালানটির দু–পাশে চার তলা দুটি টাওয়ার আছে। এটার কাজ ১৯০৭ সালে শেষ হলেও বিল্ডিং বি তৈরির কাজ শেষ হয় ১৯১৯ সালে। এই দেরির কারণ সম্ভবত দালানটির বিশালাকায় বেসমেন্টটি তৈরিতে বাড়তি সময় লাগা।  
লাওয়াং সিওর ঘোরানো সিঁড়ি। ছবি: ফেসবুকদালানটির বিভিন্ন অংশ আর কামরাকে ঘিরেই ভুতুড়ে ঘটনা ঘটার কথা বলেন পর্যটক ও আশপাশের এলাকার মানুষেরা। তবে ভবন বি–এর বেসমেন্ট ঘিরেই বেশির ভাগ অতিপ্রাকৃত ঘটনার জন্ম। দালানটির মধ্যে একটি কুয়া আছে। সেখান থেকে মাঝে মাঝেই ভয়ার্ত ও যন্ত্রণাকাতর চিৎকার শোনা যায়। যদিও কুয়ার মুখ বহু বছর ধরেই বন্ধ। বুকে ভর দিয়ে ছায়ামূর্তিটি চলে বলে দাবি করেন পর্যটকেরা। 

ঘোস্ট হল নামের একটি হলওয়ে আছে। আপাতদৃষ্টিতে এখানে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হবে আপনার। তবে এখানে বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করলে এবং নিঃশব্দে উবু হয়ে থাকলে মানব আকারের একটি ছায়াময় কাঠামো দেখবেন। বুকে ভর দিয়ে যেটি এগিয়ে আসছে।

লাওয়াং সিওর বারান্দায় পর্যটকেরা। ছবি: ফেসবুকএখানে বন্দীদের আটকে রাখা হতো যেসব কামরায় অর্থাৎ প্রিজন রুমে গেলে অদ্ভুত, রহস্যময় একটি গন্ধ নাকে এসে লাগবে। একপর্যায়ে আবিষ্কার করবেন এটার রক্তের গন্ধের মিল আছে। 

ভবনটির ভেতরে বড় একটি গেট আছে। সেখানেও অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতির গল্প শোনা যায়। অনেকেই লম্বা, দুটো কালো হাত দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কথা বলেন। কেউ কেউ আবার সাদা পোষক পড়া ভাঙা মুখের একটি কাঠামো দেখে চমকে ওঠেন। কেউ আবার সাদা একটি ছায়াকে গেট বা দেয়াল ফুঁড়ে চলে যেতে দেখেন।দালানটির বিভিন্ন অংশ আর কামরাকে ঘিরেই ভুতুড়ে ঘটনা ঘটার কথা বলেন পর্যটক ও আশপাশের এলাকার মানুষ। ছবি: উইকিপিডিয়া

ডাচ একজন নারীর ভূত দেখার কথা বলেন অনেকেই। বলা হয় ভবনটিতে আত্মহত্যা করেছিলেন এই নারী। যদ্দুর জানা যায় বিশ্বযুদ্ধের সময় অধিকাংশ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল বাড়িটির বেসমেন্ট বা পাতাল কুঠুরিতে। সেখানে গেলে অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকেই। কেউ কেউ মাথা ছাড়া একটি ছায়ামূর্তি দেখার দাবিও করেন।

লাওয়াং সিওর সঙ্গে একটি কিংবদন্তিরও যোগ আছে। কুন্তিলানাক বা পন্তিয়ানাক নামে পরিচিত অশরীরীদের একটি হানা দেওয়ার খবর পাওয়া যায় এখানকার দালান কিংবা দালানগুলোকে ঘিরে। কিংবদন্তি অনুসারে, কম বয়সে মারা যাওয়ার পর ভ্যাম্পায়ারে পরিণত হওয়া এক নারী এটি। মুখ ফ্যাকাশে, চুল লম্বা। লাল চোখের এই অশরীরীদের শরীরে থাকে রক্তে ভেজা সাদা এক পোশাক। দাঁত সুচালো। গুজব আছে, এরা নিজেদের সুন্দর নারীতে রূপান্তরিত করে তরুণদের ফাঁদে ফেলে।

লাওয়াং সিওর কিছু অংশ। ছবি: ফেসবুকপ্রকৃতপক্ষে দরজার গর্ত দালানটিতে আছে ৪২৯টি, তবে দরজার সংখ্যা বা কপাট আছে ১২০০–র বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক সঙ্গে দুটি কিংবা চারটি দরজা আছে।

তবে শুধু যে ভুতুড়ে ঘটনায় যাদের আগ্রহ, অভিজ্ঞতা নিতে তারাই এই দালানে আসেন তা নয়, বিয়ের সময় ঘনিয়ে আসা তরুণ–তরুণী জুটিরাও আসেন। তাঁরা আসেন দালানটিতে ছবি তুলতে।

দালানটি এল আকারের। ছবি: ফেসবুকভুতুড়ে বাড়িটি নিয়ে ছবিও তৈরি হয়েছে। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটির নাম, ‘লাওয়াং সিও, ডেনডাম কুন্তিলানাক’। চলচ্চিত্রটিতে দেখা যায় জাকার্তার একটি হাই স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী লাওয়াং সিওতে আসে। কিন্তু এখানে তারা আটকা পড়ে যায়। শুধু তাই নয় এক ডাচ নারীর অশরীরী, শিকলবন্দী এক লোকের প্রেতাত্মা এবং অবশ্যই কুন্তিুলানাক থেকে বাঁচতে লড়াই করতে হয় তাদের।

কাজেই পাঠক ইন্দোনেশিয়ায় গেলে জাভার সিমারাং শহরের এই ভুতুড়ে দালানে একটি বার ঢুঁ মারতেই পারেন, অবশ্যই আপনি যদি সাহসী হোন কেবলমাত্র তবেই সে পরামর্শ দেব। কারণ কে জানে, ভুতুড়ে বাড়িতে কী ধরনের বিস্ময় অপেক্ষা করছে আপনার জন্য!

সূত্র: ওয়ার্ল্ড প্রেস ডট কম, সিএন ট্রাভেলার ডট কম, দ্য লিটল হাউস অব হররস ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৩ লাখ টাকার ‘ডিম’ গিলে ফেললেন যুবক, এক সপ্তাহ পর যেভাবে উদ্ধার করল পুলিশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হীরকখচিত মহামূল্যবান ডিম গিলে ফেলেছিলেন এক যুবক। ছবি: নিউজিল্যান্ড পুলিশ
হীরকখচিত মহামূল্যবান ডিম গিলে ফেলেছিলেন এক যুবক। ছবি: নিউজিল্যান্ড পুলিশ

এক চুরির ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে গেল নিউজিল্যান্ডে। এক ব্যক্তি একটি বহুমূল্য হীরকখচিত লকেট চুরি করতে গিয়ে তা গিলে ফেলেন। তবে অবশেষে সেই লকেটটি ‘স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়’ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের পক্ষ থেকে বিবিসিকে জানানো হয়েছে, লকেটটি উদ্ধার করতে ‘মেডিকেল হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়নি’।

৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে অকল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্যারট্রিজ জুয়েলার্সের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, লকেটটি গিলে ফেলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁকে ধরা হয়। চুরির প্রায় এক সপ্তাহ পরে এই মূল্যবান জিনিসটি উদ্ধার করা সম্ভব হলো।

ফেবার্গে এগ-এর আদলে তৈরি এই লকেটটির মূল্য ৩৩ হাজার ৫৮৫ নিউজিল্যান্ড ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৩ লাখ টাকার বেশি)। জুয়েলারের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গিলে ফেলা এই লকেটটিতে ৬০টি সাদা হিরা এবং ১৫টি নীলকান্তমণি বসানো রয়েছে। লকেটটি খুললে এর ভেতরে ১৮ ক্যারেট সোনার তৈরি একটি ছোট অক্টোপাস দেখা যায়। এই কারণে লকেটটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অক্টোপাস ডিম’। ১৯৮৩ সালের জেমস বন্ড ছবি ‘অক্টোপাসি’ থেকে অনুপ্রাণিত।

চুরি করার পর থেকেই পুলিশ ওই ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে রেখে লাগাতার নজরদারি চালাচ্ছিল। নিউজিল্যান্ড পুলিশ এর আগে জানিয়েছিল, যেহেতু এই ব্যক্তি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন, তাই যা ঘটেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পর্যবেক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য।

ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ৮ ডিসেম্বর তাঁকে ফের আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু এই লকেট চুরিই নয়, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। ১২ নভেম্বর একই জুয়েলারি দোকান থেকে একটি আইপ্যাড চুরি করেছিলেন তিনি। এর একদিন পরে একটি ব্যক্তিগত ঠিকানা থেকে ১০০ নিউজিল্যান্ড ডলার মূল্যের বিড়ালের লিটার এবং ফ্লি কন্ট্রোল (মাছি নিয়ন্ত্রণ) পণ্য চুরি করেন।

প্যারট্রিজ জুয়েলার্স জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া এই বিরল ফেবার্গে লকেটটি নির্মাতাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৯ হাজার ডলারের ‘ডিম’ গিলে যুবক কারাগারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডে এক ব্যক্তি হীরাখচিত লকেট চুরি করেছেন এমন এক উপায়ে, যা শুনলে সিনেমার দৃশ্যই মনে হয়। দোকানদারেরা টের পাওয়ার আগেই তিনি লকেটটি গিলে ফেলেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, গিলে ফেলা ফ্যাবারজে এগ লকেট, যার মূল্য ৩৩ হাজার ৫৮৫ নিউজিল্যান্ড ডলার (১৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার) এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, গত শুক্রবার বিকেলে অকল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলে পারট্রিজ জুয়েলার্সে পুলিশ ডাকা হলে ৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে দোকান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

জুয়েলারির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, যে ফ্যাবারজে এগ চুরি করা হয়েছে, তাতে রয়েছে ৬০টি সাদা হীরা এবং ১৫টি নীল নীলা। ডিমটি খুললে দেখা যায়, ভেতরে ১৮ ক্যারেট সোনার একটি ছোট্ট অক্টোপাস।

ডিমটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অক্টোপাসি এগ’, যা ১৯৮৩ সালের একই নামের জেমস বন্ড চলচ্চিত্র থেকে অনুপ্রাণিত; যার কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে এক জটিল ফ্যাবারজে এগ চুরির ঘটনা।

ফ্যাবারজে দুই শতাব্দীর বেশি আগে রাশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এক বিশ্বখ্যাত জুয়েলারি ব্র্যান্ড, যা রত্ন ও মূল্যবান ধাতু দিয়ে তৈরি ডিম-আকৃতির শিল্পকর্মের জন্য পরিচিত।

বিবিসি জানিয়েছে, ৮ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তির। তিনি গত ১২ নভেম্বর একই জুয়েলারি দোকান থেকে একটি আইপ্যাড চুরির অভিযোগেও অভিযুক্ত। পরদিন ১০০ নিউজিল্যান্ড ডলার মূল্যের বিড়ালের বর্জ্য পরিষ্কারের সামগ্রী ও পিঁপড়া নিয়ন্ত্রণের পণ্য চুরির অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জরায়ুহীন হয়ে জন্মেছিলেন, তাঁর হয়ে সন্তান জন্ম দিলেন প্রিয় বন্ধু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৪
গত অক্টোবরে জর্জিয়া ব্যারিংটনের সন্তান ওটিলির জন্ম দেন ডেইজি হোপ (ডানে)। ছবি: বিবিসি
গত অক্টোবরে জর্জিয়া ব্যারিংটনের সন্তান ওটিলির জন্ম দেন ডেইজি হোপ (ডানে)। ছবি: বিবিসি

সদ্য মা হয়েছেন জর্জিয়া ব্যারিংটন। কিন্তু মেয়ে ওটিলিকে তিনি জন্ম দেননি। জন্ম দিয়েছেন তাঁর প্রিয় বন্ধু ডেইজি হোপ; যিনি কিশোর বয়সে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে জর্জিয়ার হয়ে সন্তানের জন্ম দেন।

দুই বন্ধু ছোটবেলা থেকেই অবিচ্ছেদ্য। তাঁরা নিজেদের ‘সোল সিস্টার্স’ বলে ডাকেন। একসঙ্গে বড় হয়েছেন। তাঁদের বাবারাও ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

শৈশবের সেই বন্ধনই একদিন হয়ে ওঠে জীবন বদলে দেওয়া উদারতার ভিত্তি।

১৫ বছর বয়সে জর্জিয়া এমন কিছু জানতে পারেন, যা কোনো অল্প বয়সী মেয়ে আশা করে না। তিনি জরায়ু ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছেন এবং কোনো দিন সন্তান ধারণ করতে পারবেন না।

মেয়ার-রোকিটানস্কি-কুস্টার-হাউসার সিনড্রোম বিরল এক জন্মগত রোগ, যা প্রতি ৫ হাজার নারীর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে দেখা যায়। জর্জিয়ার মনে হয়েছিল, একমুহূর্তে তাঁর ভবিষ্যৎটা যেন বদলে গেল।

১৫ বছর বয়সকালের সেই ঘটনা মনে করে জর্জিয়া বলেন, ‘আমার গোটা পৃথিবীই ভেঙে পড়েছিল। আমি সব সময় ভেবে বড় হয়েছি, আমি একজন মা হব আর সেটা আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হলো। আমি যা কিছু স্বপ্ন দেখেছিলাম, সবই শেষ হয়ে গেল।’

সে সময় ডেইজি খুব মাতৃত্বপ্রবণ ছিলেন না। কিন্তু তিনি বন্ধুর রোগ নির্ণয়ের কথা এখনো স্পষ্ট মনে করতে পারেন। তাঁর কাছে ‘অন্যায়’ মনে হয়েছিল—যে বন্ধু মাতৃত্বের স্বপ্ন দেখতেন, তিনি কিনা মা হতে পারবেন না!

এমা বার্নেটের সঙ্গে ‘রেডি টু টক’ অনুষ্ঠানে ডেইজি বলেন, ‘আমি তাঁকে ভরসা দিতে চেয়েছিলাম, বোঝাতে চেয়েছিলাম—পৃথিবী শেষ হয়ে যায়নি। তাই বলেছিলাম, একদিন আমি তাঁর হয়ে সন্তান ধারণ করব। তখন হয়তো বুঝিনি কথাটার গভীরতা কতটা। কিন্তু ভেতরে ভেতরে জানতাম, জর্জিয়ার জন্য আমি এটা করবই।’

১০ বছরের বেশি সময় পরে ডেইজি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। ২০২৩ সালে দুই বন্ধু মিলে আইভিএফ প্রক্রিয়া শুরু করেন।

জর্জিয়া একজন ধাত্রী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। নিজেকে এমন এক জগতে নিমজ্জিত করেছিলেন, যে জগতে তিনি হয়তো কোনো দিন অংশ নিতে পারবেন না বলে ভয় পেয়েছিলেন।

জর্জিয়া বলেন, ‘একবার আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এটা কি আমার জন্য সঠিক পেশা? কিন্তু আসলে এটা আমাকে সেরে উঠতে সাহায্য করেছে। আর অন্তর থেকে জানতাম—কোনো না কোনোভাবে আমি মা হবই।’

কয়েক বছর পরে ডেইজি তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম দেন। আর সেই প্রসবে ধাত্রী ছিলেন জর্জিয়াই।

ডেইজি বলেন, ‘আমার সন্তানের প্রতি যে ভালোবাসা অনুভব করেছি, তা ছিল অসাধারণ। তখন মনে হয়েছিল, প্রত্যেকেরই তো এই অনুভূতি পাওয়ার অধিকার আছে।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিড়ালের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করল নিউজিল্যান্ড সরকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাকিউরা স্টুয়ার্ট দ্বীপে এই বিড়াল পুকুনুই বা সাউদার্ন ডটারেল প্রজাতি নামে এক ধরনের পাখিকে প্রায় বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ছবি: ১২৩আরএফের সৌজন্যে
রাকিউরা স্টুয়ার্ট দ্বীপে এই বিড়াল পুকুনুই বা সাউদার্ন ডটারেল প্রজাতি নামে এক ধরনের পাখিকে প্রায় বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ছবি: ১২৩আরএফের সৌজন্যে

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০৫০ সালের মধ্যে বন্য বিড়াল বা মালিকহীন বিড়াল নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির সংরক্ষণমন্ত্রী তামা পোতাকা গত শুক্রবার এই ঘোষণা দেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার বন্য বিড়ালকে নিউজিল্যান্ডের বিশ্বস্বীকৃত ‘প্রিডেটর-ফ্রি ২০৫০’ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকায় কিছু শিকারি প্রাণীকে যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। ২০১৬ সালে এই উদ্যোগ চালু হওয়ার পর প্রথমবার কোনো নতুন শিকারিকে এ তালিকায় যুক্ত করা হলো।

দীর্ঘদিন ধরেই নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় বন্য বিড়াল ধরা ও মেরে ফেলা হচ্ছিল। তবে তালিকায় যুক্ত হওয়ায় এবার তাদের বিরুদ্ধে সমন্বিত জাতীয় পর্যায়ের অভিযানে নামবে সরকার—যার মধ্যে থাকবে বৃহৎ আকারের নির্মূল কর্মসূচি ও বিশেষ গবেষণা। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাসে।

নিউজিল্যান্ডের বনভূমি ও উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে বর্তমানে ২৫ লাখেরও বেশি বন্য বিড়াল ও মালিকহীন বিড়ালের বিচরণ। লেজসহ এসব বিড়ালের দৈর্ঘ্য এক মিটার এবং ওজন প্রায় সাত কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এসব বন্য বিড়াল দেশটির দুর্লভ প্রাণিজগৎ ধ্বংসের মূল কারণগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

রাকিউরা স্টুয়ার্ট দ্বীপে এই বিড়াল পুকুনুই বা সাউদার্ন ডটারেল প্রজাতি নামে একধরনের পাখিকে প্রায় বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে। মাউন্ট রুয়াপেহু এলাকায় তারা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০ বাদুড় শিকার করায় সে প্রজাতিও হুমকিতে।

রেডিও নিউজিল্যান্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংরক্ষণমন্ত্রী পোতাকা বন্য বিড়ালকে আখ্যা দেন ‘স্টোন-কোল্ড কিলার’ বা নির্দয় শিকারি হিসেবে। তিনি বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বনভূমির সৌন্দর্য বজায় রাখা এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে এসব হত্যাকারীকে সরিয়ে ফেলতেই হবে।’

বন্য বিড়ালকে তালিকায় যুক্ত করা নিয়ে বহু বছর ধরে প্রচারণা চললেও অতীতে বিষয়টি নিয়ে প্রবল জনমত-বিরোধিতা দেখা গেছে। পরিবেশবিদ গ্যারেথ মরগান ২০১৩ সালে ‘ক্যাটস টু গো’ প্রচারণা শুরু করলে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তবে এবার সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, খসড়া কৌশল নিয়ে জনমতের ৯০ শতাংশই বন্য বিড়াল নির্মূল করার পক্ষে মত দিয়েছে।

এদিকে, গৃহপালিত বিড়াল এ তালিকায় না থাকলেও সেগুলোও দেশটির জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে বিড়াল পালনের দিক থেকে নিউজিল্যান্ড বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত