ধাপে ধাপে নেমে গেছে আশ্চর্য সুন্দর সিঁড়ি। হঠাৎ দেখে ভাবতে পারেন এমন সুন্দর সিঁড়ি বানাল কে? কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও এই সিঁড়ি মানুষের তৈরি নয়। তাহলে কীভাবে জন্ম হলো এই সিঁড়ির?
প্রাচীন শহর হাইরাপোলিসের নিচে অবস্থান পামুক্কালের। হাজার হাজার বছর ধরে পাহাড়ের গা বেয়ে উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম পানির ঝরনার জল নেমে এসে সিঁড়ির মতো তৈরি করেছে। ওপর থেকে কখনো কখনো আবার একটু ঝিনুকের আকৃতির দেখায় ধাপগুলোকে। এই পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতোও তৈরি হয়েছে নানা জায়গায়। এই সাদা সিঁড়ি এবং পুকুরগুলোকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পানি নিয়মিতই সমৃদ্ধ করে।
তুর্কি শব্দ পামুক্কালের অর্থ তুলার প্রাসাদ বা কটন ক্যাসল। ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ পানির কারণে এখানকার সিঁড়িগুলোর রং সাদা হয়। এতে একে অনেকটা ধবধবে সাদা তুলার প্রাসাদ বলে মনে হয়। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, ক্যালসিয়াম জমে একধরনের পাথরের মতো তৈরি করে। যেটি ট্রাভেরটাইন নামে পরিচিত। এই ট্রাভেরটাইনেই গড়ে ওঠে এই ধাপ বা সিঁড়িগুলো।
এখানে গরম পানির ঝরনার সংখ্যা ১৭টি। এগুলোর তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি থেকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এগুলোর থেকে আসা ক্যালসিয়াম কার্বনেট নরম জেলের মতো জমা হয়। ধীরে ধীরে এগুলো ট্রাভেরটাইনে পরিণত হয়।
খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে যখন হাইরোপোলিস শহরটি গড়ে ওঠে, তখন থেকেই প্রাকৃতিক এক দর্শনীয় এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায় পামুক্কালে। বেশ কয়েকবারই ভূমিকম্পের পর পুনর্নির্মাণ হয় শহরটি। শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয় ১৩ শতকে। পরিত্যক্ত ওই শহর মন্দির, থিয়েটারের জন্য বিখ্যাত ছিল। প্রাচীন এই শহর ও পামুক্কালে দুটোর টানেই পর্যটকেরা ছুটে যান জায়গাটিতে। মজার ঘটনা, এখানকার কার্বনেট-সমৃদ্ধ পানির রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে এমন বিশ্বাস আশপাশের মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে বহু আগে থেকেই।
হাইরোপোলিসের ধ্বংসাবশেষসহ পামুক্কালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। তবে একে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণার আগে এখানকার আশ্চর্য সিঁড়ি ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিল। এর কিছুটা অযত্নে, কিছুটা বাণিজ্যিক কারণে। জায়গাটির ওপরেই হোটেল তৈরি করা হয়েছিল। মানুষ ময়লা পা আর জুতায় অনেকগুলো পুকুরের পানিকে বাদামি বানিয়ে ফেলেছিল।
দ্রুতই এ ধরনের হোটেলগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। পুকুর বা ছোট লেকগুলোর প্রাকৃতিক সাদা রং ঠিক রাখতে এগুলোতে নামার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ঝরনা থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। একবারে কেবল নির্দিষ্ট কিছু পুকুর বা লেকে যেন যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়। পর্যটকদের গোসলের জন্য কৃত্রিম পুকুর তৈরি করা হয়।
পামুক্কালে ভ্রমণের সেরা সময় সেখানকার বসন্তে, অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আবহাওয়া ভালো থাকে, পর্যটকের চাপও খুব বেশি থাকে না। তবে গরমের মাসগুলোতে, মানে জুন থেকে আগস্টে পর্যটকের প্রচুর ভিড় থাকে কটন ক্যাসলে। সেক্ষেত্রে সকাল সকাল এলে শান্তিমতো উপভোগ করা যায় জায়গাটির সৌন্দর্য।
প্রকৃতিতে এমন বিষয় বিরল। তবে চিনের হুয়াংলয়ংয়ে এমন কিছু ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ পুল দেখা যায়।
অবশ্য অনেকটা এমন আরেকটি চমৎকার নিদর্শনের দেখা পাবেন উত্তর ইরানের মাজানদারান প্রদেশে। জায়গাটি বাদাব-ই সুরত নামে পরিচিত। সেখানে গেলেই দেখবেন অনেকটা স্টেডিয়ামের গ্যালারির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে সমতল তাক কিংবা চওড়া সিঁড়ি। তবে ওই সিঁড়ির রং সাদা নয়, উজ্জ্বল কমলা-লাল।
নিউজিল্যান্ডেও এ ধরনের একটি জায়গা ছিল। তবে সেটি ধ্বংস হয়ে গেছে ১৮৮৬ সালে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে।
পামুক্কালে তুরস্কের সবচেয়ে বেশি পর্যটক যায়—এমন জায়গাগুলোর একটি। সবচেয়ে কাছের শহর দেনিজলির দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখানকার সাদা সিঁড়ি এমনকি দেখা যায় দেনিজলি শহর থেকেও। সেখান থেকে বাস কিংবা ট্যাক্সিতে অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিতে। বড় শহরগুলোর মধ্যে ইজমির থেকে গাড়িতে চার ঘণ্টা, কাস থেকে আড়াই ঘণ্টা এবং আনতালিয়া থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগে সাদা সিঁড়ির রাজ্যে পৌঁছাতে। কাজেই কখনো তুরস্ক ভ্রমণে গেলে চমৎকার এই জায়গায় ‘অবশ্যই যেতে হবে’—এমন জায়গার তালিকায় রাখবেন আশা করি।
সূত্র: শিপড অ্যাওয়ে ডট কম, এটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া
ধাপে ধাপে নেমে গেছে আশ্চর্য সুন্দর সিঁড়ি। হঠাৎ দেখে ভাবতে পারেন এমন সুন্দর সিঁড়ি বানাল কে? কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও এই সিঁড়ি মানুষের তৈরি নয়। তাহলে কীভাবে জন্ম হলো এই সিঁড়ির?
প্রাচীন শহর হাইরাপোলিসের নিচে অবস্থান পামুক্কালের। হাজার হাজার বছর ধরে পাহাড়ের গা বেয়ে উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম পানির ঝরনার জল নেমে এসে সিঁড়ির মতো তৈরি করেছে। ওপর থেকে কখনো কখনো আবার একটু ঝিনুকের আকৃতির দেখায় ধাপগুলোকে। এই পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতোও তৈরি হয়েছে নানা জায়গায়। এই সাদা সিঁড়ি এবং পুকুরগুলোকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পানি নিয়মিতই সমৃদ্ধ করে।
তুর্কি শব্দ পামুক্কালের অর্থ তুলার প্রাসাদ বা কটন ক্যাসল। ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ পানির কারণে এখানকার সিঁড়িগুলোর রং সাদা হয়। এতে একে অনেকটা ধবধবে সাদা তুলার প্রাসাদ বলে মনে হয়। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, ক্যালসিয়াম জমে একধরনের পাথরের মতো তৈরি করে। যেটি ট্রাভেরটাইন নামে পরিচিত। এই ট্রাভেরটাইনেই গড়ে ওঠে এই ধাপ বা সিঁড়িগুলো।
এখানে গরম পানির ঝরনার সংখ্যা ১৭টি। এগুলোর তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি থেকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এগুলোর থেকে আসা ক্যালসিয়াম কার্বনেট নরম জেলের মতো জমা হয়। ধীরে ধীরে এগুলো ট্রাভেরটাইনে পরিণত হয়।
খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে যখন হাইরোপোলিস শহরটি গড়ে ওঠে, তখন থেকেই প্রাকৃতিক এক দর্শনীয় এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায় পামুক্কালে। বেশ কয়েকবারই ভূমিকম্পের পর পুনর্নির্মাণ হয় শহরটি। শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয় ১৩ শতকে। পরিত্যক্ত ওই শহর মন্দির, থিয়েটারের জন্য বিখ্যাত ছিল। প্রাচীন এই শহর ও পামুক্কালে দুটোর টানেই পর্যটকেরা ছুটে যান জায়গাটিতে। মজার ঘটনা, এখানকার কার্বনেট-সমৃদ্ধ পানির রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে এমন বিশ্বাস আশপাশের মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে বহু আগে থেকেই।
হাইরোপোলিসের ধ্বংসাবশেষসহ পামুক্কালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। তবে একে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণার আগে এখানকার আশ্চর্য সিঁড়ি ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিল। এর কিছুটা অযত্নে, কিছুটা বাণিজ্যিক কারণে। জায়গাটির ওপরেই হোটেল তৈরি করা হয়েছিল। মানুষ ময়লা পা আর জুতায় অনেকগুলো পুকুরের পানিকে বাদামি বানিয়ে ফেলেছিল।
দ্রুতই এ ধরনের হোটেলগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। পুকুর বা ছোট লেকগুলোর প্রাকৃতিক সাদা রং ঠিক রাখতে এগুলোতে নামার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ঝরনা থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। একবারে কেবল নির্দিষ্ট কিছু পুকুর বা লেকে যেন যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়। পর্যটকদের গোসলের জন্য কৃত্রিম পুকুর তৈরি করা হয়।
পামুক্কালে ভ্রমণের সেরা সময় সেখানকার বসন্তে, অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আবহাওয়া ভালো থাকে, পর্যটকের চাপও খুব বেশি থাকে না। তবে গরমের মাসগুলোতে, মানে জুন থেকে আগস্টে পর্যটকের প্রচুর ভিড় থাকে কটন ক্যাসলে। সেক্ষেত্রে সকাল সকাল এলে শান্তিমতো উপভোগ করা যায় জায়গাটির সৌন্দর্য।
প্রকৃতিতে এমন বিষয় বিরল। তবে চিনের হুয়াংলয়ংয়ে এমন কিছু ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ পুল দেখা যায়।
অবশ্য অনেকটা এমন আরেকটি চমৎকার নিদর্শনের দেখা পাবেন উত্তর ইরানের মাজানদারান প্রদেশে। জায়গাটি বাদাব-ই সুরত নামে পরিচিত। সেখানে গেলেই দেখবেন অনেকটা স্টেডিয়ামের গ্যালারির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে সমতল তাক কিংবা চওড়া সিঁড়ি। তবে ওই সিঁড়ির রং সাদা নয়, উজ্জ্বল কমলা-লাল।
নিউজিল্যান্ডেও এ ধরনের একটি জায়গা ছিল। তবে সেটি ধ্বংস হয়ে গেছে ১৮৮৬ সালে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে।
পামুক্কালে তুরস্কের সবচেয়ে বেশি পর্যটক যায়—এমন জায়গাগুলোর একটি। সবচেয়ে কাছের শহর দেনিজলির দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখানকার সাদা সিঁড়ি এমনকি দেখা যায় দেনিজলি শহর থেকেও। সেখান থেকে বাস কিংবা ট্যাক্সিতে অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিতে। বড় শহরগুলোর মধ্যে ইজমির থেকে গাড়িতে চার ঘণ্টা, কাস থেকে আড়াই ঘণ্টা এবং আনতালিয়া থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগে সাদা সিঁড়ির রাজ্যে পৌঁছাতে। কাজেই কখনো তুরস্ক ভ্রমণে গেলে চমৎকার এই জায়গায় ‘অবশ্যই যেতে হবে’—এমন জায়গার তালিকায় রাখবেন আশা করি।
সূত্র: শিপড অ্যাওয়ে ডট কম, এটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া
আজ ফোর টুয়েন্টি (৪২০) দিবস। সংখ্যাটা পড়েই ভাবছেন প্রতারকদের দিবস আজ? না না। এই ফোর টুয়েন্টি সেই ফোর টুয়েন্টি নয়। পশ্চিমা বিশ্বে এই সংখ্যা গাঁজা সংস্কৃতির কোড ভাষা।
১০ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পাচার হচ্ছে বড় আকারের লাখ লাখ পিঁপড়া। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পিঁপড়া পোষা প্রাণী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার জীবন্ত পিঁপড়া পাচারকালে ৪ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।
৫ দিন আগেগত বছর একটি রাতের অনুষ্ঠানে এক ভ্লগারের ক্যামেরায় অপ্রত্যাশিত এবং অশালীন মন্তব্য করে রাতারাতি ভাইরাল হন হেইলি ওয়েলচ। দ্রুতই ‘হক তুয়াহ’ নামে খ্যাতি পান তিনি। সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নামে চালু করা বিতর্কিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে...
৬ দিন আগেরাজনীতি তো বটেই, একের পর এক উদ্ভট কথা আর কাণ্ডের জন্যও আলোচনায় থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার (২ এপ্রিল) বিশ্বজুড়ে শতাধিক দেশের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। এরপর থেকেই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুরুগম্ভীর আলোচনা, বিশ্লেষণ চলছে। আবার সামাজিক মাধ্যমে চলছে
১৬ দিন আগে