পর্তুগাল ফুটবল

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো খেলতে পারবেন না, সেটা জানা গিয়েছিল আগেই। আগে থেকেই যে তাঁর ওপর ছিল নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার খড়্‌গ। তবু আল নাসরের ম্যাচ থাকলে তিনি মাঠে না এসে কি পারেন! যদিও তাঁর দল আল নাসর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোল মানেই যেন আল নাসরের জয়। সৌদি প্রো লিগ, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ—সব টুর্নামেন্টেই রোনালদো গোল পাচ্ছেন। একই সঙ্গে জিতছে আল নাসরও। 

ফিফা দ্য বেস্ট ২০২৩-এর পুরস্কার দূরে থাক, ফিফপ্রোর বর্ষসেরা একাদশেও জায়গা করে নিতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সেই রোনালদো ফিফা দ্য বেস্ট অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিতেছেন তিনটি পুরস্কার। 

বার্সেলোনায় লিওনেল মেসি কাটিয়েছেন প্রায় ২০ বছর। ক্লাব ক্যারিয়ারের অসংখ্য শিরোপা জেতেন বার্সার হয়েই। সেই মেসি এখন খেলছেন ইন্টার মায়ামিতে। শৈশবের ক্লাব বার্সার সঙ্গে মেসির আবার দেখা হওয়ার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে ভক্ত-সমর্থকদের সেই মেসি-বার্সা পুনর্মিলনী দেখার আশা পূরণ হচ্ছে না। 

শিরোনাম দেখে হয়তো অনেকেই চমকে গেছেন। প্রশ্নটা শুনে চমকে গেছেন স্বয়ং ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার রোনালদো নাজারিও। নামের মিল থাকায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রসঙ্গেই যে এসেছিল এমন প্রশ্ন। 

এল ক্লাসিকোতে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দ্বৈরথ তো শেষ হয়ে গেছে আগেই। বার্সেলোনার জার্সিতে মেসি ও রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে রোনালদো—দুই তারকা ফুটবলারের মধ্যে চলত তুমুল প্রতিযোগিতা। দুজনের কেউই এখন নেই ইউরোপীয় ফুটবলে। 

২০২৩ সালটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কাটিয়েছেন স্বপ্নের মতো। আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে গত বছর সর্বোচ্চ ৫৪ গোল করেছেন রোনালদো। পর্তুগাল, আল নাসরকে জিতিয়েছেন অসংখ্য ম্যাচ। তবু বিদায়ী বছরের বর্ষসেরা দলে জায়গা হয়নি পর্তুগিজ এই ফরোয়ার্ডের। 

বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আন্তর্জাতিক বা ক্লাব ফুটবল-সব জায়গাতেই দলের জয়ে অবদান রাখছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই জিতে চলেছেন একের পর এক পুরস্কার। 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ২০২৩-এর শেষটা মনে রাখার মতো। মাঠের পারফরম্যান্স থেকে শুরু করে সব কিছুই ছিল দুর্দান্ত। ২০২৩-এর শেষ ম্যাচে আল নাসরের জার্সিতে গোল করেছেন। এরপর মায়ের জন্মদিনে বিলাসবহুল এক গাড়ি উপহার দিয়ে বছরের শেষটা আরও স্মরণীয় করে রেখেছেন। 

সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরের হয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পথচলা শুরু হয়েছে ২০২৩ সালেই। নতুন ক্লাবে এসে ছন্দ ফিরে পেতেও তাঁর বেশ সময় লেগেছিল। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠেছেন রোনালদো। দলকে জেতাতে অবদান রেখেছেন অসংখ্য ম্যাচে।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বয়স ৩৯ হতে বাকি আর কয়েক মাস। বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে করছেন একের পর এক রেকর্ড। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মন জয় করেছেন কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থকের। রোনালদো যে ক্লাবেই যান না কেন, তাঁর ম্যাচ দেখতে অধীর আগ্রহে বসে থাকেন বিশ্বের নানা প্রান্তের ভক্ত-সমর্থকেরা। 

লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—সময়ের দুই তারকা ফুটবলার ইউরোপীয় ফুটবল ছেড়ে চলে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামিতে খেলছেন মেসি। রোনালদো খেলছেন সৌদি আরবের আল নাসরে। মেসি-রোনালদোর পুরোনো দ্বৈরথ দেখা যাবে আবারও।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছে সময়টা কাটছে স্বপ্নের মতো। গোল করা দারুণ এক অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। চলতি বছর পেশাদার ফুটবলে করেছেন গোলের ফিফটি পূরণ করেছেন। তবে রোনালদো যে এতেই তৃপ্ত নন। গোলের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নিতে চান পর্তুগিজ তারকা ফরোয়ার্ড। 

আল নাসরের আগের ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। দলও জিততে পারেনি। অবশেষে গতকাল আল নাসরের জার্সিতে ম্যাচ খেললেন তিনি। মাইলফলকের ম্যাচটা তিনি রাঙিয়েছেন নিজের মতো করে। তবু তিনি যেন ‘তৃপ্ত’ হতে পারছেন না। 

লুটনের কেনিলওয়ার্থ রোড স্টেডিয়ামে গতকাল হয়েছে গোলের বন্যা। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে লুটন টাউন-আর্সেনাল ম্যাচে গোল হচ্ছিল নিয়মিত বিরতিতে। কখনো লুটন টাউন, কখনো বা আর্সেনালের ফুটবলাররা করেছেন গোল। শেষ পর্যন্ত লুটন টাউন-আর্সেনাল ম্যাচে হয়েছে ৭ গোল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জয়ে ভিন্ন রকম এক রেকর্ড গড়েছে আর্সেনাল। 

আল-নাসরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এসেছিলেন গত মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে। ক্লাবটিতে আসার পর থেকেই আছেন দারুণ ছন্দে। ২০২৩-২৪ মৌসুমের ফর্মটা আগের মৌসুমের চেয়েও দুর্দান্ত। নিজে যেমন গোল করছেন, তেমনি সতীর্থদের দিয়ে গোলও করাচ্ছেন। ছন্দে থাকা রোনালদোকে ছাড়া গতকাল খেলতে নেমেছিল আল-নাসর। তবে জয়ের দেখা পায়নি সৌদি ক্ল

টানা দুই বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া ইতালির শঙ্কা ছিল ইউরোতে খেলা নিয়েও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই শঙ্কা কাটিয়ে সুযোগ পেয়েছে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে। জার্মানিতে হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।