যুদ্ধবিরতি নিয়ে তোড়জোড়ের মধ্যেই গেল কয়েক দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলায় অগ্নিগর্ভ রাশিয়া-ইউক্রেন রণক্ষেত্র। গত ১ জুন রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের নজিরবিহীন হামলার পর আরও চড়েছে উত্তেজনার পারদ। গত বৃহস্পতিবারের পর আজ শনিবার আবার ইউক্রেনের বড় হামলা চালাল রাশিয়া। এ হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে বলে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। আর এই ফোনালাপটি হয়েছে, সম্প্রতি রাশিয়ার ভেতরে ইউক্রেনের সাহসী ড্রোন হামলার পর। এই হামলায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটিগুলোকে টার্গেট করেছিল ইউক্রেন।
পুতিন যখন যুদ্ধে জয় নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখাচ্ছেন, ঠিক তখনই রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০টি বোমারু বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেন। এগুলোর মধ্যে কিছু পারমাণবিক অস্ত্রবাহী যুদ্ধবিমানও ছিল।
যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে ইউক্রেনকে ১ লাখ ড্রোন সরবরাহ করা হবে। এটি গত বছর ইউক্রেনকে দেওয়া ড্রোনের সংখ্যার দশগুণ বেশি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হ্যালি আজ বুধবার ব্রাসেলসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেবেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রাশিয়ার এত বিপুলসংখ্যক অত্যাধুনিক বিমান দেশের এতটা গভীরে ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করার সক্ষমতা ইউক্রেনের আক্রমণ কৌশলের উন্নয়ন এবং রাশিয়ার ভেতরে ইউক্রেনের গোপন এজেন্টদের অসাধারণ দক্ষতার প্রমাণ।
রাশিয়ার বিমানবাহিনীর ওপর অন্যতম সাহসী হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলায় ৪০ টিরও বেশি রুশ বোমারু বিমান ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ)।
ইউক্রেনে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালাল রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ৩৫৫টি ড্রোন ও ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ নিয়ে টানা তৃতীয় রাতের মতো ইউক্রেনে
ড্রোনবাহী উড্ডয়নক্ষম আকাশযান তৈরি করছে চীন। এই আকাশযান থেকে একসঙ্গে ১০০টি কামিকাজে (আত্মঘাতী) ড্রোন উৎক্ষেপণ করা সম্ভব। জিউ তান নামের এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ও দূরপাল্লার ইউএভি (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল) কামিকাজে ড্রোন ছাড়াও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বহন করতে সক্ষম।
৭ মে রাতে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাধিক স্থানে বিমান হামলা চালায় ভারত। রাতেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে। চার দিন ধরে ড্রোন যুদ্ধ চলে দুপক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত শনিবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ।
ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক বলেছেন, পাকিস্তান তাদের সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দিয়ে ভারতকে অবাক করে দিতে পেরেছে। পাকিস্তানের সক্ষমতার সামনে ভারত অনেকটাই অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল বলে মনে করেন তিনি।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এর মধ্যেই আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের একাধিক এলাকায় পাকিস্তান থেকে আসা ড্রোনের ঝাঁক শনাক্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনা সূত্র জানিয়েছে, এসব ড্রোনকে প্রতিহত করা হয়েছে এবং এখনো কিছু এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা চরমে ওঠায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জীবনঝুঁকি বেড়েছে বলে দাবি করেছে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটি জানিয়েছে, ভারতের সম্ভাব্য ড্রোন হামলার লক্ষ্য হতে পারেন ইমরান খান।
ভারত-পাকিস্তানের চলমান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে লাহোরে ড্রোন বিস্ফোরণের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট কর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ভারতের ১২টি ড্রোনকে ‘অকার্যকর’ করার দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশটির সশস্ত্রবাহিনী বিষয়টি দাবি করেছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ড্রোনগুলোকে অকার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থানে আছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে দুটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কিছু সময়ের ব্যবধানে এই দুটি ড্রোনকে ভূপাতিত করা হয়। তবে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় বা পাঞ্জাব সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় একটি বিমান বা বড় আকারের ড্রোন ভেঙে পড়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে পাম্পোর শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয় এটি। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের যে পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার কথা বলা হয়েছে; এটি সেগুলোর মধ্যে একটি কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মাউন্ট এভারেস্টের দুর্গম যাত্রাপথ এখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আরও নিরাপদ হতে চলেছে। মিলন পান্ডে নামের এক ড্রোনচালক এই বিপজ্জনক পথে পর্বতারোহীদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছেন। খাবার, জরুরি সরঞ্জাম এবং চিকিৎসাসামগ্রী এখন ড্রোনের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দুর্গম এলাকায়, যা কমিয়ে দিচ্ছে প্রাণহানির ঝুঁকি।