জীবন অগাধ

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শামসুল হক একটি অবশ্য-স্মরণীয় নাম। ১৯৪৯ সালে যখন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়, তখন শামসুল হক সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যে প্রতিনিধিদল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, শামসুল হক ছিলেন সেই দলের একজন। তাঁরা বাংলাকে রাষ্

বহু শহর ভ্রমণ করে সে সময় সিমলায় পৌঁছালেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। সঙ্গে পরিচারক কিশোরীনাথ চাটুজ্যে। সন্ধ্যার দিকে সিমলা বাজারে পৌঁছানোর পর কিশোরী বাড়ি খুঁজতে চলে গেল। সেই বাড়িতে এক বছর ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৯৭০ সালটা ছিল মিছিল আর বিক্ষোভের। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এসে পরের বছরটিতে শাণিত করে নিয়েছিল। মিছিল আর স্লোগান। কখনো কখনো বোঝা যায়, মিছিলে কোনো নেতা নেই। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই রাস্তায় বেরিয়ে আসে মানুষ। আবু জাফর শামসুদ্দীন ভাবেন,১৯৭০ সালটা ছিল মিছিল আর বিক্ষোভের। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এসে পরের বছরটিতে

 ১৯৭১ সাল। ‘ইন্টারভিউ’ ছবি তৈরি করার আগে টাকাপয়সার ব্যাপারটা অনিশ্চিত ছিল। মৃণাল সেন বুঝতে পারছিলেন না, কোথায় পাবেন ছবি তৈরির টাকা। একটা ছবি করা হবে, তা নিয়ে প্রোডাকশনের সবাই তৈরি ছিল কিন্তু যদি টাকা না থাকে তাহলে কী করে হবে ছবি?

কীভাবে হরিদাস ভট্টাচার্যের সঙ্গে কানন দেবীর বিয়ে হলো, সে গল্প এখানে নয়। শুধু বলে রাখি, ভট্টাচার্য মশাই তখন গভর্নরের এডিসি। ‘অনন্যা’ ছবির লোকেশন হলো পলতায়, সরকারি অনুমতি লাগবে। সে ব্যবস্থাই করে দিয়েছিলেন হরিদাস ভট্টাচার্য। তারপর টেলিফোনে আলাপ বাড়ল। বিয়ে হলো।

গল্পটা বলেছিলেন কবি জসীমউদ্‌দীনকে। তাই গল্পের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ ক্ষীণ। এমনকি যাঁকে নিয়ে কথা, সেই মোহন মিয়ার সামনেও বহুবার গল্পটা বলেছেন হাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী। কখনো প্রতিবাদ আসেনি অপরপক্ষ থেকে।

সৈয়দ মুজতবা আলীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের শেষ দেখা হয় ১৯৩১ সালে। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সামনাসামনি হওয়ার পরই রবিঠাকুর বললেন, ‘লোকটি যে বড় চেনা চেনা লাগছে। তুই নাকি বরোদার মহারাজা হয়ে গেছিস?’

বিশ্বসাহিত্য ইতিহাসের দিকে যখনই যাবে চোখ, দেখা যাবে এমন কয়েকটি নাম, যে নামগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাকিত্ব কিংবা মানসিক চাপ এবং সেই বিষণ্নতা থেকে উদ্ধারের উপায় তারা খুঁজেছেন আত্মহত্যার মধ্যে। এ রকম কয়েকটি নাম এখানে উল্লেখ করা জরুরি। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

চাকরির প্রতি একটা অনীহা ছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের। বিদেশে যাওয়ার আগে সরকারি চাকরিতে ঢুকেছিলেন সুনীল। কিন্তু বিদেশে গিয়েছিলেন ছুটি না নিয়ে। ফলে সেখান থেকেও প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য আর

সে সময় সৈয়দ শামসুল হক থাকতেন লক্ষ্মীবাজারে। সেখান থেকে হেঁটে বিউটি বোর্ডিংয়ে আসতেন। তখন তাঁর নিজের লেখার জায়গা ছিল না। লেখার জন্য বিউটি বোর্ডিংই ছিল সেরা আশ্রয়। ভবনের পাশের কোনায় যে জানালাটি, তার পাশে টেবিল-চেয়ার পেতে লেখালেখির কাজটা করতেন। সকাল ৮টা থেকে ১০টা-১১টা পর্যন্ত লিখতেন। বাড়িতে গিয়ে খেয়ে

 কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সম্মেলন হয়েছিল তৎকালীন বোম্বাইতে, ১৯৪৩ সালে। সে সময়ই সারা ভারত প্রগতি লেখক সংঘের তৃতীয় সম্মেলন হয়। প্রগতি লেখক সংঘ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয় ভারতীয় গণনাট্য সংঘ।

কামরুদ্দীন আহমদ তখন কলকাতায়। হাইকমিশনে চাকরি। সৈয়দ আজিজুল হক নান্না মিয়ার টেলিফোন পেলেন তিনি। নান্না মিয়া জানালেন, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের শরীরের অবস্থা সংকটাপন্ন। যেকোনো মুহূর্তে মারা যেতে পারেন। কলকাতায় ডা. মণি দে আছেন, তাঁকে যত শিগগিরই সম্ভব পাঠিয়ে দিতে হবে ঢাকায়।

অগ্রজ কবি জীবনানন্দ দাশকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছে ছিল কবি আবুল হোসেনের। তিনি একবার তাঁর বন্ধু শান্তিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জীবনানন্দের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন বিকেল কেবল শুরু হচ্ছে। জীবনানন্দ দাশ সম্ভবত তখন খেয়েদেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

একুশে ফেব্রুয়ারির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ছাত্রনেতারা। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষেই ছিল তাঁদের অধিকাংশের মতামত। সেদিন খুব ভোরে মোহাম্মদ সুলতান চলে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার কয়েকটি স্কুলে তিনি চিরকুট পাঠিয়েছিলেন যেন তারা চলে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভায়। তিনি ছিলেন তাঁদের শিক্ষক। পড়াতেন। ছাত্ররাও চলে এসে

কাজী মোতাহার হোসেনের দুটো বিষয়ে ছিল নামডাক। একটি হলো দাবার প্রতি নেশা, আরেকটি তাঁর আত্মভোলা মন। অসাধারণ গণিতবিদ হিসেবে একাডেমিক পর্যায়ে তাঁর পরিচিতি ছিল, কিন্তু আত্মভোলা প্রফেসরের কথা সবাই জানে।

ছেলেবেলায় আফলাতুন যেসব গল্প পড়তেন, সেগুলোর গড়ন ছিল একই রকমের। ‘রামের সুমতি’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘বিন্দুর ছেলে’। কিন্তু হঠাৎ একদিন এমন একটি গল্প পড়লেন, যা তাঁর মনকে নাড়িয়ে দিল। এই গল্পের নায়ক উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত সমাজের নয়। এই নায়ক একেবারে অন্য এক জগতের মানুষ। অল্প বয়সে ছেলেটা স্কুলে যেতে পারে না, কাজ

ফাঁদে আটকে পড়া জন্তুর মতোই ক্ষোভ ও নিজের প্রতি ধিক্কার নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন শামসুর রাহমান। ২৫ মার্চের পর ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলেন পাড়াতলী গ্রামে। সেখানে বসে লিখেছেন কবিতা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান শুনতেন। এম আর আখতার মুকুলের চরমপত্র উদ্দীপিত করত তাঁদের।