Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদনে নতুন ৬০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ

অনলাইন ডেস্ক
স্মার্টফোন, ডেটা সেন্টার থেকে শুরু করে গাড়িতে ব্যবহৃত অত্যাবশ্যকীয় চিপ উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রে সক্ষমতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: ক্যামন অ্যাসোসিয়েট
স্মার্টফোন, ডেটা সেন্টার থেকে শুরু করে গাড়িতে ব্যবহৃত অত্যাবশ্যকীয় চিপ উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রে সক্ষমতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: ক্যামন অ্যাসোসিয়েট

যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ উৎপাদনে ৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস (টিআই)। গত বুধবার (১৮ জুন) প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টেক্সাস ও উটাহ অঙ্গরাজ্যে সাতটি চিপ তৈরির কারখানা নির্মাণে এই বিপুল বিনিয়োগ করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে টিআই। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, স্মার্টফোন, ডেটা সেন্টার থেকে শুরু করে গাড়িতে ব্যবহৃত অত্যাবশ্যকীয় চিপ উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রে সক্ষমতা বাড়াতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

টিআই বলছে, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মৌলিক সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।’ প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপল, এনভিডিয়া এবং ফোর্ডের মতো প্রযুক্তি ও গাড়ি নির্মাতা জায়ান্টদের সঙ্গে কাজ করে থাকে।

টিআইয়ের সঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকে আমেরিকার মাটিতে নিয়ে আসাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। টিআইয়ের এই বিনিয়োগ আগামী কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের চিপ উৎপাদনকে সমর্থন করবে।’

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি ও উৎপাদন শিল্পকে ঘুরে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে দেশে উৎপাদনে জোর দিতে চাপ দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের শুরুতে জেনারেল মোটরস ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে অ্যাপল জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্থাপনা সম্প্রসারণে ৫০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। জানুয়ারিতে ওরাকল, ওপেনএআই ও সফট ব্যাংক মিলে ‘স্টারগেট’ নামে নতুন একটি কোম্পানি গঠনের কথা জানায়, যা যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিকাঠামো গড়ে তুলবে।

তবে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ও চীনা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসির আগেই যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম বাড়াতে শুরু করেছিল।

উৎপাদন খাত পুনরুজ্জীবিত করাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রশাসনের একটি প্রধান লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসেই তিনি আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং বাণিজ্যে ‘অন্যায্য আচরণ’ রোধের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন।

এদিকে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের নতুন প্রকল্প ‘ট্রাম্প মোবাইল’ আগামী সেপ্টেম্বরেই একটি নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনার পরিকল্পনা করছে, যা ‘পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রে ডিজাইন ও তৈরি’ হবে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আইফোনের মতো পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করাটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ দেশটিতে এর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ শ্রমশক্তি ও যন্ত্রাংশ এখনো পর্যাপ্তভাবে নেই।

প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার বিষয়টিও ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি বড় অগ্রাধিকার। চীনের নতুন স্টার্টআপ ডিপসিকের স্বল্পমূল্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল বাজারে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশ্বনেতা। আমাদের প্রশাসন এটিকে সেভাবেই ধরে রাখতে চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত