Ajker Patrika

থ্রেডস নিয়ে মার্ক জাকারবার্গের মুখোমুখি ইলন মাস্ক 

আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৩, ১৫: ৪২
থ্রেডস নিয়ে মার্ক জাকারবার্গের মুখোমুখি ইলন মাস্ক 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে নতুন অ্যাপ ‘থ্রেডস’। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিক কোম্পানি মেটার নতুন এই অ্যাপ প্রথম দিনেই পেয়েছে ৩ কোটি ব্যবহারকারী। তবে এরই মধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল প্রতিদ্বন্দ্বী এই অ্যাপের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে টুইটার। আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

বিবিসি জানিয়েছে, থ্রেডস দেখতে অনেকটাই টুইটারের মতো। ব্যবহারের পদ্ধতিতেও অনেক মিল। এর নিউজ ফিড এবং রিপোস্ট করার পদ্ধতিও হুবহু এক। এ প্রসঙ্গে টুইটারের মালিক ইলন মাস্ক বলেছেন, ‘প্রতিযোগিতা ঠিক আছে, কিন্তু প্রতারণা মানব না।’ 

থ্রেডস তৈরি করতে ‘পরিকল্পিত, ইচ্ছাকৃত ও বেআইনিভাবে টুইটারের গোপনীয় ব্যবসায়িক কৌশল এবং অন্যান্য মেধাস্বত্ব’ ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে টুইটারের সাবেক কর্মীরা থ্রেডস তৈরি করতে সহায়তা করেছেন এমন দাবি অস্বীকার করেছে মেটা। 

গত বুধবার চালু হওয়ার পর দুই দিনেই ৩ কোটির বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছেন থ্রেডসে। এর নির্মাতা মেটার কর্তারা থ্রেডসকে টুইটারের ‘বিকল্প’ হিসেবেই তুলে ধরছেন ব্যবহারকারীদের সামনে। 

সেমাফোর নামের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, বুধবার মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন টুইটারের আইনজীবী অ্যালেক্স স্পিরো। 

আইনজীবী স্পিরো অভিযোগ করেছেন, টুইটারের কয়েক ডজন সাবেক কর্মীকে মেটা এ কাজে লাগিয়েছে, যাদের পক্ষে টুইটারের অতি গোপনীয় তথ্যগুলো জানার সুযোগ ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ওই তথ্যই টুইটারের ‘নকল’ থ্রেডস তৈরিতে সাহায্য করেছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, মেটাকে অবিলম্বে টুইটারের ‘ট্রেড সিক্রেট’ এবং অন্যান্য অতি গোপনীয় তথ্য ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তা না হলে টুইটার তার মেধাস্বত্ব রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে। 

অভিযোগের উত্তরে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন এক পোস্টে বলেছেন, থ্রেডসের প্রকৌশলী দলে এমন কেউ নেই, যিনি আগে টুইটারে কাজ করেছেন। 

থ্রেডস তৈরি করেছেন মূলত মেটার অ্যাপ ইনস্টাগ্রামের কর্মীরা। তবে সম্পূর্ণ আলাদাভাবেই এটা কাজ করে। ইতিমধ্যে শতাধিক দেশে থ্রেডস অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। 

টুইটারকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চ্যালেঞ্জ জানানো এই অ্যাপ নিয়ে মাস্ক আর জাকারবার্গের দ্বৈরথও প্রকাশ্যে এসেছে। 

থ্রেডস উন্মুক্ত করার পর টুইটারে ১১ বছরের নীরবতা ভেঙে জনপ্রিয় একটি মিম পোস্ট করেছেন জাকারবার্গ, যেখানে প্রায় একই রকম দেখতে দুই স্পাইডারম্যানকে পরস্পরের দিকে আঙুল তাক করে থাকতে দেখা যায়। 

অল্প সময়ের মধ্যে টুইটারে একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয় ‘থ্রেডস’ শব্দটি। 

জবাবে মাস্ক লেখেন, ইনস্টাগ্রামে বেদনা লুকানোর মিথ্যা সুখে ডুবে থাকার চেয়ে টুইটারে অপরিচিতদের আক্রমণের শিকার হওয়া ভালো। 

যাঁরা আগে থেকেই ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন, তাঁরা সহজেই অ্যাকাউন্ট ইনস্টাগ্রামে রূপান্তর করতে পারছেন। এতে অসংখ্য সেলিব্রিটি, ক্রীড়াবিদ, রাজনীতিবিদ, স্পোর্টস ক্লাব, নিউজ আউটলেট তাঁদের থ্রেডস অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন। এদের মধ্য রয়েছে নেটফ্লিক্স, স্টার ওয়ারস, শেফ গর্ডন রামসে, পপ তারকা শাকিরা, অভিনেতা জ্যাক এফ্রন, ফর্মুলা-১ রেসার ল্যান্ডো নরিস, এনবিএ তারকা শেঠ কারিসহ মার্ক জাকারবার্গও। 

টুইটার ও মেটার সিইও ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গের মধ্য প্রতিযোগিতা নিয়ে গুঞ্জনের মধ্যে এই আইনি পদক্ষেপের হুমকি এল। 

মাস্ক টুইট করেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, পৃথিবীর মানুষ কখনোই একচেটিয়াভাবে জাকারবার্গের হাতের মুঠিতে থাকতে চায় না। আমি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, যদি জাকারবার্গও চায়, হা হা।’ এর জবাবে জাকারবার্গ ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘লড়াইয়ের জায়গার নাম বলুন, চলে আসছি।’ উত্তরে মাস্ক আবার লিখেছেন, ‘ভেগাস অক্টাগন’, যা লাস ভেগাসের আলটিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপের (ইউএফসি) স্থান। 

ইউএফসির প্রেসিডেন্ট ডানা হোয়াইট বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে ছেলে দুটি সত্যি এই লড়াই চায়।’ 

এদিকে মেটা ও টুইটার দুই কোম্পানিই এ বছর বড় আকারে কর্মী ছাঁটাই করেছে। মেটা এপ্রিলে ঘোষণা দেয়, তারা কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার কমিয়ে আনবে। আর মাস্ক গত বছরের অক্টোবরে টুইটারের মালিকানা নেওয়ার পর দফায় দফায় ছাঁটাই করে সাড়ে ৭ হাজার কর্মীর ৮০ শতাংশকেই বাদ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত