Ajker Patrika

মেটার ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রাম কাজ করে যেভাবে

মেটার ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামের অধীনে ৮০টি মিডিয়া সংস্থা কাজ করছে। ছবি: এএফপি
মেটার ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামের অধীনে ৮০টি মিডিয়া সংস্থা কাজ করছে। ছবি: এএফপি

প্রযুক্তি বিশ্বে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মেটার ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামটি। কারণ গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রোগ্রামটি বন্ধের ঘোষণা দেন মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ। তবে প্রোগ্রামটি কী এবং কীভাবে কাজ করে তা জানে না অনেকেই। মূলত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডসের মতো মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই প্রোগ্রামটি চালু করা হয়। এ জন্য বার্তা সংস্থা এএফপির মতো বিভিন্ন মিডিয়া সংস্থাগুলোর সাহায্য নেয় মেটা।

প্রোগ্রামটি কীভাবে কাজ করে তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো—

ফ্যাক্টচেকিং করে যারা

২০১৬ সাল থেকে ‘থার্ড পার্টি ফ্যাক্টচেকিং’ প্রোগ্রামের অধীনে সাংবাদিকদের ওপর তার প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা তথ্য মূল্যায়ন করার দায়িত্ব দিয়েছে মেটা। বর্তমানে এতে ৮০টি মিডিয়া সংস্থা কাজ করছে। যেমন—যুক্তরাষ্ট্রে মেটার এই প্রোগ্রামের জন্য ১০টি মিডিয়া পার্টনার রয়েছে, যার মধ্যে এএফপি, ইইউএসএ টুডে এবং বিশেষজ্ঞ ফ্যাক্টচেক সাইট লিড স্টোরিস এবং পলিটিফ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত।

এই অংশীদারি কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্কের (আইএফসিএন) স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৫ সালে পয়েন্টার ইনস্টিটিউট এই সার্টিফিকেশন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করে। একটি মার্কিন অলাভজনক মিডিয়া প্রশিক্ষণ ও অ্যাডভোকেসি গ্রুপ হলো পয়েন্টার ইনস্টিটিউট।

আইএফসিএনের স্বীকৃতি পেতে মিডিয়া সংস্থাগুলোকে এর সম্পাদকীয় গুণগত মান, নিরপেক্ষতা এবং স্বাধীনতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয়।

জাকারবার্গ বলেছেন, তিনি ফ্যাক্টচেকগুলো প্রোগ্রামটি ‘কমিউনিটি নোট’ দিয়ে প্রতিস্থাপন করবেন। এটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্ম এক্সে (পূর্বে টুইটার) ব্যবহৃত হয়।

ফ্যাক্টচেকাররা যে কাজ করে

এএফপি ২৬টি ভাষায় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মিথ্যা দাবির ব্যাখ্যা দেয় এসব প্রতিবেদন এবং পাঠকদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর চেষ্টা করে।

সংস্থাটির এর ১৫০ জন ফ্যাক্টচেকার তাদের প্রতিবেদন তৈরির জন্য মিথ্যা, সম্ভাব্য বিপজ্জনক এবং ব্যাপকভাবে প্রচারিত দাবিগুলো চিহ্নিত করে। তারা তথ্য যাচাই করে কোনো মতামত বা বিশ্বাস নয়।

নির্দিষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করার মাধ্যমে এ কাজটি সম্পন্ন করে তারা। এটি স্বচ্ছভাবে প্রমাণের উৎস উল্লেখ করে এবং তথ্যগুলো পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে। তারা তাদের তদন্তের ধাপগুলো ব্যাখ্যা করে এবং সম্ভব হলে তাদের উৎসের ওয়েবলিংক প্রকাশ করে।

ফ্যাক্টচেক আর্টিকেলটি যে মিডিয়া সংস্থা তৈরি করে, তারা সেটি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এএফপির ইংরেজি ফ্যাক্টচেকের ক্ষেত্রে এই সাইটটি হলো—

মেটা ফ্যাক্টচেক ব্যবহার করে যেভাবে

যখন অনলাইনে কোনো দাবির ওপর ফ্যাক্টচেক করা হয়, মিডিয়া সংস্থাগুলো তাদের প্রতিবেদনটির ওয়েব ঠিকানা মেটার ইন্টারফেসে প্রবেশ করায়। এই ইন্টারফেসটি মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য সংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের প্রতিবেদনটিকে সঙ্গে সংযুক্ত করে।

এর ফলে মিথ্যা পোস্টটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে কম দেখা যায় এবং ‘মিথ্যা’ বা ‘বিভ্রান্তিকর’ জাতীয় একটি রেটিং পোস্টটির পাশে প্রদর্শিত হয়।

পোস্টটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানো হয় না। এর বদলে পোস্টটির নিচে ফ্যাক্ট চেক করা প্রতিবেদনটির একটি লিংক প্রদর্শিত হয়, যা পাঠকদের সঠিক তথ্য পেতে সাহায্য করে। যারা মিথ্যা পোস্টটি শেয়ার করেছেন, তারা একটি নোটিফিকেশন পায়। এই নোটিফিকেশন সঙ্গে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনের লিংকটি থাকে।

যদি পোস্টের লেখক এটি সংশোধন করেন, তবে রেটিংটি সরিয়ে নেওয়া হয় এবং পোস্টটি কতজন ব্যবহারকারী দেখতে পারবে তার ওপর থেকেও বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়।

ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনগুলো অর্থ পায় যেভাবে

বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া তথ্যযুক্ত পোস্টগুলো ফ্যাক্টচেকিং করা প্রতিবেদনগুলোর অর্থ দেয় মেটা। যেকোনো বিষয়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদনগুলো লিখতে পারে মিডিয়া সংস্থাগুলো। মেটার প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত না হলেও সেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদন তৈরি করে সংস্থাগুলো। তবে মেটা শুধু সেই প্রতিবেদনগুলোর জন্য অর্থ দেয়, যেগুলো মেটার প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট পোস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

মেটা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পোস্টগুলোর ওপর কোনো রেটিং প্রয়োগ বা ফ্যাক্টচেক যুক্ত করে না। এরপরও মিডিয়া সংস্থাগুলো এ ধরনের পোস্ট নিয়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে, সেই প্রতিবেদনগুলো জন্যও কোনো অর্থ দেয় না মেটা। যেমন—এএফপি

ফ্যাক্টচেকারদের সঙ্গে মেটার কনটেন্ট মডারেটরদের সঙ্গে ভুলবশত মিশিয়ে ফেলা উচিত নয়। কোনো প্ল্যাটফর্মের নিয়ম ভেঙে এমন পোস্টগুলো সরিয়ে দেন কনটেন্ট মডারেটররা। যেমন পর্নোগ্রাফি বা বর্ণবাদী কনটেন্ট, অথবা সন্ত্রাসবাদ বা সহিংসতা উসকে দেওয়া পোস্ট। তবে ফ্যাক্টচেকাররা শুধু তথ্যের সঠিকতা যাচাই করেন এবং তারা আলাদাভাবে কাজ করেন।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

এলাকার খবর
Loading...