Ajker Patrika

লিথিয়াম-আয়ন ও লিথিয়াম-আয়রন-ফসফেট ব্যাটারির মধ্যে পার্থক্য কী

অনলাইন ডেস্ক
বৈদ্যুতিক গাড়ি কিংবা ব্যাকআপ পাওয়ার ব্যবস্থার আলোচনায় উঠে আসছে আরেক ধরনের ব্যাটারি। ছবি: জেএমপিএইচ পাওয়ার
বৈদ্যুতিক গাড়ি কিংবা ব্যাকআপ পাওয়ার ব্যবস্থার আলোচনায় উঠে আসছে আরেক ধরনের ব্যাটারি। ছবি: জেএমপিএইচ পাওয়ার

রসায়ন ও প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল রসায়নবিদ আলেসান্দ্রো ভোল্টার উদ্ভাবিত রাসায়নিক ব্যাটারি। ১৮০০ সালে এ ব্যাটারির আবিষ্কার ছাড়া আধুনিক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকসের অগ্রগতি ভাবা দুষ্কর। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গবেষণা চলছে নতুন ধরনের ব্যাটারি উদ্ভাবনে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পরিচিত ও ব্যবহৃত প্রযুক্তি হচ্ছে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি।

সম্প্রতি, বৈদ্যুতিক গাড়ি কিংবা ব্যাকআপ পাওয়ার ব্যবস্থার আলোচনায় উঠে আসছে আরেক ধরনের ব্যাটারি—লিথিয়াম-আয়রন-ফসফেট (এলএফপি)। যদিও উভয় ব্যাটারি-ই লিথিয়াম-ভিত্তিক, তবে এদের গঠন, ক্ষমতা ও ব্যবহারিক পার্থক্য উল্লেখযোগ্য।

রাসায়নিক গঠনে পার্থক্য

লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ধাতব অক্সাইড, যেমন লিথিয়াম-কোবাল্ট-অক্সাইড বা লিথিয়াম-ম্যানগানিজ-অক্সাইড। অ্যানোড হিসেবে সাধারণত গ্রাফাইট ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, এলএফপি ব্যাটারিতে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম-আয়রন-ফসফেট (LiFePO4) এবং অ্যানোডে থাকে গ্রাফাইট।

এই রাসায়নিক পার্থক্য ব্যাটারির ক্ষমতা ও ব্যবহারযোগ্যতা—দু’টোতেই প্রভাব ফেলে।

কার্যক্ষমতা ও স্থায়িত্বে পার্থক্য

কোবাল্ট, ম্যানগানিজ এবং নিকেলের মতো উপাদান ব্যবহারের ফলে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি অত্যন্ত শক্তির ঘনত্ব বেশি। এর ফলে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা অন্যান্য ছোট ইলেকট্রনিক্সে এগুলোই বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে এলএফপি ব্যাটারির শক্তি ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম হলেও, এর আয়ুষ্কাল অনেক বেশি—প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত।

শক্তির ঘনত্ব কম হওয়ায় একই পরিমাণ শক্তি পেতে এলএফপি ব্যাটারির আকার ও ওজন বেশি হয়। তবে ইলেকট্রিক গাড়ি, সোলার ব্যাকআপ ইউনিট বা বড় ব্যাটারি স্টোরেজ প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই ওজন অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

নিরাপত্তা ও তাপমাত্রা সহনশীলতা

এদিকে তাপমাত্রা সহনশীলতার দিক থেকে এগিয়ে এলএফপি ব্যাটারি। এটি মাইনাস ৪ থেকে ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ভালোভাবে কাজ করতে পারে, যেখানে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সাধারণত ৩২ থেকে ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত কার্যকর। এই বৈশিষ্ট্যই এলএফপি ব্যাটারিকে ঠাণ্ডা বা অতিরিক্ত গরম পরিবেশে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। একই সঙ্গে আগুন লাগার ঝুঁকিও কমে।

পরিবেশবান্ধব এবং ব্যয়সাশ্রয়ী

এলএফপি ব্যাটারি উৎপাদনে কোবাল্ট, নিকেল বা ম্যানগানিজের মতো মূল্যবান ও পরিবেশ বিপজ্জনক ধাতু ব্যবহৃত হয় না। ফলে এটি শুধু খরচের দিক থেকে নয়, পরিবেশগত ও নৈতিক দিক থেকেও অধিকতর গ্রহণযোগ্য। তবে যেহেতু শক্তির ঘনত্ব কম। তাই একই ক্ষমতা পেতে ব্যাটারির আকার বড় করতে হয়, যার ফলে উৎপাদন ও নকশা খরচ কিছুটা বেড়ে যায়।

যেসব ক্ষেত্রে আকার ও ওজন মুখ্য নয়, যেমন: ইলেকট্রিক যানবাহন, সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বা ঘরের ব্যাকআপ ইউনিটে, সেখানে এলএফপি ব্যাটারির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। টেসলা, বিওয়াইডি, ফোর্ডের মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই এলএফপি প্রযুক্তির প্রতি আস্থা রাখছে।

তথ্যসূত্র: স্ল্যাশগিয়ার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত