রাশেদ নিজাম, ঢাকা

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে আসার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
বিজয় কি–বোর্ডের পেটেন্ট কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক মোস্তাফা জব্বারের নামে। তিনি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি–বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেছেন, মোবাইলে বাংলা ব্যবহারে সরকারের পক্ষ থেকে এটি জনগণের প্রতি উপহার।
যদিও নির্বাচনের আগে সবার মোবাইলে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া একজন মন্ত্রীর মালিকানাধীন অ্যাপ ইনস্টল করে দেওয়াকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেকেই।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মন্ত্রী কি এটা সরকারের কাছে বিক্রি করেছেন, তাহলে কত টাকায়? গতকাল সোমবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব এই বিজয় কি–বোর্ড ইস্যুতে। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, ফোনে কেনার আগেই বিজয় ইনস্টল করা থাকলে ওই অ্যাপে কোন কোন বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা তো ব্যবহারকারী জানতে পারবেন না। এর মাধ্যমে চাইলে ফোনের সব তথ্যই হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিটিআরসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্মার্ট মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাজারজাতের আগে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব স্মার্ট হ্যান্ডসেটে বিটিআরসির সরবরাহ করা বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে তা কমিশনে প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় কোনো স্মার্টফোন বাজারজাতকরণের অনাপত্তি দেওয়া হবে না। পত্র জারির তারিখ থেকে বর্ণিত নির্দেশনাটি কার্যকর করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ চিঠি জারি করার তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে এপিকে ফাইলটি সরবরাহ করা হবে।
তবে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ বিজয় এপিকে ফাইল বিটিআরসি থেকে নিতে যায়নি কিংবা স্পেকট্রাম বিভাগ থেকেও তা সরবরাহ করা হয়নি বলে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে আজকের পত্রিকা।
মন্ত্রী ও বিটিআরসি সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমেই তিনি সাড়া দেননি। যদিও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেই সাক্ষাৎকারের অডিও ফাইলটি সংগ্রহ করে সেটিতে শোনা গেছে মন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মোবাইল কেনার পর সবাই যেন বাংলা লেখার একটি উপায় সেখানে পায় এবং সেটি যেন বিনা মূল্যে হয়, সেটিই সরকার চায়। আর বিএসটিআই যেহেতু বিজয় কি–বোর্ডকে “স্ট্যান্ডার্ড” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সে কারণে বিজয়ের কথাই বলা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনায়।’
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলোও এগুলো (সফটওয়্যার) ফ্রি পাবে। স্পষ্ট, শতভাগ ফ্রি পাবে, বিজ্ঞাপন বা কিছুই থাকবে না। ব্যবহারকারী পুরো বিনা মূল্যে এটি ব্যবহার করতে পারবে। এই ঘোষণায়, মোস্তাফা জব্বার কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে এমনটি ভাবার কিছু নেই।’
ওই নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বিজয় নামটা ব্যবহার হয়েছে কী কারণে আমি জানি না। এখানে প্রমিত কোড বা কি-বোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলা লেখার পেটেন্ট কী হবে তা সেট করা আছে, সরকার ২০১৭ সালে সেটি করেছে। এটি মনে করবেন না যে, মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী এটা করেছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৭ সালে এটিকে স্ট্যান্ডার্ড করেছে, যা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পেয়েছে ২০১৮ সালে।’
স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিজয়কে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বহু বছর আগে একটি নির্দেশনা দিয়েছে যে, মোবাইল ফোনে বাংলার ব্যবহার করতে হবে। আমাদের যেগুলো ফিচার ফোন আছে সেগুলোতে অনেক আগেই বাংলার ব্যবহার বাস্তবায়ন হয়েছে, কিন্তু স্মার্টফোনের জন্য কোনো সলিউশন (সমাধান) আগে ছিল না। এখন ২০১৭ সালে সরকার একটি প্রমিত কোড বা কি–বোর্ড করেছে। এর প্রেক্ষিতে সফটওয়্যারও করা হয়েছে। বিজয়ের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আছে, যে ভার্সনটি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। এখানে কোনো ব্যবসার বিষয় নেই।’
সবাইকে বিজয়েই বাংলা লিখতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা কোথাও দেওয়া হয়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো ব্যবহারকারী ভিন্ন কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তাতে তো কোনো বাধা নেই। সে ফোন হাতে নিয়ে (বিজয়) ডিলিট করে অন্য কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও আমাদের কিছু বলার নেই, সেটা তার খুশি। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তার কাছে বাংলা লেখার সফটওয়্যার বিনা মূল্যে দেওয়া, সরকার সেটাই করছে। কেউ যেন না বলতে পারে যে—আমি বাংলা লেখার কিছু পাইনি।’
১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর মোস্তাফা জব্বার প্রতিষ্ঠিত আনন্দ কম্পিউটারস থেকেই প্রকাশ করা হয় বিজয় বাংলা কি-বোর্ড ও সফটওয়্যার, যা পরে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যারে পরিণত হয়। বিজয় কি-বোর্ডের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীনেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
এ বিষয়ে আরও কথা বলার জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে জানা যায়, তিনি চিকিৎসার কাজে সিঙ্গাপুর আছেন। আগামীকাল বুধবার রাতে দেশে ফিরতে পারেন।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি ও ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছি আমরা। বিষয়টা আলোচনার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।’
মন্ত্রীর নিজস্ব সফটওয়্যার বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে শেখ রিয়াজ বলেন, ‘এ দেশে কোনো কাজ করতে গেলে গন্ধ আর স্বার্থ খোঁজে। প্রমিত বাংলা ব্যবহারের বিভিন্ন নির্দেশনা আছে। এটা কাকতালীয়ভাবে এটা মন্ত্রীর সফটওয়্যারের সঙ্গে হয়তো মিলে গেছে। আগের নির্দেশনা থেকেই মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসিকে বলেছে, তারপর যারা মোবাইল আমদানি ও তৈরি করেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা ছাড়া মোবাইল ব্যান্ড (নিষিদ্ধ) করে দেবে এমন কিছু তো বলা হয়নি। শুধু বাংলা টাইপ করতে অ্যাপস দেওয়া হবে তাই বলা হয়েছে। একেপেশে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণের ভয়
এভাবে স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ প্রি–ইনস্টল থাকার মধ্যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে থাকে কি না জানতে চাইলে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক জাহেদ উর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর নিজের মালিকানার বিজয় কি-বোর্ড তাঁর অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক তো বটেই, বেআইনিও। তিনি সরকারের কাছে কত টাকায় এটা বিক্রি করেছেন, নাকি ফ্রি দিয়েছেন তাও তো প্রকাশ করা হয়নি।’
শঙ্কা প্রকাশ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘বিজয়ের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড কোনো ম্যালওয়্যার থাকতে পারে না? আপনার ওখানে আসলে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। আপনার সবকিছু জেনে যাবে। ব্যবহার করুন আর না করুন। ইনস্টল করলেই ম্যালওয়্যার ঢুকে গেল। সরকার ইসরায়েলের কাছ থেকে নানা কিছু কিনছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বছর আগে আপনাকে চাপ দিচ্ছে বিজয় ইনস্টল করতে হবে। এর মধ্যে সিরিয়াস কোনো মতলববাজি আছে। একদম সোজাসাপ্টা কথা।’
অ্যাপ দিয়ে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব কি না এ বিষয়ে আজকের পত্রিকার কথা হয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো প্রকার অ্যাপ্লিকেশন যদি আমরা ইনস্টল করতে চাই, সে অ্যাপের পেছনে কোনো দরজা আছে কি না, একাডেমিকভাবে বলে ব্যাকডোর, সেটা নির্ণয় করতে হবে। সেটা বিজয়ের জন্য না, সব অ্যাপসের ক্ষেত্রেই। বিজয় নামে যে সফটওয়্যারটি জনগণ ডাউনলোড করবে, সেখান থেকে তারা কী কী টাইপ করছে। সে তথ্যগুলো যাতে নিরাপদ থাকে এবং সফটওয়্যারে কোনো বাগ না থাকে, সে বিষয় যাচাই বাছাই করে কারিগরি কমিটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দিলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশয় দূর হবে। মনের অজান্তে বা ডেপ্লয়েড (স্থাপিত) কোনো সার্ভারে তথ্য চুরির ঘটনা বা ম্যালওয়্যার যদি থেকে থাকে তাহলে এ জাতীয় সফটওয়্যার বা ডিজিটালাইজেশনের পদ্ধতি অনেক সময় আমাদের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
মোবাইল উৎপাদকেরা যা বলছেন
দেশে যারা মোবাইল আমদানি ও উৎপাদন করেন তাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার সময়ের নাম ছিল মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। এখন সেটি মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পুরোটাই টেকনিক্যাল বিষয়। আমরা সবকিছু চেক করে নিচ্ছি। এগুলো অনেক বিষয়ের সঙ্গে লিংক থাকে, গুগল সার্টিফিকেশন লাগবে। যেহেতু সরকারি নির্দেশনা আসছে, আমরা পালন করব। তবে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। আমাদের কিছু সময় লাগবে। সব বিষয় নিয়ে আমরা ফিডব্যাক দেব, প্রয়োজনে বিটিআরসির সঙ্গে আবার বসব। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করলে গুগলের সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ইস্যু থাকে। আজকের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মনে করছি।’

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে আসার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
বিজয় কি–বোর্ডের পেটেন্ট কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক মোস্তাফা জব্বারের নামে। তিনি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি–বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেছেন, মোবাইলে বাংলা ব্যবহারে সরকারের পক্ষ থেকে এটি জনগণের প্রতি উপহার।
যদিও নির্বাচনের আগে সবার মোবাইলে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া একজন মন্ত্রীর মালিকানাধীন অ্যাপ ইনস্টল করে দেওয়াকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেকেই।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মন্ত্রী কি এটা সরকারের কাছে বিক্রি করেছেন, তাহলে কত টাকায়? গতকাল সোমবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব এই বিজয় কি–বোর্ড ইস্যুতে। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, ফোনে কেনার আগেই বিজয় ইনস্টল করা থাকলে ওই অ্যাপে কোন কোন বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা তো ব্যবহারকারী জানতে পারবেন না। এর মাধ্যমে চাইলে ফোনের সব তথ্যই হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিটিআরসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্মার্ট মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাজারজাতের আগে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব স্মার্ট হ্যান্ডসেটে বিটিআরসির সরবরাহ করা বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে তা কমিশনে প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় কোনো স্মার্টফোন বাজারজাতকরণের অনাপত্তি দেওয়া হবে না। পত্র জারির তারিখ থেকে বর্ণিত নির্দেশনাটি কার্যকর করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ চিঠি জারি করার তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে এপিকে ফাইলটি সরবরাহ করা হবে।
তবে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ বিজয় এপিকে ফাইল বিটিআরসি থেকে নিতে যায়নি কিংবা স্পেকট্রাম বিভাগ থেকেও তা সরবরাহ করা হয়নি বলে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে আজকের পত্রিকা।
মন্ত্রী ও বিটিআরসি সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমেই তিনি সাড়া দেননি। যদিও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেই সাক্ষাৎকারের অডিও ফাইলটি সংগ্রহ করে সেটিতে শোনা গেছে মন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মোবাইল কেনার পর সবাই যেন বাংলা লেখার একটি উপায় সেখানে পায় এবং সেটি যেন বিনা মূল্যে হয়, সেটিই সরকার চায়। আর বিএসটিআই যেহেতু বিজয় কি–বোর্ডকে “স্ট্যান্ডার্ড” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সে কারণে বিজয়ের কথাই বলা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনায়।’
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলোও এগুলো (সফটওয়্যার) ফ্রি পাবে। স্পষ্ট, শতভাগ ফ্রি পাবে, বিজ্ঞাপন বা কিছুই থাকবে না। ব্যবহারকারী পুরো বিনা মূল্যে এটি ব্যবহার করতে পারবে। এই ঘোষণায়, মোস্তাফা জব্বার কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে এমনটি ভাবার কিছু নেই।’
ওই নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বিজয় নামটা ব্যবহার হয়েছে কী কারণে আমি জানি না। এখানে প্রমিত কোড বা কি-বোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলা লেখার পেটেন্ট কী হবে তা সেট করা আছে, সরকার ২০১৭ সালে সেটি করেছে। এটি মনে করবেন না যে, মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী এটা করেছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৭ সালে এটিকে স্ট্যান্ডার্ড করেছে, যা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পেয়েছে ২০১৮ সালে।’
স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিজয়কে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বহু বছর আগে একটি নির্দেশনা দিয়েছে যে, মোবাইল ফোনে বাংলার ব্যবহার করতে হবে। আমাদের যেগুলো ফিচার ফোন আছে সেগুলোতে অনেক আগেই বাংলার ব্যবহার বাস্তবায়ন হয়েছে, কিন্তু স্মার্টফোনের জন্য কোনো সলিউশন (সমাধান) আগে ছিল না। এখন ২০১৭ সালে সরকার একটি প্রমিত কোড বা কি–বোর্ড করেছে। এর প্রেক্ষিতে সফটওয়্যারও করা হয়েছে। বিজয়ের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আছে, যে ভার্সনটি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। এখানে কোনো ব্যবসার বিষয় নেই।’
সবাইকে বিজয়েই বাংলা লিখতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা কোথাও দেওয়া হয়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো ব্যবহারকারী ভিন্ন কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তাতে তো কোনো বাধা নেই। সে ফোন হাতে নিয়ে (বিজয়) ডিলিট করে অন্য কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও আমাদের কিছু বলার নেই, সেটা তার খুশি। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তার কাছে বাংলা লেখার সফটওয়্যার বিনা মূল্যে দেওয়া, সরকার সেটাই করছে। কেউ যেন না বলতে পারে যে—আমি বাংলা লেখার কিছু পাইনি।’
১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর মোস্তাফা জব্বার প্রতিষ্ঠিত আনন্দ কম্পিউটারস থেকেই প্রকাশ করা হয় বিজয় বাংলা কি-বোর্ড ও সফটওয়্যার, যা পরে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যারে পরিণত হয়। বিজয় কি-বোর্ডের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীনেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
এ বিষয়ে আরও কথা বলার জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে জানা যায়, তিনি চিকিৎসার কাজে সিঙ্গাপুর আছেন। আগামীকাল বুধবার রাতে দেশে ফিরতে পারেন।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি ও ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছি আমরা। বিষয়টা আলোচনার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।’
মন্ত্রীর নিজস্ব সফটওয়্যার বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে শেখ রিয়াজ বলেন, ‘এ দেশে কোনো কাজ করতে গেলে গন্ধ আর স্বার্থ খোঁজে। প্রমিত বাংলা ব্যবহারের বিভিন্ন নির্দেশনা আছে। এটা কাকতালীয়ভাবে এটা মন্ত্রীর সফটওয়্যারের সঙ্গে হয়তো মিলে গেছে। আগের নির্দেশনা থেকেই মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসিকে বলেছে, তারপর যারা মোবাইল আমদানি ও তৈরি করেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা ছাড়া মোবাইল ব্যান্ড (নিষিদ্ধ) করে দেবে এমন কিছু তো বলা হয়নি। শুধু বাংলা টাইপ করতে অ্যাপস দেওয়া হবে তাই বলা হয়েছে। একেপেশে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণের ভয়
এভাবে স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ প্রি–ইনস্টল থাকার মধ্যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে থাকে কি না জানতে চাইলে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক জাহেদ উর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর নিজের মালিকানার বিজয় কি-বোর্ড তাঁর অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক তো বটেই, বেআইনিও। তিনি সরকারের কাছে কত টাকায় এটা বিক্রি করেছেন, নাকি ফ্রি দিয়েছেন তাও তো প্রকাশ করা হয়নি।’
শঙ্কা প্রকাশ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘বিজয়ের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড কোনো ম্যালওয়্যার থাকতে পারে না? আপনার ওখানে আসলে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। আপনার সবকিছু জেনে যাবে। ব্যবহার করুন আর না করুন। ইনস্টল করলেই ম্যালওয়্যার ঢুকে গেল। সরকার ইসরায়েলের কাছ থেকে নানা কিছু কিনছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বছর আগে আপনাকে চাপ দিচ্ছে বিজয় ইনস্টল করতে হবে। এর মধ্যে সিরিয়াস কোনো মতলববাজি আছে। একদম সোজাসাপ্টা কথা।’
অ্যাপ দিয়ে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব কি না এ বিষয়ে আজকের পত্রিকার কথা হয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো প্রকার অ্যাপ্লিকেশন যদি আমরা ইনস্টল করতে চাই, সে অ্যাপের পেছনে কোনো দরজা আছে কি না, একাডেমিকভাবে বলে ব্যাকডোর, সেটা নির্ণয় করতে হবে। সেটা বিজয়ের জন্য না, সব অ্যাপসের ক্ষেত্রেই। বিজয় নামে যে সফটওয়্যারটি জনগণ ডাউনলোড করবে, সেখান থেকে তারা কী কী টাইপ করছে। সে তথ্যগুলো যাতে নিরাপদ থাকে এবং সফটওয়্যারে কোনো বাগ না থাকে, সে বিষয় যাচাই বাছাই করে কারিগরি কমিটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দিলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশয় দূর হবে। মনের অজান্তে বা ডেপ্লয়েড (স্থাপিত) কোনো সার্ভারে তথ্য চুরির ঘটনা বা ম্যালওয়্যার যদি থেকে থাকে তাহলে এ জাতীয় সফটওয়্যার বা ডিজিটালাইজেশনের পদ্ধতি অনেক সময় আমাদের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
মোবাইল উৎপাদকেরা যা বলছেন
দেশে যারা মোবাইল আমদানি ও উৎপাদন করেন তাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার সময়ের নাম ছিল মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। এখন সেটি মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পুরোটাই টেকনিক্যাল বিষয়। আমরা সবকিছু চেক করে নিচ্ছি। এগুলো অনেক বিষয়ের সঙ্গে লিংক থাকে, গুগল সার্টিফিকেশন লাগবে। যেহেতু সরকারি নির্দেশনা আসছে, আমরা পালন করব। তবে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। আমাদের কিছু সময় লাগবে। সব বিষয় নিয়ে আমরা ফিডব্যাক দেব, প্রয়োজনে বিটিআরসির সঙ্গে আবার বসব। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করলে গুগলের সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ইস্যু থাকে। আজকের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মনে করছি।’
রাশেদ নিজাম, ঢাকা

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে আসার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
বিজয় কি–বোর্ডের পেটেন্ট কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক মোস্তাফা জব্বারের নামে। তিনি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি–বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেছেন, মোবাইলে বাংলা ব্যবহারে সরকারের পক্ষ থেকে এটি জনগণের প্রতি উপহার।
যদিও নির্বাচনের আগে সবার মোবাইলে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া একজন মন্ত্রীর মালিকানাধীন অ্যাপ ইনস্টল করে দেওয়াকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেকেই।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মন্ত্রী কি এটা সরকারের কাছে বিক্রি করেছেন, তাহলে কত টাকায়? গতকাল সোমবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব এই বিজয় কি–বোর্ড ইস্যুতে। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, ফোনে কেনার আগেই বিজয় ইনস্টল করা থাকলে ওই অ্যাপে কোন কোন বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা তো ব্যবহারকারী জানতে পারবেন না। এর মাধ্যমে চাইলে ফোনের সব তথ্যই হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিটিআরসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্মার্ট মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাজারজাতের আগে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব স্মার্ট হ্যান্ডসেটে বিটিআরসির সরবরাহ করা বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে তা কমিশনে প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় কোনো স্মার্টফোন বাজারজাতকরণের অনাপত্তি দেওয়া হবে না। পত্র জারির তারিখ থেকে বর্ণিত নির্দেশনাটি কার্যকর করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ চিঠি জারি করার তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে এপিকে ফাইলটি সরবরাহ করা হবে।
তবে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ বিজয় এপিকে ফাইল বিটিআরসি থেকে নিতে যায়নি কিংবা স্পেকট্রাম বিভাগ থেকেও তা সরবরাহ করা হয়নি বলে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে আজকের পত্রিকা।
মন্ত্রী ও বিটিআরসি সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমেই তিনি সাড়া দেননি। যদিও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেই সাক্ষাৎকারের অডিও ফাইলটি সংগ্রহ করে সেটিতে শোনা গেছে মন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মোবাইল কেনার পর সবাই যেন বাংলা লেখার একটি উপায় সেখানে পায় এবং সেটি যেন বিনা মূল্যে হয়, সেটিই সরকার চায়। আর বিএসটিআই যেহেতু বিজয় কি–বোর্ডকে “স্ট্যান্ডার্ড” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সে কারণে বিজয়ের কথাই বলা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনায়।’
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলোও এগুলো (সফটওয়্যার) ফ্রি পাবে। স্পষ্ট, শতভাগ ফ্রি পাবে, বিজ্ঞাপন বা কিছুই থাকবে না। ব্যবহারকারী পুরো বিনা মূল্যে এটি ব্যবহার করতে পারবে। এই ঘোষণায়, মোস্তাফা জব্বার কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে এমনটি ভাবার কিছু নেই।’
ওই নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বিজয় নামটা ব্যবহার হয়েছে কী কারণে আমি জানি না। এখানে প্রমিত কোড বা কি-বোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলা লেখার পেটেন্ট কী হবে তা সেট করা আছে, সরকার ২০১৭ সালে সেটি করেছে। এটি মনে করবেন না যে, মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী এটা করেছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৭ সালে এটিকে স্ট্যান্ডার্ড করেছে, যা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পেয়েছে ২০১৮ সালে।’
স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিজয়কে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বহু বছর আগে একটি নির্দেশনা দিয়েছে যে, মোবাইল ফোনে বাংলার ব্যবহার করতে হবে। আমাদের যেগুলো ফিচার ফোন আছে সেগুলোতে অনেক আগেই বাংলার ব্যবহার বাস্তবায়ন হয়েছে, কিন্তু স্মার্টফোনের জন্য কোনো সলিউশন (সমাধান) আগে ছিল না। এখন ২০১৭ সালে সরকার একটি প্রমিত কোড বা কি–বোর্ড করেছে। এর প্রেক্ষিতে সফটওয়্যারও করা হয়েছে। বিজয়ের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আছে, যে ভার্সনটি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। এখানে কোনো ব্যবসার বিষয় নেই।’
সবাইকে বিজয়েই বাংলা লিখতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা কোথাও দেওয়া হয়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো ব্যবহারকারী ভিন্ন কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তাতে তো কোনো বাধা নেই। সে ফোন হাতে নিয়ে (বিজয়) ডিলিট করে অন্য কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও আমাদের কিছু বলার নেই, সেটা তার খুশি। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তার কাছে বাংলা লেখার সফটওয়্যার বিনা মূল্যে দেওয়া, সরকার সেটাই করছে। কেউ যেন না বলতে পারে যে—আমি বাংলা লেখার কিছু পাইনি।’
১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর মোস্তাফা জব্বার প্রতিষ্ঠিত আনন্দ কম্পিউটারস থেকেই প্রকাশ করা হয় বিজয় বাংলা কি-বোর্ড ও সফটওয়্যার, যা পরে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যারে পরিণত হয়। বিজয় কি-বোর্ডের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীনেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
এ বিষয়ে আরও কথা বলার জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে জানা যায়, তিনি চিকিৎসার কাজে সিঙ্গাপুর আছেন। আগামীকাল বুধবার রাতে দেশে ফিরতে পারেন।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি ও ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছি আমরা। বিষয়টা আলোচনার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।’
মন্ত্রীর নিজস্ব সফটওয়্যার বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে শেখ রিয়াজ বলেন, ‘এ দেশে কোনো কাজ করতে গেলে গন্ধ আর স্বার্থ খোঁজে। প্রমিত বাংলা ব্যবহারের বিভিন্ন নির্দেশনা আছে। এটা কাকতালীয়ভাবে এটা মন্ত্রীর সফটওয়্যারের সঙ্গে হয়তো মিলে গেছে। আগের নির্দেশনা থেকেই মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসিকে বলেছে, তারপর যারা মোবাইল আমদানি ও তৈরি করেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা ছাড়া মোবাইল ব্যান্ড (নিষিদ্ধ) করে দেবে এমন কিছু তো বলা হয়নি। শুধু বাংলা টাইপ করতে অ্যাপস দেওয়া হবে তাই বলা হয়েছে। একেপেশে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণের ভয়
এভাবে স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ প্রি–ইনস্টল থাকার মধ্যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে থাকে কি না জানতে চাইলে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক জাহেদ উর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর নিজের মালিকানার বিজয় কি-বোর্ড তাঁর অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক তো বটেই, বেআইনিও। তিনি সরকারের কাছে কত টাকায় এটা বিক্রি করেছেন, নাকি ফ্রি দিয়েছেন তাও তো প্রকাশ করা হয়নি।’
শঙ্কা প্রকাশ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘বিজয়ের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড কোনো ম্যালওয়্যার থাকতে পারে না? আপনার ওখানে আসলে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। আপনার সবকিছু জেনে যাবে। ব্যবহার করুন আর না করুন। ইনস্টল করলেই ম্যালওয়্যার ঢুকে গেল। সরকার ইসরায়েলের কাছ থেকে নানা কিছু কিনছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বছর আগে আপনাকে চাপ দিচ্ছে বিজয় ইনস্টল করতে হবে। এর মধ্যে সিরিয়াস কোনো মতলববাজি আছে। একদম সোজাসাপ্টা কথা।’
অ্যাপ দিয়ে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব কি না এ বিষয়ে আজকের পত্রিকার কথা হয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো প্রকার অ্যাপ্লিকেশন যদি আমরা ইনস্টল করতে চাই, সে অ্যাপের পেছনে কোনো দরজা আছে কি না, একাডেমিকভাবে বলে ব্যাকডোর, সেটা নির্ণয় করতে হবে। সেটা বিজয়ের জন্য না, সব অ্যাপসের ক্ষেত্রেই। বিজয় নামে যে সফটওয়্যারটি জনগণ ডাউনলোড করবে, সেখান থেকে তারা কী কী টাইপ করছে। সে তথ্যগুলো যাতে নিরাপদ থাকে এবং সফটওয়্যারে কোনো বাগ না থাকে, সে বিষয় যাচাই বাছাই করে কারিগরি কমিটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দিলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশয় দূর হবে। মনের অজান্তে বা ডেপ্লয়েড (স্থাপিত) কোনো সার্ভারে তথ্য চুরির ঘটনা বা ম্যালওয়্যার যদি থেকে থাকে তাহলে এ জাতীয় সফটওয়্যার বা ডিজিটালাইজেশনের পদ্ধতি অনেক সময় আমাদের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
মোবাইল উৎপাদকেরা যা বলছেন
দেশে যারা মোবাইল আমদানি ও উৎপাদন করেন তাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার সময়ের নাম ছিল মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। এখন সেটি মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পুরোটাই টেকনিক্যাল বিষয়। আমরা সবকিছু চেক করে নিচ্ছি। এগুলো অনেক বিষয়ের সঙ্গে লিংক থাকে, গুগল সার্টিফিকেশন লাগবে। যেহেতু সরকারি নির্দেশনা আসছে, আমরা পালন করব। তবে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। আমাদের কিছু সময় লাগবে। সব বিষয় নিয়ে আমরা ফিডব্যাক দেব, প্রয়োজনে বিটিআরসির সঙ্গে আবার বসব। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করলে গুগলের সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ইস্যু থাকে। আজকের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মনে করছি।’

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে আসার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
বিজয় কি–বোর্ডের পেটেন্ট কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক মোস্তাফা জব্বারের নামে। তিনি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি–বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেছেন, মোবাইলে বাংলা ব্যবহারে সরকারের পক্ষ থেকে এটি জনগণের প্রতি উপহার।
যদিও নির্বাচনের আগে সবার মোবাইলে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া একজন মন্ত্রীর মালিকানাধীন অ্যাপ ইনস্টল করে দেওয়াকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেকেই।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, মন্ত্রী কি এটা সরকারের কাছে বিক্রি করেছেন, তাহলে কত টাকায়? গতকাল সোমবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব এই বিজয় কি–বোর্ড ইস্যুতে। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, ফোনে কেনার আগেই বিজয় ইনস্টল করা থাকলে ওই অ্যাপে কোন কোন বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা তো ব্যবহারকারী জানতে পারবেন না। এর মাধ্যমে চাইলে ফোনের সব তথ্যই হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিটিআরসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্মার্ট মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাজারজাতের আগে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব স্মার্ট হ্যান্ডসেটে বিটিআরসির সরবরাহ করা বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে তা কমিশনে প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় কোনো স্মার্টফোন বাজারজাতকরণের অনাপত্তি দেওয়া হবে না। পত্র জারির তারিখ থেকে বর্ণিত নির্দেশনাটি কার্যকর করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ চিঠি জারি করার তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে এপিকে ফাইলটি সরবরাহ করা হবে।
তবে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ বিজয় এপিকে ফাইল বিটিআরসি থেকে নিতে যায়নি কিংবা স্পেকট্রাম বিভাগ থেকেও তা সরবরাহ করা হয়নি বলে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে আজকের পত্রিকা।
মন্ত্রী ও বিটিআরসি সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমেই তিনি সাড়া দেননি। যদিও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেই সাক্ষাৎকারের অডিও ফাইলটি সংগ্রহ করে সেটিতে শোনা গেছে মন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মোবাইল কেনার পর সবাই যেন বাংলা লেখার একটি উপায় সেখানে পায় এবং সেটি যেন বিনা মূল্যে হয়, সেটিই সরকার চায়। আর বিএসটিআই যেহেতু বিজয় কি–বোর্ডকে “স্ট্যান্ডার্ড” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সে কারণে বিজয়ের কথাই বলা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনায়।’
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলোও এগুলো (সফটওয়্যার) ফ্রি পাবে। স্পষ্ট, শতভাগ ফ্রি পাবে, বিজ্ঞাপন বা কিছুই থাকবে না। ব্যবহারকারী পুরো বিনা মূল্যে এটি ব্যবহার করতে পারবে। এই ঘোষণায়, মোস্তাফা জব্বার কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে এমনটি ভাবার কিছু নেই।’
ওই নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বিজয় নামটা ব্যবহার হয়েছে কী কারণে আমি জানি না। এখানে প্রমিত কোড বা কি-বোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলা লেখার পেটেন্ট কী হবে তা সেট করা আছে, সরকার ২০১৭ সালে সেটি করেছে। এটি মনে করবেন না যে, মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী এটা করেছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৭ সালে এটিকে স্ট্যান্ডার্ড করেছে, যা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পেয়েছে ২০১৮ সালে।’
স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিজয়কে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বহু বছর আগে একটি নির্দেশনা দিয়েছে যে, মোবাইল ফোনে বাংলার ব্যবহার করতে হবে। আমাদের যেগুলো ফিচার ফোন আছে সেগুলোতে অনেক আগেই বাংলার ব্যবহার বাস্তবায়ন হয়েছে, কিন্তু স্মার্টফোনের জন্য কোনো সলিউশন (সমাধান) আগে ছিল না। এখন ২০১৭ সালে সরকার একটি প্রমিত কোড বা কি–বোর্ড করেছে। এর প্রেক্ষিতে সফটওয়্যারও করা হয়েছে। বিজয়ের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আছে, যে ভার্সনটি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। এখানে কোনো ব্যবসার বিষয় নেই।’
সবাইকে বিজয়েই বাংলা লিখতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা কোথাও দেওয়া হয়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো ব্যবহারকারী ভিন্ন কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তাতে তো কোনো বাধা নেই। সে ফোন হাতে নিয়ে (বিজয়) ডিলিট করে অন্য কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও আমাদের কিছু বলার নেই, সেটা তার খুশি। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তার কাছে বাংলা লেখার সফটওয়্যার বিনা মূল্যে দেওয়া, সরকার সেটাই করছে। কেউ যেন না বলতে পারে যে—আমি বাংলা লেখার কিছু পাইনি।’
১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর মোস্তাফা জব্বার প্রতিষ্ঠিত আনন্দ কম্পিউটারস থেকেই প্রকাশ করা হয় বিজয় বাংলা কি-বোর্ড ও সফটওয়্যার, যা পরে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যারে পরিণত হয়। বিজয় কি-বোর্ডের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীনেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
এ বিষয়ে আরও কথা বলার জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে জানা যায়, তিনি চিকিৎসার কাজে সিঙ্গাপুর আছেন। আগামীকাল বুধবার রাতে দেশে ফিরতে পারেন।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি ও ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছি আমরা। বিষয়টা আলোচনার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।’
মন্ত্রীর নিজস্ব সফটওয়্যার বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে শেখ রিয়াজ বলেন, ‘এ দেশে কোনো কাজ করতে গেলে গন্ধ আর স্বার্থ খোঁজে। প্রমিত বাংলা ব্যবহারের বিভিন্ন নির্দেশনা আছে। এটা কাকতালীয়ভাবে এটা মন্ত্রীর সফটওয়্যারের সঙ্গে হয়তো মিলে গেছে। আগের নির্দেশনা থেকেই মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসিকে বলেছে, তারপর যারা মোবাইল আমদানি ও তৈরি করেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা ছাড়া মোবাইল ব্যান্ড (নিষিদ্ধ) করে দেবে এমন কিছু তো বলা হয়নি। শুধু বাংলা টাইপ করতে অ্যাপস দেওয়া হবে তাই বলা হয়েছে। একেপেশে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণের ভয়
এভাবে স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ প্রি–ইনস্টল থাকার মধ্যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে থাকে কি না জানতে চাইলে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক জাহেদ উর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর নিজের মালিকানার বিজয় কি-বোর্ড তাঁর অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক তো বটেই, বেআইনিও। তিনি সরকারের কাছে কত টাকায় এটা বিক্রি করেছেন, নাকি ফ্রি দিয়েছেন তাও তো প্রকাশ করা হয়নি।’
শঙ্কা প্রকাশ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘বিজয়ের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড কোনো ম্যালওয়্যার থাকতে পারে না? আপনার ওখানে আসলে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। আপনার সবকিছু জেনে যাবে। ব্যবহার করুন আর না করুন। ইনস্টল করলেই ম্যালওয়্যার ঢুকে গেল। সরকার ইসরায়েলের কাছ থেকে নানা কিছু কিনছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বছর আগে আপনাকে চাপ দিচ্ছে বিজয় ইনস্টল করতে হবে। এর মধ্যে সিরিয়াস কোনো মতলববাজি আছে। একদম সোজাসাপ্টা কথা।’
অ্যাপ দিয়ে ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব কি না এ বিষয়ে আজকের পত্রিকার কথা হয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো প্রকার অ্যাপ্লিকেশন যদি আমরা ইনস্টল করতে চাই, সে অ্যাপের পেছনে কোনো দরজা আছে কি না, একাডেমিকভাবে বলে ব্যাকডোর, সেটা নির্ণয় করতে হবে। সেটা বিজয়ের জন্য না, সব অ্যাপসের ক্ষেত্রেই। বিজয় নামে যে সফটওয়্যারটি জনগণ ডাউনলোড করবে, সেখান থেকে তারা কী কী টাইপ করছে। সে তথ্যগুলো যাতে নিরাপদ থাকে এবং সফটওয়্যারে কোনো বাগ না থাকে, সে বিষয় যাচাই বাছাই করে কারিগরি কমিটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দিলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশয় দূর হবে। মনের অজান্তে বা ডেপ্লয়েড (স্থাপিত) কোনো সার্ভারে তথ্য চুরির ঘটনা বা ম্যালওয়্যার যদি থেকে থাকে তাহলে এ জাতীয় সফটওয়্যার বা ডিজিটালাইজেশনের পদ্ধতি অনেক সময় আমাদের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
মোবাইল উৎপাদকেরা যা বলছেন
দেশে যারা মোবাইল আমদানি ও উৎপাদন করেন তাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার সময়ের নাম ছিল মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। এখন সেটি মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পুরোটাই টেকনিক্যাল বিষয়। আমরা সবকিছু চেক করে নিচ্ছি। এগুলো অনেক বিষয়ের সঙ্গে লিংক থাকে, গুগল সার্টিফিকেশন লাগবে। যেহেতু সরকারি নির্দেশনা আসছে, আমরা পালন করব। তবে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। আমাদের কিছু সময় লাগবে। সব বিষয় নিয়ে আমরা ফিডব্যাক দেব, প্রয়োজনে বিটিআরসির সঙ্গে আবার বসব। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করলে গুগলের সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ইস্যু থাকে। আজকের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মনে করছি।’

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ
২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২ দিন আগে
দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
অনলাইন সার্চে গুগলকে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।
গতকাল মঙ্গলবার দ্রুত প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠা ওয়েব ব্রাউজারের বাজারে চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাসকে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন ওপেনএআইর সিইও স্যাম অল্টম্যান। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই অ্যালফাবেটের শেয়ারের মূল্য ৩ শতাংশ কমে যায়।
অল্টম্যান জানান, চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ওয়েবসাইটটি গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই উইন্ডোজ ও মোবাইল ডিভাইসে এটির যাত্রা শুরু বলে আশা করছেন তিনি।
ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই খাতে বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই ওয়েব ব্রাউজার আনল প্রতিষ্ঠানটি। অল্টম্যান বলেন, ‘আরও অনেক কিছু যোগ করার আছে। সবেমাত্র শুরু।’
ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এর মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। তবে এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য থাকবে। এজেন্ট মোড ব্যবহারকারীর মাউস ও কীবোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম।
অল্টম্যান জানান, অ্যাটলাসের এজেন্ট মোড আপাতত শুধু প্লাস এবং প্রো ব্যবহারকারীদের জন্য সীমিত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘এই এজেন্টটি আপনার জন্য কাজ করবে, আপনাকে আরও ভালোভাবে জানবে, প্রয়োজনীয় তথ্য আগেভাগেই সংগ্রহ করবে, ইন্টারনেটে আপনি যা চাইতে পারেন তা খুঁজে বের করবে এবং সেগুলো একত্রিত করবে, যা আমরা একটু দেখিয়েছি। আমরা মনে করি, এটিকে আমরা যথেষ্ট দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারব।’
মঙ্গলবার এই ঘোষণার আগে ওপেনএআই একাধিক চুক্তি এবং পণ্যের ঘোষণা দেয়। এনভিডিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ানো এবং এআই-জেনারেটেড কনটেন্টের জন্য টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ সোরা ২-এর লঞ্চ করে তারা।
ওয়েব ব্রাউজারগুলো ক্রমেই এআইর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে যাচ্ছে। গুগল ক্রোমসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে জেমিনি এআইকে একীভূত করার কাজ করছে। মাইক্রোসফটও এজ ব্রাউজারে এআই ফিচার যুক্ত করেছে।
এছাড়াও, পারপ্লেক্সিটির মতো অনেক এআই স্টার্টআপ এআই ব্রাউজারের অভিজ্ঞতা সরবরাহ করছে, যার মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি চালু হওয়া কমেট ব্রাউজার উল্লেখযোগ্য।
যদি কারও মনে দ্বিধা থাকে তাহলে ওপেনএআই আশা করছে, ব্যবহারকারীরা ক্রোম, সাফারি বা এজ ছেড়ে তাদের প্ল্যাটফর্মে আসবে। অ্যাটলাস স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে ডাউনলোড পেজে। তারা লিখেছে, ‘চ্যাটজিপিটিকে ডিফল্ট ব্রাউজার হিসেবে সেট করুন এবং ৭ দিনের জন্য বুস্টেড লিমিট পান।’
চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি। এই ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি ও শপিফাই এবং বুকিং পরিষেবা এক্সপিডিয়া ও বুকিং ডটকমের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে।

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
অনলাইন সার্চে গুগলকে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।
গতকাল মঙ্গলবার দ্রুত প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠা ওয়েব ব্রাউজারের বাজারে চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাসকে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন ওপেনএআইর সিইও স্যাম অল্টম্যান। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই অ্যালফাবেটের শেয়ারের মূল্য ৩ শতাংশ কমে যায়।
অল্টম্যান জানান, চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ওয়েবসাইটটি গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই উইন্ডোজ ও মোবাইল ডিভাইসে এটির যাত্রা শুরু বলে আশা করছেন তিনি।
ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই খাতে বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই ওয়েব ব্রাউজার আনল প্রতিষ্ঠানটি। অল্টম্যান বলেন, ‘আরও অনেক কিছু যোগ করার আছে। সবেমাত্র শুরু।’
ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এর মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। তবে এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য থাকবে। এজেন্ট মোড ব্যবহারকারীর মাউস ও কীবোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম।
অল্টম্যান জানান, অ্যাটলাসের এজেন্ট মোড আপাতত শুধু প্লাস এবং প্রো ব্যবহারকারীদের জন্য সীমিত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘এই এজেন্টটি আপনার জন্য কাজ করবে, আপনাকে আরও ভালোভাবে জানবে, প্রয়োজনীয় তথ্য আগেভাগেই সংগ্রহ করবে, ইন্টারনেটে আপনি যা চাইতে পারেন তা খুঁজে বের করবে এবং সেগুলো একত্রিত করবে, যা আমরা একটু দেখিয়েছি। আমরা মনে করি, এটিকে আমরা যথেষ্ট দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারব।’
মঙ্গলবার এই ঘোষণার আগে ওপেনএআই একাধিক চুক্তি এবং পণ্যের ঘোষণা দেয়। এনভিডিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ানো এবং এআই-জেনারেটেড কনটেন্টের জন্য টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ সোরা ২-এর লঞ্চ করে তারা।
ওয়েব ব্রাউজারগুলো ক্রমেই এআইর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে যাচ্ছে। গুগল ক্রোমসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে জেমিনি এআইকে একীভূত করার কাজ করছে। মাইক্রোসফটও এজ ব্রাউজারে এআই ফিচার যুক্ত করেছে।
এছাড়াও, পারপ্লেক্সিটির মতো অনেক এআই স্টার্টআপ এআই ব্রাউজারের অভিজ্ঞতা সরবরাহ করছে, যার মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি চালু হওয়া কমেট ব্রাউজার উল্লেখযোগ্য।
যদি কারও মনে দ্বিধা থাকে তাহলে ওপেনএআই আশা করছে, ব্যবহারকারীরা ক্রোম, সাফারি বা এজ ছেড়ে তাদের প্ল্যাটফর্মে আসবে। অ্যাটলাস স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে ডাউনলোড পেজে। তারা লিখেছে, ‘চ্যাটজিপিটিকে ডিফল্ট ব্রাউজার হিসেবে সেট করুন এবং ৭ দিনের জন্য বুস্টেড লিমিট পান।’
চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি। এই ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি ও শপিফাই এবং বুকিং পরিষেবা এক্সপিডিয়া ও বুকিং ডটকমের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে।

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমা
১৭ জানুয়ারি ২০২৩
বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ
২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২ দিন আগে
দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
সম্প্রতি ভারতে ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এআই চ্যাটবটের ব্যবহার নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভারতের রাজস্থানের ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বিজয় মিল জীবনের কঠিন সময়ে বরাবর ভগবানের আশীর্বাদের দিকেই হাত বাড়ান। আগে তিনি আধ্যাত্মিক গুরুদের পরামর্শ নিতেন, তবে ইদানীং ভরসা রাখেন ‘গীতাজিপিটি’ নামের একটি এআই অ্যাপের ওপর!
এই এআই চ্যাটবটটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবদগীতার ৭০০টি শ্লোক ব্যবহার করে প্রশিক্ষিত। এটি ব্যবহার করলে বন্ধুর সঙ্গে টেক্সট মেসেজে আদান-প্রদানের মতোই মনে হয়। তবে এআই ব্যবহারকারীকে জানায়, ‘আপনি ভগবানের সঙ্গেই কথা বলছেন!’
বিজয় মিল জানান, ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষাগুলোতে সাফল্য না পেয়ে তিনি যখন হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তখন গীতাজিপিটি-তে সংকটের কথা লিখে পরামর্শ চান। উত্তরে চ্যাটবটটি বলে, ‘ফলের চিন্তা ত্যাগ করে তোমার কাজের ওপর মনোনিবেশ করো।’ বিজয় মিলের কথায়, এই উপদেশ তাঁকে নতুন করে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি আবার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তাঁর জন্য এখন গীতাজিপিটি বন্ধুর মতো, যার সঙ্গে তিনি সপ্তাহে একবার বা দুবার চ্যাট করেন।
ধর্ম ও প্রযুক্তির মিলনক্ষেত্র ভারত
এআই কাজ, শেখা এবং এমনকি আবেগীয় অনুভূতিকেও প্রভাবিত করছে। এখন তো এটি প্রার্থনা করার পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলোর অনুসারীরা চ্যাটবট নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তবে হিন্দু ধর্ম, যে ধর্মে দেবতা বা মূর্তির শারীরিক বা দৃশ্যমান উপস্থাপনার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে এই প্রযুক্তি ও ধর্মবিশ্বাসের মিলন গবেষণাগার দারুণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলেসলি কলেজের নৃবিজ্ঞানী হলি ওয়াল্টার্স বলেন, ‘মানুষ এখন সমাজ, অগ্রজ এবং উপাসনালয় থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে। অনেকের জন্য, এআই-এর সঙ্গে ঈশ্বরের বিষয়ে কথা বলা কেবল আধ্যাত্মিকতা নয়, বরং এক ধরনের অংশীদারত্ব বা আত্মিক সম্পর্ক খুঁজে পাওয়ার উপায়।’
ওয়াল্টার্সের মতে, ভারতে এই প্রবণতা বাড়ছে, কারণ সেখানকার প্রাচীন রীতিতে ‘মূর্তি’ (দেবতার পবিত্র প্রতিমা) এবং ‘দর্শন’ (ঈশ্বরের দর্শন লাভ)-এর মতো প্রথাগুলো প্রযুক্তিকে ঈশ্বরের দৈনন্দিন উপস্থিতির অন্য একটি মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
তবে গত কয়েক বছরে ধর্মীয় ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে: মুসলিম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ‘কোরআনজিপিটি’ অ্যাপটি লঞ্চ হওয়ার একদিনের মধ্যেই বিপুল ট্র্যাফিকের কারণে ক্র্যাশ করেছিল। তবে টেক্সট উইথ জেসাস নামের অ্যাপটি যিশু ও বাইবেলের চরিত্রগুলোর সঙ্গে চ্যাটিং করার সুযোগ দিলেও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছিল।
হিন্দু ধর্মের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা বিভিন্ন ‘গীতাজিপিটি’ চ্যাটবট তৈরি করেছেন। রাজস্থানের ব্যবসায় বিভাগের ছাত্র বিকাশ সাহু নিজের তৈরি গীতাজিপিটি মাত্র কয়েক দিনে ১ লাখ ব্যবহারকারী পেয়েছে। তিনি বর্তমানে এমবিএ ছেড়ে এই প্রকল্পের জন্য তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করছেন।
এ ছাড়া, ভারতে আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এআই গ্রহণ করছে: জনপ্রিয় সদগুরু-এর ইশা ফাউন্ডেশন-এর ‘মিরাকল অব মাইন্ড’ মেডিটেশন অ্যাপ লঞ্চের মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ১০ লাখ ডাউনলোড অতিক্রম করেছে। তারা ‘প্রাচীন জ্ঞান’কে সমসাময়িক উপায়ে পৌঁছে দিতে এআই ব্যবহার করে।
২০২৫ সালের মহা কুম্ভ মেলাতেও এআই ব্যবহৃত হয়েছে। ‘Kumbh Sah’AI’yak’ নামক একটি বহুভাষী চ্যাটবট ভ্রমণ ও সেখানে থাকার বিষয়ে সহায়তা করেছিল। এ ছাড়া, ‘ডিজিটাল দর্শন’-এর মাধ্যমে ভক্তরা দূর থেকে প্রতীকীভাবে ত্রিবেণি সঙ্গমের পবিত্র জলে স্নান করতে পেরেছিলেন।
এমনকি, ভারতে উপাসনার জন্য রোবটও ব্যবহার করা হচ্ছে। কেরালার একটি মন্দিরে ‘ইরিঞ্জাডাপিলি রমন’ নামে একটি রোবটিক হাতি রয়েছে, যা আচার-অনুষ্ঠান করে এবং আশীর্বাদ দেয়। ওয়াল্টার্স বলেন, ‘এই রোবটিক দেবতারা কথা বলে এবং নড়াচড়া করে। এটা অদ্ভুত লাগলেও অনেকের কাছে এটাই ঈশ্বর।’
তবে অনেক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় এআই-এর কিছু ঝুঁকিও আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যান্য এআই-এর মতো ধর্মীয় চ্যাটবটগুলোও তথ্যের ‘হ্যালুসিনেশন’ (মিথ্যা বা ভুল তথ্য তৈরি) এবং ত্রুটি প্রদর্শন করে।
যেমন, একবার গীতাজিপিটি (কৃষ্ণের কণ্ঠে) দাবি করেছিল, ‘ধর্ম রক্ষার জন্য হত্যা ন্যায়সংগত।’ এই ধরনের মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার জন্ম দেওয়ায় বিকাশ সাহুকে দ্রুত এআইটির কিছু সমন্বয় করে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়েছিল।
এ ছাড়া, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতাত্ত্বিক নৈতিকতা গবেষক রেভারেন্ড লিন্ডন ড্রেক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, চ্যাটবটগুলো প্রায়শই নিরপেক্ষতার আড়ালে তাদের নির্মাতাদের পক্ষপাতকে প্রতিফলিত করে। ভারতে যেখানে প্রযুক্তির সাক্ষরতা কম, সেখানে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। ওয়াল্টার্স সতর্ক করে বলেন, ‘বিপদ এটাই—যখন এই সরঞ্জামগুলোকে ঐশ্বরিক কণ্ঠস্বর হিসেবে মনে করা হয়, তখন তাদের কথার গুরুত্ব প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়।’
তবে বিজয় মিলের মতো ব্যবহারকারীরা মনে করেন, এই বটগুলো মন্দিরে পুরোহিতের সঙ্গে গভীর কথোপকথন করার যে অভাব, তা পূরণ করে এবং শাস্ত্র-ভিত্তিক নির্দেশনা হাতের নাগালে এনে দেয়।

বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
সম্প্রতি ভারতে ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এআই চ্যাটবটের ব্যবহার নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভারতের রাজস্থানের ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বিজয় মিল জীবনের কঠিন সময়ে বরাবর ভগবানের আশীর্বাদের দিকেই হাত বাড়ান। আগে তিনি আধ্যাত্মিক গুরুদের পরামর্শ নিতেন, তবে ইদানীং ভরসা রাখেন ‘গীতাজিপিটি’ নামের একটি এআই অ্যাপের ওপর!
এই এআই চ্যাটবটটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবদগীতার ৭০০টি শ্লোক ব্যবহার করে প্রশিক্ষিত। এটি ব্যবহার করলে বন্ধুর সঙ্গে টেক্সট মেসেজে আদান-প্রদানের মতোই মনে হয়। তবে এআই ব্যবহারকারীকে জানায়, ‘আপনি ভগবানের সঙ্গেই কথা বলছেন!’
বিজয় মিল জানান, ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষাগুলোতে সাফল্য না পেয়ে তিনি যখন হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তখন গীতাজিপিটি-তে সংকটের কথা লিখে পরামর্শ চান। উত্তরে চ্যাটবটটি বলে, ‘ফলের চিন্তা ত্যাগ করে তোমার কাজের ওপর মনোনিবেশ করো।’ বিজয় মিলের কথায়, এই উপদেশ তাঁকে নতুন করে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি আবার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তাঁর জন্য এখন গীতাজিপিটি বন্ধুর মতো, যার সঙ্গে তিনি সপ্তাহে একবার বা দুবার চ্যাট করেন।
ধর্ম ও প্রযুক্তির মিলনক্ষেত্র ভারত
এআই কাজ, শেখা এবং এমনকি আবেগীয় অনুভূতিকেও প্রভাবিত করছে। এখন তো এটি প্রার্থনা করার পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলোর অনুসারীরা চ্যাটবট নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তবে হিন্দু ধর্ম, যে ধর্মে দেবতা বা মূর্তির শারীরিক বা দৃশ্যমান উপস্থাপনার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে এই প্রযুক্তি ও ধর্মবিশ্বাসের মিলন গবেষণাগার দারুণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলেসলি কলেজের নৃবিজ্ঞানী হলি ওয়াল্টার্স বলেন, ‘মানুষ এখন সমাজ, অগ্রজ এবং উপাসনালয় থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে। অনেকের জন্য, এআই-এর সঙ্গে ঈশ্বরের বিষয়ে কথা বলা কেবল আধ্যাত্মিকতা নয়, বরং এক ধরনের অংশীদারত্ব বা আত্মিক সম্পর্ক খুঁজে পাওয়ার উপায়।’
ওয়াল্টার্সের মতে, ভারতে এই প্রবণতা বাড়ছে, কারণ সেখানকার প্রাচীন রীতিতে ‘মূর্তি’ (দেবতার পবিত্র প্রতিমা) এবং ‘দর্শন’ (ঈশ্বরের দর্শন লাভ)-এর মতো প্রথাগুলো প্রযুক্তিকে ঈশ্বরের দৈনন্দিন উপস্থিতির অন্য একটি মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
তবে গত কয়েক বছরে ধর্মীয় ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে: মুসলিম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ‘কোরআনজিপিটি’ অ্যাপটি লঞ্চ হওয়ার একদিনের মধ্যেই বিপুল ট্র্যাফিকের কারণে ক্র্যাশ করেছিল। তবে টেক্সট উইথ জেসাস নামের অ্যাপটি যিশু ও বাইবেলের চরিত্রগুলোর সঙ্গে চ্যাটিং করার সুযোগ দিলেও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছিল।
হিন্দু ধর্মের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা বিভিন্ন ‘গীতাজিপিটি’ চ্যাটবট তৈরি করেছেন। রাজস্থানের ব্যবসায় বিভাগের ছাত্র বিকাশ সাহু নিজের তৈরি গীতাজিপিটি মাত্র কয়েক দিনে ১ লাখ ব্যবহারকারী পেয়েছে। তিনি বর্তমানে এমবিএ ছেড়ে এই প্রকল্পের জন্য তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করছেন।
এ ছাড়া, ভারতে আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এআই গ্রহণ করছে: জনপ্রিয় সদগুরু-এর ইশা ফাউন্ডেশন-এর ‘মিরাকল অব মাইন্ড’ মেডিটেশন অ্যাপ লঞ্চের মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ১০ লাখ ডাউনলোড অতিক্রম করেছে। তারা ‘প্রাচীন জ্ঞান’কে সমসাময়িক উপায়ে পৌঁছে দিতে এআই ব্যবহার করে।
২০২৫ সালের মহা কুম্ভ মেলাতেও এআই ব্যবহৃত হয়েছে। ‘Kumbh Sah’AI’yak’ নামক একটি বহুভাষী চ্যাটবট ভ্রমণ ও সেখানে থাকার বিষয়ে সহায়তা করেছিল। এ ছাড়া, ‘ডিজিটাল দর্শন’-এর মাধ্যমে ভক্তরা দূর থেকে প্রতীকীভাবে ত্রিবেণি সঙ্গমের পবিত্র জলে স্নান করতে পেরেছিলেন।
এমনকি, ভারতে উপাসনার জন্য রোবটও ব্যবহার করা হচ্ছে। কেরালার একটি মন্দিরে ‘ইরিঞ্জাডাপিলি রমন’ নামে একটি রোবটিক হাতি রয়েছে, যা আচার-অনুষ্ঠান করে এবং আশীর্বাদ দেয়। ওয়াল্টার্স বলেন, ‘এই রোবটিক দেবতারা কথা বলে এবং নড়াচড়া করে। এটা অদ্ভুত লাগলেও অনেকের কাছে এটাই ঈশ্বর।’
তবে অনেক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় এআই-এর কিছু ঝুঁকিও আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যান্য এআই-এর মতো ধর্মীয় চ্যাটবটগুলোও তথ্যের ‘হ্যালুসিনেশন’ (মিথ্যা বা ভুল তথ্য তৈরি) এবং ত্রুটি প্রদর্শন করে।
যেমন, একবার গীতাজিপিটি (কৃষ্ণের কণ্ঠে) দাবি করেছিল, ‘ধর্ম রক্ষার জন্য হত্যা ন্যায়সংগত।’ এই ধরনের মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার জন্ম দেওয়ায় বিকাশ সাহুকে দ্রুত এআইটির কিছু সমন্বয় করে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়েছিল।
এ ছাড়া, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতাত্ত্বিক নৈতিকতা গবেষক রেভারেন্ড লিন্ডন ড্রেক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, চ্যাটবটগুলো প্রায়শই নিরপেক্ষতার আড়ালে তাদের নির্মাতাদের পক্ষপাতকে প্রতিফলিত করে। ভারতে যেখানে প্রযুক্তির সাক্ষরতা কম, সেখানে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। ওয়াল্টার্স সতর্ক করে বলেন, ‘বিপদ এটাই—যখন এই সরঞ্জামগুলোকে ঐশ্বরিক কণ্ঠস্বর হিসেবে মনে করা হয়, তখন তাদের কথার গুরুত্ব প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়।’
তবে বিজয় মিলের মতো ব্যবহারকারীরা মনে করেন, এই বটগুলো মন্দিরে পুরোহিতের সঙ্গে গভীর কথোপকথন করার যে অভাব, তা পূরণ করে এবং শাস্ত্র-ভিত্তিক নির্দেশনা হাতের নাগালে এনে দেয়।

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমা
১৭ জানুয়ারি ২০২৩
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২ দিন আগে
দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কোম্পানির সিইও স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, এই নতুন ব্রাউজারটি সম্পূর্ণরূপে চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহারকারীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি প্রচলিত ওয়েব ব্রাউজারগুলোর অ্যাড্রেস বার এতে নেই।
ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই-এ বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই এই ব্রাউজার আনল তারা।
ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এই ফিচারের মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। এই এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য। এই ফিচার ব্রাউজিংয়ের প্রেক্ষাপট বুঝে ব্রাউজারকে আরও দ্রুত ও উপযোগী করে তুলবে।
ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে ওপেনএআই বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি (Etsy) ও শপিফাই (Shopify) এবং বুকিং পরিষেবা ইপিডিয়া (Expedia) ও বুকিং ডটকম (Booking. com)-এর সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে। সাম্প্রতিক ডেভডে ইভেন্টে অল্টম্যান ঘোষণা করেন, চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি।
অনেক বিশেষজ্ঞ এই নতুন ব্রাউজারটি নিয়ে উৎসাহিত, তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন অনেকে। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির সিইও এবং প্রধান বিশ্লেষক প্যাট মুরহেড মনে করেন, অ্যাটলাস হয়তো মূল ধারার ব্যবহারকারী, করপোরেট বা নতুনদের জন্য গুগল ক্রোম বা মাইক্রোসফট এজ-এর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে না। কারণ, জনপ্রিয় ব্রাউজারগুলোও দ্রুত এই ধরনের সক্ষমতা নিয়ে আসবে। তিনি উল্লেখ করেন, মাইক্রোসফট এজ ইতিমধ্যে একই ধরনের অনেক ফিচার বিনা মূল্যে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গুগলকে অনলাইন সার্চে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।
বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও পরামর্শের জন্য চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ডেটোস নামের এক গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাস পর্যন্ত ডেস্কটপ ব্রাউজারে প্রায় ৬ শতাংশ অনুসন্ধান এলএলএমের মাধ্যমে করা হয়েছে, যা এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। গুগলও এআই-এ বিপুল বিনিয়োগ করছে। গত বছর থেকে তারা সার্চ রেজাল্টে এআই-জেনারেটেড উত্তরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কোম্পানির সিইও স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, এই নতুন ব্রাউজারটি সম্পূর্ণরূপে চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহারকারীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি প্রচলিত ওয়েব ব্রাউজারগুলোর অ্যাড্রেস বার এতে নেই।
ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই-এ বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই এই ব্রাউজার আনল তারা।
ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এই ফিচারের মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। এই এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য। এই ফিচার ব্রাউজিংয়ের প্রেক্ষাপট বুঝে ব্রাউজারকে আরও দ্রুত ও উপযোগী করে তুলবে।
ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে ওপেনএআই বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি (Etsy) ও শপিফাই (Shopify) এবং বুকিং পরিষেবা ইপিডিয়া (Expedia) ও বুকিং ডটকম (Booking. com)-এর সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে। সাম্প্রতিক ডেভডে ইভেন্টে অল্টম্যান ঘোষণা করেন, চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি।
অনেক বিশেষজ্ঞ এই নতুন ব্রাউজারটি নিয়ে উৎসাহিত, তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন অনেকে। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির সিইও এবং প্রধান বিশ্লেষক প্যাট মুরহেড মনে করেন, অ্যাটলাস হয়তো মূল ধারার ব্যবহারকারী, করপোরেট বা নতুনদের জন্য গুগল ক্রোম বা মাইক্রোসফট এজ-এর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে না। কারণ, জনপ্রিয় ব্রাউজারগুলোও দ্রুত এই ধরনের সক্ষমতা নিয়ে আসবে। তিনি উল্লেখ করেন, মাইক্রোসফট এজ ইতিমধ্যে একই ধরনের অনেক ফিচার বিনা মূল্যে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গুগলকে অনলাইন সার্চে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।
বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও পরামর্শের জন্য চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ডেটোস নামের এক গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাস পর্যন্ত ডেস্কটপ ব্রাউজারে প্রায় ৬ শতাংশ অনুসন্ধান এলএলএমের মাধ্যমে করা হয়েছে, যা এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। গুগলও এআই-এ বিপুল বিনিয়োগ করছে। গত বছর থেকে তারা সার্চ রেজাল্টে এআই-জেনারেটেড উত্তরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমা
১৭ জানুয়ারি ২০২৩
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ
২ দিন আগে
দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে...
২ দিন আগেঅর্চি হক, ঢাকা

দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে এই ব্যবস্থা চালু করতে কাজ করছে। ২৯ অক্টোবর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে যাচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা জাতীয় পর্যায়ে এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছি। নভেম্বরের পর যেকোনো সময় এটা চালু হয়ে যাবে। এখানে একটা ডেটের আগে সব নাম্বার (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি-আইএমইআই) গ্রে থাকবে। এরপরের নম্বরগুলো ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট হবে।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে এনইআইআর চালু এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। বিটিআরসি এতে রাজি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এনইআইআর চালুর বিষয়ে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এসব আলোচনা হয়। বিটিআরসির সেই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ‘এমআইওবির কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে কম দামে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বিক্রয় এবং হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য এনইআইআর সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ এবং যথাসময়ে চালুর লক্ষ্যে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট/ট্যাক্সসহ স্বেচ্ছায় শর্তহীনভাবে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার ক্রয় এবং প্রযোজ্য খাতসমূহের ব্যয় নির্বাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে জানিয়েছে।’
প্রতিটি মোবাইল ফোনের জন্য ১৫ সংখ্যার একটি আলাদা আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর থাকে। এই সুনির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কে কোনো একটি সুনির্দিষ্ট মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব। বাংলাদেশে আইএমইআই নকল করে অবৈধ ফোন ব্যবহারের প্রবণতা অনেক। ২০২৪ সালের জুনে রবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা একটি আইএমইআই নম্বরের নিবন্ধন দিয়েই দেড় লাখের বেশি মোবাইল ফোনের খোঁজ পেয়েছে। অর্থাৎ এসব ফোনই নকল। এনইআইআর চালু হলে ডুপ্লিকেট আইএমইআই অর্থাৎ নকল ফোনের বেচাকেনা বন্ধ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেদার অবৈধ মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। এসব অবৈধ ফোন ব্যবহার করে অপরাধের প্রবণতা রয়েছে। এমআইওবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার ৩৫-৪০ শতাংশ। অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের কারণে দেশে ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ১৭ মোবাইল হ্যান্ডসেট কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে বৈধভাবে আমদানিকারকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। শুল্ক হারাচ্ছে সরকার।
অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধে ২০২১ সালের ১ জুলাই প্রথমবারের মতো এনইআইআর ব্যবস্থা চালু করে সরকার। সে সময় অনেক মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধনও করা হয়। কিন্তু এরপর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে আবারও এনইআইআর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ১৮ জানুয়ারি বিটিআরসি ঘোষণা দেয়, ‘অতি শিগগির অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে।’ কিন্তু তখনো তা কার্যকর হয়নি।
এনইআইআর চালু হলে অনলাইনে আর্থিক প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে বলে মনে করছে বিটিআরসি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ‘একটা সিম ফেলে দেওয়া যায়, কারণ সেটা কম দামি। কিন্তু ফোন ফেলে দেওয়া যায় না। এনইআইআর চালু হলে যেটা হবে, একটা মোবাইলের মধ্যে যে সিমটা আছে, সেটাও যদি বদল করে, একটা রিরেজিস্ট্রেশনের (পুনঃ পরিবর্তন) দরকার হবে। অর্থাৎ আমাদের একটা অটোমেটিক প্রসেস অব রিরেজিস্ট্রেশনের (স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় পুনর্নিবন্ধন) মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে এই ব্যবস্থা চালু করতে কাজ করছে। ২৯ অক্টোবর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে যাচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা জাতীয় পর্যায়ে এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছি। নভেম্বরের পর যেকোনো সময় এটা চালু হয়ে যাবে। এখানে একটা ডেটের আগে সব নাম্বার (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি-আইএমইআই) গ্রে থাকবে। এরপরের নম্বরগুলো ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট হবে।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে এনইআইআর চালু এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। বিটিআরসি এতে রাজি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এনইআইআর চালুর বিষয়ে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এসব আলোচনা হয়। বিটিআরসির সেই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ‘এমআইওবির কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে কম দামে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বিক্রয় এবং হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য এনইআইআর সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ এবং যথাসময়ে চালুর লক্ষ্যে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট/ট্যাক্সসহ স্বেচ্ছায় শর্তহীনভাবে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার ক্রয় এবং প্রযোজ্য খাতসমূহের ব্যয় নির্বাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে জানিয়েছে।’
প্রতিটি মোবাইল ফোনের জন্য ১৫ সংখ্যার একটি আলাদা আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর থাকে। এই সুনির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কে কোনো একটি সুনির্দিষ্ট মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব। বাংলাদেশে আইএমইআই নকল করে অবৈধ ফোন ব্যবহারের প্রবণতা অনেক। ২০২৪ সালের জুনে রবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা একটি আইএমইআই নম্বরের নিবন্ধন দিয়েই দেড় লাখের বেশি মোবাইল ফোনের খোঁজ পেয়েছে। অর্থাৎ এসব ফোনই নকল। এনইআইআর চালু হলে ডুপ্লিকেট আইএমইআই অর্থাৎ নকল ফোনের বেচাকেনা বন্ধ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেদার অবৈধ মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। এসব অবৈধ ফোন ব্যবহার করে অপরাধের প্রবণতা রয়েছে। এমআইওবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার ৩৫-৪০ শতাংশ। অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের কারণে দেশে ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ১৭ মোবাইল হ্যান্ডসেট কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে বৈধভাবে আমদানিকারকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। শুল্ক হারাচ্ছে সরকার।
অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধে ২০২১ সালের ১ জুলাই প্রথমবারের মতো এনইআইআর ব্যবস্থা চালু করে সরকার। সে সময় অনেক মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধনও করা হয়। কিন্তু এরপর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে আবারও এনইআইআর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ১৮ জানুয়ারি বিটিআরসি ঘোষণা দেয়, ‘অতি শিগগির অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে।’ কিন্তু তখনো তা কার্যকর হয়নি।
এনইআইআর চালু হলে অনলাইনে আর্থিক প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে বলে মনে করছে বিটিআরসি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ‘একটা সিম ফেলে দেওয়া যায়, কারণ সেটা কম দামি। কিন্তু ফোন ফেলে দেওয়া যায় না। এনইআইআর চালু হলে যেটা হবে, একটা মোবাইলের মধ্যে যে সিমটা আছে, সেটাও যদি বদল করে, একটা রিরেজিস্ট্রেশনের (পুনঃ পরিবর্তন) দরকার হবে। অর্থাৎ আমাদের একটা অটোমেটিক প্রসেস অব রিরেজিস্ট্রেশনের (স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় পুনর্নিবন্ধন) মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি–ইনস্টলড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিজয় কি-বোর্ডের প্যাকেজ কিট (এপিকে) ইনস্টল করা ছাড়া কোনো স্মার্টফোন বাজারজাত করার ছাড়পত্র দেবে না সংস্থাটি। গত ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন দপ্তরে এ নির্দেশনা গেলেও গতকাল সোমবার গণমা
১৭ জানুয়ারি ২০২৩
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ
২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২ দিন আগে