Ajker Patrika

প্রযুক্তির হাতে ছিনতাই প্রকৃতির পরিভাষা

জাহাঙ্গীর আলম
প্রযুক্তির হাতে ছিনতাই প্রকৃতির পরিভাষা

প্রকৃতির পরিভাষা দখল করে ফেলছে প্রযুক্তি। ওয়াল-ই সিনেমার সেই অন্য গ্যালাাক্সিতে এক মহাকাশযানে বাস করা শিশুসদৃশ মানুষগুলোর চুরি যাওয়া বাস্তবতার মতো। যারা বসবাস করেন এক অনন্ত ভার্চ্যুয়াল জগতের ভেতর। তাঁরা খান, পরেন, দেখেন, সমুদ্র সৈকতে রৌদ্রস্নান করেন; কিন্তু প্রকৃতি তাদের স্পর্শ করে না। এ কালে যেমন চিনিযুক্ত পানিতে কৃত্রিম রং, আর গন্ধ মিশিয়ে বাজারে বিক্রি হয় ফলের জুস। এমন এক মিথ্যার জগতে তাঁদের বাস।

ওয়াল-ই-তে মৃতপ্রায় পৃথিবী থেকে উপযুক্ত মানুষদের উদ্ধার করে এক্সিওম নামে এক মাদারশিপে পুনর্বাসন করে অতিকায় করপোরেট বাই-এন-লার্জ। এই আশ্রিত মানুষগুলোর দেহ-মন সর্বাংশে করপোরেটের দখলে। তেমনি দখল হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির ভাষা। প্রযুক্তি জায়ান্টদের বিপণন কৌশলের কাছে হার মেনে ছিন্নমূল হয়ে পড়ছে বহু শব্দ। কোম্পানির আশ্রয়ে নতুন ভৌতরূপের সঙ্গে সেঁটে যাচ্ছে প্রকৃতির প্রাণময় শব্দগুলো। প্রযুক্তির উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও বিপণন যেহেতু ইংরেজি ভাষাভাষী ইউরোপ ও আমেরিকায়, সে কারণে এই অর্থ বিপর্যয়টিও ঘটছে মূলত ইংরেজি শব্দে। আর ইংরেজি কসমোপলিটন ভাষা হয়ে ওঠায় এই আত্মঘাতী প্রবণতা জেঁকে বসছে বাংলা ভাষাভাষী তরুণ-কিশোর সমাজেও।

যেমন, কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার বা বন উজাড় করা নগরে পাখির কিচিরমিচিরের চেয়ে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার এখন অনেক বেশি পরিচিত এবং অর্থবোধক। দখলে ‍দূষণে ভরাট স্রোতস্বিনী আর নেই। ঘরে ঘরে এখন স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম ইত্যাদি। লাইভ স্ট্রিমের ব্যবসাও জমজমাট। আধমরা নদীতে স্রোত না থাকলেও ভার্চুয়াল জগতে টরেন্ট কিন্তু জনপ্রিয়। বিশেষ করে ফ্রি সফটওয়্যার বা পাইরেটেড সফটওয়্যার এবং সিনেমা পেতে এর বিকল্প নেই।

শত প্রজাতির ক্ষুদ্র পতঙ্গ এখন নাগরিকদের স্মৃতি থেকে প্রায় বিলুপ্ত। কিন্তু প্রযুক্তিতে বাগ-এর উপদ্রব বাড়ছেই। বিশেষ করে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত একটি শব্দ এটি। ঠিক একইভাবে ফাটল নয়, বরং ‘ক্র্যাক’ হচ্ছে ফ্রিতে মূল্যবান সফটওয়্যার পাওয়ার কৌশল।

জীবাণু ভাইরাসের সঙ্গে পরিচয় না থাকলেও কম্পিউটার ভাইরাস এখন ছেলে–বুড়ো সবাই পরিচিত। ঘরে মাকড়সার জাল বোনার সুযোগ নেই। কিন্তু ঘরে মাঠে ঘাটে সারা দুনিয়ার মানুষ এখন এক অনন্ত জালে আবদ্ধ। ট্রি বলতে এখন আর মূল, শিকড়, কান্ড, ডালপালা যুক্ত গাছ নয়, কম্পিউটারের ফাইল সিস্টেম দেখানোর একটি ব্যবস্থাকে বোঝায়।

‘সিডিং’ মানে বীজ ছড়ানো নয়। এটি পিয়ার টু পিয়ার শেয়ারিংয়ে ডাউনলোড করা ফাইল ফের আপলোড করা, যাতে আরেকজন সেটি ডাউনলোড করতে পারেন। শেয়ার করা কম্পিউটার তখন সিড বা বীজ। আর ‘লিচ’ মানে কিন্তু রক্তচোষক প্রাণি বা জোঁক নয়। ‘সিড’ থেকে যিনি ফাইল ডাউনলোড করেন তিনিই ‘লিচ’। আর এ প্রক্রিয়া হলো লিচিং। অবশ্য গ্রাহককে রক্ত না হলেও ডেটা–চোষক বলা যেতেই পারে!

‘ক্লাউড’ তো মেঘ নয়, দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ডেটা সেন্টার। চিপ বা চিপস কিন্তু মুড়মুড়ে আলু বা কলার পাঁপড় নয়। আবার পাতলা করে কাটা কাঠও নয়। এটি আসলে লাখ লাখ ট্রানজিস্টরের সমন্বয়ে তৈরি সিলিকনের পাতলা টুকরো। কম্পিউটিং থেকে কম্পিউটার। আদিতে হিসাব–নিকাশ বলতে কম্পিউটিং বোঝাত। গণনাকারী যন্ত্রই কম্পিউটার। কিন্তু আজ সেই কম্পিউটার কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি বলাই বাহুল্য।

‘অ্যাপল’ মান আপেল নয় আর। এটি এক লিজেন্ডারি প্রযুক্তি কোম্পানি। ‘উইন্ডো’ কিন্তু জানালা নয়, এটি প্রযুক্তি ও অন্তর্জালের জগতে প্রবেশের হাতিয়ার, জনপ্রিয়তম অপারেটিং সিস্টেম, উইন্ডোজ। ‘রুট’ আক্ষরিক অর্থে একটি সিস্টেমের মূলকেই বোঝায়। সেটি ডিরেক্টরি হায়ারার্কি হোক বা ইউজার প্রিভিলেজই হোক।

আপনি জানেন কি, সবুজের চেয়ে বেশি খোঁজা হয় গুগলের গ্রিন কালার কোড? ‍‘ফিশিং’ মানে মাছ ধরা নয়, আসলে অন্তর্জালে টোপ ফেলে শিকার ধরার কৌশল। এমন লোভনীয় ই-মেইলে ফেঁসে গিয়ে লাখ লাখ ডলার হারানোর ঘটনা প্রচুর।

প্রাণি কিংবা বীজের শরীরের শক্ত আবরণ (শেল), এখন কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের মূল কোডের বাইরের এক নিরাপত্তা বেষ্টনি। যেটি একই সঙ্গে ব্যবহারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। একইভাবে টার্মিনাল হলো ব্যবহারকারীর সাধারণ নির্দেশনা অপারেটিং সিস্টেমের কাছে বোধগম্য করে পৌঁছে দেওয়ার সফটওয়্যার। ‘রাইস’ কিন্তু চাল নয়। লিনাক্স ব্যবহারকারীদের কাছে অতি জনপ্রিয় একটি শব্দ এটি। মূলত গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের কাস্টমাইজেশন।

‘সিলিকন’ যে একটি মৌল, সেটি হয়তো বেশির ভাগ মানুষ জানেই না। কিন্তু এর মানে যে ডিভাইসে ব্যবহৃত বিভিন্ন চিপ—এটা সবাই বোঝেন। ‘ইকোসিস্টেম’ কিন্তু পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র বলে আর পরিচিত নয়। এটি একটি সিস্টেমের মধ্যে বাঁচা। যেমন: আমরা এখন গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেমে বন্দী। ‘স্পাইডার’ আসলে অন্তর্জালে ঘুরে বেড়ানো এক সফটওয়্যার রোবট। সার্ফ/সার্ফিং সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে বাচারি খেলা নয়, এটি অন্তর্জালে ঘুরে বেড়ানো। ‘মাউস’ কি ইঁদুর? নাকি কাজের টেবিলে হাতের নিচে চুপটি করে বসে থাকা কালো বস্তু। ‘ব্ল্যাকবেরি’ ফলের চেয়ে ব্র্যান্ডটির খ্যাতিই বেশি। আজকাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে (এসইও) অর্গানিক রিচ শব্দটি প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।

এ রকম আরও আছে—ব্রাউজিং, মাইনিং, আমাজন, কিউ, ইন্টেলিজেন্স, মর্ফ, মাইগ্রেট, সাবজেক্ট/ অবজার্ভার, ফার্মস, ল্যান্ডস্ক্যাপ, ফ্যাকেড, ক্লোন, প্যান্ডোরা, ওরাকল, সাফারি, ভিস্তা, অ্যাডোবি, থান্ডারবোল্ট ইত্যাদি। কোনোটি হার্ডওয়্যার, কোনোটি সফটওয়্যার; আবার কোনোটি বিখ্যাত কোম্পানি।

ব্র্যান্ডগুলোর প্রকৃতি থেকে নাম গ্রহণ করার পেছনে একটা অভিসন্ধী রয়েছে। যেমন, অ্যাপল, আমাজন ইত্যাদি। এদের সবার ক্ষেত্রে একটা বিষয় কমন সেটি হলো—তারা এমন নাম গ্রহণ করতে চায় বা তাদের পণ্যগুলোকে এমন বিষয় বা বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কিত করতে চায়, যা সর্বসাধারণের কাছে খুব পরিচিত এবং আপন মনে হবে। বিশ্ব ভোক্তাকুলের কাছে পৌঁছানোর একটি চমৎকার কৌশল এটি। এতে কোনো ধরনের ভাষান্তর বা তর্জমা ছাড়াই সব ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে একটা সহজ–সচ্ছন্দ্য যোগাযোগ তৈরি করা যায়।

অবশ্য একক অর্থবোধক শব্দগুলোর ব্যবহারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইংরেজিতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে লন, টুইগ, ব্ল্যাকবার্ড, ফিশিং, প্যাডল, স্যান্ড, পো ও শেলের মতো শব্দগুলোর ব্যবহার অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি বাম্বলবি শব্দটির ব্যবহার প্রায় উঠেই গেছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ট্রাস্ট সম্প্রতি দারুণ একটি গবেষণা করেছে। তারা বিশ শতকের নব্বইয়ের দশক এবং একুশ শতকের প্রথম দশকের কিছু আলাপ-আলোচনার শ্রুতলিখন তুলনা করে দেখেছেন। ৫০ লাখ শব্দবিশিষ্ট নব্বইয়ের দশকের আলোচনা বা খোশগল্প এবং ১ কোটি ২০ লাখ শব্দবিশিষ্ট একুশ শতকের প্রথম দশকের আলাপের মধ্যে এ তুলনা করা হয়।

এতে দেখা গেছে, মানুষের আলাপের মধ্যে পাখির গান বোঝাতে টুইটার শব্দটির ব্যবহার মাত্র ১ শতাংশে নেমে গেছে। একইভাবে বিশ শতকের নব্বইয়ের দশকে যেখানে ‘স্ট্রিম’ বলতে শতভাগ ক্ষেত্রেই বোঝানো হতো ছোট নদী বা স্রোতস্বিনী। আর এখন মাত্র ৩৬ শতাংশ ক্ষেত্রে এটি দিয়ে নদী বোঝানো হয়। বাকি ৬৪ শতাংশ ক্ষেত্রে ভিডিও বা মিউজিক স্ট্রিম বুঝায়। অপরদিকে ক্লাউডের মূল অর্থের ব্যবহার নেমেছে এক চতুর্থাংশে। ১০ বছর বয়স থেকেই শিশুদের মনে এই শব্দার্থ বিচ্যুতি ঘটছে। শিশুদের মধ্যে শব্দের এই প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ স্বাভাবিক অর্থ বিচ্যুতি নিয়ে বাবা-মা এবং দাদা-দাদিরাও উদ্বিগ্ন।

শব্দের মূল থেকে অর্থের এই বিচ্ছিন্নতাকে প্রকৃতি থেকেই বিচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ার সামিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, আমরা ক্রমেই প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগ হারাচ্ছি। শব্দের সঙ্গে প্রকৃতির উপাদানগুলোর যে অবয়ব, স্বাদ, গন্ধ, আবেগীয় অনুভূতি জড়িত, সেটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এখনকার প্রজন্ম। মানবপ্রজাতির সার্বিক মঙ্গলের জন্য এটি মোটেও ইতিবাচক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওপেনএআইয়ের ওয়েব ব্রাউজার আসতেই গুগলের শেয়ারে দরপতন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৪০
অ্যাটলাস নিয়ে ক্রোমের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ওপেনএআই ও গুগল। ছবি: জেমিনি এআই
অ্যাটলাস নিয়ে ক্রোমের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ওপেনএআই ও গুগল। ছবি: জেমিনি এআই

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ বাজারে আসার খবর প্রকাশ হতেই যেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের দুর্দিন শুরু হয়ে গেল।

অনলাইন সার্চে গুগলকে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।

গতকাল মঙ্গলবার দ্রুত প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠা ওয়েব ব্রাউজারের বাজারে চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাসকে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন ওপেনএআইর সিইও স্যাম অল্টম্যান। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই অ্যালফাবেটের শেয়ারের মূল্য ৩ শতাংশ কমে যায়।

অল্টম্যান জানান, চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ওয়েবসাইটটি গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই উইন্ডোজ ও মোবাইল ডিভাইসে এটির যাত্রা শুরু বলে আশা করছেন তিনি।

ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই খাতে বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই ওয়েব ব্রাউজার আনল প্রতিষ্ঠানটি। অল্টম্যান বলেন, ‘আরও অনেক কিছু যোগ করার আছে। সবেমাত্র শুরু।’

ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এর মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। তবে এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য থাকবে। এজেন্ট মোড ব্যবহারকারীর মাউস ও কীবোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম।

অল্টম্যান জানান, অ্যাটলাসের এজেন্ট মোড আপাতত শুধু প্লাস এবং প্রো ব্যবহারকারীদের জন্য সীমিত থাকবে।

তিনি বলেন, ‘এই এজেন্টটি আপনার জন্য কাজ করবে, আপনাকে আরও ভালোভাবে জানবে, প্রয়োজনীয় তথ্য আগেভাগেই সংগ্রহ করবে, ইন্টারনেটে আপনি যা চাইতে পারেন তা খুঁজে বের করবে এবং সেগুলো একত্রিত করবে, যা আমরা একটু দেখিয়েছি। আমরা মনে করি, এটিকে আমরা যথেষ্ট দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারব।’

মঙ্গলবার এই ঘোষণার আগে ওপেনএআই একাধিক চুক্তি এবং পণ্যের ঘোষণা দেয়। এনভিডিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ানো এবং এআই-জেনারেটেড কনটেন্টের জন্য টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ সোরা ২-এর লঞ্চ করে তারা।

ওয়েব ব্রাউজারগুলো ক্রমেই এআইর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে যাচ্ছে। গুগল ক্রোমসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে জেমিনি এআইকে একীভূত করার কাজ করছে। মাইক্রোসফটও এজ ব্রাউজারে এআই ফিচার যুক্ত করেছে।

এছাড়াও, পারপ্লেক্সিটির মতো অনেক এআই স্টার্টআপ এআই ব্রাউজারের অভিজ্ঞতা সরবরাহ করছে, যার মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি চালু হওয়া কমেট ব্রাউজার উল্লেখযোগ্য।

যদি কারও মনে দ্বিধা থাকে তাহলে ওপেনএআই আশা করছে, ব্যবহারকারীরা ক্রোম, সাফারি বা এজ ছেড়ে তাদের প্ল্যাটফর্মে আসবে। অ্যাটলাস স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে ডাউনলোড পেজে। তারা লিখেছে, ‘চ্যাটজিপিটিকে ডিফল্ট ব্রাউজার হিসেবে সেট করুন এবং ৭ দিনের জন্য বুস্টেড লিমিট পান।’

চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি। এই ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি ও শপিফাই এবং বুকিং পরিষেবা এক্সপিডিয়া ও বুকিং ডটকমের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যম হয়ে উঠছে এআই চ্যাটবট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের ঈশ্বরের অবতার হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবট। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
ভারতের ঈশ্বরের অবতার হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবট। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

বিশ্বজুড়ে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ধর্মীয় উপাসনা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) শরণাপন্ন হচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতে এই প্রবণতা ব্যাপক। আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুরোহিত বা গুরুদের বদলে রোবট বা চ্যাটবট যখন নতুন আধ্যাত্মিক মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠছে, তখন এর ফলাফল কী হতে পারে—এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।

সম্প্রতি ভারতে ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এআই চ্যাটবটের ব্যবহার নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ভারতের রাজস্থানের ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বিজয় মিল জীবনের কঠিন সময়ে বরাবর ভগবানের আশীর্বাদের দিকেই হাত বাড়ান। আগে তিনি আধ্যাত্মিক গুরুদের পরামর্শ নিতেন, তবে ইদানীং ভরসা রাখেন ‘গীতাজিপিটি’ নামের একটি এআই অ্যাপের ওপর!

এই এআই চ্যাটবটটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবদগীতার ৭০০টি শ্লোক ব্যবহার করে প্রশিক্ষিত। এটি ব্যবহার করলে বন্ধুর সঙ্গে টেক্সট মেসেজে আদান-প্রদানের মতোই মনে হয়। তবে এআই ব্যবহারকারীকে জানায়, ‘আপনি ভগবানের সঙ্গেই কথা বলছেন!’

বিজয় মিল জানান, ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষাগুলোতে সাফল্য না পেয়ে তিনি যখন হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তখন গীতাজিপিটি-তে সংকটের কথা লিখে পরামর্শ চান। উত্তরে চ্যাটবটটি বলে, ‘ফলের চিন্তা ত্যাগ করে তোমার কাজের ওপর মনোনিবেশ করো।’ বিজয় মিলের কথায়, এই উপদেশ তাঁকে নতুন করে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি আবার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তাঁর জন্য এখন গীতাজিপিটি বন্ধুর মতো, যার সঙ্গে তিনি সপ্তাহে একবার বা দুবার চ্যাট করেন।

ধর্ম ও প্রযুক্তির মিলনক্ষেত্র ভারত

এআই কাজ, শেখা এবং এমনকি আবেগীয় অনুভূতিকেও প্রভাবিত করছে। এখন তো এটি প্রার্থনা করার পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলোর অনুসারীরা চ্যাটবট নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তবে হিন্দু ধর্ম, যে ধর্মে দেবতা বা মূর্তির শারীরিক বা দৃশ্যমান উপস্থাপনার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে এই প্রযুক্তি ও ধর্মবিশ্বাসের মিলন গবেষণাগার দারুণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলেসলি কলেজের নৃবিজ্ঞানী হলি ওয়াল্টার্স বলেন, ‘মানুষ এখন সমাজ, অগ্রজ এবং উপাসনালয় থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে। অনেকের জন্য, এআই-এর সঙ্গে ঈশ্বরের বিষয়ে কথা বলা কেবল আধ্যাত্মিকতা নয়, বরং এক ধরনের অংশীদারত্ব বা আত্মিক সম্পর্ক খুঁজে পাওয়ার উপায়।’

ওয়াল্টার্সের মতে, ভারতে এই প্রবণতা বাড়ছে, কারণ সেখানকার প্রাচীন রীতিতে ‘মূর্তি’ (দেবতার পবিত্র প্রতিমা) এবং ‘দর্শন’ (ঈশ্বরের দর্শন লাভ)-এর মতো প্রথাগুলো প্রযুক্তিকে ঈশ্বরের দৈনন্দিন উপস্থিতির অন্য একটি মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।

তবে গত কয়েক বছরে ধর্মীয় ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে: মুসলিম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ‘কোরআনজিপিটি’ অ্যাপটি লঞ্চ হওয়ার একদিনের মধ্যেই বিপুল ট্র্যাফিকের কারণে ক্র্যাশ করেছিল। তবে টেক্সট উইথ জেসাস নামের অ্যাপটি যিশু ও বাইবেলের চরিত্রগুলোর সঙ্গে চ্যাটিং করার সুযোগ দিলেও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছিল।

হিন্দু ধর্মের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা বিভিন্ন ‘গীতাজিপিটি’ চ্যাটবট তৈরি করেছেন। রাজস্থানের ব্যবসায় বিভাগের ছাত্র বিকাশ সাহু নিজের তৈরি গীতাজিপিটি মাত্র কয়েক দিনে ১ লাখ ব্যবহারকারী পেয়েছে। তিনি বর্তমানে এমবিএ ছেড়ে এই প্রকল্পের জন্য তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করছেন।

এ ছাড়া, ভারতে আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এআই গ্রহণ করছে: জনপ্রিয় সদগুরু-এর ইশা ফাউন্ডেশন-এর ‘মিরাকল অব মাইন্ড’ মেডিটেশন অ্যাপ লঞ্চের মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ১০ লাখ ডাউনলোড অতিক্রম করেছে। তারা ‘প্রাচীন জ্ঞান’কে সমসাময়িক উপায়ে পৌঁছে দিতে এআই ব্যবহার করে।

২০২৫ সালের মহা কুম্ভ মেলাতেও এআই ব্যবহৃত হয়েছে। ‘Kumbh Sah’AI’yak’ নামক একটি বহুভাষী চ্যাটবট ভ্রমণ ও সেখানে থাকার বিষয়ে সহায়তা করেছিল। এ ছাড়া, ‘ডিজিটাল দর্শন’-এর মাধ্যমে ভক্তরা দূর থেকে প্রতীকীভাবে ত্রিবেণি সঙ্গমের পবিত্র জলে স্নান করতে পেরেছিলেন।

এমনকি, ভারতে উপাসনার জন্য রোবটও ব্যবহার করা হচ্ছে। কেরালার একটি মন্দিরে ‘ইরিঞ্জাডাপিলি রমন’ নামে একটি রোবটিক হাতি রয়েছে, যা আচার-অনুষ্ঠান করে এবং আশীর্বাদ দেয়। ওয়াল্টার্স বলেন, ‘এই রোবটিক দেবতারা কথা বলে এবং নড়াচড়া করে। এটা অদ্ভুত লাগলেও অনেকের কাছে এটাই ঈশ্বর।’

তবে অনেক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় এআই-এর কিছু ঝুঁকিও আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যান্য এআই-এর মতো ধর্মীয় চ্যাটবটগুলোও তথ্যের ‘হ্যালুসিনেশন’ (মিথ্যা বা ভুল তথ্য তৈরি) এবং ত্রুটি প্রদর্শন করে।

যেমন, একবার গীতাজিপিটি (কৃষ্ণের কণ্ঠে) দাবি করেছিল, ‘ধর্ম রক্ষার জন্য হত্যা ন্যায়সংগত।’ এই ধরনের মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার জন্ম দেওয়ায় বিকাশ সাহুকে দ্রুত এআইটির কিছু সমন্বয় করে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়েছিল।

এ ছাড়া, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতাত্ত্বিক নৈতিকতা গবেষক রেভারেন্ড লিন্ডন ড্রেক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, চ্যাটবটগুলো প্রায়শই নিরপেক্ষতার আড়ালে তাদের নির্মাতাদের পক্ষপাতকে প্রতিফলিত করে। ভারতে যেখানে প্রযুক্তির সাক্ষরতা কম, সেখানে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। ওয়াল্টার্স সতর্ক করে বলেন, ‘বিপদ এটাই—যখন এই সরঞ্জামগুলোকে ঐশ্বরিক কণ্ঠস্বর হিসেবে মনে করা হয়, তখন তাদের কথার গুরুত্ব প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়।’

তবে বিজয় মিলের মতো ব্যবহারকারীরা মনে করেন, এই বটগুলো মন্দিরে পুরোহিতের সঙ্গে গভীর কথোপকথন করার যে অভাব, তা পূরণ করে এবং শাস্ত্র-ভিত্তিক নির্দেশনা হাতের নাগালে এনে দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্রোমকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ওয়েব ব্রাউজার আনল ওপেনএআই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৪৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার বাজারে এনেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ওয়েব ব্রাউজার। নাম দিয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রোমসহ অন্য প্রতিযোগীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কোম্পানির সিইও স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, এই নতুন ব্রাউজারটি সম্পূর্ণরূপে চ্যাটজিপিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অ্যাপলের ম্যাকওএস অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহারকারীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি প্রচলিত ওয়েব ব্রাউজারগুলোর অ্যাড্রেস বার এতে নেই।

ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারী এবং এআই-এ বিপুল বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে নতুন উপায়ে আয় বাড়াতে চাচ্ছে ওপেনএআই। সেই লক্ষ্যেই এই ব্রাউজার আনল তারা।

ওপেনএআই জানিয়েছে, অ্যাটলাসে একটি পেইড ‘এজেন্ট মোড’ থাকবে। এই ফিচারের মাধ্যমে চ্যাটবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ বা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। এই এজেন্ট মোড শুধু পেইড চ্যাটজিপিটি সাবস্ক্রাইবারদের জন্য। এই ফিচার ব্রাউজিংয়ের প্রেক্ষাপট বুঝে ব্রাউজারকে আরও দ্রুত ও উপযোগী করে তুলবে।

ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে ওপেনএআই বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ই-কমার্স সাইট ইটসি (Etsy) ও শপিফাই (Shopify) এবং বুকিং পরিষেবা ইপিডিয়া (Expedia) ও বুকিং ডটকম (Booking. com)-এর সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে। সাম্প্রতিক ডেভডে ইভেন্টে অল্টম্যান ঘোষণা করেন, চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৮০ কোটি।

অনেক বিশেষজ্ঞ এই নতুন ব্রাউজারটি নিয়ে উৎসাহিত, তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন অনেকে। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির সিইও এবং প্রধান বিশ্লেষক প্যাট মুরহেড মনে করেন, অ্যাটলাস হয়তো মূল ধারার ব্যবহারকারী, করপোরেট বা নতুনদের জন্য গুগল ক্রোম বা মাইক্রোসফট এজ-এর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে না। কারণ, জনপ্রিয় ব্রাউজারগুলোও দ্রুত এই ধরনের সক্ষমতা নিয়ে আসবে। তিনি উল্লেখ করেন, মাইক্রোসফট এজ ইতিমধ্যে একই ধরনের অনেক ফিচার বিনা মূল্যে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, গুগলকে অনলাইন সার্চে বেআইনি একচেটিয়া আধিপত্যকারী ঘোষণার এক বছর পর ওপেনএআই এই ব্রাউজার নিয়ে এল।

বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও পরামর্শের জন্য চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ডেটোস নামের এক গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাস পর্যন্ত ডেস্কটপ ব্রাউজারে প্রায় ৬ শতাংশ অনুসন্ধান এলএলএমের মাধ্যমে করা হয়েছে, যা এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। গুগলও এআই-এ বিপুল বিনিয়োগ করছে। গত বছর থেকে তারা সার্চ রেজাল্টে এআই-জেনারেটেড উত্তরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবৈধ মোবাইল বন্ধে চলতি বছরই এনইআইআর চালু

অর্চি হক, ঢাকা
ছবি: এআই
ছবি: এআই

দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে নতুন করে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মিলিতভাবে এই ব্যবস্থা চালু করতে কাজ করছে। ২৯ অক্টোবর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে যাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা জাতীয় পর্যায়ে এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছি। নভেম্বরের পর যেকোনো সময় এটা চালু হয়ে যাবে। এখানে একটা ডেটের আগে সব নাম্বার (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি-আইএমইআই) গ্রে থাকবে। এরপরের নম্বরগুলো ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট হবে।’

দ্রুত সময়ের মধ্যে এনইআইআর চালু এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। বিটিআরসি এতে রাজি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এনইআইআর চালুর বিষয়ে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এসব আলোচনা হয়। বিটিআরসির সেই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ‘এমআইওবির কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে কম দামে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বিক্রয় এবং হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য এনইআইআর সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ এবং যথাসময়ে চালুর লক্ষ্যে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট/ট্যাক্সসহ স্বেচ্ছায় শর্তহীনভাবে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার ক্রয় এবং প্রযোজ্য খাতসমূহের ব্যয় নির্বাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে জানিয়েছে।’

প্রতিটি মোবাইল ফোনের জন্য ১৫ সংখ্যার একটি আলাদা আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর থাকে। এই সুনির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কে কোনো একটি সুনির্দিষ্ট মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব। বাংলাদেশে আইএমইআই নকল করে অবৈধ ফোন ব্যবহারের প্রবণতা অনেক। ২০২৪ সালের জুনে রবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা একটি আইএমইআই নম্বরের নিবন্ধন দিয়েই দেড় লাখের বেশি মোবাইল ফোনের খোঁজ পেয়েছে। অর্থাৎ এসব ফোনই নকল। এনইআইআর চালু হলে ডুপ্লিকেট আইএমইআই অর্থাৎ নকল ফোনের বেচাকেনা বন্ধ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেদার অবৈধ মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। এসব অবৈধ ফোন ব্যবহার করে অপরাধের প্রবণতা রয়েছে। এমআইওবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার ৩৫-৪০ শতাংশ। অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের কারণে দেশে ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ১৭ মোবাইল হ্যান্ডসেট কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে বৈধভাবে আমদানিকারকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। শুল্ক হারাচ্ছে সরকার।

অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধে ২০২১ সালের ১ জুলাই প্রথমবারের মতো এনইআইআর ব্যবস্থা চালু করে সরকার। সে সময় অনেক মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধনও করা হয়। কিন্তু এরপর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে আবারও এনইআইআর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ১৮ জানুয়ারি বিটিআরসি ঘোষণা দেয়, ‘অতি শিগগির অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে।’ কিন্তু তখনো তা কার্যকর হয়নি।

এনইআইআর চালু হলে অনলাইনে আর্থিক প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে বলে মনে করছে বিটিআরসি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ‘একটা সিম ফেলে দেওয়া যায়, কারণ সেটা কম দামি। কিন্তু ফোন ফেলে দেওয়া যায় না। এনইআইআর চালু হলে যেটা হবে, একটা মোবাইলের মধ্যে যে সিমটা আছে, সেটাও যদি বদল করে, একটা রিরেজিস্ট্রেশনের (পুনঃ পরিবর্তন) দরকার হবে। অর্থাৎ আমাদের একটা অটোমেটিক প্রসেস অব রিরেজিস্ট্রেশনের (স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় পুনর্নিবন্ধন) মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত