Ajker Patrika

যুক্তরাজ্যে বিবিসিসহ ৩ চ্যানেল চালু করছে টিভি অ্যাপ 

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

বিবিসিসহ তিনটি সম্প্রচার মাধ্যম আগামী বছর থেকে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট-ভিত্তিক স্মার্ট টিভি প্ল্যাটফর্ম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এটি স্যাটেলাইট ও অ্যান্টেনার মাধ্যমে চলা সম্প্রচার মাধ্যমের মৃত্যুর জন্য বড় এক ধাপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৪ সাল থেকে বিবিসি, আইটিভি, চ্যানেল-৪ এবং চ্যানেল-৫ এর প্রোগ্রামগুলো একটি অনলাইন সাইটে (অ্যাপ্লিকেশন) দেখা যাবে। ফ্রিলি নামের এই প্ল্যাটফর্মটি দর্শকেরা স্মার্ট টিভি থেকেও দেখতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

সম্প্রচারকারীদের অনলাইনভিত্তিক ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হতে চলেছে এটি। এতে অ্যান্টেনাভিত্তিক টিভি দেখা লক্ষ লক্ষ পরিবার বিপাকে পড়বেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এর আগে বলেছিলেন, বিবিসি এই দশকের শেষ নাগাদ টিভি টাওয়ার থেকে সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে পারে।

ফ্রিলির ঘোষণার পর ডেভি বলেছেন, ‘সর্বজনীন টেলিভিশন সেবা নিশ্চিত ও একে টিকিয়ে রাখা যুক্তরাজ্যর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দর্শকদের জন্য অনুষ্ঠান সহজপ্রাপ্য করতে পেরে আমরা আনন্দিত। কেননা ডিজিটাল যুগে সব দর্শকদের অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ দিতে পারছি।’  

পাবলিক সার্ভিস ব্রডকাস্টার এবং ফ্রি-টু-এয়ার চ্যানেলগুলোর সমন্বয়ে চলা ফ্রিলি প্লাটফর্মটি পরিচালনা করবে ‘এভরিওয়ান টিভি’। এর মালিক চারটি সম্প্রচারকারী। 

দর্শকেরা একটি প্রোগ্রাম গাইড ব্যবহার করে চ্যানেলগুলো চালাতে পারবেন। এ ছাড়া নতুন নতুন নিয়মে দর্শকেরা সরাসরি লাইভ টিভি থেকে শো খুঁজে বের করতে পারবেন। 

আইটিভির প্রধান নির্বাহী ডেম ক্যারোলিন ম্যাককল বলেছেন, ‘যেহেতু যুক্তরাজ্যের অসংখ্য পরিবার ইন্টারনেট-ভিত্তিক টিভি ব্যবহার করে, তাই সহজে অনুষ্ঠান খুঁজে পাওয়ার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। নতুন এই উদ্যোগ যুক্তরাজ্যের জনসাধারণকে তাদের প্রিয় ব্রিটিশ টিভি চ্যানেলগুলো বিনা মূল্যে দেখার সুযোগ করে দেবে। ডিজিটাল টিভির সূচনালগ্নে ঠিক যেমনটি ফ্রিভিউ করেছিল।

চ্যানেল-৪ এর প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স মাহন বলেছেন, প্ল্যাটফর্মটি টিভি শো গুলো সহজ খুঁজে পেতে সাহাজ্য করবে। পাশাপাশি যুক্ত্যরাজ্যের নতুন মিডিয়া বিলের খসড়া অনুমোদনে সহযোগিতা করবে। ডিজিটাল বিশ্বের জন্য পাবলিক সার্ভিস ব্রডকাস্টিং (পিবিএসবি) পরিষেবাগুলো হালনাগাদের উদ্দেশ্যে এ আইন পাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।   

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রোতাদের জন্য, বিশেষ করে তরুণ দর্শকদের জন্য স্ট্রিমিং টিভি বেশি জনপ্রিয়। ফলে পিএসবির অনুষ্ঠান বিনা মূল্যে করা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। 

নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকম অনুসারে, নির্দিষ্ট সময়ে কোনো অনুষ্ঠান স্যাটেলাইট টিভির সামনে বসে দেখার প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে এবং ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে এই হার ৬৮ শতাংশ।

এই বছরের শুরুর দিকে, সরকার আইনের রূপরেখা দিয়েছে, যার লক্ষ্য হলো পাবলিক ব্রডকাস্টারদের নেটফ্লিক্স ও ডিজনির মতো স্ট্রিমিং জায়ান্টদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার সুযোগ দেওয়া। 

এদিকে নেটফ্লিক্স সতর্ক করে বলেছে, অফকমের নিয়ম-নীতি তাঁদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করলে যুক্তরাজ্যে তাঁদের সেবা বন্ধ করে দেবে। অন্যান্য নিরপেক্ষ নিয়ম প্রয়োগের বেলাতেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যা ইতিমধ্যে দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে প্রযোজ্য।

এটি তার ইউকে ক্যাটালগ থেকে ফিল্ম এবং টিভি সিরিজগুলি সরিয়ে ফেলতে পারে কারণ অফকম দ্বারা নিয়ন্ত্রণের বিষয়বস্তু স্ট্রিমিং করার পরিকল্পনার পাশাপাশি 

স্যাটেলাইট-ভিত্তিক টেলিভিশন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে নানা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে যাদের ইন্টারনেট সংযোগ নেই এবং বয়স্ক দর্শকদের ক্ষেত্রে। 

ডেভি গত বছর স্বীকার করেছিলেন, ২০৩০ সাল নাগাদও যুক্তরাজ্যের ২০ লাখ বাড়ি ইন্টারনেট সংযোগের বাইরে থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত