অনলাইন ডেস্ক
রোবটিক প্রযুক্তিতে স্পর্শ অনুভবের ঘাটতি বরাবরই একটি বড় সীমাবদ্ধতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। এবার সেই সীমা অতিক্রমের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এনেছেন বিজ্ঞানীরা—তাঁরা রোবটের জন্য তৈরি করেছেন এমন একটি কৃত্রিম ত্বক, যা মানুষের মতো একাধিক স্পর্শ ও অনুভূতি শনাক্ত করতে সক্ষম।
মানবসদৃশ রোবট তৈরিতে বস্টন ডায়নামিকসের মতো কোম্পানিগুলো অনেক দূর এগোলেও তারা এখনো অনুভব করার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। এত দিন রোবটের অনুভূতির জন্য চাপ, তাপ বা ঠান্ডা শনাক্তকারী আলাদা আলাদা সেন্সর ব্যবহৃত হতো। তবে এসব সেন্সর সাধারণত একবারে একটি মাত্র অনুভূতি শনাক্ত করতে পারে এবং সঠিকভাবে কাজ না করার ঝুঁকি থাকে।
তবে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একদল বিজ্ঞানীর তৈরি এই কৃত্রিম ত্বক এ সমস্যার সমাধান এনে দিয়েছে। একটি হাইড্রোজেল নামক পদার্থ দিয়ে তৈরি এই ত্বক একসঙ্গে একাধিক অনুভূতি, যেমন—স্পর্শ, চাপ, গরম ও ঠান্ডা শনাক্ত করতে পারে। গবেষকেরা এই হাইড্রোজেলকে মানুষের হাতের মতো আকৃতি দিয়ে একটি রোবটের হাতে মুড়ে দেন। এর ফলে রোবটটি পরিবেশ সম্পর্কে আরও সূক্ষ্মভাবে সচেতন হতে পারে এবং বিভিন্ন রকম সংস্পর্শে আরও নিখুঁতভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
এই প্রযুক্তি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তবে বিজ্ঞানীদের আশা—এটি ভবিষ্যতে কারখানা, বিপজ্জনক কর্মক্ষেত্র বা দুর্যোগ-উদ্ধার অভিযানে রোবটের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি সায়েন্স রোবোটিকস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
রোবটের জন্য কৃত্রিম ত্বক নতুন ধারণা নয়। ২০১৬ সাল থেকেই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রোবটের আঙুল বা হাতে ছোট ছোট সেন্সর বসিয়ে স্পর্শ বা গঠন শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাপ ও চাপ শনাক্ত করতে হলে আলাদা আলাদা সেন্সরের প্রয়োজন হতো, যা পরস্পরের সঙ্গে ‘ক্রস টক’ বা তথ্যের সংঘাতে ভুল ফলাফল দিত। এতে শুধু জটিলতা বাড়ত না, সেন্সর নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও থাকত। এ ছাড়া, ছোট অংশে একাধিক সেন্সর বসালে ডিজাইন আরও জটিল হয়ে উঠত।
এই জটিলতা দূর করতে বিজ্ঞানীরা এমন একটি একক পদার্থ তৈরি করতে চেয়েছেন, যা একাধিক শারীরিক উদ্দীপনা শনাক্ত করতে পারে। এর ফলাফল—একধরনের নমনীয়, প্রসারণযোগ্য এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী হাইড্রোজেল, যা পানি শোষণ করতে পারে এবং গঠনতন্ত্র অটুট রাখে। এই ত্বকের ভেতর তৈরি করা হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার পৃথক পথ, যেগুলো বিভিন্ন ধরনের সংস্পর্শ শনাক্ত করতে পারে ও ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে কম্পিউটারে পাঠাতে পারে।
পরীক্ষার অংশ হিসেবে এই ত্বককে গলিয়ে নতুন করে গঠন দেওয়া হয়। একে মানুষের হাতের মতো করে রোবটের হাতে পরানো হলে দেখা যায়, এটি এখনো সঠিকভাবে কাজ করছে। হালকা ছোঁয়া কিংবা চাপ—সব অনুভূতি বুঝে রোবট সাড়া দিতে পারে। এক পরীক্ষায় ত্বককে গরম বাতাসে আংশিক গলিয়ে, পরে ছুরি দিয়ে কেটে ফেলা হয়। এরপরও ত্বক একই দক্ষতায় কাজ করেছে—এটা দেখিয়ে দেয়, একবার ব্যবহার করার পরও এ ত্বক পুনরায় ব্যবহারযোগ্য।
গবেষক টমাস জর্জ থুরুথেল বলেন, প্রযুক্তিটি এখনো মানুষের ত্বকের সমকক্ষ নয়, তবে এখন পর্যন্ত অন্যান্য কৃত্রিম ত্বকের তুলনায় সবচেয়ে উন্নত। আগের প্রযুক্তির তুলনায় এটি অনেক সহজে তৈরি করা যায় এবং বিভিন্ন কাজে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে।
তবে সীমাবদ্ধতাও আছে। এখনো মানুষের মতো অতটা সংবেদনশীল নয় এই কৃত্রিম ত্বক। এটি পুরোনো প্রযুক্তিকে ছাড়িয়ে গেলেও সব ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী হতে কিছুটা সময় লাগবে। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা ক্যালিব্রেশন বা মান নির্ধারণের প্রয়োজন হতে পারে।
এ ছাড়া, দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তব পরিস্থিতিতে এ ত্বকের টেকসই হওয়া নিয়েও গবেষণা চলছে। তবুও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি কার্যকর সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। রোবটের শরীরের বিভিন্ন অংশে এই ত্বক বসানো গেলে তা স্পর্শ শনাক্ত করতে পারবে। বিশেষ করে এমন রোবট, যারা মানুষের সঙ্গে কাজ করে, তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন বুঝতে পারে কিছু গরম না ঠান্ডা, ভঙ্গুর না শক্ত—এই বোঝাপড়া তৈরি হলে মানুষের সঙ্গে রোবটের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
তথ্যসূত্র: মেডিকেল ডিভাইস নেটওয়ার্ক
রোবটিক প্রযুক্তিতে স্পর্শ অনুভবের ঘাটতি বরাবরই একটি বড় সীমাবদ্ধতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। এবার সেই সীমা অতিক্রমের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এনেছেন বিজ্ঞানীরা—তাঁরা রোবটের জন্য তৈরি করেছেন এমন একটি কৃত্রিম ত্বক, যা মানুষের মতো একাধিক স্পর্শ ও অনুভূতি শনাক্ত করতে সক্ষম।
মানবসদৃশ রোবট তৈরিতে বস্টন ডায়নামিকসের মতো কোম্পানিগুলো অনেক দূর এগোলেও তারা এখনো অনুভব করার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। এত দিন রোবটের অনুভূতির জন্য চাপ, তাপ বা ঠান্ডা শনাক্তকারী আলাদা আলাদা সেন্সর ব্যবহৃত হতো। তবে এসব সেন্সর সাধারণত একবারে একটি মাত্র অনুভূতি শনাক্ত করতে পারে এবং সঠিকভাবে কাজ না করার ঝুঁকি থাকে।
তবে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একদল বিজ্ঞানীর তৈরি এই কৃত্রিম ত্বক এ সমস্যার সমাধান এনে দিয়েছে। একটি হাইড্রোজেল নামক পদার্থ দিয়ে তৈরি এই ত্বক একসঙ্গে একাধিক অনুভূতি, যেমন—স্পর্শ, চাপ, গরম ও ঠান্ডা শনাক্ত করতে পারে। গবেষকেরা এই হাইড্রোজেলকে মানুষের হাতের মতো আকৃতি দিয়ে একটি রোবটের হাতে মুড়ে দেন। এর ফলে রোবটটি পরিবেশ সম্পর্কে আরও সূক্ষ্মভাবে সচেতন হতে পারে এবং বিভিন্ন রকম সংস্পর্শে আরও নিখুঁতভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
এই প্রযুক্তি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তবে বিজ্ঞানীদের আশা—এটি ভবিষ্যতে কারখানা, বিপজ্জনক কর্মক্ষেত্র বা দুর্যোগ-উদ্ধার অভিযানে রোবটের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি সায়েন্স রোবোটিকস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
রোবটের জন্য কৃত্রিম ত্বক নতুন ধারণা নয়। ২০১৬ সাল থেকেই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রোবটের আঙুল বা হাতে ছোট ছোট সেন্সর বসিয়ে স্পর্শ বা গঠন শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাপ ও চাপ শনাক্ত করতে হলে আলাদা আলাদা সেন্সরের প্রয়োজন হতো, যা পরস্পরের সঙ্গে ‘ক্রস টক’ বা তথ্যের সংঘাতে ভুল ফলাফল দিত। এতে শুধু জটিলতা বাড়ত না, সেন্সর নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও থাকত। এ ছাড়া, ছোট অংশে একাধিক সেন্সর বসালে ডিজাইন আরও জটিল হয়ে উঠত।
এই জটিলতা দূর করতে বিজ্ঞানীরা এমন একটি একক পদার্থ তৈরি করতে চেয়েছেন, যা একাধিক শারীরিক উদ্দীপনা শনাক্ত করতে পারে। এর ফলাফল—একধরনের নমনীয়, প্রসারণযোগ্য এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী হাইড্রোজেল, যা পানি শোষণ করতে পারে এবং গঠনতন্ত্র অটুট রাখে। এই ত্বকের ভেতর তৈরি করা হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার পৃথক পথ, যেগুলো বিভিন্ন ধরনের সংস্পর্শ শনাক্ত করতে পারে ও ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে কম্পিউটারে পাঠাতে পারে।
পরীক্ষার অংশ হিসেবে এই ত্বককে গলিয়ে নতুন করে গঠন দেওয়া হয়। একে মানুষের হাতের মতো করে রোবটের হাতে পরানো হলে দেখা যায়, এটি এখনো সঠিকভাবে কাজ করছে। হালকা ছোঁয়া কিংবা চাপ—সব অনুভূতি বুঝে রোবট সাড়া দিতে পারে। এক পরীক্ষায় ত্বককে গরম বাতাসে আংশিক গলিয়ে, পরে ছুরি দিয়ে কেটে ফেলা হয়। এরপরও ত্বক একই দক্ষতায় কাজ করেছে—এটা দেখিয়ে দেয়, একবার ব্যবহার করার পরও এ ত্বক পুনরায় ব্যবহারযোগ্য।
গবেষক টমাস জর্জ থুরুথেল বলেন, প্রযুক্তিটি এখনো মানুষের ত্বকের সমকক্ষ নয়, তবে এখন পর্যন্ত অন্যান্য কৃত্রিম ত্বকের তুলনায় সবচেয়ে উন্নত। আগের প্রযুক্তির তুলনায় এটি অনেক সহজে তৈরি করা যায় এবং বিভিন্ন কাজে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে।
তবে সীমাবদ্ধতাও আছে। এখনো মানুষের মতো অতটা সংবেদনশীল নয় এই কৃত্রিম ত্বক। এটি পুরোনো প্রযুক্তিকে ছাড়িয়ে গেলেও সব ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী হতে কিছুটা সময় লাগবে। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা ক্যালিব্রেশন বা মান নির্ধারণের প্রয়োজন হতে পারে।
এ ছাড়া, দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তব পরিস্থিতিতে এ ত্বকের টেকসই হওয়া নিয়েও গবেষণা চলছে। তবুও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি কার্যকর সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। রোবটের শরীরের বিভিন্ন অংশে এই ত্বক বসানো গেলে তা স্পর্শ শনাক্ত করতে পারবে। বিশেষ করে এমন রোবট, যারা মানুষের সঙ্গে কাজ করে, তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন বুঝতে পারে কিছু গরম না ঠান্ডা, ভঙ্গুর না শক্ত—এই বোঝাপড়া তৈরি হলে মানুষের সঙ্গে রোবটের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
তথ্যসূত্র: মেডিকেল ডিভাইস নেটওয়ার্ক
কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্ট আমাদের দৈনন্দিন কাজকে যেমন সহজ করেছে, তেমনি নিয়ে এসেছে বড় ধরনের সাইবার হুমকি। কিবোর্ড, মাউস, স্টোরেজ ডিভাইসসহ নানা এক্সেসরিজ যুক্ত করার সুবিধা থাকলেও, এই পোর্ট দিয়েই একটি ক্ষতিকর ইউএসবি ডিভাইস আপনার সিস্টেমে ঢুকিয়ে দিতে পারে মারাত্মক ম্যালওয়্যার।
২ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চিপের দুনিয়ায় এনভিডিয়ার আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে নতুন সার্ভার ‘হেলিওস’ আনছে অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি)। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসেতে অনুষ্ঠিত ‘অ্যাডভান্সিং এআই’ সম্মেলনে এএমডির প্রধান নির্বাহী লিসা সু এ ঘোষণা দেন।
২ ঘণ্টা আগেএক দশক আগের গুগল গ্লাস ব্যর্থ হলেও, প্রযুক্তি জগতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও স্মার্ট চশমার দিকে ঝুঁকছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন অনেক পরিণত—এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গুগল, মেটা, স্ন্যাপসহ বড় কোম্পানিগুলো নতুন প্রজন্মের স্মার্ট গ্লাস তৈরি করছে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজের ভাবনা, অনুভূতি বা লাইভ মুহূর্তগুলো অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলো ইনস্টাগ্রাম। তবে প্রতিটি স্টোরি বা লাইভ ভিডিও সবার চোখে পড়ুক তা আমরা সব সময় চাই না। কখনো কখনো আমরা চাই, নির্দিষ্ট কিছু মানুষ যেন আমাদের স্টোরি বা লাইভ দেখতে না পায়—সেটা হতে পারে কোনো আত্মীয়...
৬ ঘণ্টা আগে