Ajker Patrika

স্ন্যাপচ্যাট এখন মাদক-বাণিজ্যের আখড়া, ডেনিশ গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্ন্যাপচ্যাটে বিপুলসংখ্যক মাদকসংক্রান্ত প্রোফাইল প্রকাশ্যে রয়েছে। ছবি: বিবম
স্ন্যাপচ্যাটে বিপুলসংখ্যক মাদকসংক্রান্ত প্রোফাইল প্রকাশ্যে রয়েছে। ছবি: বিবম

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটে শিশু-কিশোরদের সামনে অবাধে মাদক কারবার চলছে বলে দাবি করেছে ডেনমার্কের একটি গবেষণা সংস্থা। তারা বলছে, স্ন্যাপচ্যাট প্ল্যাটফর্মে ‘অত্যধিকসংখ্যক’ মাদক কারবারের কার্যক্রম চলছে, যার ফলে শিশু-কিশোরদের জন্য কোকেন, ওপিওয়েডস ও এমডিএমএর মতো মাদক কেনা সহজ হয়ে পড়েছে।

এ গবেষণা পরিচালনা করেছে ডেনমার্কভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ডিজিটাল্ট অ্যানসভার (Digitalt Ansvar)। এটি দায়িত্বশীল ডিজিটাল উন্নয়নকে উৎসাহিত করে। তারা জানিয়েছে, স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারকারীদের নামে মাদকসংশ্লিষ্ট ভাষা প্রকাশ পেলেও সেগুলোতে কার্যকর কোনো নজরদারি করছে না প্রতিষ্ঠানটি।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের প্রোফাইল ব্যবহার করে অনুসন্ধান চালান গবেষকেরা। এতে দেখা যায়, ‘কোক’ (coke), ‘উইড’ (weed) ও ‘মলি’ (molly)-এর মতো শব্দ থাকা ইউজারনেমধারী অসংখ্য প্রোফাইল স্ন্যাপচ্যাটে মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত। ৪০টি এমন প্রোফাইল রিপোর্ট করার পর স্ন্যাপচ্যাট মাত্র ১০টি প্রোফাইল সরিয়ে নেয়, অন্য ৩০টি রিপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

তবে স্ন্যাপচ্যাট পরে দাবি করেছে, তারা আগে থেকেই রিপোর্ট করা অ্যাকাউন্টগুলোর ৭৫ শতাংশ নিষ্ক্রিয় করেছিল এবং এখন সবগুলোই সরানো হয়েছে।

গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, আগের সমালোচনা সত্ত্বেও স্ন্যাপচ্যাটের সুপারিশ (রেকমেন্ডেশন) ব্যবস্থা এমন প্রোফাইলকেই আরও ছড়িয়ে দিচ্ছে—যার মাধ্যমে মাদক কারবারিদের প্রোফাইল শিশুদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। এমনকি যেসব শিশু-কিশোরের প্রোফাইল আগে কখনো মাদক কারবার প্রোফাইলের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি বা কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখেনি, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এ সুপারিশ আসছে।

গবেষকেরা জানান, তাঁদের ১৩ বছর বয়সী পরীক্ষামূলক প্রোফাইলগুলোতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৭০টির মতো সন্দেহভাজন মাদক কারবারির প্রোফাইল সুপারিশ করা হয়েছে—শুধু এক বন্ধুর মাধ্যমে মাদক কারবারের প্রোফাইলের সংযোগ থাকলেই।

ডিজিটাল্ট অ্যানসভারের প্রধান নির্বাহী আস্ক হেসবি হোল্ম বলেন, একজন শিশু বা কিশোরকে এসব প্রোফাইল নিজেদের খুঁজে বের করতে হচ্ছে না, স্ন্যাপচ্যাটই সরাসরি তাদের এমন প্রোফাইল দেখাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

আস্ক হেসবি হোল্ম বলেন, ‘স্ন্যাপচ্যাট দাবি করে তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে মাদক কারবারিদের প্রোফাইল শনাক্ত করে সরিয়ে ফেলে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। স্ন্যাপচ্যাটে বিপুলসংখ্যক মাদকসংক্রান্ত প্রোফাইল প্রকাশ্যে রয়েছে এবং এসব প্রোফাইলের ইউজারনেমে সুস্পষ্ট বা অস্পষ্টভাবে মাদকসংশ্লিষ্ট শব্দ থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না।’

আস্ক হেসবি আরও বলেন, প্রযুক্তির ঘাটতি নয়, বরং এ সমস্যার মূলে রয়েছে ইচ্ছার অভাব। চাইলে খুব সহজেই এসব ইউজারনেম ফিল্টার করা সম্ভব।

স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিক্রিয়া ও অবস্থান

স্ন্যাপচ্যাটের দাবি, ২০২৩ সালে তারা নর্ডিক দেশগুলোতে ১৩ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ৯০ শতাংশের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। এমন অবস্থায় শিশুদের সুরক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল পরিষেবাসংক্রান্ত নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ডিজিটাল্ট অ্যানসভারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্ন্যাপচ্যাটের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে মাদক কারবারের কোনো স্থান নেই। এ গবেষণায় যে অ্যাকাউন্টগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই আমাদের দল আগে থেকে নিষ্ক্রিয় করেছিল এবং এখন সবগুলোই সরানো হয়েছে।’

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘‘আমরা মাদক কারবারিদের ঠেকাতে ব্যাপকভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছি এবং আমাদের কমিউনিটিকে মাদকের বিপদের ব্যাপারে সচেতন করছি। গত এক বছরে ইউরোপজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিলে আমরা নতুন সার্চ শব্দ ও ইমোজির তালিকা হালনাগাদ করেছি, যাতে অপরাধীদের শনাক্ত করা আরও সহজ হয় এবং তাদের জন্য স্ন্যাপচ্যাট একটি ‘‘শত্রুতাপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থাকে’’।’

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...