Ajker Patrika

আলকারাসকে হারিয়ে জোকোভিচের ‘গোল্ডেন স্লাম’

ক্রীড়া ডেস্ক
Thumbnail image

জয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই রোলাঁ গারোর মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন নোভাক জোকোভিচ। এরপর অশ্রুভেজা চোখে এগিয়ে গ্যালারিতে থাকা ছোট মেয়ে তারা জোকোভিচের গালে চুমু দিলেন। মেয়ে এসেছিলেন গলায় অলিম্পিকের সোনার পদক পরে। বাবা তার ইচ্ছে অপূর্ণ রাখলেন না। জিতলেন সোনা। বাবার কাছে মেয়ের ইচ্ছে পূরণের চেয়ে স্বর্গীয় আর কী আছে! 

ক্লে কোর্টের রাজা রাফায়েল নাদালকে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় করে দিয়েছিলেন জোকোভিচ। গতকাল রাতে তাঁরই উত্তরসূরি কার্লোস আলকারাজকে হারিয়ে জিতলেন নিজের অলিম্পিক ক্যারিয়ারের প্রথম সোনা। এতদিনের আক্ষেপ ঘোচানোর পর না কেঁদে কী পারেন সার্বিয়ান তারকা! দর্শকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে নেড়ে অভিবাদনের জবাব দেওয়ার সময় আনন্দাশ্রু গড়িয়ে পড়ল তাঁর চোখ বেয়ে। 

হতাশায় কাঁদলেন আলকারাসও। খুব কাছে গিয়েও সোনা জেতা যে হলো না স্প্যানিশ তারকার। পুনরাবৃত্তি করতে পারলেন না গত উইম্বলনডনের ফাইনাল। গত মাসে ক্লে কোর্টে জোকোভিচকে ৬-২,৬-২, ৭-৬ (৭-৪) গেমে হারিয়ে দ্বিতীয় উইম্বলডন জিতেছিলেন তিনি। এ বছর নিজের সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়ে সেই প্রতিশোধটা কী দারুণভাবেই না নিলেন জোকো। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের সিঙ্গেল জিতলেন ৭-৬ (৭-৩),৭-৬ (৭-২) গেমে। অলিম্পিকে টেনিস হয় দুই সেটের। ‘হাইভোল্টেজ ফাইনালে’র দুই সেটই গেল টাইব্রেকারে। 

টেনিস ক্যারিয়ার এখন পরিপূর্ণই বলা যায় জোকোভিচের। রেকর্ড ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। এবার এলো অলিম্পিক সোনাও। তাতেই হয়ে গেল জোকোভিচের ‘গোল্ডেন স্লাম’ জয়ের আরেক কীর্তি। ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে সিঙ্গেলে এই মাইলফলক ছুঁলেন তিনি। তাঁর আগে এই কীর্তি আছে শুধু নাদাল, সেরেনা উইলিয়ামস, আন্দ্রে আগাসি ও স্টেফি গ্রাফের। 

জোকোভিচের অলিম্পিকে অভিষেক ২০০৮ সালে। সেই বেইজিং অলিম্পিকে এসেই ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। তখন তাঁর বয়স ছিল ২১। এরপর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক ও ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে এসেও সোনার ছোঁয়া পাননি। সেই স্বাদ তিনি পেলেন ৩৭ বছর বয়সে এসে। বুড়ো বয়সেও হাতের কব্জির কী শক্তিটায় না দেখালেন তিনি। নাদালের একাডেমি থেকে উঠে আসা প্রতিপক্ষ ২১ বছরের তরুণ আলকারাসও অবশ্য ছাড়া দেননি। রজার ফেদেরার ও নাদালের পর এখন তিনিই তো ‘জোকার’-এর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী। দুই সময়ের দুই তারকার লড়াইয়ের প্রথম সেটই শেষ হতে লেগেছে ১ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। 

জোকোভিচ গড়েছেন আরেকটি রেকর্ডও। ১৯৮৮ সাল অলিম্পিকে টেনিস অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি বয়সে সিঙ্গেলে সোনা জিতলেন তিনি। এটিপির বাইরে তৃতীয় বাছাই তারকা এ বছর প্রথম ফাইনাল জিতলেন। এই ক্লে কোর্টেই এ বছর প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেছেন আলকারাস। তবে টানা দুই গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সাফল্যটা টেনে আনতে পারেননি অলিম্পিকে। আর জোকোভিচ গত বছর রোলাঁ গারোয় শেষ ও নিজের শেষ ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতছিলেন কাসপার রুডকে হারিয়ে। 

পরশু মেয়েদের সিঙ্গেলে সোনা জিতেছেন ঝেং কুইনওয়েন। রোলাঁ গারোতে তিনি সরাসরি সেটে হারিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার ডোনা ভেকিচকে। জিতেছেন ৬-২,৬-৩ গেমে সোনা জিতে নতুন রেকর্ডও গড়েছেন ঝেং। তাঁর হাত ধরেই যে অলিম্পিক টেনিসে প্রথম সোনা জিতল চীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত