Ajker Patrika

এনামুল হক বিজয়ের সাক্ষাৎকার

নেতিবাচক কথা, গালি ভালোবাসা হিসেবেই দেখি

২০১৪ সালে ৫০ সেঞ্চুরির স্বপ্ন একটি কাগজে লিখে রেখেছিলেন এনামুল হক বিজয়। ২০২৫ সালে এসে সেঞ্চুরির ‘ফিফটি’ই করেননি, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করার পুরস্কার হিসেবে দুই বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন বিজয়। গত পরশু মিরপুরে স্বীকৃত ক্রিকেটে তাঁর ৫১তম সেঞ্চুরির দিনে আজকের পত্রিকার সঙ্গে যখন কথা বলছিলেন, তখনো চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ দল ঘোষণা হয়নি। বিজয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহমেদ রিয়াদ

আহমেদ রিয়াদ, ঢাকা
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৩: ০৫
তিন বছর পর টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। ছবি: এএফপি
তিন বছর পর টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। ছবি: এএফপি

প্রশ্ন: লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের ইতিহাসেই এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করেছিলেন ২০২২ সালে। এবার করলেন দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির ‘ফিফটি’। সামনে কোন রেকর্ডটা করার স্বপ্ন দেখছেন?

এনামুল হক বিজয়: সত্যি বলতে কখনো রেকর্ডের পেছনে ছুটিনি। তবে যখন দেখি সামনে কোনো রেকর্ড ধরা দেওয়ার মতো, তখন স্বপ্নটা আপনা-আপনি চলে আসে। এখন পর্যন্ত আমার সেঞ্চুরি সংখ্যা ৫১। আমার কাছে এটা একটা বড় অর্জনই মনে হয়। সামনে একটা বিশেষ অর্জনের খুব কাছাকাছি আছি; তবে সেটা এখনই বলতে চাই না। আমি চাই না সেটা মানুষের নজরে পড়ে যাক। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, স্বপ্ন বা লক্ষ্য বললে সেটা ঘিরে একটা চাপ তৈরি হয়, অনেক সময় নজরেও পড়ে যায় (হাসি)। আমি যেমন খেলি, তেমনই খেলে যেতে চাই। যেমন এবার যখন ৪৭টা সেঞ্চুরি হয়েছিল, তখন বলেছিলাম ৫০টি করতে চাই। ঠিক তেমনি যখন পরের সেই স্বপ্নের খুব কাছাকাছি চলে যাব, তখনই আপনাদের জানাব।

প্রশ্ন: ১১ বছর আগে কোন ভাবনায় ওই নোটটা লিখেছিলেন যে ২০২৫ সালে ৫০টা সেঞ্চুরি করতে চান, আর সেটি পূরণ হবে, এটাও কি ভেবেছিলেন?

বিজয়: নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেই খেলে গেছি। জানতাম, আমি খারাপ ক্রিকেটার না। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই ২০১৪ সালে একদিন নিজের খাতায় লিখে রেখেছিলাম—২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি সেঞ্চুরি করতে চাই। যখন একটার পর একটা সেঞ্চুরি হচ্ছিল, তখন মনে হতো আমি হয়তো সেই সঠিক পথেই এগোচ্ছি। ভাবতাম, ধীরে ধীরে ঠিকই হয়তো পৌঁছে যাব লক্ষ্যে।

প্রশ্ন: ৫০টি সেঞ্চুরি করে বলেছেন, এর অর্ধেকটা জাতীয় দলে করতে পারলেও আরও বেশি তৃপ্তি দিত। জাতীয় দলের শুরুতে ধারাবাহিক সেঞ্চুরি করেছেন। পরে আর সেটা ধরে রাখা যায়নি, জায়গাও ধরে রাখা যায়নি। ঘাটতি কোথায় ছিল মনে হয়?

বিজয়: অনেক সময় ট্যালেন্ট বা স্কিলই সব নয়, মানসিক প্রস্তুতি আর চাপ সামলানোর ক্ষমতাটা বড় হয়ে ওঠে। ক্যারিয়ারের শুরুতে কিছু সাফল্য পেয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু হয়তো তখন পরিণত ছিলাম না সেভাবে। সেই অভিজ্ঞতার ঘাটতি হয়তো পরে কিছু কঠিন সময় ডেকে এনেছিল। তবে যতটুকু পথ পেরিয়েছি, মনে করি আমি সঠিক ছিলাম। নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল বলেই টিকে থাকতে পেরেছি। এখনো পারফর্ম করতে পারছি।

প্রশ্ন: হঠাৎ হঠাৎ জাতীয় দলে ফেরেন। কিন্তু সেসব সুযোগ কাজে লাগানো যায়নি। এর পেছনের কারণ কী মনে হয়?

বিজয়: আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে গেছি। কখনো বুঝতে পারিনি, একাদশে থাকছি না কেন; আবার হঠাৎ দলে ডাকও পাচ্ছি। আমি কারও বিরুদ্ধে কথা বলতে চাই না। জাতীয় দলে রাখা, না-রাখা সম্পূর্ণ বিসিবির বিষয়। শুধু এটুকু বলতে পারি, নিজের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখিনি। আমি সঠিক ছিলাম। নিজেকে পূর্ণ প্রস্তুত মনে হয়েছে। বিসিবির সবাইকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমার পক্ষে বা বিপক্ষে যে অবস্থানেই থাকুন না কেন। আমি কখনো কাউকে দোষ দিতে চাইনি। জাতীয় দলে পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ার বিষয়টাও তাঁদের সিদ্ধান্ত। আমাকে নিয়ে তাঁরা কী ভেবেছেন, সেটি তাঁরাই ভালো জানেন। তবে আমার মনে হয়েছে, যতটুকু সুযোগ পেয়েছি, সেটিকে যথাসাধ্য কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। যদি আরও ধারাবাহিক সুযোগ পেতাম, হয়তো ছবিটা ভিন্ন হতে পারত।

অনুশীলনে ব্যস্ত এনামুল হক বিজয়। ছবি: বিসিবি
অনুশীলনে ব্যস্ত এনামুল হক বিজয়। ছবি: বিসিবি

প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয়, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স জাতীয় দলে জায়গা পেতে সব সময় যথেষ্ট হয় না?

বিজয়: সত্যি বলতে, কখনো কখনো মনে হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক রান করেও জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া সহজ নয়। তবে অভিযোগ করার পাত্র আমি নই। এটাও মানি, ঘরোয়া আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ এক নয়। জাতীয় দলের নির্বাচকেরা নিশ্চয়ই সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেন। নিজেকে প্রস্তুত রাখাটাই আমার কাজ। সুযোগ পেলে সেটাকে কাজে লাগানোই লক্ষ্য।

প্রশ্ন: ধারাবাহিক রান পেলেও অনেক সময় আপনার ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ‘স্বার্থপর ক্রিকেট’ খেলার অপবাদও শুনতে হয়েছে। এটা আপনাকে কতটা পীড়া দেয়?

বিজয়: ব্যথা তো অবশ্যই লাগে। কেউই নিজের জন্য খেলতে নামে না, আমিও না। আমি সব সময় দলের জন্য খেলি। ইনিংস বড় করতে গেলে অনেক সময় পরিস্থিতি বুঝে একটু ধীরে খেলার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বাইরের অনেকে হয়তো শুধু স্কোরবোর্ড দেখে বিচার করেন। মাঠের ভেতরের বাস্তবতা বা পরিকল্পনা বোঝেন না। ‘সেলফিশ’ অপবাদ শুনে মন খারাপ হয়, কষ্টও পাই। তবে সেই কষ্টকে আমি শক্তিতে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রতিবারই প্রমাণ করতে চাই, আমি কখনো দলের চেয়ে নিজেকে বড় করে দেখিনি।

প্রশ্ন: আপনার নামের সঙ্গে প্রায়ই কিছু নেতিবাচক শব্দ বা প্রশ্ন আসে, এটা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

বিজয়: আমি সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। নেতিবাচক মন্তব্য বা সমালোচনা থাকবেই, বিশেষ করে আপনি যদি আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন। অনেকেই আমাকে ভালোবাসেন, আবার কেউ কেউ হয়তো পছন্দ করেন না। কিন্তু আমি অবাক হই, যখন দেখি কেউ আমাকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন কিংবা গালিও দিচ্ছেন। আমি এটাকে নেতিবাচকভাবে নিই না। বরং ভাবি, তারা চায় আমি আরও ভালো খেলি। হয়তো আমি তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি, তাই তারা হতাশ হয়ে এমন মন্তব্য করে। আমি সেটাকে একধরনের ভালোবাসা হিসেবেই দেখি।

প্রশ্ন: ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক রান করেও আপনি মাঝে মাঝে দলে উপেক্ষিত হয়েছেন। নিজেকে বারবার প্রমাণ করতে গিয়ে কখনো কি হতাশা বা ক্লান্তি স্পর্শ করেছে?

বিজয়: ক্লান্তি মানুষকে পিছিয়ে দেয়। আমি সব সময় চেষ্টা করি মানসিকভাবে শান্ত থাকতে। যদি বারবার উপেক্ষিত হওয়ার কষ্টে ভেঙে পড়তাম, যদি নিজেকে ক্লান্ত ভাবতাম কিংবা এলিয়ে দিতাম—তাহলে কি এই ৫০টির বেশি সেঞ্চুরি করতে পারতাম? নিশ্চয়ই না। আমার আসলে কোনো ক্লান্তি নেই। আমি বিশ্বাস করি, যেদিন ক্রিকেট থেকে অবসর নেব, সেদিনই আমার ক্লান্তি শুরু হবে। তার আগে কোনো অবকাশ নেই। যতক্ষণ খেলার মধ্যে আছি, আমার কাজ একটাই—পারফর্ম করা। পেশাদার হিসেবে ক্লান্তির জায়গা দেখি না। ক্রিকেটাররা পরিশ্রম করতেই মাঠে নামে।

প্রশ্ন: আপনি যদি এখনকার ১৮-১৯ বছর বয়সী বিজয় হতেন, ক্যারিয়ারের কোন সিদ্ধান্তটা আপনি ভিন্নভাবে নিতেন বলে মনে হয়?

বিজয়: আলহামদুলিল্লাহ, এখন পর্যন্ত আমি যা পেয়েছি, তাতেই খুশি। যা কিছু অর্জন করেছি, সবই আল্লাহর রহমত। ভবিষ্যতেও তিনি যা দেবেন, তাকেও একইভাবে গ্রহণ করব। আমি কখনো অতৃপ্ত নই। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, যা পাই, সেটাই আমার জন্য নির্ধারিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপে কোনো প্রতিপক্ষই সহজ না, মনে করেন আর্জেন্টিনা কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
লিওনেল স্কালোনি। ছবি: এক্স
লিওনেল স্কালোনি। ছবি: এক্স

সহজ গ্রুপ পড়েছে আর্জেন্টিনা–২০২৬ বিশ্বকাপ ড্রয়ের পর এই কথাটি এখন সবার মুখে মুখে। বিশেষ করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের ভক্তরা বিষয়টি নিয়ে একটু বেশিই খোঁচা দিচ্ছেন। এই আলোচনায় কঠিন বাস্তবতা সামনে আনলেন লা আলবিসেলেস্তেদের প্রধান কোচ লিওনেল স্কালোনি।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ড্রয়ের ‘জে’ গ্রুপে পড়েছে আর্জেন্টিনা। গ্রুপে তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া ও জর্ডান। শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকলেও এদের কাউকেই খাটো করে দেখছেন না স্কালোনি। নিজেদের দিনে যেকোনো দলই যে প্রতিপক্ষের জন্য বিপদজনক হতে পারে সেটা ভালোভাবেই জানেন এই কোচ।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপই সেটার বড় প্রমাণ। সেবার ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে ট্রফি ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে লাতিন আমেরিকান জায়ান্টদের শুরুটা ছিল হতাশায় ঘেরা। প্রথম ম্যাচে তাদের হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় সৌদি আরব। শুরুর ধাক্কা সামলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরে লিওনেল মেসির দল।

দেখতে দেখতে আরও একটি বিশ্বকাপের সামনে আর্জেন্টিনা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে একটু বেশিই। গ্রুপ পর্বে তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়লেও পরের পর্বে স্পেন, উরুগুয়ের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে। সেটাই স্মরণ করিয়ে দিলেন স্কালোনি।

স্কালোনি বলেন, ‘সবশেষ বিশ্বকাপের মতোই বলতে চাই যে কোনো প্রতিপক্ষই সহজ নয়। আগে আমাদের সবগুলো ম্যাচ খেলতে হবে। এরপর সামনের হিসাব। আমরা যদি স্পেনর ও উরুগুয়ের গ্রুপের বিপক্ষে পড়ি তাহলে কাজটা অবশ্যই অনেক কঠিন হবে। তবে আপাতত আমাদের প্রথম কাজ হলো গ্রুপ পর্ব শেষ করা। এরপর যা হবে দেখা যাবে।’

গ্রুপে থাকা দলগুলো নিয়ে স্কালোনি বলেন, ‘আলজেরিয়া দলে দারুণ সব ফুটবলার আছে। তাদের বেশকিছু খেলোয়াড় ফ্রান্সসহ অন্যান্য দলে খেলে। অস্ট্রেলিয়া বাছাইপর্বে ভালো ফুটবল খেলেছে। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা বেশ কঠিন হবে। তবে জর্ডানের ব্যাপারে আমার তেমন ধারণা নেই। আমি কাউকেই হালকাভাবে নিচ্ছি না। ভালো বলেই তারা এই পর্যন্ত আসতে পেরেছে। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা সবাই কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাকিব-ব্রাভোকে ছাড়িয়ে অন্যরকম মাইলফলকে রাসেল

ক্রীড়া ডেস্ক    
আন্দ্রে রাসেল। ছবি: এক্স
আন্দ্রে রাসেল। ছবি: এক্স

সম্প্রতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে অবসর নিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল। আইপিএল ছাড়লেও বিশ্বের অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোতে খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। তারই অংশ হিসেবে চলমান ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টিতেও (আইএল টি-টোয়েন্টি) খেলছেন এই অলরাউন্ডার। তবে শুধু মাঠে নেমেই নয়, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আইএল টি-টোয়েন্টিতে গতকাল রাতে ডেজার্ট ভাইপার্সের কাছে ২ উইকেটে হেরেছে আবুধাবি নাইট রাইডার্স। দলের হারের দিনে অলরাউন্ড পারফর্ম করেন রাসেল। ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর বোলিংয়ে এসে নেন শিমরন হেটমায়ারের উইকেট। ২৫ বলে ৪৮ রান করা ক্যারিবীয় ব্যাটার স্বদেশী রাসেলের বলে আলিশান শারাফুর হাতে ধরা পড়েন।

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটা রাসেলের ৫০০ তম উইকেট। এই সংস্করণে ৯ হাজারের উপরে রান করেছেন তিনি। সাকিব আল হাসান ও ডোয়াইন ব্রাভোর পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ন্যূনতম ৫০০০ রান এবং ৫০০ উইকেটের ক্লাবে প্রবেশ করলেন রাসেল। তবে এক দিক থেকে সবার ওপরে তিনি। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টি–টোয়েন্টিতে ৫০০০ রান, ৫০০ উইকেট এবং সমান ছক্কার কীর্তি গড়লেন তিনি।

এখন পর্যন্ত ৫৭৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ৪৯৬ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৪৯৬ রান করেছেন রাসেল। ১৬৮.২৪ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করার পথে ৭৭২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। সাকিব ও ব্রাভো দুজনই ৫০০০ রান এবং ৫০০ উইকেট নিলেও তাঁদের কেউই এই সংস্করণে ৫০০ ছক্কা মারতে পারেননি। সেটাই করে দেখালেন রাসেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপে ‘মৃত্যুকূপে’ ফ্রান্স, এমবাপ্পে-হালান্ড লড়াইয়ের অপেক্ষা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৩
এমবাপ্পে ও হালান্ড। ছবি: এক্স
এমবাপ্পে ও হালান্ড। ছবি: এক্স

২০২৬ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে কে কার বিপক্ষে খেলবে সেটা জানা গেছে। অপেক্ষার প্রহর শেষে গতকাল রাতে বিশ্ব ফুটবলের ২৩ তম আসরের ড্র হয়েছে। ১২টি গ্রুপে ভাগ হয়ে পরবর্তী বিশ্বকাপের মঞ্চে লড়াই করবে ৪৮ দল। প্রতিটি গ্রুপে থাকছে চারটি করে দল।

প্রথমবারের মতো এত দল নিয়ে বিশ্বকাপ হওয়ায় আগের সব আসরের তুলনায় গ্রুপ পর্বে তুলনামূলক কম পরীক্ষাই দিতে হবে বড় দলগুলোকে। তবে সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ব্রাজিল, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ইংল্যান্ড, বেলজিয়ামের মতো বড় দলগুলোর তুলনায় কঠিন গ্রুপেই পড়েছে ফ্রান্স। আই’ গ্রুপে ফরাসিদের প্রতিপক্ষ সেনেগাল, নরওয়ে এবং প্লে-অফ ২ জয়ী দল (ইরাক/বলিভিয়া/সুরিনাম)। এই গ্রুপকে তাই ২০২৬ বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথ মনে করা হচ্ছে।

এই গ্রুপ নিয়ে সবার বাড়তি রোমাঞ্চের একটি কারণ আছে। ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পের বিপরীতে নরওয়ের আছে আর্লিং হালান্ডের মতো স্ট্রাইকার। দলীয় লড়াই ছাপিয়ে ফ্রান্স-নরওয়ে ম্যাচকে তাই এমবাপ্পে-হালান্ড দ্বৈরথ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে দুজনই দলের জয়ের কারণ হওয়ার সামর্থ্য রাখেন। অনুমিতভাবেই ‘আই’ গ্রুপে ফ্রান্স এবং নরওয়ে ম্যাচ ঘিরে বাড়তি উন্মাদনা থাকবে ভক্তদের।

গ্রুপের আরেক প্রতিপক্ষ সেনেগালকে নিয়েও বাড়তি চিন্তা থাকবে ফ্রান্সের। ১৯৯৮ সালে নিজেদের মাঠে আয়োজিত বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে ফরাসিরা। ফেভারিটের তকমা নিয়ে ২০০২ জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল ইউরোপিয়ান জায়ান্টরা। কিন্তু তাদের থামিয়ে দেয় সেনেগাল। সে আসরে উদ্বোধনী ম্যাচে আফ্রিকান দলটির কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ফ্রান্স। তাদের হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেষ আটে জায়গা করে নেয় সেনেগাল।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছে সেনেগাল। রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে বিদায় নিলেও প্রমাণ করেছে, বড় দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করার মতো সব রকমের রসদ-ই জমা আছে তাদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গ্রিভস-হোপের ব্যাটিং বীরত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবিশ্বাস্য ড্র

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪২
ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন গ্রিবস। ছবি: ক্রিকইনফো
ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন গ্রিবস। ছবি: ক্রিকইনফো

৫৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তাসের ঘরে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন। চতুর্থ ইনিংসের শুরুতেই তাই সফরকারীদের হার দেখে ফেলেছিল সবাই। কিন্তু ক্রিকেট যে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, নিউজিল্যান্ডকে বোধহয় সেটাই বোঝালেন জাস্টিন গ্রিভস ও শাই হোপ। এই দুজনের ব্যাটিং বীরত্বে ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে হারতে বসা টেস্ট ড্র করল ক্যারিবীয়রা।

প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই ম্যাচে ব্যাকফুটে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ডের করা ২৩১ রানের জবাবে ১৬৭ রানে গুটিয়ে যায় অতিথিরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকেদের দাপট ছিল আরও বেশি। ৪৬৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৭৪ রানেই জন ক্যাম্পবেল, তেজনারায়ণ চন্দরপল, আলিক আথানেজ ও রস্টন চেজের উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

চতুর্থ উইকেটে তাদের পথ দেখান গ্রিভস-হোপ জুটি। তাঁদের ব্যাটে ম্যাচে হার এড়ানোর স্বপ্ন কিছুটা হলেও বেঁচে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এ জন্য শেষ দিনেও নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হতো। ঠিক সেটাই করে দেখাল এই জুটি। দলকে হারের মুখ থেকে বাঁচানোর পথে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন গ্রিভস। ২০২ রানে অপরাজিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার। ১৯ চারে সাজানো তাঁর ৩৮৮ বলের ইনিংস।

২১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোপ ১১৬ ও গ্রিভস ৫৫ রান নিয়ে শেষ দিনে ব্যাট করতে নামেন। হাতে থাকা ৬ উইকেট নিয়ে জয়ের জন্য এদিন আরও ৩১৯ রান করতে হতো ক্যারিবীয়দের। এই সমীকরণ মেলাতে না পারলেও অলআউট হয়নি তারা। আগের দিনের থেকে ২৪ রান যোগ করে আউট হন হোপ। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান গ্রিভস। তাঁর বীরত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাওয়া এই ড্রই জয় সমতুল্য।

হোপ আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ৪ রান করে ফেরেন টেভিন ইমলাচ। এরপর কোনো বিপদ হতে দেননি গ্রিভস ও কেমার রোচ। সপ্তম উইকেটে নিরবচ্ছিন্ন ১৮০ রান তোলেন তাঁরা। ফিফটি করে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন রোচ। ৬ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১২২ রানে ৩ উইকেট নেন জ্যাকব ডাফি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত