Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বিশ্বাস রাখেন কয়েক বছরের মধ্যেই এই দল অনেক ভালো করবে

Thumbnail Image

সাদা বলে তাসকিন আহমেদ নিজেকে দলের পেস বোলিং আক্রমণের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি যে টেস্টেও দুর্দান্ত, সেটির প্রমাণ মিলেছে এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথমবারের মতো টেস্টে ৫ উইকেট পেয়েছেন, ধারাবাহিক ভালো করে প্রথমবারের মতো টেস্টে পেয়েছেন সিরিজসেরা পুরস্কারও। আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাসকিন বিস্তারিত বললেন নিজের ও দলের সাফল্য নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: ক্যারিবীয় সফর সম্ভবত খুব উপভোগ করেন। এর সৌন্দর্য আসলে সবারই ভালো লাগে। কিন্তু এবার কি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে একটু বেশিই ভালো লাগছে?

তাসকিন আহমেদ: না, আসলে ক্যারিবীয় অঞ্চলটাই এ রকম, সব সময় উপভোগ করি। আর প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের একেক জায়গায় একেক রকম সৌন্দর্য। জ্যামাইকা ভিন্ন, সেন্ট কিটস ভিন্ন, সেন্ট ভিনসেন্ট আলাদা, অ্যান্টিগা আলাদা। সব মিলিয়ে আমার বেশ ভালোই লাগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একেকটা দেশ।

প্রশ্ন: ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, ইয়ান বিশপদের সামনে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা আগুন ঝরাচ্ছেন, তাঁদের মতো কিংবদন্তি ফাস্ট বোলাররা প্রশংসা করছেন আপনাদের—এটা কেমন লাগছে?

তাসকিন: তাঁদের মতো কিংবদন্তি খেলোয়াড়েরা যখন আমাদের প্রশংসা করেন, এটা আসলেই গর্বের। কিন্তু এটা স্বাভাবিকও। স্বাভাবিক বিষয়; কারণ, ভালো করলে আমাদের প্রশংসা তো হবে এবং খারাপ করলে সমালোচনাও হয়। এটা আমাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক। ইনশা আল্লাহ, আমরা বোলাররা যেভাবে কঠোর পরিশ্রম করছি উন্নতির জন্য, মনে হয় আমরা প্রশংসার দাবিদার।

প্রশ্ন: অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। দারুণ বোলিংয়ের পরও দল হেরে যাওয়ায় নিজেকে কি কিছুটা দুর্ভাগা মনে হচ্ছিল?

তাসকিন: ফাইফার অবশ্যই বিশেষ কিছু। তা-ও আবার টেস্ট ক্রিকেটে। আর আক্ষেপ ছিল অনেক দিনের, টেস্টে কবে ফাইফার পাব। আল্লাহর রহমতে এবার পেলাম। আশা করি সামনে আরও সুযোগ আসবে, আল্লাহ যদি চান। দল হারলে তো সব সময় খারাপ লাগে; ফাইফার পাই আর না পাই। তবে ভালো বিষয়, আমরা পরের ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতায় আনতে পেরেছি। তাদের মাঠে এটা আসলে সহজ নয়।

প্রশ্ন: দেশে সব সময় বাংলাদেশ সমীহজাগানো দল। কিন্তু এ বছর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ কোনো টেস্ট জিততে পারেনি। শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছে। অথচ পাকিস্তান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাঠেই হারিয়েছে। এবার দুই রকম ফলের কারণ কী হতে পারে?

তাসকিন: টেস্ট ক্রিকেটে জয়ের স্বাদটা অন্য রকম। বাইরে জিতেছি, দেশে হেরেছি...আসলে দেখবেন যে যেখানেই আমরা জিতেছি, যখন সব মিলিয়ে ব্যাটিং-বোলিং—সব বিভাগেই ভালো হয়েছে, তখন জিতেছি। দলে বেশির ভাগ খেলোয়াড় এ মুহূর্তে নতুন বা অনেকে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বেশি দিন হয়নি। ট্রানজিশন পিরিয়ডটা দ্রুতই কাটিয়ে আমরা শক্তিশালী, বড় দল হয়ে যাব ইনশা আল্লাহ। বিশ্বাস রাখেন, কয়েক বছরের মধ্যেই এই দল অনেক ভালো কিছু করবে ইনশা আল্লাহ।

প্রশ্ন: পাকিস্তানে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা ভালো করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভালো করেছেন। তার মানে, পেস সহায়ক উইকেট মানেই বাংলাদেশের পেসারদের সাফল্য? আর পেসারদের সাফল্য মানেই বাংলাদেশের জয়, বিষয়টি কি এমন?

তাসকিন: স্পোর্টিং উইকেটে আমাদের ভালো করার সুযোগ অনেক। কারণ, আমাদের ফাস্ট বোলারদের সেই দক্ষতা আছে। একই সঙ্গে খেলে খেলে উন্নতি হচ্ছে, অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তাই ভালো কন্ডিশনে খেললে আমাদের জন্য ভালো, ফাস্ট বোলারের সুযোগ বেশি।

প্রশ্ন: নাহিদ রানার গতি দেখে আপনি কতটা আনন্দিত? একসময় আপনার গতিই ছিল মূল শক্তি, এখন অনেক বৈচিত্র্য যোগ হয়েছে আপনার বোলিংয়ে। নাহিদ রানার প্রতি আপনার কী পরামর্শ থাকবে?

তাসকিন: নাহিদ রানা অনেক বড় সম্পদ বাংলাদেশের জন্য। মাশাআল্লাহ, স্বাভাবিক পেস আছে। ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করে। এটা যেকোনো ব্যাটার, যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি। আশা করি, সে তার উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে, সুস্থ থাকবে। কারণ, সে নতুন এসেছে। সামনে ওর চ্যালেঞ্জ আসবে, সবাই যখন তাকে পড়ে ফেলবে। উন্নতির ধারা ধরে রাখলে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সম্পদ সে।

প্রশ্ন: মেহেদী হাসান মিরাজের অধিনায়কত্ব কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?

তাসকিন: মিরাজ তো দুইটা ম্যাচ (অধিনায়কত্ব) করল। খুব ভালো করেছে। সবাইকে চাঙা রাখার চেষ্টা করেছে সব সময়। যেভাবে সে নেতৃত্ব দিয়েছে, ভালো ছিল। আমাদের সবারই ভালো লেগেছে।

প্রশ্ন: টেস্ট সিরিজ টাই করার পর এখন সাদা বলের সিরিজে জিততে কতটা আশাবাদী?

তাসকিন: ওয়ানডে সিরিজেও আমরা অনেক আশাবাদী। সিরিজ জিতব ইনশা আল্লাহ। তাদের কন্ডিশনে এটা সহজ হবে না। তারাও ভালো শেপে আছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভালো খেলেছে। আশা করি আমরাও ভালো খেলব, জিতব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত