মাহফুজ সিদ্দিকি হিমালয়

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে। অথচ মাত্র দুই ইনিংস পরেই সেই মিঠুন একাদশের বাইরে—বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় যা অবিশ্বাস্য!
ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ ইনিংসের মধ্যে বিদেশের মাটিতে টেস্টে ১৫০+ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল না কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের। ২৫০–এর বেশি বল খেলার দৃষ্টান্তও কম (তামিম ইকবাল মাত্র দুবার, সাকিব আল হাসান একবার ও মুশফিক পাঁচবার)। নাজমুল হোসেন শান্ত সেই অসাধারণ কীর্তি (১২ ইনিংসের মধ্যে ১৫০+ রানের ইনিংস) করার পরও যতটা প্রশংসা; সেটির চেয়ে বেশি ট্রলিং, ব্যাটিং টেকনিকের সমালোচনার শিকারই বেশি হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
৪০ ম্যাচ খেলেছেন–এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট সৌম্য সরকারের। এই তালিকার দুইয়ে লিটন দাস। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর গত ২১ বছরে বাংলাদেশ শুধু একটি টুর্নামেন্টে (দ্বিপক্ষীয় সিরিজের বাইরে) শিরোপা জিততে পেরেছে, সেটি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ২৪ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২১০ রান। সৌম্যর ৪১ বলে ৬৬ আর শেষে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের সৌজন্যেই বাংলাদেশ প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতে। এই সাফল্যের পরও এই ব্যাটসম্যানরা একটু ব্যর্থ হলেই একের পর এক সমালোচনার তির ছুটে গেছে তাঁদের দিকে।
বাংলাদেশ মূলত ওয়ানডে সংস্করণে ভালো দল। টেস্ট আর টি–টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। গত ৩৫ বছরে খেলা ৩৮৫ ওয়ানডের ২৩৫টিই খেলেছে ওপরের সারির দলের বিপক্ষে, জিতেছে ৩৮ টি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের হার ১৬ শতাংশ। বাকি ১৫০টি আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য সহযোগী দলের বিপক্ষে। সেখানে জয় ৯৫ টি। শুধু জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭৫ ম্যাচ খেলে জয় ৪৭ টিতে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য কম, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। পরিসংখ্যানে আস্থা রেখেই বলতে হচ্ছে, নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে জয় পাওয়া থেকেই যাবতীয় মিথের সূত্রপাত। প্রশ্ন হলো, সামর্থ্য কম, এটা মেনে নিয়েই খেলা চালিয়ে যাব, নাকি সীমিত সামর্থ্য নিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখাব?
উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানকে সামনে আনা যায়। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা হারে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে। পরের পাঁচ বছরে তারা বাংলাদেশকে টি–টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে, ওয়ানডেতে দুবার হারিয়েছে। এমনকি নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের হোম কন্ডিশনে খেলতে এসেও দাপটের সঙ্গে হারিয়ে গেছে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশকে সেখানে স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে বাছাইপর্ব! শোনা যায়, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিকে প্রায়ই প্রস্তাব দেয় দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার। বিসিবি নিয়মিত আগ্রহ দেখায় না এই প্রস্তাবে। কারণ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে হারের ভয়টা বেশি থাকে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে রশিদ খান, মুজিব–উর–রহমানরা কতটা ‘আতঙ্কে’র নাম, সেটি দুই দলের সিরিজ এলেই দেখা যায়! দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম পর্যন্ত স্ট্রাইক নিতে চান না মুজিব ইনিংসের শুরুতে আক্রমণে এলে।
এই অল্প সময়ে কীভাবে আফগানিস্তান বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করল? আপনি তাদের যেকোনো ক্রিকেটারের কাছে শুনুন। বলবে, আমরা জিততে চাই! ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা সব ম্যাচে হেরেছে। তবু তাদের অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই!’ আমাদের কোচ-অধিনায়ক-বোর্ড কর্তাদের মুখে কখনো শুনেছেন এমন কথা? ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছিলেন, ‘আমরা ভালো খেলতে চাই।’ ২০২১ সালের অধিনায়ক তামিম ইকবালও এই ‘ভালো খেলতে চাওয়া’র বলয় থেকে বের হতে পারেননি।
ক্রিকেটে তিনটি ফল হবে—জয়, পরাজয় আর টাই। ‘ভালো খেলা’ বলতে কিছুর অস্তিত্বই নেই ক্রিকেট অভিধানে। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটার-সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ‘ভালো খেলা’ নামের দরিদ্র মানসিকতার ফলটি। এর স্বরূপটা কেমন?
আকরাম খানরা যখন খেলতেন ৫০ ওভার ব্যাটিং করা এবং প্রতিপক্ষের দুই-একজন তারকা ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলতে পারাটাই ছিল ‘ভালো খেলা’। আশরাফুল-হাবিবুলদের যুগে সেটি হয় ২০০–এর সামান্য বেশি রান তোলা কিংবা প্রতিপক্ষকে অলআউট করা। তামিম-সাকিবদের যুগে সেই মানদণ্ডটা উঠেছে ২৪০-২৫০ রান এবং সেই রান তুলতে সংগত কারণেই প্রতিপক্ষের ৫-৬ উইকেট নিতে হবে। কিংবা প্রতিপক্ষ ৩০০ করলে পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে সেই রানের যতটা সম্ভব কাছাকাছি যাওয়া। টি–টোয়েন্টির যুগে ২৪০-২৫০ রান যে বড় কোনো স্কোরই নয়! দর্শকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের ম্যাচ দেখতে পারলেই খুশি কিংবা হেরে যাওয়া ম্যাচে এক–দুজন ব্যাটসম্যান ৮০ বলে ৫৩ রান করেছে—সেটিকেই বিশাল কৃতিত্ব হিসেবে দেখানো হয়।
মূলত এখানেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান প্রজন্ম। জাভেদ ওমর বা খালেদ মাসুদ পাইলটরা ছিলেন টেস্টপূর্ব যুগের খেলোয়াড়, তামিম-সাকিবদের সঙ্গে তাদের মান ও মানসিকতার পার্থক্য সাদা চোখেই ধরা পড়ত। আর এখন সৌম্য-লিটন-মোসাদ্দেকদের প্রজন্ম সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে খুবই সামান্য ব্যবধানে। যেটি সাকিবদের তারকাখ্যাতির বিপরীতে সহজেই উপেক্ষণীয়।
মিঠুন বাদে উত্তরপ্রজন্মের ক্রিকেটেরদের প্রত্যেকেই পূর্বসূরিদের তুলনায় এগিয়ে। তবু এটা যথেষ্ট নয়, যেহেতু বাংলাদেশ এখন হোম কন্ডিশনে জেতে (বিশেষ করে ওয়ানডেতে)। উত্তরপ্রজন্ম যে ২৮০ রানকে মানদণ্ড ধরবে সেই সুযোগ কোথায়? এমনকি আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডের মতো পেছনের সারির দলেও টপ অর্ডারে স্ট্রোকমেকার থাকেন। তাঁরা নির্ভীক ব্যাটিং করেন, তাঁদের হারানোর কিছু নেই! শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গেও একই কথা প্রযোজ্য।
আমাদের ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক খেলতে গিয়ে আউট হলে ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক, বোর্ড সভাপতি, ফেসবুক দর্শকেরা সম্মিলিতভাবে বলে ওঠেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট’! যে কারণে স্বার্থপর ব্যাটিং (যেমন ৯০ বলে ৬২ রান) করে একটা ফিফটি তোলাটাই দায়িত্বশীল ব্যাটিং বলে গণ্য হয়। সাকিব বাদে দেশের বাকি তিন তারকা ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকের স্ট্রাইকরেট ৮০–এর নিচে—এই তথ্যটিই বলে দেয় স্বার্থপর ব্যাটিং দিয়ে দলে টিকে থাকার নীতি কীভাবে জেঁকে বসে আছে! প্রথম ছয়টা ব্যাটিং পজিশনের চারটাই ‘অটোমেটিক চয়েস’। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো বাকি দুই পজিশন নিয়ে লড়াই চলে। এ সময়ে সবচেয়ে সমালোচিত লিটন দাস আর সৌম্য সরকার—দুজন একসঙ্গে ওপেন করেছেন মাত্র একবার।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়। নিয়মিত ওপেনার রোশান মহানামা আর গুরুসিংহে ওপেনিং পজিশন থেকে নিচে নেমে গিয়েছিলেন বিস্ফোরক জয়াসুরিয়া আর কালুভিতারানাকে জায়গা করে দিতে। এমনকি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম জুটি শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলীর জুটি ভেঙেছিলেন। সৌরভ নিচে নেমেছিলেন বিস্ফোরক শেবাগকে জায়গা করে দিতে। গত ১৫ বছরে যত ওপেনার ওয়ানডে খেলেছেন, এর মধ্যে তামিমের স্ট্রাইকরেট সর্বনিম্ন। তবু তিনি কি ওপেনিং স্লটে দুজন স্ট্রোকমেকার (সৌম্য-লিটনের জায়গায় অন্য যে কেউও হতে পারে) কে জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজে তিন বা চারে নামার কথা চিন্তা করেছেন কখনো?
বিশ্বের যেকোনো মাঠে, বাংলাদেশ আগে অথবা পরে যখনই ব্যাটিং করুক, তামিমের একটাই ভাবনা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করা! এই ভাবনায় হয়তো নিজের পরিসংখ্যান সমৃদ্ধ হয়, দল কতটা ধারাবাহিক সফল হচ্ছে? একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই—২০১৫ সালের পরে বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৭০ রানের বেশি তাড়া করা ম্যাচের একটিতেও তামিম-মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহর ৮০ স্ট্রাইকরেট বা ফিফটি নেই। একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮৬ তাড়া করা। যদিও সেটিতে তিনজনের ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি তাঁরা জেতার চেষ্টা করছেন!
ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পাওয়ার প্লের দারুণ ব্যবহারে ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে আনা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটই যে মোমেন্টাম–নির্ভর। গত ছয় বছরে এই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান সংগ্রহের হার সর্বনিম্ন (গড়ে ৩৯)। গত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল সৌম্য সরকার শুরুতে লুঙ্গি এনগিডি আর কাগিসো রাবাদাকে আক্রমণ করায়। সেই কৃতিত্ব কি সৌম্যকে দেওয়া হয়েছে সেভাবে?
ধরা যাক, সৌম্য বা যেকোনো স্ট্রোকমেকার ওপেনার প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই আউট হলেন। তাতে সমস্যাটা কী, যদি তাঁরা পাঁচ ওভারে ৩০ রান তুলে দিতে পারেন। যদি টানা ১০ ম্যাচেই তাঁরা না পারেন, অন্য স্ট্রোকমেকার এনে চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু শুরু থেকেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করে আসলে প্রাপ্তিটা কী?
জিম্বাবুইয়ে বা নিচের সারির দলের বিপক্ষে জিততে অনেক মেহনতের প্রয়োজন নেই। আবার শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ২৫০ রানের মানসিকতা নিয়ে খেলে যে কিছুই সম্ভব নয়, তা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তাহলে উপায়টা কী?
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশের জয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেছিলাম। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সত্য, বাংলাদেশের জয়গুলোর ৭০ ভাগই প্রতিপক্ষের হঠাৎ ব্যাটিংধসের কারণে। যদি কোনোভাবে প্রতিপক্ষ ২৭০ রান তুলতে পারে, অনেকটা চোখ বন্ধ করে বলা যায় সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারবে। শক্তিশালী দলের ব্যাটিংয়ে ধস হয় মাঝেমধ্যে, বাংলাদেশেরও তাই জেতা হয় না নিয়মিত।
বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টিতে এখন যতটা বাজে খেলছে, এর চেয়ে বাজে খেলা অসম্ভব! সেখানে তারকা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে আফিফ বা শেখ মেহেদীকে অধিনায়ক করে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করে দুই-তিনটা সিরিজেও কি চেষ্টা করা হয়েছে? তবু কিসের ভিত্তিতে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তরপ্রজন্ম ব্যর্থ?
প্রশ্ন হতে পারে, পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় মানে অনেক এগিয়ে থাকা ক্রিকেটার কেন পাচ্ছি না? সেই আলোচনা করতে গেলে পাতানো ম্যাচ, বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ বহু অপ্রিয় প্রসঙ্গ উঠে আসবে। সেসব ধামাচাপা দিতেই কি তারকা ক্রিকেটার বনাম তরুণ ক্রিকেটারদের এক জনপ্রিয় দ্বৈরথ বানিয়ে রাখা হয়েছে?
লেখক: লেখক ও মানব বিশ্লেষক

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে। অথচ মাত্র দুই ইনিংস পরেই সেই মিঠুন একাদশের বাইরে—বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় যা অবিশ্বাস্য!
ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ ইনিংসের মধ্যে বিদেশের মাটিতে টেস্টে ১৫০+ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল না কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের। ২৫০–এর বেশি বল খেলার দৃষ্টান্তও কম (তামিম ইকবাল মাত্র দুবার, সাকিব আল হাসান একবার ও মুশফিক পাঁচবার)। নাজমুল হোসেন শান্ত সেই অসাধারণ কীর্তি (১২ ইনিংসের মধ্যে ১৫০+ রানের ইনিংস) করার পরও যতটা প্রশংসা; সেটির চেয়ে বেশি ট্রলিং, ব্যাটিং টেকনিকের সমালোচনার শিকারই বেশি হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
৪০ ম্যাচ খেলেছেন–এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট সৌম্য সরকারের। এই তালিকার দুইয়ে লিটন দাস। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর গত ২১ বছরে বাংলাদেশ শুধু একটি টুর্নামেন্টে (দ্বিপক্ষীয় সিরিজের বাইরে) শিরোপা জিততে পেরেছে, সেটি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ২৪ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২১০ রান। সৌম্যর ৪১ বলে ৬৬ আর শেষে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের সৌজন্যেই বাংলাদেশ প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতে। এই সাফল্যের পরও এই ব্যাটসম্যানরা একটু ব্যর্থ হলেই একের পর এক সমালোচনার তির ছুটে গেছে তাঁদের দিকে।
বাংলাদেশ মূলত ওয়ানডে সংস্করণে ভালো দল। টেস্ট আর টি–টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। গত ৩৫ বছরে খেলা ৩৮৫ ওয়ানডের ২৩৫টিই খেলেছে ওপরের সারির দলের বিপক্ষে, জিতেছে ৩৮ টি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের হার ১৬ শতাংশ। বাকি ১৫০টি আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য সহযোগী দলের বিপক্ষে। সেখানে জয় ৯৫ টি। শুধু জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭৫ ম্যাচ খেলে জয় ৪৭ টিতে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য কম, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। পরিসংখ্যানে আস্থা রেখেই বলতে হচ্ছে, নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে জয় পাওয়া থেকেই যাবতীয় মিথের সূত্রপাত। প্রশ্ন হলো, সামর্থ্য কম, এটা মেনে নিয়েই খেলা চালিয়ে যাব, নাকি সীমিত সামর্থ্য নিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখাব?
উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানকে সামনে আনা যায়। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা হারে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে। পরের পাঁচ বছরে তারা বাংলাদেশকে টি–টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে, ওয়ানডেতে দুবার হারিয়েছে। এমনকি নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের হোম কন্ডিশনে খেলতে এসেও দাপটের সঙ্গে হারিয়ে গেছে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশকে সেখানে স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে বাছাইপর্ব! শোনা যায়, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিকে প্রায়ই প্রস্তাব দেয় দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার। বিসিবি নিয়মিত আগ্রহ দেখায় না এই প্রস্তাবে। কারণ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে হারের ভয়টা বেশি থাকে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে রশিদ খান, মুজিব–উর–রহমানরা কতটা ‘আতঙ্কে’র নাম, সেটি দুই দলের সিরিজ এলেই দেখা যায়! দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম পর্যন্ত স্ট্রাইক নিতে চান না মুজিব ইনিংসের শুরুতে আক্রমণে এলে।
এই অল্প সময়ে কীভাবে আফগানিস্তান বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করল? আপনি তাদের যেকোনো ক্রিকেটারের কাছে শুনুন। বলবে, আমরা জিততে চাই! ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা সব ম্যাচে হেরেছে। তবু তাদের অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই!’ আমাদের কোচ-অধিনায়ক-বোর্ড কর্তাদের মুখে কখনো শুনেছেন এমন কথা? ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছিলেন, ‘আমরা ভালো খেলতে চাই।’ ২০২১ সালের অধিনায়ক তামিম ইকবালও এই ‘ভালো খেলতে চাওয়া’র বলয় থেকে বের হতে পারেননি।
ক্রিকেটে তিনটি ফল হবে—জয়, পরাজয় আর টাই। ‘ভালো খেলা’ বলতে কিছুর অস্তিত্বই নেই ক্রিকেট অভিধানে। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটার-সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ‘ভালো খেলা’ নামের দরিদ্র মানসিকতার ফলটি। এর স্বরূপটা কেমন?
আকরাম খানরা যখন খেলতেন ৫০ ওভার ব্যাটিং করা এবং প্রতিপক্ষের দুই-একজন তারকা ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলতে পারাটাই ছিল ‘ভালো খেলা’। আশরাফুল-হাবিবুলদের যুগে সেটি হয় ২০০–এর সামান্য বেশি রান তোলা কিংবা প্রতিপক্ষকে অলআউট করা। তামিম-সাকিবদের যুগে সেই মানদণ্ডটা উঠেছে ২৪০-২৫০ রান এবং সেই রান তুলতে সংগত কারণেই প্রতিপক্ষের ৫-৬ উইকেট নিতে হবে। কিংবা প্রতিপক্ষ ৩০০ করলে পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে সেই রানের যতটা সম্ভব কাছাকাছি যাওয়া। টি–টোয়েন্টির যুগে ২৪০-২৫০ রান যে বড় কোনো স্কোরই নয়! দর্শকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের ম্যাচ দেখতে পারলেই খুশি কিংবা হেরে যাওয়া ম্যাচে এক–দুজন ব্যাটসম্যান ৮০ বলে ৫৩ রান করেছে—সেটিকেই বিশাল কৃতিত্ব হিসেবে দেখানো হয়।
মূলত এখানেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান প্রজন্ম। জাভেদ ওমর বা খালেদ মাসুদ পাইলটরা ছিলেন টেস্টপূর্ব যুগের খেলোয়াড়, তামিম-সাকিবদের সঙ্গে তাদের মান ও মানসিকতার পার্থক্য সাদা চোখেই ধরা পড়ত। আর এখন সৌম্য-লিটন-মোসাদ্দেকদের প্রজন্ম সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে খুবই সামান্য ব্যবধানে। যেটি সাকিবদের তারকাখ্যাতির বিপরীতে সহজেই উপেক্ষণীয়।
মিঠুন বাদে উত্তরপ্রজন্মের ক্রিকেটেরদের প্রত্যেকেই পূর্বসূরিদের তুলনায় এগিয়ে। তবু এটা যথেষ্ট নয়, যেহেতু বাংলাদেশ এখন হোম কন্ডিশনে জেতে (বিশেষ করে ওয়ানডেতে)। উত্তরপ্রজন্ম যে ২৮০ রানকে মানদণ্ড ধরবে সেই সুযোগ কোথায়? এমনকি আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডের মতো পেছনের সারির দলেও টপ অর্ডারে স্ট্রোকমেকার থাকেন। তাঁরা নির্ভীক ব্যাটিং করেন, তাঁদের হারানোর কিছু নেই! শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গেও একই কথা প্রযোজ্য।
আমাদের ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক খেলতে গিয়ে আউট হলে ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক, বোর্ড সভাপতি, ফেসবুক দর্শকেরা সম্মিলিতভাবে বলে ওঠেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট’! যে কারণে স্বার্থপর ব্যাটিং (যেমন ৯০ বলে ৬২ রান) করে একটা ফিফটি তোলাটাই দায়িত্বশীল ব্যাটিং বলে গণ্য হয়। সাকিব বাদে দেশের বাকি তিন তারকা ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকের স্ট্রাইকরেট ৮০–এর নিচে—এই তথ্যটিই বলে দেয় স্বার্থপর ব্যাটিং দিয়ে দলে টিকে থাকার নীতি কীভাবে জেঁকে বসে আছে! প্রথম ছয়টা ব্যাটিং পজিশনের চারটাই ‘অটোমেটিক চয়েস’। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো বাকি দুই পজিশন নিয়ে লড়াই চলে। এ সময়ে সবচেয়ে সমালোচিত লিটন দাস আর সৌম্য সরকার—দুজন একসঙ্গে ওপেন করেছেন মাত্র একবার।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়। নিয়মিত ওপেনার রোশান মহানামা আর গুরুসিংহে ওপেনিং পজিশন থেকে নিচে নেমে গিয়েছিলেন বিস্ফোরক জয়াসুরিয়া আর কালুভিতারানাকে জায়গা করে দিতে। এমনকি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম জুটি শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলীর জুটি ভেঙেছিলেন। সৌরভ নিচে নেমেছিলেন বিস্ফোরক শেবাগকে জায়গা করে দিতে। গত ১৫ বছরে যত ওপেনার ওয়ানডে খেলেছেন, এর মধ্যে তামিমের স্ট্রাইকরেট সর্বনিম্ন। তবু তিনি কি ওপেনিং স্লটে দুজন স্ট্রোকমেকার (সৌম্য-লিটনের জায়গায় অন্য যে কেউও হতে পারে) কে জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজে তিন বা চারে নামার কথা চিন্তা করেছেন কখনো?
বিশ্বের যেকোনো মাঠে, বাংলাদেশ আগে অথবা পরে যখনই ব্যাটিং করুক, তামিমের একটাই ভাবনা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করা! এই ভাবনায় হয়তো নিজের পরিসংখ্যান সমৃদ্ধ হয়, দল কতটা ধারাবাহিক সফল হচ্ছে? একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই—২০১৫ সালের পরে বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৭০ রানের বেশি তাড়া করা ম্যাচের একটিতেও তামিম-মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহর ৮০ স্ট্রাইকরেট বা ফিফটি নেই। একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮৬ তাড়া করা। যদিও সেটিতে তিনজনের ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি তাঁরা জেতার চেষ্টা করছেন!
ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পাওয়ার প্লের দারুণ ব্যবহারে ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে আনা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটই যে মোমেন্টাম–নির্ভর। গত ছয় বছরে এই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান সংগ্রহের হার সর্বনিম্ন (গড়ে ৩৯)। গত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল সৌম্য সরকার শুরুতে লুঙ্গি এনগিডি আর কাগিসো রাবাদাকে আক্রমণ করায়। সেই কৃতিত্ব কি সৌম্যকে দেওয়া হয়েছে সেভাবে?
ধরা যাক, সৌম্য বা যেকোনো স্ট্রোকমেকার ওপেনার প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই আউট হলেন। তাতে সমস্যাটা কী, যদি তাঁরা পাঁচ ওভারে ৩০ রান তুলে দিতে পারেন। যদি টানা ১০ ম্যাচেই তাঁরা না পারেন, অন্য স্ট্রোকমেকার এনে চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু শুরু থেকেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করে আসলে প্রাপ্তিটা কী?
জিম্বাবুইয়ে বা নিচের সারির দলের বিপক্ষে জিততে অনেক মেহনতের প্রয়োজন নেই। আবার শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ২৫০ রানের মানসিকতা নিয়ে খেলে যে কিছুই সম্ভব নয়, তা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তাহলে উপায়টা কী?
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশের জয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেছিলাম। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সত্য, বাংলাদেশের জয়গুলোর ৭০ ভাগই প্রতিপক্ষের হঠাৎ ব্যাটিংধসের কারণে। যদি কোনোভাবে প্রতিপক্ষ ২৭০ রান তুলতে পারে, অনেকটা চোখ বন্ধ করে বলা যায় সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারবে। শক্তিশালী দলের ব্যাটিংয়ে ধস হয় মাঝেমধ্যে, বাংলাদেশেরও তাই জেতা হয় না নিয়মিত।
বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টিতে এখন যতটা বাজে খেলছে, এর চেয়ে বাজে খেলা অসম্ভব! সেখানে তারকা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে আফিফ বা শেখ মেহেদীকে অধিনায়ক করে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করে দুই-তিনটা সিরিজেও কি চেষ্টা করা হয়েছে? তবু কিসের ভিত্তিতে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তরপ্রজন্ম ব্যর্থ?
প্রশ্ন হতে পারে, পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় মানে অনেক এগিয়ে থাকা ক্রিকেটার কেন পাচ্ছি না? সেই আলোচনা করতে গেলে পাতানো ম্যাচ, বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ বহু অপ্রিয় প্রসঙ্গ উঠে আসবে। সেসব ধামাচাপা দিতেই কি তারকা ক্রিকেটার বনাম তরুণ ক্রিকেটারদের এক জনপ্রিয় দ্বৈরথ বানিয়ে রাখা হয়েছে?
লেখক: লেখক ও মানব বিশ্লেষক
মাহফুজ সিদ্দিকি হিমালয়

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে। অথচ মাত্র দুই ইনিংস পরেই সেই মিঠুন একাদশের বাইরে—বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় যা অবিশ্বাস্য!
ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ ইনিংসের মধ্যে বিদেশের মাটিতে টেস্টে ১৫০+ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল না কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের। ২৫০–এর বেশি বল খেলার দৃষ্টান্তও কম (তামিম ইকবাল মাত্র দুবার, সাকিব আল হাসান একবার ও মুশফিক পাঁচবার)। নাজমুল হোসেন শান্ত সেই অসাধারণ কীর্তি (১২ ইনিংসের মধ্যে ১৫০+ রানের ইনিংস) করার পরও যতটা প্রশংসা; সেটির চেয়ে বেশি ট্রলিং, ব্যাটিং টেকনিকের সমালোচনার শিকারই বেশি হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
৪০ ম্যাচ খেলেছেন–এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট সৌম্য সরকারের। এই তালিকার দুইয়ে লিটন দাস। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর গত ২১ বছরে বাংলাদেশ শুধু একটি টুর্নামেন্টে (দ্বিপক্ষীয় সিরিজের বাইরে) শিরোপা জিততে পেরেছে, সেটি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ২৪ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২১০ রান। সৌম্যর ৪১ বলে ৬৬ আর শেষে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের সৌজন্যেই বাংলাদেশ প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতে। এই সাফল্যের পরও এই ব্যাটসম্যানরা একটু ব্যর্থ হলেই একের পর এক সমালোচনার তির ছুটে গেছে তাঁদের দিকে।
বাংলাদেশ মূলত ওয়ানডে সংস্করণে ভালো দল। টেস্ট আর টি–টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। গত ৩৫ বছরে খেলা ৩৮৫ ওয়ানডের ২৩৫টিই খেলেছে ওপরের সারির দলের বিপক্ষে, জিতেছে ৩৮ টি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের হার ১৬ শতাংশ। বাকি ১৫০টি আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য সহযোগী দলের বিপক্ষে। সেখানে জয় ৯৫ টি। শুধু জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭৫ ম্যাচ খেলে জয় ৪৭ টিতে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য কম, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। পরিসংখ্যানে আস্থা রেখেই বলতে হচ্ছে, নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে জয় পাওয়া থেকেই যাবতীয় মিথের সূত্রপাত। প্রশ্ন হলো, সামর্থ্য কম, এটা মেনে নিয়েই খেলা চালিয়ে যাব, নাকি সীমিত সামর্থ্য নিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখাব?
উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানকে সামনে আনা যায়। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা হারে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে। পরের পাঁচ বছরে তারা বাংলাদেশকে টি–টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে, ওয়ানডেতে দুবার হারিয়েছে। এমনকি নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের হোম কন্ডিশনে খেলতে এসেও দাপটের সঙ্গে হারিয়ে গেছে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশকে সেখানে স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে বাছাইপর্ব! শোনা যায়, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিকে প্রায়ই প্রস্তাব দেয় দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার। বিসিবি নিয়মিত আগ্রহ দেখায় না এই প্রস্তাবে। কারণ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে হারের ভয়টা বেশি থাকে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে রশিদ খান, মুজিব–উর–রহমানরা কতটা ‘আতঙ্কে’র নাম, সেটি দুই দলের সিরিজ এলেই দেখা যায়! দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম পর্যন্ত স্ট্রাইক নিতে চান না মুজিব ইনিংসের শুরুতে আক্রমণে এলে।
এই অল্প সময়ে কীভাবে আফগানিস্তান বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করল? আপনি তাদের যেকোনো ক্রিকেটারের কাছে শুনুন। বলবে, আমরা জিততে চাই! ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা সব ম্যাচে হেরেছে। তবু তাদের অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই!’ আমাদের কোচ-অধিনায়ক-বোর্ড কর্তাদের মুখে কখনো শুনেছেন এমন কথা? ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছিলেন, ‘আমরা ভালো খেলতে চাই।’ ২০২১ সালের অধিনায়ক তামিম ইকবালও এই ‘ভালো খেলতে চাওয়া’র বলয় থেকে বের হতে পারেননি।
ক্রিকেটে তিনটি ফল হবে—জয়, পরাজয় আর টাই। ‘ভালো খেলা’ বলতে কিছুর অস্তিত্বই নেই ক্রিকেট অভিধানে। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটার-সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ‘ভালো খেলা’ নামের দরিদ্র মানসিকতার ফলটি। এর স্বরূপটা কেমন?
আকরাম খানরা যখন খেলতেন ৫০ ওভার ব্যাটিং করা এবং প্রতিপক্ষের দুই-একজন তারকা ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলতে পারাটাই ছিল ‘ভালো খেলা’। আশরাফুল-হাবিবুলদের যুগে সেটি হয় ২০০–এর সামান্য বেশি রান তোলা কিংবা প্রতিপক্ষকে অলআউট করা। তামিম-সাকিবদের যুগে সেই মানদণ্ডটা উঠেছে ২৪০-২৫০ রান এবং সেই রান তুলতে সংগত কারণেই প্রতিপক্ষের ৫-৬ উইকেট নিতে হবে। কিংবা প্রতিপক্ষ ৩০০ করলে পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে সেই রানের যতটা সম্ভব কাছাকাছি যাওয়া। টি–টোয়েন্টির যুগে ২৪০-২৫০ রান যে বড় কোনো স্কোরই নয়! দর্শকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের ম্যাচ দেখতে পারলেই খুশি কিংবা হেরে যাওয়া ম্যাচে এক–দুজন ব্যাটসম্যান ৮০ বলে ৫৩ রান করেছে—সেটিকেই বিশাল কৃতিত্ব হিসেবে দেখানো হয়।
মূলত এখানেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান প্রজন্ম। জাভেদ ওমর বা খালেদ মাসুদ পাইলটরা ছিলেন টেস্টপূর্ব যুগের খেলোয়াড়, তামিম-সাকিবদের সঙ্গে তাদের মান ও মানসিকতার পার্থক্য সাদা চোখেই ধরা পড়ত। আর এখন সৌম্য-লিটন-মোসাদ্দেকদের প্রজন্ম সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে খুবই সামান্য ব্যবধানে। যেটি সাকিবদের তারকাখ্যাতির বিপরীতে সহজেই উপেক্ষণীয়।
মিঠুন বাদে উত্তরপ্রজন্মের ক্রিকেটেরদের প্রত্যেকেই পূর্বসূরিদের তুলনায় এগিয়ে। তবু এটা যথেষ্ট নয়, যেহেতু বাংলাদেশ এখন হোম কন্ডিশনে জেতে (বিশেষ করে ওয়ানডেতে)। উত্তরপ্রজন্ম যে ২৮০ রানকে মানদণ্ড ধরবে সেই সুযোগ কোথায়? এমনকি আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডের মতো পেছনের সারির দলেও টপ অর্ডারে স্ট্রোকমেকার থাকেন। তাঁরা নির্ভীক ব্যাটিং করেন, তাঁদের হারানোর কিছু নেই! শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গেও একই কথা প্রযোজ্য।
আমাদের ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক খেলতে গিয়ে আউট হলে ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক, বোর্ড সভাপতি, ফেসবুক দর্শকেরা সম্মিলিতভাবে বলে ওঠেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট’! যে কারণে স্বার্থপর ব্যাটিং (যেমন ৯০ বলে ৬২ রান) করে একটা ফিফটি তোলাটাই দায়িত্বশীল ব্যাটিং বলে গণ্য হয়। সাকিব বাদে দেশের বাকি তিন তারকা ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকের স্ট্রাইকরেট ৮০–এর নিচে—এই তথ্যটিই বলে দেয় স্বার্থপর ব্যাটিং দিয়ে দলে টিকে থাকার নীতি কীভাবে জেঁকে বসে আছে! প্রথম ছয়টা ব্যাটিং পজিশনের চারটাই ‘অটোমেটিক চয়েস’। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো বাকি দুই পজিশন নিয়ে লড়াই চলে। এ সময়ে সবচেয়ে সমালোচিত লিটন দাস আর সৌম্য সরকার—দুজন একসঙ্গে ওপেন করেছেন মাত্র একবার।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়। নিয়মিত ওপেনার রোশান মহানামা আর গুরুসিংহে ওপেনিং পজিশন থেকে নিচে নেমে গিয়েছিলেন বিস্ফোরক জয়াসুরিয়া আর কালুভিতারানাকে জায়গা করে দিতে। এমনকি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম জুটি শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলীর জুটি ভেঙেছিলেন। সৌরভ নিচে নেমেছিলেন বিস্ফোরক শেবাগকে জায়গা করে দিতে। গত ১৫ বছরে যত ওপেনার ওয়ানডে খেলেছেন, এর মধ্যে তামিমের স্ট্রাইকরেট সর্বনিম্ন। তবু তিনি কি ওপেনিং স্লটে দুজন স্ট্রোকমেকার (সৌম্য-লিটনের জায়গায় অন্য যে কেউও হতে পারে) কে জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজে তিন বা চারে নামার কথা চিন্তা করেছেন কখনো?
বিশ্বের যেকোনো মাঠে, বাংলাদেশ আগে অথবা পরে যখনই ব্যাটিং করুক, তামিমের একটাই ভাবনা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করা! এই ভাবনায় হয়তো নিজের পরিসংখ্যান সমৃদ্ধ হয়, দল কতটা ধারাবাহিক সফল হচ্ছে? একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই—২০১৫ সালের পরে বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৭০ রানের বেশি তাড়া করা ম্যাচের একটিতেও তামিম-মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহর ৮০ স্ট্রাইকরেট বা ফিফটি নেই। একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮৬ তাড়া করা। যদিও সেটিতে তিনজনের ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি তাঁরা জেতার চেষ্টা করছেন!
ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পাওয়ার প্লের দারুণ ব্যবহারে ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে আনা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটই যে মোমেন্টাম–নির্ভর। গত ছয় বছরে এই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান সংগ্রহের হার সর্বনিম্ন (গড়ে ৩৯)। গত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল সৌম্য সরকার শুরুতে লুঙ্গি এনগিডি আর কাগিসো রাবাদাকে আক্রমণ করায়। সেই কৃতিত্ব কি সৌম্যকে দেওয়া হয়েছে সেভাবে?
ধরা যাক, সৌম্য বা যেকোনো স্ট্রোকমেকার ওপেনার প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই আউট হলেন। তাতে সমস্যাটা কী, যদি তাঁরা পাঁচ ওভারে ৩০ রান তুলে দিতে পারেন। যদি টানা ১০ ম্যাচেই তাঁরা না পারেন, অন্য স্ট্রোকমেকার এনে চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু শুরু থেকেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করে আসলে প্রাপ্তিটা কী?
জিম্বাবুইয়ে বা নিচের সারির দলের বিপক্ষে জিততে অনেক মেহনতের প্রয়োজন নেই। আবার শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ২৫০ রানের মানসিকতা নিয়ে খেলে যে কিছুই সম্ভব নয়, তা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তাহলে উপায়টা কী?
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশের জয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেছিলাম। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সত্য, বাংলাদেশের জয়গুলোর ৭০ ভাগই প্রতিপক্ষের হঠাৎ ব্যাটিংধসের কারণে। যদি কোনোভাবে প্রতিপক্ষ ২৭০ রান তুলতে পারে, অনেকটা চোখ বন্ধ করে বলা যায় সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারবে। শক্তিশালী দলের ব্যাটিংয়ে ধস হয় মাঝেমধ্যে, বাংলাদেশেরও তাই জেতা হয় না নিয়মিত।
বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টিতে এখন যতটা বাজে খেলছে, এর চেয়ে বাজে খেলা অসম্ভব! সেখানে তারকা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে আফিফ বা শেখ মেহেদীকে অধিনায়ক করে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করে দুই-তিনটা সিরিজেও কি চেষ্টা করা হয়েছে? তবু কিসের ভিত্তিতে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তরপ্রজন্ম ব্যর্থ?
প্রশ্ন হতে পারে, পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় মানে অনেক এগিয়ে থাকা ক্রিকেটার কেন পাচ্ছি না? সেই আলোচনা করতে গেলে পাতানো ম্যাচ, বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ বহু অপ্রিয় প্রসঙ্গ উঠে আসবে। সেসব ধামাচাপা দিতেই কি তারকা ক্রিকেটার বনাম তরুণ ক্রিকেটারদের এক জনপ্রিয় দ্বৈরথ বানিয়ে রাখা হয়েছে?
লেখক: লেখক ও মানব বিশ্লেষক

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে। অথচ মাত্র দুই ইনিংস পরেই সেই মিঠুন একাদশের বাইরে—বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় যা অবিশ্বাস্য!
ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ ইনিংসের মধ্যে বিদেশের মাটিতে টেস্টে ১৫০+ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল না কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের। ২৫০–এর বেশি বল খেলার দৃষ্টান্তও কম (তামিম ইকবাল মাত্র দুবার, সাকিব আল হাসান একবার ও মুশফিক পাঁচবার)। নাজমুল হোসেন শান্ত সেই অসাধারণ কীর্তি (১২ ইনিংসের মধ্যে ১৫০+ রানের ইনিংস) করার পরও যতটা প্রশংসা; সেটির চেয়ে বেশি ট্রলিং, ব্যাটিং টেকনিকের সমালোচনার শিকারই বেশি হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
৪০ ম্যাচ খেলেছেন–এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট সৌম্য সরকারের। এই তালিকার দুইয়ে লিটন দাস। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর গত ২১ বছরে বাংলাদেশ শুধু একটি টুর্নামেন্টে (দ্বিপক্ষীয় সিরিজের বাইরে) শিরোপা জিততে পেরেছে, সেটি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ২৪ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২১০ রান। সৌম্যর ৪১ বলে ৬৬ আর শেষে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের সৌজন্যেই বাংলাদেশ প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতে। এই সাফল্যের পরও এই ব্যাটসম্যানরা একটু ব্যর্থ হলেই একের পর এক সমালোচনার তির ছুটে গেছে তাঁদের দিকে।
বাংলাদেশ মূলত ওয়ানডে সংস্করণে ভালো দল। টেস্ট আর টি–টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। গত ৩৫ বছরে খেলা ৩৮৫ ওয়ানডের ২৩৫টিই খেলেছে ওপরের সারির দলের বিপক্ষে, জিতেছে ৩৮ টি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের হার ১৬ শতাংশ। বাকি ১৫০টি আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য সহযোগী দলের বিপক্ষে। সেখানে জয় ৯৫ টি। শুধু জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭৫ ম্যাচ খেলে জয় ৪৭ টিতে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য কম, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। পরিসংখ্যানে আস্থা রেখেই বলতে হচ্ছে, নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে জয় পাওয়া থেকেই যাবতীয় মিথের সূত্রপাত। প্রশ্ন হলো, সামর্থ্য কম, এটা মেনে নিয়েই খেলা চালিয়ে যাব, নাকি সীমিত সামর্থ্য নিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখাব?
উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানকে সামনে আনা যায়। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা হারে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে। পরের পাঁচ বছরে তারা বাংলাদেশকে টি–টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে, ওয়ানডেতে দুবার হারিয়েছে। এমনকি নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের হোম কন্ডিশনে খেলতে এসেও দাপটের সঙ্গে হারিয়ে গেছে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশকে সেখানে স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে বাছাইপর্ব! শোনা যায়, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিকে প্রায়ই প্রস্তাব দেয় দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার। বিসিবি নিয়মিত আগ্রহ দেখায় না এই প্রস্তাবে। কারণ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে হারের ভয়টা বেশি থাকে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে রশিদ খান, মুজিব–উর–রহমানরা কতটা ‘আতঙ্কে’র নাম, সেটি দুই দলের সিরিজ এলেই দেখা যায়! দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম পর্যন্ত স্ট্রাইক নিতে চান না মুজিব ইনিংসের শুরুতে আক্রমণে এলে।
এই অল্প সময়ে কীভাবে আফগানিস্তান বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করল? আপনি তাদের যেকোনো ক্রিকেটারের কাছে শুনুন। বলবে, আমরা জিততে চাই! ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা সব ম্যাচে হেরেছে। তবু তাদের অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই!’ আমাদের কোচ-অধিনায়ক-বোর্ড কর্তাদের মুখে কখনো শুনেছেন এমন কথা? ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছিলেন, ‘আমরা ভালো খেলতে চাই।’ ২০২১ সালের অধিনায়ক তামিম ইকবালও এই ‘ভালো খেলতে চাওয়া’র বলয় থেকে বের হতে পারেননি।
ক্রিকেটে তিনটি ফল হবে—জয়, পরাজয় আর টাই। ‘ভালো খেলা’ বলতে কিছুর অস্তিত্বই নেই ক্রিকেট অভিধানে। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটার-সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ‘ভালো খেলা’ নামের দরিদ্র মানসিকতার ফলটি। এর স্বরূপটা কেমন?
আকরাম খানরা যখন খেলতেন ৫০ ওভার ব্যাটিং করা এবং প্রতিপক্ষের দুই-একজন তারকা ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলতে পারাটাই ছিল ‘ভালো খেলা’। আশরাফুল-হাবিবুলদের যুগে সেটি হয় ২০০–এর সামান্য বেশি রান তোলা কিংবা প্রতিপক্ষকে অলআউট করা। তামিম-সাকিবদের যুগে সেই মানদণ্ডটা উঠেছে ২৪০-২৫০ রান এবং সেই রান তুলতে সংগত কারণেই প্রতিপক্ষের ৫-৬ উইকেট নিতে হবে। কিংবা প্রতিপক্ষ ৩০০ করলে পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে সেই রানের যতটা সম্ভব কাছাকাছি যাওয়া। টি–টোয়েন্টির যুগে ২৪০-২৫০ রান যে বড় কোনো স্কোরই নয়! দর্শকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের ম্যাচ দেখতে পারলেই খুশি কিংবা হেরে যাওয়া ম্যাচে এক–দুজন ব্যাটসম্যান ৮০ বলে ৫৩ রান করেছে—সেটিকেই বিশাল কৃতিত্ব হিসেবে দেখানো হয়।
মূলত এখানেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান প্রজন্ম। জাভেদ ওমর বা খালেদ মাসুদ পাইলটরা ছিলেন টেস্টপূর্ব যুগের খেলোয়াড়, তামিম-সাকিবদের সঙ্গে তাদের মান ও মানসিকতার পার্থক্য সাদা চোখেই ধরা পড়ত। আর এখন সৌম্য-লিটন-মোসাদ্দেকদের প্রজন্ম সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে খুবই সামান্য ব্যবধানে। যেটি সাকিবদের তারকাখ্যাতির বিপরীতে সহজেই উপেক্ষণীয়।
মিঠুন বাদে উত্তরপ্রজন্মের ক্রিকেটেরদের প্রত্যেকেই পূর্বসূরিদের তুলনায় এগিয়ে। তবু এটা যথেষ্ট নয়, যেহেতু বাংলাদেশ এখন হোম কন্ডিশনে জেতে (বিশেষ করে ওয়ানডেতে)। উত্তরপ্রজন্ম যে ২৮০ রানকে মানদণ্ড ধরবে সেই সুযোগ কোথায়? এমনকি আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডের মতো পেছনের সারির দলেও টপ অর্ডারে স্ট্রোকমেকার থাকেন। তাঁরা নির্ভীক ব্যাটিং করেন, তাঁদের হারানোর কিছু নেই! শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গেও একই কথা প্রযোজ্য।
আমাদের ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক খেলতে গিয়ে আউট হলে ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক, বোর্ড সভাপতি, ফেসবুক দর্শকেরা সম্মিলিতভাবে বলে ওঠেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট’! যে কারণে স্বার্থপর ব্যাটিং (যেমন ৯০ বলে ৬২ রান) করে একটা ফিফটি তোলাটাই দায়িত্বশীল ব্যাটিং বলে গণ্য হয়। সাকিব বাদে দেশের বাকি তিন তারকা ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকের স্ট্রাইকরেট ৮০–এর নিচে—এই তথ্যটিই বলে দেয় স্বার্থপর ব্যাটিং দিয়ে দলে টিকে থাকার নীতি কীভাবে জেঁকে বসে আছে! প্রথম ছয়টা ব্যাটিং পজিশনের চারটাই ‘অটোমেটিক চয়েস’। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো বাকি দুই পজিশন নিয়ে লড়াই চলে। এ সময়ে সবচেয়ে সমালোচিত লিটন দাস আর সৌম্য সরকার—দুজন একসঙ্গে ওপেন করেছেন মাত্র একবার।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়। নিয়মিত ওপেনার রোশান মহানামা আর গুরুসিংহে ওপেনিং পজিশন থেকে নিচে নেমে গিয়েছিলেন বিস্ফোরক জয়াসুরিয়া আর কালুভিতারানাকে জায়গা করে দিতে। এমনকি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম জুটি শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলীর জুটি ভেঙেছিলেন। সৌরভ নিচে নেমেছিলেন বিস্ফোরক শেবাগকে জায়গা করে দিতে। গত ১৫ বছরে যত ওপেনার ওয়ানডে খেলেছেন, এর মধ্যে তামিমের স্ট্রাইকরেট সর্বনিম্ন। তবু তিনি কি ওপেনিং স্লটে দুজন স্ট্রোকমেকার (সৌম্য-লিটনের জায়গায় অন্য যে কেউও হতে পারে) কে জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজে তিন বা চারে নামার কথা চিন্তা করেছেন কখনো?
বিশ্বের যেকোনো মাঠে, বাংলাদেশ আগে অথবা পরে যখনই ব্যাটিং করুক, তামিমের একটাই ভাবনা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করা! এই ভাবনায় হয়তো নিজের পরিসংখ্যান সমৃদ্ধ হয়, দল কতটা ধারাবাহিক সফল হচ্ছে? একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই—২০১৫ সালের পরে বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৭০ রানের বেশি তাড়া করা ম্যাচের একটিতেও তামিম-মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহর ৮০ স্ট্রাইকরেট বা ফিফটি নেই। একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮৬ তাড়া করা। যদিও সেটিতে তিনজনের ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি তাঁরা জেতার চেষ্টা করছেন!
ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পাওয়ার প্লের দারুণ ব্যবহারে ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে আনা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটই যে মোমেন্টাম–নির্ভর। গত ছয় বছরে এই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান সংগ্রহের হার সর্বনিম্ন (গড়ে ৩৯)। গত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল সৌম্য সরকার শুরুতে লুঙ্গি এনগিডি আর কাগিসো রাবাদাকে আক্রমণ করায়। সেই কৃতিত্ব কি সৌম্যকে দেওয়া হয়েছে সেভাবে?
ধরা যাক, সৌম্য বা যেকোনো স্ট্রোকমেকার ওপেনার প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই আউট হলেন। তাতে সমস্যাটা কী, যদি তাঁরা পাঁচ ওভারে ৩০ রান তুলে দিতে পারেন। যদি টানা ১০ ম্যাচেই তাঁরা না পারেন, অন্য স্ট্রোকমেকার এনে চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু শুরু থেকেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করে আসলে প্রাপ্তিটা কী?
জিম্বাবুইয়ে বা নিচের সারির দলের বিপক্ষে জিততে অনেক মেহনতের প্রয়োজন নেই। আবার শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ২৫০ রানের মানসিকতা নিয়ে খেলে যে কিছুই সম্ভব নয়, তা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তাহলে উপায়টা কী?
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশের জয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেছিলাম। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সত্য, বাংলাদেশের জয়গুলোর ৭০ ভাগই প্রতিপক্ষের হঠাৎ ব্যাটিংধসের কারণে। যদি কোনোভাবে প্রতিপক্ষ ২৭০ রান তুলতে পারে, অনেকটা চোখ বন্ধ করে বলা যায় সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারবে। শক্তিশালী দলের ব্যাটিংয়ে ধস হয় মাঝেমধ্যে, বাংলাদেশেরও তাই জেতা হয় না নিয়মিত।
বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টিতে এখন যতটা বাজে খেলছে, এর চেয়ে বাজে খেলা অসম্ভব! সেখানে তারকা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে আফিফ বা শেখ মেহেদীকে অধিনায়ক করে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করে দুই-তিনটা সিরিজেও কি চেষ্টা করা হয়েছে? তবু কিসের ভিত্তিতে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তরপ্রজন্ম ব্যর্থ?
প্রশ্ন হতে পারে, পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় মানে অনেক এগিয়ে থাকা ক্রিকেটার কেন পাচ্ছি না? সেই আলোচনা করতে গেলে পাতানো ম্যাচ, বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ বহু অপ্রিয় প্রসঙ্গ উঠে আসবে। সেসব ধামাচাপা দিতেই কি তারকা ক্রিকেটার বনাম তরুণ ক্রিকেটারদের এক জনপ্রিয় দ্বৈরথ বানিয়ে রাখা হয়েছে?
লেখক: লেখক ও মানব বিশ্লেষক

জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
২৬ মিনিট আগে
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি
১ ঘণ্টা আগে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা...
১ ঘণ্টা আগে
টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
২ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
খুলনার জয়ের নায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব। পার্টটাইম বোলিংয়ে বরিশালের ব্যাটিং লাইনে ধস নামান তিনি। আগে ব্যাট করে ৩১৩ রান তোলে খুলনা। জবাব ১২৬ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। তাদের গুটিয়ে দেওয়ার পথে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেন আফিফ। ফলোঅনে পড়ে আবার ব্যাট করতে নেমে ২২৪ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। এ যাত্রায় ২ উইকেট নেন আফিফ। ৩৮ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় খুলনার সামনে। ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। দুই ইনিংস মিলে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন আফিফ।
চট্টগ্রামের দেওয়া ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষ রাজশাহীর সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২১৯ রান। ৬ উইকেট হাতে রেখে শেষদিনে আরও ২৬৪ রান করতে হবে পদ্মাপাড়ের দলটিকে। এই অবস্থা থেকে তাদের ম্যাচ হারের সম্ভাবনা বেশি। কিছুটা আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন প্রিতম কুমার ও মেহরব হাসান। দুজনই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। প্রিতম ৫৬ ও মেহরব ৫৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাট করতে নামবেন।
ড্রয়ের পথে এগোচ্ছে সিলেট–ময়মনসিংহ ও ঢাকা–রংপুরের ম্যাচ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ৪০১ রান করে নাবগত ময়মনসিংহ। জবাবে ৪৮৯ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৮ রান করেছে ময়মনসিংহ। ৩০ রানে পিছিয়ে তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই দলের ২০ উইকেট হাতে থাকায় ম্যাচটিতে ফল না হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। রংপুরের বিপক্ষে ৭৫ রানের লিড নিয়েছে ঢাকা। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করেছে তারা। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এই ম্যাচেও ফল আসবে না।

জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
খুলনার জয়ের নায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব। পার্টটাইম বোলিংয়ে বরিশালের ব্যাটিং লাইনে ধস নামান তিনি। আগে ব্যাট করে ৩১৩ রান তোলে খুলনা। জবাব ১২৬ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। তাদের গুটিয়ে দেওয়ার পথে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেন আফিফ। ফলোঅনে পড়ে আবার ব্যাট করতে নেমে ২২৪ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। এ যাত্রায় ২ উইকেট নেন আফিফ। ৩৮ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় খুলনার সামনে। ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। দুই ইনিংস মিলে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন আফিফ।
চট্টগ্রামের দেওয়া ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষ রাজশাহীর সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২১৯ রান। ৬ উইকেট হাতে রেখে শেষদিনে আরও ২৬৪ রান করতে হবে পদ্মাপাড়ের দলটিকে। এই অবস্থা থেকে তাদের ম্যাচ হারের সম্ভাবনা বেশি। কিছুটা আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন প্রিতম কুমার ও মেহরব হাসান। দুজনই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। প্রিতম ৫৬ ও মেহরব ৫৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাট করতে নামবেন।
ড্রয়ের পথে এগোচ্ছে সিলেট–ময়মনসিংহ ও ঢাকা–রংপুরের ম্যাচ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ৪০১ রান করে নাবগত ময়মনসিংহ। জবাবে ৪৮৯ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৮ রান করেছে ময়মনসিংহ। ৩০ রানে পিছিয়ে তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই দলের ২০ উইকেট হাতে থাকায় ম্যাচটিতে ফল না হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। রংপুরের বিপক্ষে ৭৫ রানের লিড নিয়েছে ঢাকা। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করেছে তারা। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এই ম্যাচেও ফল আসবে না।

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে।
১৫ জুলাই ২০২১
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি
১ ঘণ্টা আগে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা...
১ ঘণ্টা আগে
টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
২ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন চট্টগ্রামে খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ। একাদশে আছেন তিন স্পিনার খারি পিয়ের, আকিল হোসেন ও রস্টন চেজ। যাঁদের মধ্যে চেজ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। পেস বোলিং আক্রমণে দুই অলরাউন্ডার শারফেন রাদারফোর্ড ও রোমারিও শেফার্ডের সঙ্গে আছেন জেইডেন সিলস। হোপ একই সঙ্গে অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন।
হোপের মতো লিটনও একই সঙ্গে অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। দুই স্পিনার ও তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। পেস আক্রমণে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ। লেগস্পিনার রিশাদের সঙ্গে স্পিন বোলিং লাইনআপে আছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও সাইফ হাসানও খন্ডকালীন স্পিনার হিসেবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে প্রতিশোধের সিরিজ। গতবার উইন্ডিজ নিজেদের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশের কাছে। সেবার বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিটন। এবার তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন অধিনায়ক হয়েই। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ২৯ ও ৩১ অক্টোবর হবে চট্টগ্রামে।
বাংলাদেশ দল
লিটন দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল
শাই হোপ (অধিনায়ক), অ্যালিক অ্যাথানেজ, রস্টন চেজ, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন, ব্র্যান্ডন কিং, রভম্যান পাওয়েল, শারফেন রাদারফোর্ড, রোমারিও শেফার্ড, খ্যারি পিয়ের, জেইডেন সিলস

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন চট্টগ্রামে খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ। একাদশে আছেন তিন স্পিনার খারি পিয়ের, আকিল হোসেন ও রস্টন চেজ। যাঁদের মধ্যে চেজ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। পেস বোলিং আক্রমণে দুই অলরাউন্ডার শারফেন রাদারফোর্ড ও রোমারিও শেফার্ডের সঙ্গে আছেন জেইডেন সিলস। হোপ একই সঙ্গে অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন।
হোপের মতো লিটনও একই সঙ্গে অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। দুই স্পিনার ও তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। পেস আক্রমণে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ। লেগস্পিনার রিশাদের সঙ্গে স্পিন বোলিং লাইনআপে আছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও সাইফ হাসানও খন্ডকালীন স্পিনার হিসেবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে প্রতিশোধের সিরিজ। গতবার উইন্ডিজ নিজেদের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশের কাছে। সেবার বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিটন। এবার তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন অধিনায়ক হয়েই। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ২৯ ও ৩১ অক্টোবর হবে চট্টগ্রামে।
বাংলাদেশ দল
লিটন দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল
শাই হোপ (অধিনায়ক), অ্যালিক অ্যাথানেজ, রস্টন চেজ, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন, ব্র্যান্ডন কিং, রভম্যান পাওয়েল, শারফেন রাদারফোর্ড, রোমারিও শেফার্ড, খ্যারি পিয়ের, জেইডেন সিলস

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে।
১৫ জুলাই ২০২১
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
২৬ মিনিট আগে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা...
১ ঘণ্টা আগে
টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
২ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা ক্রিকেটার।
ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য আজ ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএ)। এই সিরিজ দিয়ে বাভুমা টেস্টে ফিরছেন অধিনায়ক হয়েই। বাভুমার নেতৃত্বাধীন দলে ব্যাটিং লাইনআপে থাকছেন এইডেন মার্করাম, রায়ান রিকেলটন, ত্রিস্তান স্টাবস, কাইল ভেরেইন, ডেওয়াল্ড ব্রেভিসরা। যাঁদের মধ্যে রিকেলটন ও ভেরেইন উইকেটরক্ষক ব্যাটার। স্পিন আক্রমণে আছেন কেশব মহারাজ, সাইমন হারমার, সেনুরান মুথুসামিদের সঙ্গে থাকছেন জু্বাইর হামজা। সবশেষ হামজা টেস্ট খেলেছেন ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিলটনে।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে পেস আক্রমণে আছেন কাগিসো রাবাদা, করবিন বশ ও মার্কো ইয়ানসেন। যাঁদের মধ্যে বশ ও ইয়ানসেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। সবশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হারমার প্রোটিয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন। এই সিরিজে মুথুসামি, মহারাজ ও রাবাদা পেয়েছিলেন ১১, ৯ ও ৪ উইকেট। এই চার তারকা ক্রিকেটার যখন ভারত সিরিজের দলে আছেন, বোঝাই যাচ্ছে প্রোটিয়াদের দল কতটা শক্তিশালী।
বাভুমার নেতৃত্বেই এ বছরের জুনে ২০২৩-২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়ারা সেবার অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল ৫ উইকেটে। চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা এরপর চারটি টেস্ট খেলেছে তিন ভিন্ন অধিনায়কের অধীনে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রোটিয়াদের অধিনায়ক ছিলেন মহারাজ ও উইয়ান মুল্ডার। সবশেষ পাকিস্তান সিরিজে প্রোটিয়াদের নেতৃত্ব দিয়েছেন মার্করাম। পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়।
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ১৪ নভেম্বর। কলকাতায় হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ২২ নভেম্বর শুরু হবে গুয়াহাটিতে। টেস্ট সিরিজ শেষে সাদা বলের সিরিজ খেলবে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ওয়ানডে ও পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দল
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), এইডেন মার্করাম, রায়ান রিকেলটন, ট্রিস্টান স্টাবস, কাইল ভেরেইন, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, জুবায়ের হামজা, টনি ডি জর্জি, করবিন বশ, উইয়ান মুল্ডার, মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ, সেনুরান মুথুসামি, কাগিসো রাবাদা, সায়মন হারমার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা ক্রিকেটার।
ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য আজ ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএ)। এই সিরিজ দিয়ে বাভুমা টেস্টে ফিরছেন অধিনায়ক হয়েই। বাভুমার নেতৃত্বাধীন দলে ব্যাটিং লাইনআপে থাকছেন এইডেন মার্করাম, রায়ান রিকেলটন, ত্রিস্তান স্টাবস, কাইল ভেরেইন, ডেওয়াল্ড ব্রেভিসরা। যাঁদের মধ্যে রিকেলটন ও ভেরেইন উইকেটরক্ষক ব্যাটার। স্পিন আক্রমণে আছেন কেশব মহারাজ, সাইমন হারমার, সেনুরান মুথুসামিদের সঙ্গে থাকছেন জু্বাইর হামজা। সবশেষ হামজা টেস্ট খেলেছেন ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিলটনে।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে পেস আক্রমণে আছেন কাগিসো রাবাদা, করবিন বশ ও মার্কো ইয়ানসেন। যাঁদের মধ্যে বশ ও ইয়ানসেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। সবশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হারমার প্রোটিয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন। এই সিরিজে মুথুসামি, মহারাজ ও রাবাদা পেয়েছিলেন ১১, ৯ ও ৪ উইকেট। এই চার তারকা ক্রিকেটার যখন ভারত সিরিজের দলে আছেন, বোঝাই যাচ্ছে প্রোটিয়াদের দল কতটা শক্তিশালী।
বাভুমার নেতৃত্বেই এ বছরের জুনে ২০২৩-২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়ারা সেবার অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল ৫ উইকেটে। চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা এরপর চারটি টেস্ট খেলেছে তিন ভিন্ন অধিনায়কের অধীনে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রোটিয়াদের অধিনায়ক ছিলেন মহারাজ ও উইয়ান মুল্ডার। সবশেষ পাকিস্তান সিরিজে প্রোটিয়াদের নেতৃত্ব দিয়েছেন মার্করাম। পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়।
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ১৪ নভেম্বর। কলকাতায় হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ২২ নভেম্বর শুরু হবে গুয়াহাটিতে। টেস্ট সিরিজ শেষে সাদা বলের সিরিজ খেলবে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ওয়ানডে ও পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দল
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), এইডেন মার্করাম, রায়ান রিকেলটন, ট্রিস্টান স্টাবস, কাইল ভেরেইন, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, জুবায়ের হামজা, টনি ডি জর্জি, করবিন বশ, উইয়ান মুল্ডার, মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ, সেনুরান মুথুসামি, কাগিসো রাবাদা, সায়মন হারমার

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে।
১৫ জুলাই ২০২১
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
২৬ মিনিট আগে
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি
১ ঘণ্টা আগে
টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
২ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে রিয়াল ও বার্সা। স্বাগতিকদের জয়ের পথে কোনো গোল করতে না পারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ঝলক দেখান ভিনিসিয়ুস। সুযোগ পেলেই বল নিয়ে হানা দিয়েছেন সফরকারী রক্ষণে। জুড বেলিংহামের গোলে অবদানও আছে তাঁর। এরপরও পুরো ৯০ মিনিটে তাঁকে খেলাননি জাবি আলোনসো। ম্যাচের ৭২ মিনিটে ভিনিসিয়ুসকে তুলে রদ্রিগো গোজকে মাঠে নামান রিয়াল মাদ্রিদ। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননিন আক্রমণভাগের এই ফুটবলার।
মাঠেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন ভিনিসিয়ুস। এমনকি মাঠে ছেড়ে টানেলে হাঁটার পথে রিয়াল ছাড়ার কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। ভিনিসিয়ুস বলেন, ‘ আমি দল ছেড়ে যাচ্ছি, আমি চলে যাচ্ছি, আমি চলে যাব।’ দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরও মুখে হাসি দেখা যায়নি ভিনিসিয়ুসের। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল রিয়ালের অন্যান্য ফুটবলার এবং ম্যানেজমেন্টকে। যদিও ম্যাচ শেষে ভিনিসিয়ুসের রিয়াল ছাড়ার হুমকি গুরুত্বের সঙ্গে নেননি আলোনসো।
তিনি বলেন, ‘ভিনিসিয়ুসের সাথে আমার অনেক ভালো স্মৃতি আছে। আমি কী গুরুত্বপূর্ণ তা ভুলে যেতে চাই না। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করব। ভিনিসিয়ুস দারুণ পারফর্ম করেছে। বাকিরাও ভালো করেছে। তাই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। এটা ঠিক যে আমরা যেভাবে সুযোগ তৈরি করেছি তার তুলনায় জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। আমরা আপাতত এই জয়টা উপভোগ করব এবং পরে ভিনিসিয়ুসের সাথে কথা বলব।’
আলোনসো ভিনিসিয়ুসের হুমকি হালকাভাবে নিলেও এটা শঙ্কার কারণ হতে পারে রিয়ালের জন্য। গত মৌসুম থেকেই সৌদি প্রো লিগের একাধিক ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়ে আসছেন ভিনিসিয়ুস। গত কয়েক মাস ধরে স্প্যানিশ জায়ান্টদের সঙ্গে সম্পর্ক ফাটল ধরেছে ব্রাজিলিয়ান তারকার। শোনা যাচ্ছিল স্পেন ছেড়ে সৌদি আরব পাড়ি জমাবেন ভিনিসিয়ুস। মাঝে কিছুদিন থমকে থাকলেও হুমকি দিয়ে এবার রিয়াল ছাড়ার সম্ভাবনাকে নতুন করে উসকে দিলেন এই ফুটবলার।

টানা চারটি এল ক্লাসিকো হারার পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। লা লিগার সবচেয়ে জমজমাট দ্বৈরথে বার্সেলোনাকে ২–১ গোলে হারিয়েছে তারা। মাঠের খেলায় স্বস্তি ফিরলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ইস্যুতে চিন্তা ভর করেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। একটি ঘটনায় রীতিমতো রিয়াল ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে রিয়াল ও বার্সা। স্বাগতিকদের জয়ের পথে কোনো গোল করতে না পারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ঝলক দেখান ভিনিসিয়ুস। সুযোগ পেলেই বল নিয়ে হানা দিয়েছেন সফরকারী রক্ষণে। জুড বেলিংহামের গোলে অবদানও আছে তাঁর। এরপরও পুরো ৯০ মিনিটে তাঁকে খেলাননি জাবি আলোনসো। ম্যাচের ৭২ মিনিটে ভিনিসিয়ুসকে তুলে রদ্রিগো গোজকে মাঠে নামান রিয়াল মাদ্রিদ। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননিন আক্রমণভাগের এই ফুটবলার।
মাঠেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন ভিনিসিয়ুস। এমনকি মাঠে ছেড়ে টানেলে হাঁটার পথে রিয়াল ছাড়ার কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। ভিনিসিয়ুস বলেন, ‘ আমি দল ছেড়ে যাচ্ছি, আমি চলে যাচ্ছি, আমি চলে যাব।’ দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরও মুখে হাসি দেখা যায়নি ভিনিসিয়ুসের। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল রিয়ালের অন্যান্য ফুটবলার এবং ম্যানেজমেন্টকে। যদিও ম্যাচ শেষে ভিনিসিয়ুসের রিয়াল ছাড়ার হুমকি গুরুত্বের সঙ্গে নেননি আলোনসো।
তিনি বলেন, ‘ভিনিসিয়ুসের সাথে আমার অনেক ভালো স্মৃতি আছে। আমি কী গুরুত্বপূর্ণ তা ভুলে যেতে চাই না। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করব। ভিনিসিয়ুস দারুণ পারফর্ম করেছে। বাকিরাও ভালো করেছে। তাই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। এটা ঠিক যে আমরা যেভাবে সুযোগ তৈরি করেছি তার তুলনায় জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। আমরা আপাতত এই জয়টা উপভোগ করব এবং পরে ভিনিসিয়ুসের সাথে কথা বলব।’
আলোনসো ভিনিসিয়ুসের হুমকি হালকাভাবে নিলেও এটা শঙ্কার কারণ হতে পারে রিয়ালের জন্য। গত মৌসুম থেকেই সৌদি প্রো লিগের একাধিক ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়ে আসছেন ভিনিসিয়ুস। গত কয়েক মাস ধরে স্প্যানিশ জায়ান্টদের সঙ্গে সম্পর্ক ফাটল ধরেছে ব্রাজিলিয়ান তারকার। শোনা যাচ্ছিল স্পেন ছেড়ে সৌদি আরব পাড়ি জমাবেন ভিনিসিয়ুস। মাঝে কিছুদিন থমকে থাকলেও হুমকি দিয়ে এবার রিয়াল ছাড়ার সম্ভাবনাকে নতুন করে উসকে দিলেন এই ফুটবলার।

২৩ মার্চ ২০২১, নিউজিল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে। বাংলাদেশ শেষ ৫৭ বলে ৯৩ রান তোলে, যেটির পেছনে বড় অবদান মোহাম্মদ মিঠুনের ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৫৭ বলে ৭৩ রানের। সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, সবাই একমত হবেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধীর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে দলীয় রান অন্তত ২৫-৩০ কম হয়েছে।
১৫ জুলাই ২০২১
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন আসরে প্রথম জয়ের সাক্ষী হলো খুলনা। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিয়াউর রহমানের দল। তৃতীয় দিন শেষে রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে শাহাদাত হোসেন দিপুর চট্টগ্রাম।
২৬ মিনিট আগে
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু ঠিক তার পরের টি-টোয়েন্টিতেই একাদশে জায়গা পাননি জাকের। তাঁকে ছাড়া আজ চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি
১ ঘণ্টা আগে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন টেম্বা বাভুমা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবেই। কিন্তু টেস্ট সবশেষ খেলেছেন লর্ডসে এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবশেষে ভারত সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ফিরছেন এই তারকা...
১ ঘণ্টা আগে