Ajker Patrika

‘কুফা’ কিরিকোচো, মরা বিড়াল: ফুটবলে যত অভিশাপ

ক্রীড়া ডেস্ক
‘কুফা’ কিরিকোচো, মরা বিড়াল: ফুটবলে যত অভিশাপ

টাইব্রেকারে শেষ শটটি নিতে যাচ্ছেন বুকোয়া সাকা। ইতালির অধিনায়ক জর্জিও কিয়েল্লিনি তখনই দাবার বোর্ডে নতুন চালটা দিলেন। সাকাকে ‘অভিশাপ’ দিয়ে চিৎকার করে বললেন, ‘কিরিকোচো’! 

অভিশাপেই কি না কে জানে, পেনাল্টি ঠিকই মিস করেছেন সাকা! আর তাতেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো জিতেছে ইতালি।  কিরিকোচো একটি ফুটবলীয় অভিশাপ, যেটি ফুটবলাররা কয়েক দশক ধরে প্রতিপক্ষের দুভার্গ্য কামনায় বলে থাকেন। কিরিকোচোর পুরো নাম হুয়ান কার্লোস কিরিকোচো। ফুটবলভক্ত কিরিকোচোর অভিশাপ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার গল্পটি বেশ অদ্ভুত। ১৯৮০ দশকের দিকে আর্জেন্টাইন ক্লাব এস্তোদিয়ান্তেস দা লা প্লাটার একজন পাঁড় সমর্থক ছিলেন এই কিরিকোচো। নিয়মিত ক্লাবের অনুশীলন দেখতে আসতেন তিনি। ক্লাবের কোচ কার্লোস বিলার্দো খেয়াল করলেন যে, কিরিকোচো মাঠে এলেই দলের খেলোয়াড়েরা অদ্ভুত চোটে পড়েন। 

কিরিকোচোকে এরপর বিলার্দো ডেকে বললেন, তিনি যেন প্রতিপক্ষের অনুশীলেনর সময়ও উপস্থিত থাকেন, যাতে প্রতিপক্ষের ‘কুফা’ লাগে! সেটি কাজেও লেগেছিল। সেই থেকে ‘কিরিকোচো’ শব্দটা খেলোয়াড়েরা ব্যবহার করেন প্রতিপক্ষকে মানসিক চাপে ফেলতে। ফুটবলে অবশ্য এমন অভিশাপের গল্প একেবারেই কম নয়। 

গুটমানের অভিশাপ
প্রায় ৬০ বছর আগে বেলা গুটমানের দেওয়া একটি অভিশাপে আর ইউরোপিয়ান শিরোপা জেতা হয়নি বেনফিকার। কোচ গুটমানের অধীনে ১৯৬১ ও ১৯৬২ মৌসুমে টানা দুবার ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা জেতে বেনফিকা। সাফল্য এনে দেওয়ার পর তিনি ক্লাবকে বেতন বাড়াতে অনুরোধ করেন। কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। ক্ষুব্ধ হয়ে গুটমান ঘোষণা দেন, ‘আজ থেকে আগামী ১০০ বছরেও বেনফিকা আর কোনো ইউরোপিয়ান শিরোপা জিততে পারবে না।’ তাঁর এই অভিশাপেই কি না আর কখনো বেনফিকার ইউরোপীয় শিরোপা জেতা হয়নি। এমনকি এর মাঝে আটবার তারা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছে। কিন্তু গুটমানের সেই অভিশাপই যেন লেগে গেছে, শিরোপাজয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বারবার!   

১৯৬২ সালের পর ইউরোপিয়ান শিরোপা জিততে পারেনি বেনফিকাআগেই শিরোপা ছোঁয়া
ফাইনাল শুরুর আগে কাপ ছুঁয়ে দেখাটাও অভিশাপ বা দুর্ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। সাম্প্রতিক সময়েই এই ঘটনার একাধিক উদাহরণ পাওয়া গেছে। ২০০৪ সালে লুডোভিক গিলি, ২০০৫ সালে গেন্নারো গাত্তুসো ও ২০১২ সালে অ্যানাতোলি তাইমোশচুকের সঙ্গে এমনটা ঘটেছে। তাঁরা তিনজনই ফাইনাল ম্যাচের আগে শিরোপা ছুঁয়ে দেখেছেন এবং প্রত্যেকেই ফাইনালে হেরেছেন!

মৃত বিড়াল
১৯৬৭ সালে আর্জেন্টাইন ক্লাব রেসিং ইন্টারকন্টিনেন্টাল শিরোপা জিতে উদ্‌যাপনে মেতে ছিল। এই সুযোগে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইন্দিপিন্দিয়ান্তের সমর্থকেরা রেসিংয়ের মাঠে গিয়ে সাতটি মৃত বিড়াল কবর দিয়ে আসেন! এরপরই শুরু হয় এক অভিশপ্ত গল্প। ১৯৮৩ সালে অবনমন ঘটে রেসিংয়ের। ১৯৯৮ সালে ক্লাবটি নিজেদের দেউলিয়া পর্যন্ত ঘোষণা করে! ২০০১ সালে রেসিংয়ের ভাগ্য বদলে দেন কোচ রেইনালদো মের্লো। তিনি এসেই নির্দেশ দেন বিড়ালগুলো খুঁজে বের করতে। পরে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী সেই বিড়ালগুলোর দেহাবশেষ খুঁজে বের করা হয়। এবং এরপর থেকেই রেসিংয়ের ভাগ্য খোলে। ১৯৬৭ সালের পর সেবারই প্রথম লিগ জেতে তারা। 

রামসি কার্স
আরেকটি অভিশাপ ‘র‍ামসি কার্স’। একটা সময় ছিল যখন সাবেক আর্সেনাল তারকা অ্যারন রামসি গোল করার পর বড় ব্যক্তিত্ব বা তারকা মারা যেতেন! এ তালিকায় আছেন স্টিভ জবস, হুইটনি হিউস্টন, ডেভিড বাওয়ি, অ্যালেন রিকম্যান, রজার মোর, ওসামা বিন লাদেন, এরিক ব্রিস্টোসহ অনেকেই! সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য এই অভিশাপটি সেভাবে ঘটতে দেখা যায়নি। হয়তো ‘রামসি কার্স’ তার সময় পার করেছে! 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত