Ajker Patrika

দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেড় দিনে গুঁড়িয়ে ভারতের ‘প্রতিশোধ’ 

আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ৫৮
দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেড় দিনে গুঁড়িয়ে ভারতের ‘প্রতিশোধ’ 

সেঞ্চুরিয়নে প্রথম টেস্ট হেরে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের সিরিজ জয়ের আশা শেষ সেখানেই। সুপারস্পোর্ট পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত প্রথম টেস্ট শেষ হয়ে যায় তিন দিনেই। কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে এবার দুই দিন পূর্ণ হওয়ার আগেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে ‘প্রতিশোধ’ নিল ভারত। ৭ উইকেটে জিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে শেষ করল ভারত। 

কেপটাউনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে ‘উইকেট বৃষ্টি’। দেড় দিনেই পড়েছে ৩৩ উইকেট। যার মধ্যে ২৩ উইকেট পড়েছে প্রথম দিনেই। গতকাল শুরু প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়েছে ৫৫ রানে। একই দিনে ভারত অলআউট হয়েছে  ১৫৩ রানে। একই দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ৬২ রানে দিন শেষ করেছিল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো প্রোটিয়ারা অলআউট হয়েছে ১৭৬ রানে। ৭৯ রানের লক্ষ্যে নামা ভারত শুরু থেকেই করে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। ৩৪ বলে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন যশস্বী জয়সওয়াল ও রোহিত শর্মা। ২৩ বলে ২৮ রান করা জয়সওয়ালকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নান্দ্রে বার্গার।   

জয়সওয়ালের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন শুবমান গিল। ১১ বলে ১০ রান করা গিলকে বোল্ড করেন কাগিসো রাবাদা। রাবাদা অবশ্য পেতে পারতেন আরও এক উইকেট। ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে রাবাদাকে পুল করতে যান রোহিত। ভারতীয় অধিনায়ক নিজেও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন এই ভেবে যে তিনি আউট। তবে আকাশে ভেসে থাকা বল তালুবন্দী করতে পারেননি টনি দি জর্জি। এরপর ১২তম ওভারের প্রথম বলে বিরাট কোহলির উইকেট তুলে নেন মার্কো ইয়ানসেন। এই উইকেট প্রোটিয়ারা নিয়েছে রিভিউর সাহায্যে। আর ভারত জয় নিশ্চিত করেছে ইয়ানসেনের সেই ওভারেই। ওভারের শেষ বলে মিড অন দিয়ে চার মেরে ভারতকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন শ্রেয়াস আইয়ার। তাতে ১৪৭ বছরের  ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত দুই দিনের মধ্যে শেষ হওয়া টেস্ট হয়েছে ২৫টি। যার মধ্যে এই শতাব্দীতে ১৫ টেস্ট শেষ হয়েছে দুই দিনের মধ্যে।

টেস্ট ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম ম্যাচের খাতায় নাম লিখিয়েছে কেপটাউনের ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্ট। সব মিলে খেলা হয়েছে ৬৪২ বল। তাতে ভেঙে গেছে ৯২ বছরের পুরোনো রেকর্ডও। ১৯৩২ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে হয়েছে ৬৫৬ বল। সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ইনিংস ও ৭২ রানে। অস্ট্রেলিয়া এক ইনিংস ব্যাটিংয়ে ১৫৩ রানে অলআউট হয়েছে। সেই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ইনিংসে ৩৬ ও ৪৫ রানে অলআউট হয়েছিল।  

দ্বিতীয় দিনে আজ যখন দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নামে, তখন তারা এরই মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলে ফেলে ১৭ ওভার। দিনের প্রথম ওভারেই আজ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। ১৮তম ওভারের শেষ বলে বুমরাকে খোঁচা দিতে যান ডেভিড বেডিংহাম। এজ হওয়া বল ক্যাচ ধরেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর হয়ে যায় ১৮ ওভারে ৪ উইকেটে ৬৬ রান। এরপর ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন কাইল ভেরেইনকে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন এইডেন মার্করাম ও ভেরেইন। ভেরেইনকে ফিরিয়ে বেশি আক্রমণাত্মক হতে যাওয়া এই জুটিও ভাঙেন বুমরা। মার্করাম-ভেরেইনের জুটি ছিল ২০ বলে ১৯ রানের। বুমরা এরপর মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ-দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই ব্যাটারকেও দ্রুত ফিরিয়েছেন। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর মুহূর্তেই হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৮৫ রান থেকে ৭ উইকেটে ১১১ রান।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন মার্করাম। ওপেনিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি। অষ্টম উইকেটে কাগিসো রাবাদার সঙ্গে ৩৮ বলে ৫১ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন মার্করাম। মার্করামকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সিরাজ। এরপর ১৪ রান যোগ করতে আরও ২ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়ে যায় ১৭৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে বুমরা নেন ৬ উইকেট। সিরিজসেরা বুমরা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নিয়েছেন ১২ উইকেট। ম্যাচসেরা সিরাজ নিয়েছেন ১১ উইকেট।

বলের হিসেবে টেস্ট ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম পাঁচ ম্যাচ:

৬৪২: দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত; ভেন্যু: কেপটাউন; ২০২৪

৬৫৬: অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা; ভেন্যু: মেলবোর্ন; ১৯৩২

৬৭২: ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড; ভেন্যু: ব্রিজটাউন; ১৯৩৫

৭৮৮: ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া; ভেন্যু: ম্যানচেস্টার; ১৮৮৮

৭৯২: ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া; ভেন্যু: লর্ডস; ১৮৮৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে সালাহ উদ্দীনের পদত্যাগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: ফাইল ছবি
পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: ফাইল ছবি

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ শুরু হতে এক সপ্তাহও বাকি নেই। দুই দল এরই মধ্যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। এমন সময়ে আচমকা পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন।

২০২৪-এর নভেম্বর থেকে সালাহ উদ্দীন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এক বছরের মাথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ হলো। সালাহ উদ্দীনের পদত্যাগের খবর আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে বিসিবি সূত্র।

সিনিয়র সহকারী কোচ হলেও বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংটা দেখভাল করতেন সালাহ উদ্দীন। তবে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের লাগাতার ব্যাটিং ব্যর্থতায় তাঁকে নিয়ে হচ্ছিল সমালোচনা। পরশু বিসিবির পরিচালকদের সভা শেষে মোহাম্মদ আশরাফুলকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি নিয়োগ পেয়েছেন আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্যই। এই সিরিজেই বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করবেন আবদুর রাজ্জাক।

আশরাফুল ব্যাটিং কোচ হওয়ায় সালাহ উদ্দীনের কী হবে, সেই ব্যাখ্যায় রাজ্জাক পরশু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সালাহ উদ্দীন ভাই সিনিয়র সহকারী কোচ। কারও ব্যর্থতার জন্য নয়। ওখানে কাউকে সরানো হয়নি। কোচিং স্টাফে নতুন একজন হিসেবে আশরাফুলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ শেষ পর্যন্ত সালাহ উদ্দীন সরেই গেলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাজিল দলে তাহলে ব্রাত্য হয়ে পড়লেন নেইমার

ক্রীড়া ডেস্ক    
ব্রাজিলের জার্সিতে বছরের শেষ দুই ম্যাচও খেলতে পারবেন না নেইমার। ছবি: এএফপি
ব্রাজিলের জার্সিতে বছরের শেষ দুই ম্যাচও খেলতে পারবেন না নেইমার। ছবি: এএফপি

ব্রাজিলিয়ান লিগে ফোর্তালেজার বিপক্ষে গত শনিবার ম্যাচ খেললেন নেইমার। তারপরও ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ কার্লো আনচেলত্তির চোখে এখনো ফিট নন নেইমার। আর তাই তাঁকে ছাড়াই এ মাসেই হতে যাওয়া সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে জায়গা হলো না নেইমারের। ১৫ নভেম্বর লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে সেনেগাল ও ১৮ নভেম্বর ফ্রান্সের লিলে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে খেলবে কার্লো আনচেলত্তির দল।

কেন নেইমারকে নেওয়া হলো না দলে? দল ঘোষণার সময় ব্রাজিল জাতীয় দলের ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি বললেন, ‘আমি নেইমারের সঙ্গে আবার কথা বলেছি। দেখা যাক, চোট থেকে কবে ফিরতে পারে। পুরো বিশ্বকাপ খেলতে হলে খেলোয়াড়ের উচ্চমাত্রার শারীরিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি। কেউ যদি পুরোপুরি ফিট না থাকে, আমি তাকে দলে নেব না।’

নেইমারের জন্য কোচের বার্তাটা পরিষ্কার। দু-এক ম্যাচ খেলে চোটে পড়া, চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে আবার চোটে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া—এমন কাউকে তিনি বিশ্বকাপের দলে রাখবেন না। ব্রাজিল সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০০২ সালে। দীর্ঘ ২৩ বছরের শিরোপা বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে এবার রিয়ালের সাবেক কোচ আনচেলত্তিকে নিয়োগ দিয়েছে তারা। বিদেশি কোনো কোচ নিয়ে কেউ কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি—এই সত্যটা জানার পরও ইতালিয়ান আনচেলত্তিকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) এই বিশ্বাসে নিয়োগ দিয়েছে—ব্রাজিলকে তিনি বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেবেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে সিবিএফের চাওয়াটাকে তিনিও এখন বুকে ধারণ করেন। তাই বিশ্বকাপের সেরা দল বাছাইয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন আনচেলত্তি, ‘আমাদের দলে এমন খেলোয়াড় দরকার, যারা শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ ফিট।’

নেইমারের জায়গা না হলেও দুটি প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে নতুন মুখ হিসেবে ডাক পেয়েছেন লুচানো জোবা। তিন বছর পর ফিরেছেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফাবিনিও। ডাকা হয়েছে তরুণ ফরোয়ার্ড ভিতো রোকেকেও। তাঁদের নিয়ে আনচেলত্তি বললেন, ‘দলে ফাবিনিওর মতো খেলোয়াড় আছে। লুচানো জোবা, যাকে আমি মাঠে দেখতে চাই, ভালো একটি মৌসুম কাটানো ভিতো রোকে আছে। দলে আছে ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে খেলা সাতজন খেলোয়াড়ও।’

নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া কিংবা পুরোনোদের ফিরিয়ে আনার পেছনে আনচেলত্তির যুক্তি, ‘আমি এই ম্যাচগুলোয় নতুন কিছু খেলোয়াড়কে পর্যবেক্ষণ করতে চাই। ফাবিনিও, লুচানো জোবা, ভিতো রোকে। ওরা সবাই দারুণ মৌসুম কাটাচ্ছে। এবার আমাদের দলে ব্রাসিলেইরাও থেকে সাতজন খেলোয়াড় আছে, যা লিগটির মানের প্রমাণ। এই দুই ম্যাচে আমরা জাতীয় দলের জন্য আরও স্থিতিশীল একটি ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই।’

তবে মার্চের মধ্যেই বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন আনচেলত্তি, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমি যত বেশি সময় কাটাব, চূড়ান্ত দল তৈরির তত কাছাকাছি পৌঁছাব। জুনের দল গঠনের কাছাকাছি আছি আমরা। এরই মধ‍্যে ১৭ বা ১৮ জন খেলোয়াড় চূড়ান্ত হয়েছে। চোটের ওপরও এটা নির্ভর করবে। তবে দল প্রায় চূড়ান্তই। মার্চের দল হবে চূড়ান্ত দলের খুব কাছাকাছি।’

তাই বিশ্বকাপ খেলতে চাইলে মার্চের মধ্যেই নিজের ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে নেইমারকে। আনচেলত্তির চাওয়া, বিশ্বকাপ দলের ২৬ খেলোয়াড়কে নিয়েই তিনি টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি শুরু করবেন, ‘যেদিন আমরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করব, সেদিন আমাদের ২৬ জন খেলোয়াড় থাকবে। এর বাইরে কাউকে আমি ডাকব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রিয়াল ফুটবলারের লিভারপুলে হেনস্তার ব্যাপারে কী বললেন কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৪১
অ্যানফিল্ডে গত রাতে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ড ফিরলেন প্রতিপক্ষ হয়ে। রিয়াল মাদ্রিদে সদ্য যোগ দেওয়া এই ফুটবলার শুনেছেন দুয়োধ্বনি। ছবি: এএফপি
অ্যানফিল্ডে গত রাতে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ড ফিরলেন প্রতিপক্ষ হয়ে। রিয়াল মাদ্রিদে সদ্য যোগ দেওয়া এই ফুটবলার শুনেছেন দুয়োধ্বনি। ছবি: এএফপি

অ্যানফিল্ড ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের কাছে একেবারে অপরিচিত নয়। ২০১৬ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৯ বছরের ক্যারিয়ারে লিভারপুলের জার্সিতে এই ভেন্যুতে কত ম্যাচ খেলেছেন, সেটার হিসাব হয়তো তাঁর নিজেরও জানা নেই। কিন্তু পরিচিত এই ভেন্যুতে গত রাতে ফিরলেন ‘অচেনা’ হয়ে।

চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে গত রাতে অ্যানফিল্ডে মুখোমুখি হয়েছে লিভারপুল-রিয়াল মাদ্রিদ। ৯ বছর লিভারপুলের জার্সিতে খেলা এই ফুটবলার এবার তাদেরই শত্রু বনে গেলেন। লিভারপুলের সঙ্গে চুক্তি শেষে তিনি যোগ দিয়েছেন রিয়ালে। ম্যাচ শুরুর আগে আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের ম্যুরাল বিকৃত করা হয়। ৮১ মিনিটে তিনি যখন মাঠে নামেন, দর্শকদের দুয়োধ্বনি শুনেছেন। রিয়াল কোচ জাবি আলোনসোর মতে আর্নল্ডের জন্য পরিবেশটা যে এমন প্রতিকূল হবে, সেটা তো জানা কথাই। ম্যাচ শেষে আলোনসো বলেন, ‘এমন প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিতই ছিল। সে পেশাদার ও পরিপক্ব ফুটবলার। এমন কিছুর জন্য সে প্রস্তুত ছিল।’

রিয়ালের বিপক্ষে লিভারপুলের ১-০ গোলে জয়ের ফল ছাপিয়ে গিয়েছিল দুই দলের খেলার ধরন। শরীর নির্ভর ফুটবল খেলাতেই যেন গত রাতে ব্যস্ত ছিলেন রিয়াল-লিভারপুলের ফুটবলাররা। চ্যাম্পিয়নস লিগের এই ম্যাচে ১৪ ও ১৩ ফাউল করে লিভারপুল ও রিয়াল। আলোনসোর কাছে রিয়াল-লিভারপুল ম্যাচটা রোমাঞ্চকর মনে হয়েছে। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ বলেন, ‘খুব দারুণ এক খেলা হয়েছে। অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়নস লিগের সময় পরিবেশ সব সময় এমনই থাকে।’

৮১ মিনিটে আলেক্সান্ডার আর্নল্ডকে নামানো হয়েছে আর্দা গুলারের পরিবর্তে। বদলি হিসেবে নেমেও আর্নল্ড তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। পাশাপাশি দর্শকদের দুয়োধ্বনি তো ছিলই। তবু শিষ্য আর্নল্ডকে আগলে রাখছেন আলোনসো, ‘ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের থেকে এমন খেলা অবশ্যই দরকার ছিল। উইং থেকে সে হুমকি হিসেবে কাজ করছিল।’ ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন লিভারপুল মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। ৬১ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে ডমিনিক সোবোসলাইয়ের পাস রিসিভ করে হেডে লক্ষ্য ভেদ করেন ম্যাক অ্যালিস্টার। লিভারপুলের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনিই দেখেছেন হলুদ কার্ড। ৭৮ মিনিটে তাঁর পরিবর্তে কুর্তিস জোনসকে মাঠে নামায় লিভারপুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ ম্যাচের ১৭ বছর পর ক্রিকেট ফেরার রাতে পাকিস্তানের নতুন রেকর্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৯
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো

এককালে ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে থাকা পাকিস্তানে ক্রিকেট চলছে দারুণভাবে। দেশটির বিভিন্ন ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) হচ্ছে হরহামেশাই। বিদেশি ক্রিকেটাররা এসে খেলে যাচ্ছেন। কিন্তু ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়াম যেন একরকম ব্রাত্য হয়ে পড়েছিল।

পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ওয়ানডে দিয়ে গতকাল ফয়সালাবাদের ১৭ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়েছে। এর আগে এই ভেন্যুতে সবশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছিল ২০০৮ সালে। সেবার ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান। গতকাল ১৭ বছর পর ফয়সালাবাদে ক্রিকেট ফেরার দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকল শাহিন শাহ আফ্রিদি-সালমান আলী আঘাদের কাছেও। ওয়ানডেতে প্রথম অভিষেকের ম্যাচে আফ্রিদি জিতলেন। শুধু জেতেননি, ফয়সালাবাদে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে রেকর্ডটা নতুন করে গড়ল পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল শাহিনের পাকিস্তান। এর আগের রেকর্ডটা পাকিস্তানেরই ছিল। ২০০৮ সালে ফয়সালাবাদে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে পাকিস্তান জিতেছিল ৭ উইকেটে।

১৭ বছর পর ফয়সালাবাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার রাতে দর্শক সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। ইকবাল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে প্রায় ১৭ হাজার দর্শক দেখেছেন পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ওয়ানডে। শেষ পর্যন্ত ভক্ত-সমর্থকেরা জয় দেখে মাঠ ছেড়েছেন। ২ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয়ে পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক শাহিনের শুরুটাও হলো মনে রাখার মতো। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার বলেন, ‘ফয়সালাবাদের দর্শকদের ধন্যবাদ। এই মাঠে অনেক দিন পর ক্রিকেট ফিরেছে। আপনারা এত দর্শক খেলা দেখতে এসেছেন। সেজন্য ধন্যবাদ।’

২ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পেলেও পাকিস্তানের জয়টা হতে পারত আরও সহজ। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে শেষ ২৬ বলে স্বাগতিকদের দরকার ছিল ২৩ রান। সালমান ও তালাত ৫৫ ও ২২ ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু যে পাকিস্তানের নামের পাশে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ তকমা, তাদের খেলায় নাটক না হলে কি চলে! হঠাৎ শুরু হওয়া নাটকীয়তার ম্যাচে ৫০তম ওভারের চতুর্থ বলে করবিন বশের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নাসিম শাহ। প্রোটিয়া পেসার বশ এলবিডব্লিউর আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। সফরকারীরা আর রিভিউ না নেওয়ায় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক শাহিন বলেন, ‘এমনটা সব সময় হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব আর যেন এমনটা না হয়।’

৭১ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন সালমান। ফিফটি করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ানও (৫৫)। পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডেও হবে ফয়সালাবাদে। ৬ ও ৮ নভেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডে। সব ম্যাচই বাংলাদেশ সময় বেলা ৪টায় শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত