Ajker Patrika

বাংলাদেশ সফরের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন ভারতীয় ক্রিকেটার

ক্রীড়া ডেস্ক    
বাংলাদেশ সফরের ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল তিলক ভার্মার। ছবি: ক্রিকইনফো
বাংলাদেশ সফরের ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল তিলক ভার্মার। ছবি: ক্রিকইনফো

খুব বেশি দিন আগের ঘটনা নয়। দু্বাইয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে চাপ সামলে ৫৩ বলে ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে তিলক ভার্মা জিতেছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। কিন্তু এশিয়া কাপ ফাইনালে নায়ক বনে যাওয়ার মতো উপলক্ষ্য জীবনে তো নাও পেতে পারতেন তিনি।

সঞ্চালক গৌরব কাপুরের সঙ্গে আলাপচারিতায় কদিন আগে ‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়নস’ অনুষ্ঠানে তিলক জীবনের এক কঠিন মুহূর্তের ঘটনা শেয়ার করেছেন। ২০২২ সালে ভারত ‘এ’ দলের হয়ে যখন বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন, তখন যা ঘটেছিল, তাতে আর একটু সেদিক হলেই তাঁর জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারত বলে জানিয়েছেন তিলক। ২২ বছর বয়সী ভারতের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আমি ভারত ‘এ’ দলের হয়ে খেলছিলাম। এক পর্যায়ে আমার চোখে পানি আসতে শুরু করে। ব্যাট তোলার মতো অবস্থাতেও ছিলাম না। স্নায়ুগুলো শক্ত হয়ে আসছিল। আমি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে গিয়েছিলাম। আঙুল নড়াচড়া করাতে না পারায় কাটতে হয়েছিল গ্লাভস।’

৩ বছর আগে বাংলাদেশ সফরে তিলক মৃত্যুর সঙ্গে যখন পাঞ্জা লড়ছিলেন, তখন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের তখনকার মালিক আকাশ আম্বানি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তৎকালীন সচিব জয় শাহ অনেক সাহায্য করেছিলেন। সংকটময় মুহূর্তের কথা কল্পনা করে তিলক বলেন, ‘মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও জয় শাহকে ধন্যবাদ। আকাশ আম্বানি আমাকে সাহায্য করেছিলেন। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।আর কয়েক ঘণ্টা দেরি করলেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো বলে চিকিৎকেরা জানিয়েছিলেন। ইনজেকশন দেওয়ার সময় ভেঙে গিয়েছিল সুচ। সে সময়ের কঠিন পরিস্থিতিতে মা আমার সঙ্গে ছিলেন।’

ফিটনেস ধরে রাখতে ছুটির দিনও বিশ্রাম নেননি তিলক। ফলশ্রুতিতে তখন শরীরের ওপর মারাত্মক ধকল গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ভারতের এই তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘বিশ্রামের দিনেও জিমে গিয়েছিলাম। ভালো ফিল্ডার ও ফিট ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। আইস বাথ নিলেও ধকল কাটিয়ে ওঠার যে ব্যাপার, সেই ব্যাপারে অবহেলা করেছি। মাংসপেশির ওপর বেশ চাপ পড়ে। স্নায়ুও তেমন একটা কাজ করেনি তখন।’

২০২২ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের জার্সিতে তিলকের আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু হয়। কিন্তু ভারতের সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট শেষের পর র‌্যাবডোমায়োলাইসিস নামে এমন এক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যার ফলে অনেক সমস্যা হয়েছিল তাঁর। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারতের বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘এই কথা আমি এর আগে কাউকে বলিনি। আইপিএলে নিজের প্রথম মৌসুমের পর স্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়েছিল। আমার র‌্যাবডোমায়োলাইসিস ধরা পড়ে। তাতে পেশি ভেঙে যায়।’

এখন প্রশ্ন হলো র‌্যাবডোমায়োলাইসিস কী? এতে শরীরের অবস্থা এতটা গুরুতর অবস্থায় চলে যায়, তাতে করে পেশির টিস্যু দ্রুত ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর উপাদান মিশে যায় রক্তে। কিডনিরও ক্ষতি হতে পারে এতে। মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম, পানিশূন্যতা বা অতিরিক্ত গরমের কারণে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তিলকের। ভারতের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ৪ ওয়ানডে ও ৩২ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। ৪৯.০৪ গড়ে করেছেন ১০৩০। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই সেঞ্চুরির দুটিই করেছেন টি-টোয়েন্টিতে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে আছেন তিনি।

২৯ অক্টোবর ক্যানবেরায় শুরু হবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৩১ অক্টোবর মেলবোর্নে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। ২, ৬ ও ৮ নভেম্বর হোবার্ট, গোল্ড কোস্ট ও ব্রিসবেনের গ্যাবায় হবে শেষ তিন টি-টোয়েন্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...