Ajker Patrika

সাকিব-মুশফিকদের মতো বিসিবির চ্যালেঞ্জও কম নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৩৩
সাকিব-মুশফিকদের মতো বিসিবির চ্যালেঞ্জও কম নয়

বিকেল থেকেই সুর-সংগীতে কেঁপেছে হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। কান পাতাই দায়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যে বড় একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেটার আভাস মিলছে তাতে। উৎসবের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে ধোয়ামোছা, সাজসজ্জা দৃশ্যমান। বাইরের চাকচিক্য যেমন ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে অন্দরমহলের চিত্রটা ঠিক উল্টো। 

করোনার প্রকোপে গত বছর মাঠে গড়ায়নি ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা। এ বছর টুর্নামেন্ট আয়োজনে বিসিবি উন্মুখ হয়ে আছে। তা বাস্তবতা যত কঠিনই হোক না কেন। দেশে এখন চলছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। অদৃশ্য ভাইরাসটির নতুন ধরন অমিক্রন ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। এটা যে বাড়তে পারে সেই উৎকণ্ঠাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়েছে বিপিএলেও। সাকিব-মুশফিকদের মতো তাই বিসিবির চ্যালেঞ্জও কম নয়। 

টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই কয়েকজন ক্রিকেটার ও অফিশিয়াল আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। তাঁদের নাম জানানো তো দূরের কথা, সংখ্যাটা পর্যন্ত প্রকাশ করা হচ্ছে না। এমনই অস্বস্তিকর অবস্থায় আজ বল গড়াচ্ছে মাঠে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি যেদিকেই যাক, বিপিএল স্থগিত বা বন্ধ করার ভাবনা নেই বিসিবির। যে কোনো মূল্যে টুর্নামেন্টের ৩৪টি ম্যাচ শেষ করতে চায় তারা।

মহামারি নিয়ন্ত্রণে হাত নেই কারোরই। তবে ঝুঁকি এড়াতে সব রকম সতর্ক থাকাটাই শ্রেয়। এ জন্য জৈব সুরক্ষাবলয় নীতিই বড় হাতিয়ার হতে পারত। বিসিবির তরফ থেকে বলা হচ্ছে, টোকিও অলিম্পিকের ব্যবস্থাপনাই তাঁরা অনুকরণ করছেন। যদিও বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরক্ষাবলয়ে ঢুকতে পারেনি অংশ নেওয়া সব কটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দল।

একাডেমি মাঠে দলগুলোর অনুশীলনেও নেই শৃঙ্খলার বন্ধন। নেট বোলার, বলবয়, ব্রডকাস্টারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোই। তাঁরা কেউই নেই সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে। অনুশীলনে ব্যাটাররা একাডেমির বাইরে যেসব বল উড়িয়ে মারছেন, সেগুলোই ফিরছে মাঠে। ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই তো ১০ মিনিটের ব্যবধানে চারবার মিডিয়া সেন্টারের সামনে বল আছড়ে ফেলেছেন!

করোনা আতঙ্কের জের ধরে এবারের আয়োজনে থাকছে না আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)। বিসিবির দাবি এমনই। টুর্নামেন্টের অষ্টম আসরে নেই কোনো বিদেশি আম্পায়ার কিংবা ধারাভাষ্যকার। প্রতিযোগিতায় বিদেশি ক্রিকেটারদের উপস্থিতির স্বাভাবিক যে সংখ্যা, সেটাও নেই এবার। হাতেগোনা কয়েকজন তারকা বিদেশি এসেছেন বিপিএল খেলতে।

খেলা হবে রুদ্ধদ্বার স্টেডিয়ামে। তাতে করে ব্যাট-বলের যুদ্ধ শুরুর আগেই রোমাঞ্চে ভাটা পড়েছে। এ রকম প্রতিকূল পরিবেশে কখনোই কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি বিসিবি। এসব সীমাবদ্ধতা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে আয়োজকদের। সেটা মানছেন বোর্ড পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকও।

গতকাল টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচন ও পৃষ্ঠপোষক ঘোষণার অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে যেকোনো কাজ করাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়াই চ্যালেঞ্জ। করোনা পরিস্থিতিটা একটু স্বাভাবিক হয়ে আসছিল। এর মধ্যে অমিক্রন চলে আসল। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।’

এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই টুর্নামেন্টের সফল আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেন মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এর আগে বিপিএল করেছি, প্রেসিডেন্টস কাপ করেছি, প্রিমিয়ার লিগ করলাম। চ্যালেঞ্জ থাকবেই। আমরা প্রত্যেকে–খেলোয়াড়, আম্পায়ার, সাপোর্ট স্টাফ, কোচিং স্টাফ, বিসিবির কর্মচারী, আমরা যারা দায়িত্বে আছি, সাংবাদিক টুর্নামেন্টের সাফল্যের সঙ্গে জড়িত। অতীতে আমরা যেভাবে টুর্নামেন্টগুলো যেভাবে সফল করতে পেরেছি, আশা করছি এবারও তা পারব।’

মল্লিক যেভাবে আশার কথা শোনালেন বাস্তবিক অর্থে তা পূরণ করা কঠিন। কারণ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরও বিগ ব্যাশ, আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টগুলো স্থগিত করতে হয়েছে। ঠাসা সূচির কারণে বিসিবির হাতে সেই সুযোগ নেই। এত অস্থিরতার মধ্যে বিপিএল ঠিকঠাক শেষ হবে কিনা এটাই বড় একটা প্রশ্নবোধক রাখছে। এ নিয়ে বিপিএলের অন্যতম অভিভাবক বলেছেন, ‘আমরা তো ইন্ডিয়ার মতো দেশ না। ওরা যখন চায় তখনই আইপিএল করতে পারে। আবার বিগ ব্যাশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়া খেলে। আমরা তো ও রকম না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোনালদো কোথায়, আল নাসরের বিদায়ঘণ্টা বাজাল ১০ জনের আল ইত্তিহাদ

ক্রীড়া ডেস্ক    
একাধিক সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি: এক্স
একাধিক সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি: এক্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দেখালেন তিনি ‘মেশিন’ নন। রক্ত-মাংসে গড়া এক মানুষ। গোলের পর গোল করে তিনি গড়ে চলেছিলেন রেকর্ড। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে গোল করেও তিনি দলকে বাঁচিয়েছিলেন অনেকবার। কিন্তু গত রাতে নকআউট পর্বের মাচে তিনি ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই।

আল আওয়াল পার্কে গত রাতে কিংস কাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে আল নাসর খেলেছে আল ইত্তিহাদের বিপক্ষে। এই ম্যাচে রোনালদো পুরো ৯০ মিনিট খেললেও কোনো গোল তিনি করতে পারেনি। ছিল না কোনো অ্যাসিস্টও। উল্টো একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছেন। উপরন্তু প্রতিপক্ষ আল ইত্তিহাদ দ্বিতীয়ার্ধের পরই ১০ জনের দলে পরিণত হয়। খেলোয়াড় কমে গেলেও তারা মনোবল হারায়নি। আল নাসরকে ২-১ গোলে হারিয়ে কিংস কাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিল আল ইত্তিহাদ। ম্যাচ শেষে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করেছেন রোনালদো। সেখানে দেখা গেছে, আল নাসরের ফুটবলাররা এক জায়গায় জড়ো হয়েছেন। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘আমরা সব সময় একসঙ্গে থাকব ও একত্রে চলব।’

কিংস কাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে গত রাতে ১৫ মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে এগিয়ে যায় আল ইত্তিহাদ। সমতায় ফিরতে বেশি সময় লাগেনি আল নাসরের। ৩০ মিনিটের সময় অ্যাঞ্জেলো গ্যাব্রিয়েলের থ্রু বল প্রথমে রিসিভ করেন রোনালদো। বাঁ পাশ থেকে ঢুকে ক্রস করেন রোনালদো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের শট আল ইত্তিহাদের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ঘুরে গেলে গ্যাব্রিয়েলের সামনে পড়ে। গ্যাব্রিয়েল সহজেই লক্ষ্যভেদ করে সমতায় ফিরিয়েছেন আল নাসরকে।

প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে এগিয়ে যায় আল ইত্তিহাদ। ৪৫ মিনিটের পর অতিরিক্ত ২ মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোল করেন মিডফিল্ডার হুসেম আওয়ার। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ৪ মিনিট পর আল ইত্তিহাদের খেলোয়াড়ের সংখ্যা কমে যায়। ৪৯ মিনিটে আল নাসর ফরোয়ার্ড আয়মান ইয়াহিয়াকে বাজে চ্যালেঞ্জ করে লাল কার্ড দেখেন আল ইত্তিহাদ ডিফেন্ডার আহমেদ আল জুলায়দান।

আল ইত্তিহাদ ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর শুধু রোনালদোর সুযোগ মিসের মহড়া। ৫৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। রোনালদো এরপর ৭৪ মিনিটে ফ্রি কিক নিয়ে সেটা আল ইত্তিহাদের গোলপোস্টের অনেক ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একেবারে শেষ মুহূর্তে আল নাসরকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ৯৫ মিনিটে ফ্রি কিকে শটটা তেমন জোরালো ছিল না রোনালদোর। আল ইত্তিহাদের গোলপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায় সেটা। আল নাসরেরও বিদায় হয়ে যায় কিংস কাপের শেষ ষোলোতেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘স্যার’ উপাধি পাওয়ার ছয় মাস পর পুরস্কার পেলেন অ্যান্ডারসন

ক্রীড়া ডেস্ক    
নাইটহুড পুরস্কার বুঝে পেয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন। ছবি: ক্রিকইনফো
নাইটহুড পুরস্কার বুঝে পেয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন। ছবি: ক্রিকইনফো

‘স্যার’ উপাধি আগেই পেয়ে গেছেন জেমস অ্যান্ডারসন। এ বছরের এপ্রিলে তাঁকে নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। ছয় মাস পর অবশেষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিটা পেয়েছেন ইংল্যান্ডের এই তারকা পেসার।

অ্যান্ডারসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নাইটহুড খেতাব দেওয়া হয়েছে গতকাল। উইন্ডসর ক্যাসেলে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সময় গত রাতে প্রিন্সেস অ্যান তাঁকে এই উপাধিতে ভূষিত করেন। ক্রিকেটে অসাধারণ অবদানের জন্য এ বছরের এপ্রিলে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের পদত্যাগসংক্রান্ত সম্মাননা তালিকায় অ্যান্ডারসনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীরা বিভিন্নক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নাইট প্রস্তাব করতে পারেন। এটার অনুমোদন দেন রাজা।

২০০২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ২২ বছরের ক্যারিয়ারে অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৪০১ ম্যাচে নিয়েছেন ৯৯১ উইকেট। যার মধ্যে ১৮৮ টেস্টে পেয়েছেন ৭০৪ উইকেট। ১৯৪ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৬৯ উইকেট। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেট তাঁর। ১৯ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছেন ১৮ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ খেলেছেন ২০০৯ সালে। ওয়ানডেতে তাঁকে শেষবারের মতো দেখা গেছে ২০১৫ সালে।

লর্ডসে গত বছর জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন অ্যান্ডারসন। বর্তমানে তিনি ল্যাঙ্কশায়ারের জার্সিতে কাউন্টি ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই দলের হয়েই খেলে প্রায় দশ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন এই তারকা পেসার। মিডলসেক্সের বিপক্ষে এ বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও খেলেছেন তিনি।

৭০৪ উইকেট নিয়ে টেস্টে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট অ্যান্ডারসনের। তবে সব মিলিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় তিনে ইংল্যান্ডের এই তারকা পেসার। টেস্টে সর্বোচ্চ ৮০০ উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা শেন ওয়ার্নের উইকেট ৭০৮। অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তি ২০২২ সালে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

আরও পড়ুন:

এখন থেকে ‘স্যার’ ডাকতে হবে অ্যান্ডারসনকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আফ্রিদির সঙ্গে বাজে রেকর্ডে নাম এখন বাবরের

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৫৭
আফ্রিদির সমান আটটি ডাক মেরেছেন বাবর। ছবি: ক্রিকইনফো
আফ্রিদির সমান আটটি ডাক মেরেছেন বাবর। ছবি: ক্রিকইনফো

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাবর আজম ফিরলেন ১০ মাস পর। কিন্তু ফেরাটা হলো একেবারে ভুলে যাওয়ার মতোই। রানের খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন তিনি। তাতে এমন এক বাজে রেকর্ডে নাম উঠে গেল তাঁর, যেখানে আছেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী শহীদ আফ্রিদি।

পাকিস্তানের জার্সিতে বাবর সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। রাওয়ালপিন্ডিতে গতকাল একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন তিনি। ফেরার ম্যাচে তিনি মাত্র ২ বল খেলেছেন। রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন পাকিস্তানি এই ব্যাটার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটা তাঁর অষ্টম ডাক। বাবরের সমান আটটি ডাক মেরেছেন শহীদ আফ্রিদি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০০৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৯৯ টি-টোয়েন্টি খেলে আটবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন আফ্রিদি।

পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১০ বার শূন্য রানে আউট হওয়ার বিব্রতকর রেকর্ড উমর আকমলের। এই তালিকায় দুইয়ে সাইম আইয়ুব। পাকিস্তানের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে ৯ ডাক মেরেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। যার মধ্যে গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে চারবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি।

শুধু শূন্য রানে আউট হওয়াতেই নয়; বাবর ফিল্ডিংও করেছেন বাজে। ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে তুলে মারতে যান জর্জ লিন্ডে। লং অফ থেকে দৌড়ে এসে লং অনে পৌঁছে বাবর বলের নাগাল পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বল ধরতে না পেরে উল্টো চার বানিয়ে দিয়েছেন। হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর সামাজিক মাধ্যমে বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন বাবর। কেউ একজন মন্তব্য করেছেন, ‘ব্যাটিংও পারেন না। ফিল্ডিংও পারেন না। পাকিস্তান দলের বোঝা বাবর আজম।’ কেউ একজন লিখেছেন, ‘অসম্ভব পতন বাবরের। বি বা সি দলের বিপক্ষেও তিনি রান করতে পারেন না।’

রাওয়ালপিন্ডিতে গতকাল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকা যে একাদশ নিয়ে খেলেছেন, তাদের মধ্যে দুজনের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৫০-এর বেশি ম্যাচ খেলার কীর্তি হয়েছে। একাদশে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ৯৪ ম্যাচ খেলেছেন কুইন্টন ডি কক। দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে ৫১ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন লুঙ্গি এনগিদি। বাকিদের খুব একটা ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। অধিনায়ক ডোনোভন ফেরেইরা পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচে দশম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৫ রানের জয় পেয়েছে।

সিরিজ জিততে পাকিস্তানের এখন শেষ দুই টি-টোয়েন্টিই জিততে হবে। লাহোরে পরশু সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা। একই মাঠে শনিবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল।

পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ডাকের রেকর্ড

উমর আকমল ১০

সাইম আইয়ুব ৯

শহীদ আফ্রিদি ৮

বাবর আজম ৮

কামরান আকমল ৭

মোহাম্মদ হাফিজ ৭

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরিজে ফিরতে পারবে কি বাংলাদেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সিরিজে ফেরার লড়াই বাংলাদেশের। ছবি: বিসিবি
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সিরিজে ফেরার লড়াই বাংলাদেশের। ছবি: বিসিবি

‘এটা না হয়ে যদি ওটা হতো’—এমন একটা আফসোস যেন চিরসঙ্গী বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারের পরও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে তানজিম হাসান সাকিব বললেন—টপ কিংবা মিডল অর্ডারের কেউ একজন যদি উইকেটে থিতু হতেন, তাহলে তাঁদের হারতে হতো না!

ফেলে আসা ম্যাচটি নিয়ে বেশি ভাববার সুযোগ নেই দলের। আজই আবার নেমে পড়তে হচ্ছে মাঠে, সিরিজ রক্ষার লড়াইয়ে। অথচ চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে চাপে থাকার কথা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ওয়ানডে সিরিজ জিতে তাদের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশই। চেনা মাঠ, চেনা কন্ডিশন, গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সমর্থন—কোনো কিছুই কাজে আসেনি। কাজে আসেনি ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। অথচ চট্টগ্রামের উইকেটে ব্যাট করা মোটেও কঠিন ছিল না। প্রথম ৫৭ রান তুলতেই বাংলাদেশ খুইয়েছে ৫ উইকেট। কিন্তু শেষ ৫ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ৯২ রান। শিশিরের প্রভাবে শেষের দিকে ব্যাটে ঠিকই আসছিল বল; কিন্তু খেলার মতো দলের স্বীকৃত ব্যাটাররা আগেই ফিরে গেছেন। কেউ একজন থাকলে তানজিমের বিশ্বাস, হারতে হতো না বাংলাদেশকে।

তানজিম যা বলছেন, তাঁর সঙ্গে পুরোপুরি একমত ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক রভম্যান পাওয়েল। ম্যাচে শেষে সংবাদ সম্মেলনে পাওয়েল বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার, বাংলাদেশের মূল ব‍্যাটারের কেউ আরও লম্বা সময় কাটাতে পারলে আমরা চাপে পড়ে যেতাম। কারণ, শেষ দিকে মাঠ (শিশিরে) ভিজে গিয়েছিল।’ ওই ভেজা মাঠেও বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করে গেছে বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতছে বলে মনে করেন পাওয়েল।

পরে ব্যাট করেও শিশিরের সুবিধা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের শেষার্ধে শিশিরের দিকে তাকিয়ে টস জিতলে আগে হয়তো ব্যাটিংই বেছে নেবে টসজয়ী দল। তবে আজকের ম্যাচে আছে বৃষ্টির হালকা পূর্বাভাস। রাতে ম্যাচের শেষ দিকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ।

বৃষ্টি নয়, উজ্জ্বল একটা দিনও চাওয়া বাংলাদেশের। সিরিজ বাঁচাতে এই ম্যাচ স্বাগতিকদের জিততে হবে। ক্রিকেটে ছোট এই সংস্করণে এ সময়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ধারাবাহিক। গত টানা চারটি সিরিজে তানজিদ তামিম-মোস্তাফিজুর রহমানরা শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস ও আফগানিস্তানকে হারিয়েছে। এই অবস্থায় যখন আশা করা হয়েছিল ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও জিততে বাংলাদেশ, তখনই হতাশ করলেন ব্যাটাররা। উইকেটে ব্যাটাররা থিতু হতে না পারায় কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি।

উইন্ডিজ ইনিংসে কেউ ফিফটি করেননি, ফিফটি নেই বাংলাদেশ ইনিংসেও। তবু তাদের ইনিংসে ছিল দুটি ফিফটি প্লাস জুটি। কিন্তু বাংলাদেশ ইনিংসে একটিও পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি ছিল না। বাংলাদেশের বড় জুটি ৪০ রানের, সেটিও এসেছে সপ্তম উইকেটে। ব্যাটাদের দ্রুত আসা-যাওয়াতেই টপ কিংবা মিডল অর্ডারে বড় কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি। আর এটিই দুই দলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।

আগের ম্যাচে যা পারেননি সাইফ-লিটনরা, আজ সিরিজ বাঁচাতে হলে সেটা করতেই হবে তাঁদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত