Ajker Patrika

আইসিসিতে ভারতের দাপটেই ক্রিকেটে ‘ঝামেলা’ বেড়েছে, দাবি চ্যাপেলের

ক্রীড়া ডেস্ক   
Thumbnail image
আইসিসির প্রশাসনিক কাঠামোতে ভারতের দাপট বেড়েই চলেছে। ছবি: এএফপি

সোজা-সাপটা কথা বলতেই বেশি পছন্দ করেন ইয়ান চ্যাপেল। কোনোরকম এদিক-ওদিক দেখলেই ছেড়ে কথা বলতে বিন্দুমাত্র ভাবেন না। মাঠের পারফরম্যান্সের বাইরে ক্রিকেট বিশ্বে গত কয়েক বছরে ভারতের যে দাপট বেড়েছে, সেটা নিয়ে তোপ দেগেছেন চ্যাপেল।

ক্রিকেটের প্রশাসনিক কাঠামোতে গত কয়েক বছর ভারত যেভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছে, তাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকে (আইসিসি) অনেকে ব্যঙ্গ করে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল বলে থাকেন। জলজ্যান্ত উদাহরণ ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। টুর্নামেন্টটি এককভাবে পাকিস্তানে হওয়ার কথা থাকলেও হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে হচ্ছে। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেট দল পাকিস্তানে খেলতে যেতে চাচ্ছে না। এছাড়া বৈশ্বিক ইভেন্টে ভারতের সুবিধামতো ভেন্যু ও সূচি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে আইসিসির বিরুদ্ধে। তাছাড়া ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে আইসিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতের জয় শাহ। ক্রিকইনফোতে আজ প্রকাশিত এক কলামে চ্যাপেল লেখেন, ‘ক্রিকেটের আয়ের ৭০ শতাংশেই ভারতের অবদান। তাতে আইসিসিতে ভারতের দাপট দেখা যাচ্ছে। এ কারণে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। ক্রিকেটে কার্যকরী কোনো সমাধান বের করা যায়নি।’

আইসিসির ২০২৪-২৭ বাণিজ্যিক মডেল থেকে প্রতি বছর ২৫০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), যা সংস্থাটির মোট আয়ের ৩৮.৫০ শতাংশ। অন্য কোনো বোর্ড ১০ শতাংশও পাচ্ছে না। দুই ও তিনে থাকা ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার আয় ৬.৮৯ শতাংশ ও ৬.২৫ শতাংশ। এ ব্যাপারে চ্যাপেল বলেন, ‘আর্থিক বণ্টনের ব্যাপারটা একটা বড় ইস্যু। ক্রিকেট বোর্ডগুলোতে যে পরিমাণ টাকা বণ্টন করা হয়, সেখানে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড তিন মোড়ল অনেক আয় করে থাকে। তবু তারা আরও বেশি অংশ চাচ্ছে।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার মাইকেল হোল্ডিং বলেছিলেন, ‘ফিফা তো ফুটবলটা চালায়। আইসিসিরও ক্রিকেট চালানো উচিত।’ হোল্ডিংয়ের সেই কথারই প্রতিধ্বনি চ্যাপেলের কথায় প্রকাশ পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লিখেছেন, ‘কেন্দ্রে যদি বড়সড় পরিবর্তন না হয়, তাহলে আইসিসি ক্রিকেট চালাতে পারবে না। আর্থিকভাবে অনেক বোর্ড সচ্ছল হতে চায়। তাদেরও তো অনেক কিছু বলার থাকবে।’

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের যুগে টেস্টকে যখনই আকর্ষণীয় করে তোলার প্রশ্ন এসেছে, তখন কেউ কেউ টেস্টে দুই স্তরের প্রস্তাব করেছেন। যদিও ২০১৬ সালে এই জায়গা থেকে সরে আসে আইসিসি। তবে এ বছরের শুরুর দিকেই দ্বিস্তর কাঠামোর একটা প্রস্তাব দিয়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, দুই স্তরের টেস্ট কাঠামোয় শীর্ষ ৬-৮টি দল থাকবে। উত্তরণ ও অবনমনের সিস্টেমও থাকবে বলে ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটারের প্রস্তাবনায় ছিল। এছাড়াও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড—তারা নিজেরা যখন মুখোমুখি হয়, তখনই শুধু পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আয়োজন করা হয়।

ক্রিকইনফোতে চ্যাপেল তাঁর কলামেও দ্বিস্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামো নিয়ে কথা বলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘দ্বিস্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামো কয়েক বছর আগেই চালু হওয়া উচিত ছিল। বাস্তবে খুব কম দলই পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। দলগুলোকে ওপরে উন্নীত করা ও তাদের অবনমনের সিস্টেম চালু করা সম্ভব। তবে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু মানদণ্ড থাকা উচিত। তাদের কার্যকর প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেট কার্যকরী কি না, তাদের পাঁচ দিনের খেলার বৈধ কারণ আছে কি না, মাঠে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে কি না, আর্থিকভাবে স্থিতিশীল কি না—এগুলো দেখা উচিত।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত