এইচবিও টিভি সিরিজ ‘দ্য লাস্ট অব আস’ অনেকেই দেখে থাকবেন। এক ভয়ংকর ছত্রাকের সংক্রমণে জম্বি হয়ে উঠছে মানুষ। মানবজাতি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। এমন এক বিভীষিকাময় পৃথিবীতে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিছু মানুষ। গল্পটা এ রকমই।
মানুষকে হোস্ট বা পোষক বানিয়ে পরজীবী ছত্রাকের বিস্তার—কিন্তু শুধুই কল্পকাহিনী নয়। বাস্তবে এমন পরজীবী আছে যারা তাদের হোস্ট বা পোষক জম্বি বানিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ মৃত হোস্টের শরীরের নিয়ন্ত্রণ নেয় এরা। ধরুন, একটি মৃত মানুষ টলতে টলতে আপনার দিকে এগিয়ে আসছে—জম্বি এমনই।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন একটি পরজীবীর সন্ধান পেয়েছেন। এরা শিকারি ম্যান্টিসের (এক ধরনের ফড়িং) অন্ত্রে বাস করে। এরপর তার শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফলে। ম্যান্টিসকে কোনো জলাশয়ের দিকে হেঁটে যেতে বাধ্য করে। এরপর পোষককে পানিতে লাফিয়ে পড়তে প্ররোচিত করে!
বিজ্ঞানীরা বলছে, হোর্সহেয়ার (অশ্বকেশ) নামে পরজীবীটি পোষকের জেনেটিক কোড চুরি করে, নিজের দেহেই অনুরূপ জিন তৈরি করে। এরপর পোষকের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।
বিজ্ঞানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অশ্বকেশ পরজীবী ম্যান্টিসের জিন অনুকরণ করে সেটিই ইচ্ছের বিরুদ্ধে পরিচালিত করে। এই আণবিক নিয়ন্ত্রণ খাটিয়ে পোষক ম্যান্টিসকে কোনো আলো ঝলমলে পানির দিকে অগ্রসর হতে বাধ্য করে। পোষক পতঙ্গটি একবার পানিতে ডুবে গেলেই পরজীবীটি মুক্ত হয়ে যায়।
গত ১৯ অক্টোবর কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
অশ্বকেশ পরজীবীর জীবনচক্র সাধারণত পুকুর, ডোবা বা ঝিরি থেকে শুরু হয়। এখানে এগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হয়। এরপর কোনো জলজ পোকার শরীরে লেগে থেকে তীরে আসে। এসব জলজ পোকা যখন ম্যান্টিস বা ঝিঁ ঝিঁ পোকার মতো শিকারি পতঙ্গের আহারে পরিণত হয়, তখন এরা গিয়ে বাসা বাঁধে এই পতঙ্গের পেটে। সেখানে দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে। এর একপর্যায়ে এরা পোষক দেহকে জৈব রাসায়নিক সংকেত পাঠাতে শুরু করে। এ সংকেতগুলো পোষকের দেহের স্নায়ু সংকেতের মতোই। ফলে পোষকের মস্তিষ্ক তখন অশ্বকেশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পোষক পতঙ্গটি হয়ে ওঠে এক জম্বি।
পরজীবীগুলো কীভাবে এ আণবিক অনুকরণ কীভাবে আয়ত্ত করে, তা জানার জন্য গবেষকেরা পোষকের দেহে অবস্থানকালে, আগে ও পরে পরজীবীগুলোর ওপর জিনের ওপর পরীক্ষা চালান।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরজীবীটির এর ৪ হাজার ৫০০টি জিনের প্রকৃতি বদলে দেয়, কিন্তু পোষক পতঙ্গের জিনের প্রকৃতি অপরিবর্তিতই থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, পরজীবীটি এর এই পরিবর্তিত জিন ব্যবহার করে নিজেই প্রোটিন তৈরি শুরু করে।
প্রকৃতি বদলানো পরজীবীর জিনগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৪০০টি সি. ফরমোসানুস জিনের বৈশিষ্ট্য পোষক পতঙ্গের জিনের সঙ্গে মিলে যায়। এ ধরনের জিন কিন্তু কোনো পোষকের দেহে আশ্রয় না নেওয়া অশ্বকেশে পাওয়া যায়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ও জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞানী তাপ্পেই মিশিনা বলেন, ‘পোষককে নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জিনগুলোর সঙ্গে পোষকের জিনের বেশ মিল রয়েছে। আমাদের ধারণা, ‘অনুভূমিক জিন স্থানান্তর’ প্রক্রিয়ায় এমন সক্ষমতা পেয়েছে।’
অনুভূমিক জিন স্থানান্তর বলতে বোঝায়, মা–বাবা বা ভাই–বোন নয় এমন দুইজনের মধ্যে জিনের স্থানান্তর। এক সময় এই প্রক্রিয়াকে বিরল বলে ভাবা হতো, যা কেবল ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেই দেখা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা বুনো উদ্ভিদ, উদ্ভিজ্জ পরজীবী এবং সাপ ও ব্যাঙের মধ্যেও এ ধরনের জিন স্থানান্তর লক্ষ্য করেছেন।
নতুন জিন অধিগ্রহণ বা অন্যের জিনের বৈশিষ্ট্য ধারণের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবদেহ দ্রুত অভিযোজিত হতে পারে। মিউটেশন বা পরিব্যক্তিতে (জিনের প্রাকৃতিক পরিবর্তন) যে দীর্ঘ সময় লাগে সে তুলনায় এ প্রক্রিয়া বেশ দ্রুত। পৃথিবীতে ক্রমেই বিভিন্ন প্রজাতির সুপারবাগ বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার কারণও সম্ভবত এটি।
তাপ্পেই বলেন, ‘অশ্বকেশ পরজীবীর অনুভূমিক জিন স্থানান্তরের ঘটনাটি গবেষণার জন্য উৎকৃষ্ট এক মডেল। এ মডেল ব্যবহার করে আমরা অনুভূমিক জিন স্থানান্তরের অন্তর্নিহিত পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারব। সেই সঙ্গে বিবর্তনীয় অভিযোজন সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে পারব বলে আশা করছি।’
এইচবিও টিভি সিরিজ ‘দ্য লাস্ট অব আস’ অনেকেই দেখে থাকবেন। এক ভয়ংকর ছত্রাকের সংক্রমণে জম্বি হয়ে উঠছে মানুষ। মানবজাতি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। এমন এক বিভীষিকাময় পৃথিবীতে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিছু মানুষ। গল্পটা এ রকমই।
মানুষকে হোস্ট বা পোষক বানিয়ে পরজীবী ছত্রাকের বিস্তার—কিন্তু শুধুই কল্পকাহিনী নয়। বাস্তবে এমন পরজীবী আছে যারা তাদের হোস্ট বা পোষক জম্বি বানিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ মৃত হোস্টের শরীরের নিয়ন্ত্রণ নেয় এরা। ধরুন, একটি মৃত মানুষ টলতে টলতে আপনার দিকে এগিয়ে আসছে—জম্বি এমনই।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন একটি পরজীবীর সন্ধান পেয়েছেন। এরা শিকারি ম্যান্টিসের (এক ধরনের ফড়িং) অন্ত্রে বাস করে। এরপর তার শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফলে। ম্যান্টিসকে কোনো জলাশয়ের দিকে হেঁটে যেতে বাধ্য করে। এরপর পোষককে পানিতে লাফিয়ে পড়তে প্ররোচিত করে!
বিজ্ঞানীরা বলছে, হোর্সহেয়ার (অশ্বকেশ) নামে পরজীবীটি পোষকের জেনেটিক কোড চুরি করে, নিজের দেহেই অনুরূপ জিন তৈরি করে। এরপর পোষকের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।
বিজ্ঞানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অশ্বকেশ পরজীবী ম্যান্টিসের জিন অনুকরণ করে সেটিই ইচ্ছের বিরুদ্ধে পরিচালিত করে। এই আণবিক নিয়ন্ত্রণ খাটিয়ে পোষক ম্যান্টিসকে কোনো আলো ঝলমলে পানির দিকে অগ্রসর হতে বাধ্য করে। পোষক পতঙ্গটি একবার পানিতে ডুবে গেলেই পরজীবীটি মুক্ত হয়ে যায়।
গত ১৯ অক্টোবর কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
অশ্বকেশ পরজীবীর জীবনচক্র সাধারণত পুকুর, ডোবা বা ঝিরি থেকে শুরু হয়। এখানে এগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হয়। এরপর কোনো জলজ পোকার শরীরে লেগে থেকে তীরে আসে। এসব জলজ পোকা যখন ম্যান্টিস বা ঝিঁ ঝিঁ পোকার মতো শিকারি পতঙ্গের আহারে পরিণত হয়, তখন এরা গিয়ে বাসা বাঁধে এই পতঙ্গের পেটে। সেখানে দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে। এর একপর্যায়ে এরা পোষক দেহকে জৈব রাসায়নিক সংকেত পাঠাতে শুরু করে। এ সংকেতগুলো পোষকের দেহের স্নায়ু সংকেতের মতোই। ফলে পোষকের মস্তিষ্ক তখন অশ্বকেশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পোষক পতঙ্গটি হয়ে ওঠে এক জম্বি।
পরজীবীগুলো কীভাবে এ আণবিক অনুকরণ কীভাবে আয়ত্ত করে, তা জানার জন্য গবেষকেরা পোষকের দেহে অবস্থানকালে, আগে ও পরে পরজীবীগুলোর ওপর জিনের ওপর পরীক্ষা চালান।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরজীবীটির এর ৪ হাজার ৫০০টি জিনের প্রকৃতি বদলে দেয়, কিন্তু পোষক পতঙ্গের জিনের প্রকৃতি অপরিবর্তিতই থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, পরজীবীটি এর এই পরিবর্তিত জিন ব্যবহার করে নিজেই প্রোটিন তৈরি শুরু করে।
প্রকৃতি বদলানো পরজীবীর জিনগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৪০০টি সি. ফরমোসানুস জিনের বৈশিষ্ট্য পোষক পতঙ্গের জিনের সঙ্গে মিলে যায়। এ ধরনের জিন কিন্তু কোনো পোষকের দেহে আশ্রয় না নেওয়া অশ্বকেশে পাওয়া যায়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ও জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞানী তাপ্পেই মিশিনা বলেন, ‘পোষককে নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জিনগুলোর সঙ্গে পোষকের জিনের বেশ মিল রয়েছে। আমাদের ধারণা, ‘অনুভূমিক জিন স্থানান্তর’ প্রক্রিয়ায় এমন সক্ষমতা পেয়েছে।’
অনুভূমিক জিন স্থানান্তর বলতে বোঝায়, মা–বাবা বা ভাই–বোন নয় এমন দুইজনের মধ্যে জিনের স্থানান্তর। এক সময় এই প্রক্রিয়াকে বিরল বলে ভাবা হতো, যা কেবল ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেই দেখা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা বুনো উদ্ভিদ, উদ্ভিজ্জ পরজীবী এবং সাপ ও ব্যাঙের মধ্যেও এ ধরনের জিন স্থানান্তর লক্ষ্য করেছেন।
নতুন জিন অধিগ্রহণ বা অন্যের জিনের বৈশিষ্ট্য ধারণের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবদেহ দ্রুত অভিযোজিত হতে পারে। মিউটেশন বা পরিব্যক্তিতে (জিনের প্রাকৃতিক পরিবর্তন) যে দীর্ঘ সময় লাগে সে তুলনায় এ প্রক্রিয়া বেশ দ্রুত। পৃথিবীতে ক্রমেই বিভিন্ন প্রজাতির সুপারবাগ বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার কারণও সম্ভবত এটি।
তাপ্পেই বলেন, ‘অশ্বকেশ পরজীবীর অনুভূমিক জিন স্থানান্তরের ঘটনাটি গবেষণার জন্য উৎকৃষ্ট এক মডেল। এ মডেল ব্যবহার করে আমরা অনুভূমিক জিন স্থানান্তরের অন্তর্নিহিত পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারব। সেই সঙ্গে বিবর্তনীয় অভিযোজন সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে পারব বলে আশা করছি।’
নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের (জেডব্লিউএসটি) মাধ্যমে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় মানচিত্র তৈরি করলেন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মানচিত্রটি মহাবিশ্বের একটি ছোট অংশজুড়ে বিস্তৃত, যেখানে প্রায় আট লাখ গ্যালাক্সি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে এমন গ্যালাক্সিও আছে, যা এত দূরে অবস্থিত যে সেগুলো মহাবিশ্বের শৈশবের সময়কার,
৮ ঘণ্টা আগেআধুনিক জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। তবে এই বহুল ব্যবহৃত উপাদানটিই আজ পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই প্লাস্টিক জমে থাকছে নদী-নালা, সাগর ও মাটির গভীরে, যা জলজ প্রাণী থেকে শুরু করে মানবস্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে মারাত্মক প্রভাব। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা
১ দিন আগেবিশ্বব্রহ্মাণ্ডে প্রতি মুহূর্তে ঘটছে অসংখ্য শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। নক্ষত্রগুলো জ্বলছে বিশাল পরমাণু বিক্রিয়ার শক্তিতে, আর বিশাল উল্কাপিণ্ড ছুটে এসে ধাক্কা দিচ্ছে গ্রহে গ্রহে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করেছেন, যা এই সব কিছুকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাদের দাবি, মহাকা
২ দিন আগেআমাদের গ্রহে প্রাণের বিকাশ ও প্রাচুর্য টিকে আছে অক্সিজেনের কল্যাণে। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সব সময় এমন ছিল না। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে আমাদের বায়ুমণ্ডলে আবারও মিথেনের আধিক্য হবে এবং অক্সিজেনবিহীন অবস্থায় ফিরে যাবে। তবে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
৩ দিন আগে