আজকের পত্রিকা ডেস্ক
রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার খবর পাওয়ামাত্রই বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পবিদদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় ও জটিল টেকটোনিক সীমান্তগুলোর একটি, যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট উত্তর আমেরিকান প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে এবং এর খুব কাছেই রয়েছে ইউরেশিয়ান প্লেট। এমন ভূগঠনবিশিষ্ট অঞ্চলগুলোয় সাধারণত ভয়াবহ ও ব্যাপক পরিসরে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই অঞ্চলে ১৯৫২ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প রাশিয়ার একটি শহরকে গিলে খেয়েছিল এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ব্যাপক ক্ষতি করেছিল।
প্রাথমিক বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাসে জানা গিয়েছিল, এবারের ভূমিকম্পে প্রশান্ত মহাসাগরের আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ প্লাবিত হতে পারে। জাপানের উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লাখো মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়, হাওয়াইয়েও অনেককে উচ্চভূমির দিকে পাঠানো হয়। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলীয় অঞ্চলেও মানুষকে সাগর থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে ছোট আকারের সুনামির দেখা মিললে আশঙ্কা আরও বাড়ে যে ঢেউয়ের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।
বাস্তবে দেখা গেল, আতঙ্ক যতটা ছিল, ক্ষয়ক্ষতি ততটা নয়। জাপান ও হাওয়াইয়ে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এ দুই জায়গায় সুনামি সতর্কতা কমিয়ে আনা হয়েছে এবং কিছু এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজনকে আবার ঘরে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বড় সুনামি না হওয়ার কারণ
প্রতিটি দেশ ভিন্নভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করে। যদি ধারণা করা হয় যে সুনামি ধেয়ে আসছে এবং তা বিপজ্জনক হতে পারে, তাহলে উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কতটা উচ্চতার ঢেউ আসবে, তা প্রাথমিক পর্যায়ে বলা কঠিন।
স্বতন্ত্র ভূমিকম্পবিজ্ঞানী অ্যামিলকার কারেরা-সেভালোস বলেন, ‘সুনামির শক্তি সব দিকে সমানভাবে ছড়ায় না। সুনামির ঢেউ চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে না। কারণ, ভূমিকম্পের ফাটল কোনো সুশৃঙ্খল সরলরেখায় সৃষ্টি হয় না। একইভাবে সাগরতলের নড়াচড়াও একমুখী বা মসৃণভাবে ঘটে না।’
ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, ‘প্রাথমিক সতর্কতা ভূমিকম্পের অবস্থান ও মাত্রার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। তবে শুধু এই তথ্য দিয়ে কতটা পানি সরে যাবে কিংবা কোথায় ঢেউ বেশি হবে, তা বলা যায় না। সেটা বোঝার জন্য আরও বিশ্লেষণ দরকার, যা সাধারণত ভূমিকম্পের ১ থেকে ২ ঘণ্টা পর জানা যায়।’
এই তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্ভুলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে বিজ্ঞানীদের সময় লাগে ১ থেকে ২ ঘণ্টা।
এ ধরনের সুনামিকে নজরে রাখতে সাহায্য করে গভীর সাগরের চাপ সংবেদক নেটওয়ার্ক। এগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সতর্কতা হালনাগাদ করেন। তবে বিজ্ঞানী মেলগার বলেন, বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বসানো কিছু প্রেশার সেন্সরের মাধ্যমে সুনামির গতিপথ ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে এই নেটওয়ার্ক প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া ঢেউয়ের জটিলতা ধরতে এখনো সক্ষম নয়।
সুনামির ঢেউ উপকূলে কতটা উচ্চতায় উঠবে, তা নির্ভর করে সাগরতলের গঠন ও উপকূলীয় ভূপ্রকৃতির ওপর।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূমিকম্পবিজ্ঞানী স্টিফেন হিক্স বলেন, উপসাগর বা দ্বীপের মতো ভূপ্রকৃতি ঢেউয়ের গতিপথ পরিবর্তন করতে বা ঢেউকে আরও উঁচু করতে পারে। আবার দ্বীপের আশপাশে ঢেউ বেঁকে যেতে পারে।
ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, প্রথমত, সঠিকভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, এটি একটি বড় সাফল্য। সুনামি ৩০ ফুট না হলেও তীব্র ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, এমনকি কম উচ্চতার ঢেউও মানুষ ও স্থাপনা ভাসিয়ে নিতে পারে। এখন পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, প্রাণহানির সংখ্যা কম, এটি আংশিকভাবে সম্ভব হয়েছে দ্রুত সতর্কতা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান
রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার খবর পাওয়ামাত্রই বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পবিদদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় ও জটিল টেকটোনিক সীমান্তগুলোর একটি, যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট উত্তর আমেরিকান প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে এবং এর খুব কাছেই রয়েছে ইউরেশিয়ান প্লেট। এমন ভূগঠনবিশিষ্ট অঞ্চলগুলোয় সাধারণত ভয়াবহ ও ব্যাপক পরিসরে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই অঞ্চলে ১৯৫২ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প রাশিয়ার একটি শহরকে গিলে খেয়েছিল এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ব্যাপক ক্ষতি করেছিল।
প্রাথমিক বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাসে জানা গিয়েছিল, এবারের ভূমিকম্পে প্রশান্ত মহাসাগরের আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ প্লাবিত হতে পারে। জাপানের উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লাখো মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়, হাওয়াইয়েও অনেককে উচ্চভূমির দিকে পাঠানো হয়। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলীয় অঞ্চলেও মানুষকে সাগর থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে ছোট আকারের সুনামির দেখা মিললে আশঙ্কা আরও বাড়ে যে ঢেউয়ের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।
বাস্তবে দেখা গেল, আতঙ্ক যতটা ছিল, ক্ষয়ক্ষতি ততটা নয়। জাপান ও হাওয়াইয়ে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এ দুই জায়গায় সুনামি সতর্কতা কমিয়ে আনা হয়েছে এবং কিছু এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজনকে আবার ঘরে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বড় সুনামি না হওয়ার কারণ
প্রতিটি দেশ ভিন্নভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করে। যদি ধারণা করা হয় যে সুনামি ধেয়ে আসছে এবং তা বিপজ্জনক হতে পারে, তাহলে উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কতটা উচ্চতার ঢেউ আসবে, তা প্রাথমিক পর্যায়ে বলা কঠিন।
স্বতন্ত্র ভূমিকম্পবিজ্ঞানী অ্যামিলকার কারেরা-সেভালোস বলেন, ‘সুনামির শক্তি সব দিকে সমানভাবে ছড়ায় না। সুনামির ঢেউ চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে না। কারণ, ভূমিকম্পের ফাটল কোনো সুশৃঙ্খল সরলরেখায় সৃষ্টি হয় না। একইভাবে সাগরতলের নড়াচড়াও একমুখী বা মসৃণভাবে ঘটে না।’
ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, ‘প্রাথমিক সতর্কতা ভূমিকম্পের অবস্থান ও মাত্রার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। তবে শুধু এই তথ্য দিয়ে কতটা পানি সরে যাবে কিংবা কোথায় ঢেউ বেশি হবে, তা বলা যায় না। সেটা বোঝার জন্য আরও বিশ্লেষণ দরকার, যা সাধারণত ভূমিকম্পের ১ থেকে ২ ঘণ্টা পর জানা যায়।’
এই তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্ভুলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে বিজ্ঞানীদের সময় লাগে ১ থেকে ২ ঘণ্টা।
এ ধরনের সুনামিকে নজরে রাখতে সাহায্য করে গভীর সাগরের চাপ সংবেদক নেটওয়ার্ক। এগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সতর্কতা হালনাগাদ করেন। তবে বিজ্ঞানী মেলগার বলেন, বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বসানো কিছু প্রেশার সেন্সরের মাধ্যমে সুনামির গতিপথ ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে এই নেটওয়ার্ক প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া ঢেউয়ের জটিলতা ধরতে এখনো সক্ষম নয়।
সুনামির ঢেউ উপকূলে কতটা উচ্চতায় উঠবে, তা নির্ভর করে সাগরতলের গঠন ও উপকূলীয় ভূপ্রকৃতির ওপর।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূমিকম্পবিজ্ঞানী স্টিফেন হিক্স বলেন, উপসাগর বা দ্বীপের মতো ভূপ্রকৃতি ঢেউয়ের গতিপথ পরিবর্তন করতে বা ঢেউকে আরও উঁচু করতে পারে। আবার দ্বীপের আশপাশে ঢেউ বেঁকে যেতে পারে।
ভূমিকম্প ও সুনামিবিজ্ঞানী ডিয়েগো মেলগার বলেন, প্রথমত, সঠিকভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, এটি একটি বড় সাফল্য। সুনামি ৩০ ফুট না হলেও তীব্র ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, এমনকি কম উচ্চতার ঢেউও মানুষ ও স্থাপনা ভাসিয়ে নিতে পারে। এখন পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, প্রাণহানির সংখ্যা কম, এটি আংশিকভাবে সম্ভব হয়েছে দ্রুত সতর্কতা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান
‘ইভেন্টউড’ নামে একটি মার্কিন কোম্পানি এমন এক ধরনের কাঠ তৈরি করেছে, যার শক্তি ইস্পাতের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং ওজন ছয় গুণ কম। এই কাঠের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপারউড’। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এই কাঠের উৎপাদন শুরু করেছে।
৪ দিন আগেআন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান রসায়নবিদ ড. ওমর ইয়াঘি রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি দ্বিতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে রসায়নে নোবেল জয় করলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শুষ্ক অঞ্চল থেকে পানীয় জল সংগ্রহের প্রযুক্তিতে তাঁর যুগান্তকারী গবেষণার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
১১ দিন আগেচলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর এম ইয়াঘি। আজ বুধবার সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে তাঁদের নাম ঘোষণা করেছে। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তাঁরা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কসের বিকাশ’ ঘটানোর জন্য এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
১১ দিন আগেপদার্থবিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হলো—কত বড় ব্যবস্থার (system) মধ্যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার প্রভাব দৃশ্যমান করা সম্ভব? এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্যবহার করে এমন একটি ব্যবস্থায় কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও কোয়ান্টাইজড শক্তির স্তর প্রমাণ করেছেন—যেটির আকার রীতিমতো...
১২ দিন আগে