Ajker Patrika

সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চে অনৈক্য

  • সংবিধান সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন চায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন
  • গণসংহতি আন্দোলন চায় গণপরিষদ বা সংস্কার সভা
  • নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও জেএসডি চায়, নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংস্কার
সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা 
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ১৬
সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চে অনৈক্য

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রশ্ন উঠেছে বিদ্যমান সংবিধান নিয়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো বলছে, বিদ্যমান সংবিধানের কারণে শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পেরেছেন। তাই ফ্যাসিস্ট-ব্যবস্থা বিলোপে বিদ্যমান সংবিধানের পুনর্লিখন, সংশোধন প্রয়োজন। তবে নতুন সংবিধান কীভাবে প্রণয়ন করা হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তৈরি হয়েছে মতবিরোধ। সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অন্যতম জোট গণতন্ত্র মঞ্চেও এ নিয়ে চলছে সংকট।

গণতন্ত্র মঞ্চ গঠিত হয়েছে ৬টি দল ও সংগঠন নিয়ে—নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। মঞ্চটির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা তৈরি হয়েছে। বিশেষত, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন হবে, নাকি পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

সম্প্রতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন নয়; বরং সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাদের প্রস্তাব, নির্বাচনের মাধ্যমে গণপরিষদ গঠন করতে হবে। সেখানেই নতুন সংবিধান অনুমোদন করা হবে।

সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে গণপরিষদ বা সংবিধান সভার নির্বাচন চায় গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সংবিধানের মৌলিক সংস্কার সংশোধনের মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। তাই সংবিধান সংশোধনের জন্য গণপরিষদ বা সংবিধান সভা নির্বাচন প্রয়োজন।

এ নিয়ে রাস্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংসদ শপথ নেয় সংবিধান রক্ষা করার জন্য। সংবিধানের কোনো মৌলিক সংস্কার তারা করতে পারে না। সংবিধানের কোনো পরিবর্তন যদি সংশোধনের নামে কেউ করে, তাহলে আদালত বা পরের সংসদ এটা বাতিল করে দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত বিষয়গুলো যেন টেকসই হয়, তাই গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা চাই। সংবিধান পরিবর্তনের জন্য সংবিধান সভার নির্বাচন লাগে। এই পদ্ধতির যারা বিরোধিতা করে, তারা অনেকে পদ্ধতিগত জায়গাটা সম্পর্কে স্পষ্টই নয়। স্পষ্ট হওয়ার পরেও যারা করে, তাদের আসলে অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমরা চাই, সংস্কার যেন জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে হয়। এটাকে প্রধান করেই যেন আগামী নির্বাচনটা হয়। ফলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠাই হবে আগামী নির্বাচনের প্রধান লক্ষ্য।’ এ জন্য সংস্কার সভার নির্বাচন প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সাকি আরও বলেন, ‘সংস্কারের প্রশ্নে জনগণের ম্যান্ডেট থাকলে জন-অভিপ্রায় হিসেবে সংবিধান দাঁড়াবে। সেটা আদালত কর্তৃক সংশোধন হিসেবে গৃহীত হবে না। কিন্তু জনগণের অভিপ্রায়ের সংবিধানের ভিত্তি দিতে গেলে গণপরিষদ বা সংস্কার সভা হিসেবে জনগণ থেকে ম্যান্ডেট নিতে হবে।’

এদিকে একেবারে নতুন সংবিধান তৈরির প্রেক্ষাপট এই মুহূর্তে নেই বলে মনে করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য হওয়া কঠিন।’ তবে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন বা সংস্কারের পর সেই গণপরিষদ সংসদ হিসেবে শপথ নিতে পারেন বলে জানান তিনি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটা বিষয় নিয়েই বিতর্ক আছে। গণপরিষদের প্রশ্নে যাওয়া মানে সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান পুনর্লিখন। নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে পাকিস্তানের পাঁচ বছর লেগেছিল। বাংলাদেশের নতুন সংবিধান করতে এখন কত বছর লাগবে? এই সময় কি পাওয়া যাবে? যে সকল সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো সংশোধনীর মাধ্যমে ধীরে ধীরে করা যেতে পারে। তাই আমরা সংবিধান সভার কথা বলি না।’

সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সংবিধান সংস্কার করবে—এমনটাই চান গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংবিধান নিয়ে আলোচনা করবে। কোথায় ঐকমত্যের জায়গা আছে, খুঁজে বের করবেন। সংবিধান সভার নির্বাচনের বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত নয়। সরকার সেখানেই দাঁড়াবে, যেখানে ঐকমত্য আছে।’

সংবিধান কীভাবে সংস্কার হবে, সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সংসদ নেবে বলে জানিয়েছেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, তা পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সিদ্ধান্ত নেবে। যদি সংবিধান পুনর্লিখন প্রয়োজন হয়, তবে তারা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে তা করবে। যদি মনে করে, সংশোধনের মাধ্যমেই সংস্কার সম্ভব, তবে তা-ই করবে।’

দলগুলোর নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, সংস্কার পদ্ধতি প্রশ্নে মতবিরোধের কারণে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়নি। একই সঙ্গে মতভিন্নতার কারণে মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে দূরত্ব। মতভিন্নতার বিষয়টি উঠে এসেছে নেতৃবৃন্দের আলোচনায়ও। তবে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে মঞ্চ ভাঙার অথবা একাধিক দল মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন তাঁরা।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই সংবিধান প্রশ্নে গণতন্ত্র মঞ্চের দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। গত ৩০ ডিসেম্বর মঞ্চের সর্বশেষ মিটিংয়েও এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। ২৫ জানুয়ারি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আবারও মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে একটি সমাধানে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছেন নেতা-কর্মীরা।

মতভিন্নতা প্রসঙ্গে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘সংস্কার কীভাবে হবে, তার পদ্ধতি নিয়ে মঞ্চের দলগুলোর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন অভিমত আছে। আমরা আশা করি, শিগগির সেটা একটা জায়গায় পৌঁছাবে।’

সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। এটা মতবিরোধ নয়। যার যার মত থাকতে পারে। আমরা চেষ্টা করব ঐকমত্যে পৌঁছাতে। শেষ পর্যন্ত না হলে যার যার রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা প্রচার করবে।’

মাহমুদুর রহমান মান্না মতভিন্নতা প্রসঙ্গে বলেন, দুটি দল ভিন্ন কথা বলছে। একটা দল বলছে, সংবিধান সভা ছাড়া হবেই না। আরেকটা দল বলছে, তারা ভাবছে, কী করা যায়।

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, টানাপোড়েন আছে, এটা সত্য। তবে মোর্চা ভেঙে যাওয়া বা দুই ভাগ হওয়ার মতো পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সবারই একটা আন্তরিক চেষ্টা আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তাঁর পরিচালিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা একটি সংকটজনক সময় পার করছি। আমাদের ভলান্টিয়ার ও সেন্টার ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা হসপিটাল এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এমতাবস্থায় ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হতে পারে এই আশঙ্কায় আগামী এক সপ্তাহের জন্য সেন্টারের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।’

পোস্টে আরও লেখা হয়, ‘আমরা আপনাদের কাছে দোয়া চাই। ইনশাআল্লাহ, খুব শীগ্রই আমরা এই সংকটাপন্ন মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে পারবো এবং ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের কার্যক্রম যথানিয়মে পরিচালিত হবে।’

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, যা গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর গড়ে ওঠে। এর কার্যক্রম রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় পরিচালিত হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় নির্বাচনি প্রচারের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআই দিয়ে তৈরি ছবি বুঝতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করলেন রিজভী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

অনিচ্ছাকৃত ভুল বক্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

রুহুল কবির রিজভীর বিবৃতি। ছবি: ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট
রুহুল কবির রিজভীর বিবৃতি। ছবি: ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আরটিভির লোগো ব্যবহার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয় এবং এ ছাড়াও শরিফ ওসমান হাদিকে আক্রমণকারী একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তির সঙ্গে ডাকসুর ভিপির চা খাওয়ার দৃশ্যটিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ দুইটি বিষয় ছিল ভিত্তিহীন এবং এআই জেনারেটেড।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ফ্যাক্ট চেক না করে উল্লিখিত বিষয় দুটি নিয়ে আজ দুপুরে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি সভায় বক্তব্য রাখি। এই অনিচ্ছাকৃত ভুল বক্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

আজ ফেসবুক পোস্টে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। তিনি পোস্টে বলেন, ‘আমাকে নিয়ে আজকে বিএনপির সমাবেশে জনাব রুহুল কবির রিজভী প্রদত্ত বক্তব্যে ভুয়া ছবি নির্ভর যে মিথ্যা অভিযোগ (আমার সাথে শুটার একই টেবিলে চা খাচ্ছেন দাবিতে) তুলেছেন, তা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে দল হিসেবে বিএনপি এবং ব্যক্তি রিজভী নিজেকে অপতথ্য ছড়ানোর অপরাধ থেকে দায়মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগে, আজ দুপুরে বিএনপির সমাবেশে রুহুল কবির রিজভীর বলেছেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলায় শনাক্ত ব্যক্তি ছাত্রলীগের নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সাদিক কায়েম এর সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছেন, এর বিচার কে করবে?’

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ১৪ ডিসেম্বর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ এবং ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান করেন তিনি।

বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ‘“১৪ ডিসেম্বর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস” এবং ১৬ ডিসেম্বর “মহান বিজয় দিবস”। আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ এই দুটি দিন। জাতির ইতিহাসে দিবস দুটি আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও গৌরবের চিরন্তন স্মারক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যাঁরা নিজেদের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করেছেন—সেই সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে তাঁদের সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে যাঁরা দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেছিলেন, সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমরা গভীর সম্মান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি সকল শহীদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’

জামায়াত আমির বলেন, দেশবাসী আজ এমন একসময় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে, যখন ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদী সরকারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুনের নিষ্ঠুর অভিশাপ থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে এবং শান্তি, স্বস্তি ও স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে। একই সঙ্গে দেশ ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিপরীত পক্ষে ফ্যাসিবাদের দেশি-বিদেশি দোসররা এখনো থেমে নেই মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা নানামুখী ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশলের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ ১২ ডিসেম্বর শরিফ ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলা। এই প্রেক্ষাপটে দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

এই দুটি দিবস উপলক্ষে এরই মধ্যে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত। তারা জানায়, আগামী ১৪ ডিসেম্বর, রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন হলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ ডিসেম্বর, সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগে যুব ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন অত সহজ হবে না–আমার কথাই সত্যি হচ্ছে: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: ফোকাস বাংলা

আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের করা ভবিষ্যদ্বাণী ‘সত্য হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমি আগে বলেছিলাম–নির্বাচন অত সহজ হবে না, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। গত কয়েকদিনের ঘটনা, গতকালকের ঘটনা, চট্টগ্রামে আমাদের প্রার্থীর ওপরে গুলিবর্ষণের ঘটনা–এই সবকিছু নিয়েই প্রমাণিত হচ্ছে, আমি যা বলেছিলাম তা সত্যি হচ্ছে আস্তে আস্তে।’

রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মতভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে নিয়ে না আসি, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, এই দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রত্যেকবার এই দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়েছে। প্রত্যেকবার আপনারা–কখনো শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে, কখনো দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে–আস্তে আস্তে সেই খাদের কিনারা থেকে দেশকে আবার বের করে নিয়ে এসেছেন।’

ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্রের খবর বলছে, এই ষড়যন্ত্রগুলো আরও খারাপও হতে পারে। আমাদের ভয় পেলে চলবে না। মানুষকে সাহস দিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা যত ঐক্যবদ্ধ হব, তত সামনে এগিয়ে যাব। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে। এই পরিস্থিতি যত আমরা তৈরি করব, ষড়যন্ত্রকারীরা তত পিছু হটতে বাধ্য হবে।’

চট্টগ্রামে ও ঢাকায় দুই প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষনের ঘটনা সম্পর্কে তারেক বলেন, চট্টগ্রামে একটা ঘটনা ঘটেছে। গতকাল (শুক্রবার) একটা ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা দিয়ে কেউ কোনো ফায়দা লোটার অবশ্যই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

খাল খনন, স্বাস্থ্য কার্ড, কৃষক কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকার সমস্যা, তথ্যপ্রযুক্তি, বায়ু ও পানি দূষণ রোধ প্রভৃতি বিষয়ে বিএনপি প্রণীত পরিকল্পনা এবং এসবের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিস্তারিত তুলে ধরেন তারেক রহমান।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি কী পেলাম–এটা বাদ দিতে হবে। সময় এসেছে, আমি দেশ এবং জাতির জন্য কতটুকু করতে পারলাম। আজকে আপনি যদি দেশ এবং জাতির জন্য কিছু করেন, তাহলে আগামী দিনে আপনার সন্তান, আপনার নাতিপুতিরা ভালো থাকবে। আপনার ভবিষ্যৎ বংশধর ভালো থাকবে। আসুন, আমাদের লক্ষ্য হোক দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা ও আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করা।’

এর জন্য যুদ্ধে নামার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। দয়া করে আসুন, এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এই যুদ্ধে জেতার সবচেয়ে বড় সহযোগী কে? বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত