Ajker Patrika

সরকার এখন জনগণের প্রতিপক্ষ: জিএম কাদের

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩, ১৭: ০০
সরকার এখন জনগণের প্রতিপক্ষ: জিএম কাদের

সরকার এখন জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের পল্লিনিবাসে শায়িত সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সরকার এখন জনগণের প্রতিপক্ষ। নির্বাচন যাদের মাধ্যমে হবে তারাও সরকারের পক্ষে। সবকিছুই এখন সরকারদলীয় হয়ে গেছে। সরকার যখন পক্ষ হয় তখন অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন আর হয় না বরং পক্ষপাতিত্ব হয়। সরকারি কর্মকর্তারা, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরাসরি সরকারদলীয় হিসেবে কাজ করে। এ জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও সম্ভব নয়। 

স্বাধীন দেশের নাগরিকদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটা অনীহা দেখা দিয়েছে দাবি করে জিএম কাদের বলেন, ‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। রাষ্ট্রীয় সকল কাজকর্ম জনগণের ইচ্ছেমতো হবে, এটাই আমাদের প্রজাতন্ত্র বা গণতন্ত্র। কিন্তু জনগণের প্রতিনিধি যেভাবে প্রতিনিধিত্ব করবে, তা এখন আর হচ্ছে না। জনপ্রতিনিধি কথামতো না চললে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাঁকে পরিবর্তন করবে। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থায় জনগণ এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ কারণে জনগণ এখন রাজনীতি ও নির্বাচনবিমুখ হয়েছে।’ 

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু যেভাবে বিরাজনীতিকরণ চলছে, তা দেশের জন্য কখনোই মঙ্গলজনক নয়। আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের যে মূল চেতনা, তা এখন সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কারণ, জনগণ এখন দেশের প্রকৃত মালিক নয়। সঠিক নির্বাচন যত দিন হবে না, তত দিন আমরা প্রজাতন্ত্রে বা গণতন্ত্রে আছি এটা বলা যাবে না।’ 

 জি এম কাদের আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের সংবিধান এবং ভারতের সংবিধানে মিল রয়েছে। কিন্তু ভারতের মতো আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারছি না। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এ কারণে এখন জবাবদিহিমূলক নির্বাচন হচ্ছে না। সার্বিকভাবে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত। সরকার সবকিছু নিজে কুক্ষিগত করে রেখেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ 

আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু এখন দেশের যে সার্বিক অবস্থা তা থেকে উত্তরণে সরকারকে আগে উদ্যোগ নিতে হবে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারের ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সবাইকে নিয়ে বসে এর সমাধানও বের করতে হবে। কারণ, এখন সরকারই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। এ কারণে সামনের দিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত। নির্বাচনের আগের পরিবেশপরিস্থিতি বুঝে জাতীয় পার্টি সিদ্ধান্ত নেবে।’ 

জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কোনো সুযোগ নেওয়ার রাজনীতি করে না। আমরা দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতি করছি। মানুষ এখনো জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমাদের প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে। আর বিএনপি-আওয়ামী লীগ যেভাবে একে অপরকে কামড়াকামড়ি করছে, এ কারণে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কাকে ভোট দেবে। কাজেই আমরা যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রত্যাশার রাজনীতি করতে পারি, তাহলে ৮০ ভাগ মানুষের অনেকেই ভোট দেবে।’ 

এ সময় রংপুর জেলা ও মহানগর জাপার সভাপতি রসিক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, জেলার সদস্যসচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগরের সহসভাপতি লোকমান হোসেনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলায় কে কী বললেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতার ওপর হামলার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের এমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় ফেসবুকে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের ফেসবুক ওয়ালে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই অমানবিক ও নৃশংস ঘটনার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দেশ অত্যন্ত সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। একটি গোষ্ঠী আগামী নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে এবং যেকোনো মূল্যে এ দেশের মানুষ যাতে তাদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে পারে তার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে লিখেন, ‘ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’

রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা মতভিন্নতার কারণে এ ধরনের সহিংসতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এক পোস্টে লিখেন, ‘ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমি এই ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করছি এবং দোয়া করি, আল্লাহ তাআলা তাঁকে পূর্ণ সুস্থতা দান করুন।’

অন্য আরেক পোস্টে জামায়াত আমির লিখেন, ‘ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে যে, সমাজের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের পাকড়াও করা নির্বাচন কমিশনের প্রধানতম দায়িত্ব বলেও মন্তব্য করেন শফিকুর রহমান। আরও বলেন, ‘যদি এই কাজে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শিত হয়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের বুলি একেবারেই ফাঁকা বলে প্রমাণিত হবে। জনগণের জীবন, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে জনগণ তাদের পাশে দাঁড়াবে।’

এদিকে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি লিখেন, ‘ওসমান হাদিকে গুলি করা হলো। চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টারদের কবল থেকে ঢাকা সিটিকে মুক্ত করতে অচিরেই আমাদের অভ্যুত্থান শুরু হবে। রাজধানীর ছাত্র-জনতাকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, ‘অতি সত্বর এই গুলিকারীকে চিহ্নিত করতে হবে এবং একই সঙ্গে এই ঘটনার পেছনের রাজনৈতিক মোটিভ উদ্ঘাটন করে জাতিকে জানাতে হবে। একই সঙ্গে আহ্বান জানাব, দলমত-নির্বিশেষে যেসব প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারের জন্য মাঠে থাকবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মির্জা গালিব এক পোস্টে লিখেন, ‘ওসমান হাদি জুলাইয়ের আইকনিক ফিগার, আমাদের সময়ের নায়ক। হাদিদের কোনো ভয় থাকে না, কোনো মৃত্যু থাকে না। যারা কাপুরুষের মতো গুলি করে বিপ্লবকে শেষ করতে চায়; তারা জেনে রাখো, আমাদের বিপ্লব চলবেই। হাসবুনাল্লাহ।’

হাদির হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের শেষ পরিণতি দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলের হয়ে ভিপি পদে লড়াই করা ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম আবিদ। তিনি বলেন, ‘হাদি ভাই জুলাইয়ে আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা। আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকেই নানান হুমকির মধ্য দিয়ে উনি গেছেন। যে শক্তিই হাদি ভাইয়ের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত তাদের শেষ পরিণতি আমরা দেখে নিব, ইনশা আল্লাহ। জুলাই বিপ্লবের সন্তানদের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি সব সময়।’

জুলাইয়ের পর আমরা কিছু ধান্দাবাজ নব্য বিপ্লবীর সন্ধান পেয়েছি মন্তব্য করে আবিদ বলেন, ‘যারা এককালে পতিত ফ্যাসিস্ট-এর স্লোগান ধরতো, মিছিল করত। ফ্যাসিস্ট চলে গেছে, কিন্তু এই নব্য বিপ্লবীরা ফ্যাসিস্টের বয়ানে কথা বলছে। ইতিমধ্যেই এরা হাদি ভাইয়ের ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। কতটা নোংরা এরা। লা’নত এদের ওপর!’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম লিখেন, ‘হে আসমান ও জমিনের মালিক, দুনিয়া ও আখিরাতের মালিক, আপনি হাদি ভাইকে আপনার রহমতের চাদরে আবৃত করুন, সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেন, ‘আল্লাহ আমার ভাইকে বাঁচাইয়া রাখো।’

ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টের পোস্টে লিখেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও কালচারাল এস্টাব্লিশমেন্ট হাদির সংগ্রামকে ভিলিফাই করে তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই শত্রুর সঙ্গেও ইনসাফ চাওয়া হাদি কেই সন্ত্রাসীরা ভয় পায়, হাদির ইনসাফের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে চায়।’

ওসমান হাদি আমাদের ভাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের সহযোদ্ধা উল্লেখ করে ফরহাদ লিখেন, ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তীতে ওসমান হাদি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য অবিচলভাবে লড়ে যাচ্ছেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর শাহবাগের বিরুদ্ধে ওসমান হাদি এক অবিচল কণ্ঠ। কিন্তু আমরা পূর্বেও দেখেছি, এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে যারাই দাঁড়িয়েছে তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছে। আজ সেই পুরোনো নীলনকশাই আবারও সক্রিয় হওয়ার শঙ্কা দেখা যাচ্ছে।’ তিনি হাদির সুস্থতা কামনা করেন।

সাঈদ মাহমুদ নাবিল নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়, যেই মানুষটা গতকাল বলেছিল, ‘“আমাদের বুকে গুলি চালানোর আগ পর্যন্ত কাউকে আমরা প্রতিরোধ করব না”’—সেই মানুষটা আজকে গুলিবিদ্ধ! হাদি ভাই, এই যাত্রায় ফিরে আসুন। আমরা প্রতিরোধ করব ইনশা আল্লাহ, প্রবলভাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে: গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে: গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট

শরীফ ওসমান হাদীকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় তফসিল ঘোষণার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট।

আজ শুক্রবার জুলাই অভ্যুত্থান ও সংস্কারের আদর্শ ধারণকারী তিন দলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জোটের মুখপাত্র মো. নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু—যৌথ বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেন।

নেতারা বলেন, তফসিল ঘোষণার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জুমার নামাজের পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনে হামলা ও সন্ত্রাস কোনো সভ্য সমাজে বরদাশতযোগ্য নয়।

নেতারা আরও বলেন, হাদীর ওপর সশস্ত্র হামলা গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত। এ ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতায় বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের পেছনে শক্তিশালী গডফাদারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

তাঁরা হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নেতারা আরও বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে যেকোনো সহিংসতা এ মুহূর্তে অগ্রহণযোগ্য। জনগণের নিরাপত্তা ও প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত না হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দোষীরা যে-ই হোক, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটি জানান তিনি।

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন অন্যতম জুলাই যোদ্ধা এবং এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটি ভীতি সৃষ্টির সুস্পষ্ট অপচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, হামলাকারীদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ জরুরিভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রার্থী, দলীয় কর্মী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলাটি পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নির্বাচন বানচালের কোনো সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কি না, সরকারকে তাও গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

পরওয়ার বলেন, ‘ওসমান হাদী গত ১৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে জানান, ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার, প্রশাসন তাঁর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে গুরুতর অবহেলার শামিল। আমরা প্রশাসনের এ দায় এড়ানোর নিন্দা জানাই।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এ ধরনের বর্বর হামলা দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপর্যস্ত করে। আমরা আশা করি, সরকার ও প্রশাসন ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করবে। পাশাপাশি আমি হাদীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং তাঁর পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা তারেক রহমানের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘সারা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যত মানুষ আছে, আমাদের সবার উচিত হবে, এ ঘটনার তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানানো। এই নৃশংস ঘটনার আমি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’

বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পাশাপাশি ছাত্রদলসহ দলের সবার প্রতি আহ্বান করছি, সরকারকে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করা, যেন তারা সুষ্ঠু তদন্ত করে দুষ্কৃতকারীকে খুঁজে বের করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত