Ajker Patrika

এরশাদের সঙ্গে বেইমানি করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে গিয়েছিলাম: সংসদে চুন্নু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ২১: ০১
এরশাদের সঙ্গে বেইমানি করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে গিয়েছিলাম: সংসদে চুন্নু

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছিলেন বলে জানান দলটির বর্তমান মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। কিন্তু বেগম রওশন এরশাদসহ কয়েকজন নেতা এরশাদের সঙ্গে বেইমানি করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। জাপা সেই নির্বাচনে অংশ না নিলে অসাংবিধানিক পরিস্থিতি ও সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হতো বলেও দাবি করেন চুন্নু।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে গত সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে লালমনিরহাট-১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন জানান, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ তাঁর কাছে পরাজিত হন এবং জামানতও বাজেয়াপ্ত হয় এরশাদের। এ বক্তব্য নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও মসিউর রহমান রাঙ্গা পাল্টা বক্তব্য দেন।

সোমবার পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সংসদে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। স্পিকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই দিন বলেন, বক্তব্যে তথ্যগত কোনো ত্রুটি পেলে বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হবে।

এরশাদের জামানত বাতিল ইস্যুর প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন মুজিবুল হক চুন্নু। তাঁরা কয়েকজন ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বেইমানি ও বিদ্রোহ করে বেগম এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। 

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন মহাজোটে হয়েছিল। ২০১৪ এবং ২০১৮… জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনমুখী দল।

চুন্নু বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল। আমাদের চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চূড়ান্ত সময়ে বললেন নির্বাচন করবেন না এবং সারা দেশের সমস্ত প্রার্থীকে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য চিঠি দেন। নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নেন।’ 

চুন্নু বলেন, ‘সেদিন এমন একটা অবস্থা হয়েছিল... বিএনপি নির্বাচনে আসে না। কোনো দল আসবে না। জাতীয় পার্টি যদি না আসে তাহলে বাংলাদেশে একটা অসাংবিধানিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো। সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হতো। সেই দিন বেগম রওশন এরশাদ এবং আমরা কয়েকজন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বেইমানি ও বিদ্রোহ করে বেগম এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছিলাম।’

লালমনিটরহাট-১ আসনে এরশাদের নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘সেই নির্বাচনের সময় এরশাদ সাহেব লালমনিরহাট, রংপুরসহ কয়েকটি আসনে আগেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। রংপুরেও তিনি নির্বাচন করতে চাননি। আমরা শুধু বৈধতার জন্য... এই সংসদে এরশাদ সাহেবের মতো লোক আছে, এটা প্রমাণ রাখার জন্য সেদিন আমরা কষ্ট করে তাঁকে নির্বাচন করার ব্যবস্থা করেছি। লালমনিরহাটে তিনি নির্বাচন করেন নাই।’ 

লালমনিরহাট-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মোতাহার হোসেনকে ইঙ্গিত করে চুন্নু বলেন, ‘গতকালকে (সোমবার) যিনি বক্তব্য রাখলেন। ২০১৪ সালে আমরা বেগম এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে না আসতাম তাহলে তিনি এমপি বা প্রতিমন্ত্রীও হতে পারতেন না। আমাদের নির্বাচন করার কারণে তিনি প্রতিমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন। মানুষ যে কেন ভুলে যায় অতীত।’ 

চুন্নু বলেন, ‘এরশাদ সাহেব নির্বাচন করেন নাই। লালমনিরহাটে তিনি প্রত্যাহার করেছিলেন। কিন্তু তিনি (মোতাহার হোসেন) কী করে বলেন এরশাদ সাহেবকে পরাজিত করেন। তাঁর মতো লোক… আমরা কি বলতে পারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফেল করাব। এত বড় দুঃসাহস কি আমার হবে? এই রকম দুঃসাহসিক কথা তিনি কী করে বললেন? তিনি অসত্য কথা বলেছেন।’ 

বেইমানি করে নির্বাচন করেছিলেন জানিয়ে চুন্নু বলেন, ‘২০১৪ সালে এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আমরা কয়েকজন বেইমানি করে নির্বাচন করেছিলাম বলেই নির্বাচন হয়েছিল। তিনি প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। আজকে কী করে এরশাদ সাহেব সম্পর্কে এই কথা বলতে পারে। এরশাদ সাহেব আর যাই করেন কাবিখা বিক্রি করেন নাই। বালু বিক্রি করেন নাই। অনেকই এগুলো করেন। তিনি মোতাহার হোসেনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্বাচন করেন নাই। তাঁকে ফেল করানো হয়েছে।’ 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদে লালমনিরহাট-১ আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহার হোসেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে ৫ হাজার ৩৮১ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দ্বিতীয় হওয়া সাদেকুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৫৫১ ভোট। 

এদিকে সোমবার জাতীয় সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত ইস্যুতে সরকারদলীয় এমপি মোতাহার হোসেন ও জাতীয় পার্টির এমপিদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে মঙ্গলবার সংসদে রুলিং দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে স্পিকার সরকার দলের এমপির রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন বিষয়গুলো এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের বক্তব্যের অসংসদীয় ভাষা এক্সপাঞ্জ করেন। 

স্পিকার বলেন, গতকাল (সোমবার) মহামান্য রাষ্ট্রপতির ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে মাননীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বক্তব্য দানকালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন যে বিষয়গুলো উত্থাপন করেছিলেন, সেই সব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হলো। সেই সঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য মাননীয় কাজী ফিরোজ রশীদ তাঁর বক্তব্যে যে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন তাও এক্সপাঞ্জ করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘আজ শরিফ ওসমান বিন হাদির যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, এই দুর্ঘটনা আরও ঘটেছে। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে আমাদের এক এমপি প্রার্থীর ওপরে যা হয়েছে, এটা ষড়যন্ত্র। এটার বিরুদ্ধে যদি আমাদের অবস্থান নিতে হয়, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যদি অবস্থান নিতে হয়, যেকোনো মূল্যে আমাদের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেকোনো মূল্যে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ফিরিয়ে আনতে হবে, গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে পারে এই দেশের মানুষ, এই ষড়যন্ত্র দমিয়ে দিতে পারে, রুখে দিতে পারে গণতন্ত্র।’

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির ষষ্ঠদিনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের পরিকল্পনাগুলো তোমাদের কাছে অর্পণ করছি। আমি বিশ্বাস করি, আজকে যে দায়িত্ব তোমাদের দিলাম মানুষকে বোঝানোর জন্য, যে দায়িত্ব দিলাম মানুষের সমর্থন জোগাড়ের জন্য, সেটি তোমরা করতে সফল হবে। কারণ, তোমাদের সেই যোগ্যতা আছে, তোমাদের সেই মেধা আছে। ফার্মার্স কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড প্রভৃতি বিষয়ে তোমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে ঘরে ঘরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে।’

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্ব ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খানের সঞ্চালনায় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণে তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণায় অনেকে ভারাক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু স্বাগত জানাতে বাধ্য হয়েছে। আমরা স্বাগত জানিয়েছি, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি। আমরা বলেছি, এ জন্যই গণ-অভ্যুত্থানের যত প্রত্যাশা, তার মধ্যে প্রধান ও প্রাথমিক প্রত্যাশা ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার প্রয়োগ করা, এই তফসিল ঘোষণা করা।’ তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন, কেউ কেউ বলেছে, আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে, একই দিনে গণভোট আর সংসদ নির্বাচন হলে আমরা মানি না। কেউ কেউ বলেছে, ২০২৯ সালের দিকে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করেন। এরা সবাই....আমি কারও নাম নিতে চাই না...গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মত করে গণতন্ত্র চায়, তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

কোন দলের নাম উচ্চারণ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোটপ্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না। আমাদের গ্রামের ভাষায় কথা বলে যে ভাশুরের নাম মুখে নেওয়া যায় না। এখন সেই দল আওয়ামী লীগের ভোট টানার জন্য তাদের যে ভূমিকা, সেটা জনগণের সামনে উন্মোচন করেছে।’

দলটির উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘যাদের ইতিহাস হচ্ছে সব সময় বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, যাদের ইতিহাস হচ্ছে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে, তাদের কথাও আমাদের বলতে হবে। যারা ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, তা আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞেস করি, সেই মুক্তিযুদ্ধটা কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল?’ তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে, তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করি নাই। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন।’

সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে: শামসুজ্জামান দুদু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এক দিনে তিনি এতটা অসুস্থ হননি।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রতি অভিযোগ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে (খালেদা জিয়াকে) যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তিনি হঠাৎ হাসপাতালে, এটি সত্য নয়। তাঁকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ, যা কোনো সভ্য সমাজেই কাম্য নয়।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়াকে রক্ষা করাই গণতন্ত্র রক্ষার পথ। তাঁকে যদি সুস্থ করা যায়, বাংলাদেশও সুস্থ হবে। তাঁর জীবন গণতন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজীবন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। অথচ তিনি এখন হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান আমাদের আদর্শ। তাঁরা গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ লড়াই করেছেন। তাই বাংলাদেশকে কেউ পরাধীন রাখতে পারবে না, যদি আমরা সবাই এক থাকি।’

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনে যেখানেই দাঁড়িয়েছেন, জনগণ তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি কখনো পরাজিত হননি।

শামসুজ্জামান দুদু দলের নেতা-কর্মীদের খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় নিয়মিত দোয়া করার আহ্বান জানান।

দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৯
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে এসে পৌঁছাবেন। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এর পর থেকে তিনি সে দেশেই আছেন।

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিল এবং কোনো কোনো মামলায় আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পান। এর পর থেকে তাঁর দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়।

তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন—এমন কথা বিএনপি নেতারা কয়েক মাস ধরেই বলে আসছেন। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বলেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাল জাপা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (আনিসুল)। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি (জাপা) একাংশের ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব ও ফ্রন্টের মুখপাত্র এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এ নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে এ নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই খোদ রাজধানীর বুকে ওসমান হাদির মতো একজন পরিচিত মুখ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নৃশংস হামলার শিকার হলো। এ ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এই অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ, ওসমান হাদির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত