Ajker Patrika

দেশের অর্থনীতি নিয়ে জি এম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২২, ২০: ২৮
দেশের অর্থনীতি নিয়ে জি এম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর

বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। শিক্ষিত হয়েও অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো না পড়ে যে সমস্ত রাজনীতিবিদ বক্তব্য দেন, তাদের কী বলব!’ 

সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত গবেষণা ও সংবাদ প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যে ঝুঁকিপূর্ণ ইনডেক্স প্রকাশ করছে, সেখানে ২৫টি দেশের তালিকায় অনেক বড় বড় দেশ আছে, কিন্তু বাংলাদেশের নাম নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংবাদগুলো কি এই সমস্ত রাজনীতিবিদ পড়েন না? না পড়েই তাঁরা যেসব বক্তব্য রাখছেন, সেগুলো তো গুজব রটানোর শামিল। আমি আশা করব, শিক্ষিত মানুষগুলো যেন অশিক্ষিতের মতো কথা না বলেন।’ 

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বক্তব্য ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হতে পারে’ এবং বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এখন সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে’—এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জিডিপির ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নিরাপদ। সে জায়গায় আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৬ শতাংশ এবং এর বিপরীতে সুদের ব্যয় জিডিপির মাত্র ২ শতাংশ। আর জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ঋণ নেওয়া যায়। সেই জায়গায় আমাদের ঋণ মাত্র ৩৬ শতাংশ। সুতরাং, দেশের অর্থনীতির ভিত শক্ত।’ 

বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করার ক্ষেত্রে কখনো দেরি করেনি, সময়মতো ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরের দিকে।’ 

ড. হাছান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সে কারণেই ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যে ডেটা সংগ্রহ করেছে, সেখানে অনেক বড় বড় দেশ পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, তুরস্ক, মেক্সিকো, মরক্কোসহ বহু দেশের নাম থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের নাম নেই। আমাদের রাজনীতিবিদ যাঁরা এ নিয়ে কথা বলছেন, তাঁদের বলব একটু পড়াশোনা করার জন্য।’ 

আইনের শাসন নিয়ে বিএনপির মহাসচিবের নেতিবাচক মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিই আদালতের রায় মানে না। বিএনপির আইনজীবীরাই আদালতে প্রধান বিচারপতির দরজায়, অর্থাৎ দেশের প্রধান বিচারালয়ে লাথি মেরেছিলেন। তাঁরা আইন-আদালত কোনোটাই মানেন না, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান। আর দেশে আইনের শাসন আছে বিধায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যকে আদালতের রায়ে জেলে যেতে হয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হয়। আর আদালতে শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও বিএনপির নেত্রী বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে মুক্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। সে জন্য মির্জা ফখরুলের উচিত বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো।’ 

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি যাবে না—এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো নির্বাচনকেই ভয় পায়। আশা করব, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, তারা ইসির সংলাপে যাবে। সেখানে গিয়ে তাদের ওজর-আপত্তি থাকলে সেটা জানিয়ে আসবে।’

 এর আগে স্যাটেলাইট টেলিভিশন এটিএন বাংলার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এটিএন বাংলার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত