Ajker Patrika

বুদ্ধিজীবীদের কার কত মূল্য দাঁড়িপাল্লায় মেপে দেখতে চাই: শেখ হাসিনা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বুদ্ধিজীবীদের কার কত মূল্য দাঁড়িপাল্লায় মেপে দেখতে চাই: শেখ হাসিনা 

গণতন্ত্র থাকলে অনেক বুদ্ধিজীবীর নাকি মূল্য থাকে না। কার কত মূল্য এখন দাঁড়িপাল্লায় মেপে আমার দেখতে হবে। কার কত মূল্য সেটা আমরা দেখতে চাই—এমনটা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কলাবাগান মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবীরা আছেন। নানা কথা বলেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। তার জবাবও আমি দেব। তারা মানুষকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে। তাদের কাজই হচ্ছে বিভ্রান্ত করা। কারণ, গণতন্ত্র থাকলে তাদের না কি মূল্য থাকে না। আর যদি কোনো অস্বাভাবিক সরকার হয় উনাদের মূল্য না কি বেড়ে যায়। কার কত মূল্য এখন দাঁড়িপাল্লায় মেপে তাদের দেখতে হবে আমার। কার কত মূল্য সেটা আমরা দেখতে চাই। ক্ষমতায় থাকতে কই দেশের মানুষের তো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি।’ 

ভোট চুরির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছি। ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকার কারণে অগ্নি সন্ত্রাসের সময়বাদে অন্যসময়ে মানুষ শান্তিতে থাকার কারণে আত্ম সামাজিক উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আমরা কাজ করে মানুষের হৃদয় জয় করে তাদের ভোট পাই। আমাদের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তারাই ভোট চুরি করে। ভোট চুরি ছাড়া তারা জিততে পারে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনেই সেটা প্রমাণিত সত্য।’ 

বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বিএনপির অবস্থা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২৩৩টি আসনে বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টি সিট। জনগণ তাদের দুর্নীতি, চুরি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলাভাই সৃষ্টির জন্য প্রত্যাখ্যান করেছিল। ২০১৩-১৪ সালে তারা নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। এখনো বহু মানুষ সেই অগ্নি সন্ত্রাসের ক্ষত বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। ২০১৮ সালে আমি সংলাপ করেছিলাম। তারা নির্বাচনে এসেছিল। কিন্তু তাদের নির্বাচন হয়ে গেল নমিনেশন বাণিজ্য। লন্ডনে বসে তারেক জিয়া দেয় নমিনেশন। গুলশান অফিস থেকে ফখরুল ইসলাম দেয় নমিনেশন। আর পুরানা পল্টন অফিস থেকে রিজভি দেয় নমিনেশন। সকালে বলে এ আমাদের প্রার্থী কিছুক্ষণ পরে এ নয় অন্যজন প্রার্থী। তারেজ জিয়ার তো কথাই ছিল কত টাকা দেবেন-নমিনেশন নেবেন। যে টাকা দেবেন না নমিনেশন বাদ। ওইভাবে নমিনেশন বিক্রির ফলে তাদের নির্বাচন ভেস্তে যায়। সব দোষ দেয় আমাদের ওপর। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তির ওপর বিশ্বাস করে। জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগই সংগ্রাম করেছে। জনগণের ভোট জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। 

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে শেখ হাসিনাশেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এর পর অস্ত্র হাতে নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসে মানুষের ভাগ্য গড়েনি। ৭৫ এর আগে মানুষ যেখানে ছিল তার থেকে আরও খারাপ অবস্থা তাদের হয়েছিল। তখন দেশটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। সেই সময় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পরিচয় দিতেও ভয় পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে জলাঞ্জলি দেয়। উন্নয়নের গতি থেমে যায়। ২৭৭ ডলার মাথাপিছু আয় রেখে গিয়েছিলেন, পরে প্রতিবছরেই তা মাইনাস হতে থাকে। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে নিজেদের ভাগ্য গড়ে। 

 ‘মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে তৈরি হওয়া দল বিএনপি। স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী যাদের রাজনীতি জাতির পিতা নিষিদ্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান ওই জামাতকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের হাত থেকে রক্ষা করে তাদের পুরস্কৃত করে। তখন আইনের শাসন পদদলিত করে বিচারহীনতার কালচার শুরু হয়।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে ফিরেই আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। এর মাঝেই ফিরে পাব হারানো বাবা-মা-ও ভাইয়ের স্নেহ। এবং আমি তা পেয়েছি। আমার একমাত্র ক্ষমতার উৎস হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। তাদের জন্য আমি আমার বাবার মত জীবন উৎসর্গ করার পথে নেমেছি। গোলা-বারুদ, বোমা, গ্রেনেড হামলা কোনো কিছুই আমাকে বাঁধা দিতে পারেনি। আমার প্রত্যয় এ দেশের মানুষের মুখে অন্ন জোগাব। সকলের চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করব। উন্নত জীবন দেব।’ 

দেশের মানুষের কল্যাণ করাই আওয়ামী লীগের কাজ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের সব ধরনের কল্যাণ করার, মানুষের যা যা প্রয়োজন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তা হয়। এটা প্রমাণিত সত্য আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। এর আগে জিয়াউর রহমান ছিল, এরশাদ ছিল, খালেদা জিয়া ছিল। বাংলাদেশের জনগণকে কিছু দেয়নি। নিজেরা নিয়েছে। নিজেরা অর্থশালী সম্পদশালী হয়েছে। ভাঙা স্যুটকেস ও ছেড়া গেঞ্জি থেকে জাদু পেয়ে সম্পদের মালিক হয়েছে। দেশের মানুষকে দেয়নি তারা। দেবে না তারা। আসে লুটপাট করে খেতে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের সেটাই তো চরিত্র। আওয়ামী লীগ মাটি মানুষের সংগঠন। জনগণের অধিকারের কথা বলেই আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে। আর তখনই থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আছে বলেই ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। আজকে তো দারিদ্র্যের হাহাকার শোনা যায় না। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। কর্মসংস্থার আমরা বৃদ্ধি পেয়েছি। আকজে বেকারত্ব মাত্র তিন ভাগ। ইনশা আল্লাহ সেটাও থাকবে না। 

বিএনপির নির্বাচন বর্জন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন আজকে বর্জন করছে। বর্জন করাটা খুবই স্বাভাবিক। ভোট চুরি করতে পারবে না। নির্বাচন করবে না। কারণ এর আগে তো ভোট চুরি করে অভ্যস্ত। চুরি করা ভোট দিয়েই তো তাদের সৃষ্টি। ক্ষমতা চুরি, ক্ষমতা দখল, ভোট চুরি। এছাড়া আর কিছু পারে না। সেজন্য ইলেকশন করতে চায় না। ইলেকশন বানচাল করবে। মানুষের ভোটের অধিকার আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি। সেই অধিকার কেড়ে নেবে! নির্বাচন বন্ধ করবে-এত সাহস তাদের নেই। তারা পারবে না।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নুহু নবীর নৌকা মহাপ্লাবনে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকাই মানুষের প্রাণ বাঁচায়। নৌকাই উন্নতি দেয়। নৌকা নিশ্চিত জীবন দেয়। শান্তি দেয়-সমৃদ্ধি দেয়। নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ-ডিজিটাল বাংলাদেশ। নৌকায় ভোট দেবেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। প্রথম যারা ভোটার তাদের আহ্বান জানাব নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের মাধ্যমে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের রুখে দিতে হবে: মুফতি ফয়জুল করীম

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার বামনা উপজেলায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনার বামনা উপজেলায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন জরুরি। ভোটের মাধ্যমে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের রুখে দিতে হবে। এ দেশ থেকে তাদের উৎখাত করতে হলে হাতপাখায় ভোট দিন, তাহলেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে।’

আজ সোমবার বিকেলে বরগুনার বামনা উপজেলার হলতা ডৌয়াতলা সমবায় বহুমুখী বিদ্যালয় মাঠে দলের এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফয়জুল করীম বলেন, ‘ভেবেছিলাম, বৈষম্য দূর হবে, মানুষ শান্তি পাবে। কিন্তু ১৯৪৭ সালের পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে, কেউই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে পারেনি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকেও যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারাও বৈষম্য দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু দল বা নেতার পরিবর্তনে নয়, আদর্শের পরিবর্তনেই দেশে শান্তি আসতে পারে।’

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ‘চোর যদি এমপি হয়, সে কী করবে? আওয়ামী লীগকে যে চাঁদাবাজি ও জুলুমের জন্য তাড়িয়েছে মানুষ, সেই চাঁদাবাজি কি এখন বন্ধ হয়েছে? যে ধর্ষণের কারণে মানুষ আওয়ামী লীগকে তাড়িয়েছে, সেই ধর্ষণ কি এখন হচ্ছে না? যে দখলদারির কারণে আওয়ামী লীগকে তাড়িয়েছে, এখন কি সেই দখলদারি বন্ধ হয়েছে?’

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বামনা উপজেলা সভাপতি আলহাজ আব্দুস সোবহান খান। সঞ্চালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন জিহাদী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর হোটেল সেরিনায় কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর হোটেল সেরিনায় কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সফররত কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর বনানীতে হোটেল সেরিনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য জিয়াউদ্দিন হায়দার, যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির ‘ইলেকটোরাল সাপোর্ট’ শাখার উপদেষ্টা ও ‘প্রি-ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট’-এর প্রধান লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজ।

বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু ও বিস্তারিত নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপি বা কমনওয়েলথের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন পরিবেশ, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নয়, তারাই গণভোটকে ভয় পায়: মুজিবুর রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, যাঁরা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নন, তাঁরাই গণভোটকে ভয় পান। এ জন্য তাঁরা গণভোট আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার পরিবর্তে সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভুল পথ দেখাচ্ছেন। আজ সোমবার জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে নব্য ফ্যাসিবাদের পরিণতি আওয়ামী লীগের মতোই হবে। বিগত ৫৪ বছর যেই পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে জাতি আর নির্বাচন চায় না। কারণ, সেই পদ্ধতিতে জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, হবেও না।

নির্বাচনের বিদ্যমান পদ্ধতিকে সরকারকে স্বৈরাচার হিসেবে তৈরি করার পদ্ধতি বলে আখ্যা দেন জামায়াতের এ নেতা। তিনি বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবেও না। সব দলের প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠিত হলে একক কোনো দল স্বৈরাচার হতে পারবে না।

মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান। আওয়ামী লীগ সেদিন সারা দেশে লগি-বইঠা দিয়ে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। জামায়াত-শিবিরের ১৪ জনকে তারা হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে। যেটি মানবসভ্যতার এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

তিনি আওয়ামী লীগ পরিচালিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের টার্গেট ছিল জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদসহ শীর্ষ নেতাদের সেদিনই হত্যা করা। এ জন্য তারা সেদিন সারা দেশ রক্তাক্ত করে। ওই ঘটনায় তখন মামলা করা হলেও পরে অধিকতর তদন্তের নামে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা হবে ৫: আমির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ০৪
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করব, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও ৮ ঘণ্টা, তারও ৮ ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়?’

তিনি যোগ করেন, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশা আল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাকে সম্মান করার জন্য। আমরা যদি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত ৮ ঘণ্টার কাজ ৫ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’

বর্তমান সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান, ‘বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফেরাতে দৃশ্যমান কয়েকটি রায় দিতে হবে।’ জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বিচার অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো নিরপরাধ মানুষ শাস্তি পাবেন না।’

শুধু রেমিট্যান্স নয়, দেশের উন্নয়নে প্রবাসী মেধাবীদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে—প্রবাসীদের প্রতি এমন আহ্বানও জানান জামায়াত আমীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণেরা বিভিন্ন দেশে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করছে। সে সমাজের উন্নয়নে তারা অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। আমরা এ মানুষগুলোর থেকে একটা অংশ অন্তত বাংলাদেশে ফেরত চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত