Ajker Patrika

উন্নয়নের আড়ালে গণতন্ত্র, সংবিধান ও মানবাধিকারকে বলি দেওয়া হয়েছে: রব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এক দুর্যোগপীড়িত এবং ক্ষুধাপীড়িত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম মিলনায়তনে কাউন্সিল উত্তর রাজনৈতিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘উন্নয়নের আত্মতুষ্টির আড়ালে গণতন্ত্র, সংবিধান ও মানবাধিকারকে বলি দেওয়া হয়েছে।’

আ স ম আব্দুর রব আরও বলেন, ‘আর্থিক দুরবস্থা সর্বত্র সংক্রমিত হয়ে ভয়ানক আয় হ্রাস পেয়েছে এবং জীবনযাত্রার মান নিম্নগামী হয়েছে। পাঁচ থেকে ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। বিপন্ন মানুষের প্রতি, ক্ষুধাতাড়িত মানুষের প্রতি, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের প্রতি সরকারের কোনো মনোযোগ নেই। নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নয়নের আত্মতুষ্টির আড়ালে গণতন্ত্র, সংবিধান ও মানবাধিকারকে বলি দেওয়া হয়েছে।’ 

জেএসডির সভাপতি বলেন, ‘বিরোধী দল বিএনপির ঢাকার একটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে, সরকারের যুদ্ধংদেহী মনোভাব, প্রাণহরণ, দলীয় কার্যালয় লন্ডভন্ডকরণসহ অনুর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত সরকারের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশ এবং রাষ্ট্রযন্ত্র কেবলমাত্র ক্ষমতাসীন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রমাণ ও নজির স্থাপন করে চলেছে। মানুষ হত্যা, দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং রাতে ভোট চুরির কাজকেও সরকার মহিমান্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা ভয়াবহ অন্যায়।’ 

দ্য গ্লোবাল স্টেট অফ ডেমোক্রেসির তালিকায় বাংলাদেশ কর্তৃত্ববাদী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে জানিয়ে রব বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিশেষ করে বাক্‌স্বাধীনতা দমনে বা অনলাইনে মত প্রকাশ ঠেকাতে দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অন্যতম হাতিয়ার। সন্ত্রাসবিরোধী, জঙ্গিবিরোধী, গুজববিরোধী এবং জাতীয় নিরাপত্তার নামে এসব আইন অপপ্রয়োগের পথ প্রশস্ত করেছে। 

‘কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ শ্রমজীবী, কর্মজীবী, পেশাজীবী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রতিনিয়ত সরকারের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গ্রেপ্তার এবং গায়েবি মামলা প্রজাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছে।’ 

রব বলেন, ‘বিদ্যমান সংকট নিরসনে সরকারের পদত্যাগ, বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক সংস্কার প্রশ্নে অচিরেই যুগপৎ আন্দোলন শুরু হবে।’ 

এ সময় তিনি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জেএসডির ১০ দফা কর্মসূচি তুলে ধরেন। 

১০ দফায় সংবিধান সংশোধন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা, রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল সংস্কার, নিরপেক্ষ নির্বাচন, প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা, প্রতিরক্ষা বাহিনী আধুনিকীকরণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল গঠন, সার্ক-এর অধীনে উপ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গঠন করাসহ অন্যান্য বিষয় তিনি তুলে ধরেন। এছাড়াও গত ৪ ডিসেম্বর দলের কাউন্সিলে গৃহীত পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন—জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন স্বপন, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন তালুকদার, মো. সিরাজ মিয়া প্রমুখ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত