Ajker Patrika

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনায় মনে হয়, রাজনীতিবিদরা অপাঙ্‌ক্তেয়: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫, ১২: ৫৮
আজ শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
আজ শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়, ভবিষ্যতে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োগের অযৌক্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে। এ ছাড়া সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয়, রাজনীতিবিদরা অপাঙ্‌ক্তেয় এবং অনির্বাচিত লোকদের দিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করাই শ্রেয়।

আজ শনিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের জনগণ অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে। তবে এর মূল ভিত্তি রচনা করেছে বিএনপি প্রস্তাবিত ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার কর্মসূচি, যা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই উপস্থাপিত হয়েছিল।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, এসব প্রস্তাবের সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই উপযুক্ত ফোরাম। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মূল চালিকাশক্তি। এই ঐক্য অক্ষুণ্ন রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার বিকল্প নেই।’

মির্জা ফখরুল সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না, যা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ও গণঐক্যে ফাটল ধরাবে। সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো পক্ষ যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে।’

বর্তমানে আলোচিত বিষয় ‘সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে’—এই বিতর্ককে ‘অনাবশ্যক’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘সংস্কার সনদ’ প্রণয়ন করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় হলো, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।’

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার কারণে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নয়।’

বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশমালা নিয়ে দলীয় পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পাঠানোর স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলোর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে, তাতে একটি বিষয় প্রতিভাত হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো প্রস্তাব আকারে আসতে পারত তা প্রস্তাব না রেখে লিডিং কোশ্চেন আকারে হ্যাঁ, না, উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন—প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না। হ্যাঁ অথবা না বলুন। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না। একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ ও আইন সভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ/না বলুন।

সংবিধানের ‘প্রস্তাবনার’ (Preamble) মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশে থাকলেও তা স্প্রেডশিটে উল্লেখ করা হয়নি। স্প্রেডশিটে ৭০টির মতো প্রস্তাব উল্লেখ করা হলেও মূল প্রতিবেদনে সুপারিশের সংখ্যা ১২৩টির মতো।

একইভাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মূল প্রতিবেদনে ১৫০টির মতো সুপারিশ তুলে ধরা হলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই আমরা মনে করছি, স্প্রেডশিটের সঙ্গে মূল সুপারিশমালার ওপর আমাদের মতামত সংযুক্ত করে দিলে বিভ্রান্তি এড়ানো যাবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটের অবস্থা এবং কমিশন সদস্যদের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্য ও বিশেষ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য-বিবৃতির মধ্যে মিল পাওয়া যায়, যাতে জনমনে প্রশ্নের জন্ম হতে পারে যে, সব বিষয় যেন একটি পূর্বনির্ধারিত কর্মপরিকল্পনার অংশ, যা গণতন্ত্রের স্বার্থের পক্ষে কি না, বলা মুশকিল। সুপারিশমালাসমূহ পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, এতে ভবিষ্যতে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োগের অযৌক্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে, যা অনভিপ্রেত।

সুপারিশমালায় সাংবিধানিক কমিশনসহ (এনসিসি) নতুন নতুন বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সমস্ত কমিশনের এখতিয়ার, কর্মকাণ্ডের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তাতে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে যতটা সম্ভব আন্ডারমাইন করা এবং ক্ষমতাহীন করাই উদ্দেশ্য, যার ফলে একটি দুর্বল ও প্রায় অকার্যকর সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।

রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্র, জনগণের মালিকানার প্রতিফলন হয় নির্বাচিত সংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। কিন্তু সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদরা অপাঙ্‌ক্তেয় এবং অনির্বাচিত লোকদের দিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করাই শ্রেয়।

বিএনপি মহাসচিবের মতে, জনগণের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি এবং ধর্মবোধ এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েই বিভিন্ন সংস্কার ও সাংবিধানিক সংশোধনী প্রণীত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে, দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্বপ্ন অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমান সময়ের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নয়, তারাই গণভোটকে ভয় পায়: মুজিবুর রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, যাঁরা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নন, তাঁরাই গণভোটকে ভয় পান। এ জন্য তাঁরা গণভোট আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার পরিবর্তে সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভুল পথ দেখাচ্ছেন। আজ সোমবার জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে নব্য ফ্যাসিবাদের পরিণতি আওয়ামী লীগের মতোই হবে। বিগত ৫৪ বছর যেই পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে জাতি আর নির্বাচন চায় না। কারণ, সেই পদ্ধতিতে জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, হবেও না।

নির্বাচনের বিদ্যমান পদ্ধতিকে সরকারকে স্বৈরাচার হিসেবে তৈরি করার পদ্ধতি বলে আখ্যা দেন জামায়াতের এ নেতা। তিনি বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবেও না। সব দলের প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠিত হলে একক কোনো দল স্বৈরাচার হতে পারবে না।

মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান। আওয়ামী লীগ সেদিন সারা দেশে লগি-বইঠা দিয়ে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। জামায়াত-শিবিরের ১৪ জনকে তারা হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে। যেটি মানবসভ্যতার এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

তিনি আওয়ামী লীগ পরিচালিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের টার্গেট ছিল জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদসহ শীর্ষ নেতাদের সেদিনই হত্যা করা। এ জন্য তারা সেদিন সারা দেশ রক্তাক্ত করে। ওই ঘটনায় তখন মামলা করা হলেও পরে অধিকতর তদন্তের নামে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা হবে ৫: আমির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ০৪
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করব, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও ৮ ঘণ্টা, তারও ৮ ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়?’

তিনি যোগ করেন, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশা আল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাকে সম্মান করার জন্য। আমরা যদি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত ৮ ঘণ্টার কাজ ৫ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’

বর্তমান সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান, ‘বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফেরাতে দৃশ্যমান কয়েকটি রায় দিতে হবে।’ জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বিচার অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো নিরপরাধ মানুষ শাস্তি পাবেন না।’

শুধু রেমিট্যান্স নয়, দেশের উন্নয়নে প্রবাসী মেধাবীদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে—প্রবাসীদের প্রতি এমন আহ্বানও জানান জামায়াত আমীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণেরা বিভিন্ন দেশে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করছে। সে সমাজের উন্নয়নে তারা অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। আমরা এ মানুষগুলোর থেকে একটা অংশ অন্তত বাংলাদেশে ফেরত চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতি আসনে একাধিক প্রার্থী প্রস্তুত রাখছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৪৫
সোমবার যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

আজ সোমবার যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেন, ‘আমরা সমগ্র বাংলাদেশে আসনভিত্তিক একাধিক যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’

এই কৌশলটি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ের মতোই। ওই নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটলে আসন যেন বিএনপিশূন্য না হয়ে পড়ে, সে জন্যই এক আসনে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

জানা গেছে, জোটের কারণে কিছু আসন ছাড় দিতে হতে পারে, তা বিবেচনা করেও দুই শতাধিক আসনে ‘ধানের শীষ’-এর প্রার্থী তালিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত হবে।

সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখলেও দল ঐক্যের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটিই মেসেজ দিতে চাই, যাতে আমাদের দলের ভেতরে ঐক্য থাকে, জাতির ভেতরে ঐক্য থাকে। জাতির মধ্যে ঐক্যটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই ঐক্য বজায় রাখার জন্য কেউ যাতে বিভেদের পথে না যায়, সেই মেসেজটা আমরা দিতে চাই।’

এ ছাড়া, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন করা হবে বলেও ঘোষণা করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে নিয়ে গঠন করা হবে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট।’

দেশের যুব সমাজকে জাতি বিনির্মাণে কাজে লাগানোর বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যুবকদের, তরুণদের রাজনৈতিক ভাবনাকে আহরণ করার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশে সফর করেছি। আমরা তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা গ্রহণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কীভাবে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি প্রণয়ন করছি। আশা করি, এই দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ হবে।’

এ সময় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৫১
নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় জাতীয় পার্টির একাংশ। তবে অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়া বা কৌশল আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরবে তারা। গতকাল রোববার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভার এই প্রস্তাব রাখা হয়।

আজ সোমবার দলের দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কৌশল নির্ধারণে করণীয় ও সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।

প্রেসিডিয়াম সভায় বলা হয়, বিগত ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখার জন্য জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। সেই দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করতে চায়। তবে কোন প্রক্রিয়ায় বা কোন কৌশলে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে, সেটি আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

বিজ্ঞাপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘জাতীয় পার্টি প্রত্যাশা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য ও সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করবে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় যাতে সকল রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পায়, সে ধরনের একটি ভয়ভীতি ও আতঙ্কহীন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে বিশ্বাস করতে চায় জাতীয় পার্টি।’

সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলা এই সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জিয়া উল হক মৃধা, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, সরদার শাহজাহান, মোবারক হোসেন আজাদ, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত